‎আবু সাঈদ হত্যা মামলায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হাসিবুর রশীদসহ পলাতক ২৪ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।

‎বুধবার (৬ আগস্ট) বেলা ১২টার দিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ পরোয়ানা জারি করেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন- অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো.

মঞ্জুরুল বাছিদ এবং জেলা ও দায়রা জজ নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।

‎গত বছরের ১৬ জুলাই কোটা সংস্কারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রংপুরের পার্ক মোড় এলাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত হন আবু সাঈদ। সেই ঘটনায় ৩০ জনকে আসামি করে গত ২৪ জুন তদন্ত প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালে জমা দেয় তদন্ত সংস্থা। গত ২৯ জুলাই মামলার সব পক্ষের শুনানি শেষ হয়। পরদিন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশের জন্য বুধবার (৬ আগস্ট) দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল।

আরো পড়ুন:

স্থায়ী ক্যাম্পাসের দাবিতে মহাসড়কে রবি শিক্ষার্থীদের শেকল ভাঙার গান

যবিপ্রবির সড়কে বেহাল দশা, দুর্ভোগ চরমে

‎৩০ জন আসামির মধ্যে ছয়জন গ্রেপ্তার আছেন। তারা হলেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, সাবেক সহকারী রেজিস্ট্রার রাফিউল হাসান রাসেল, রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের সাবেক চুক্তিভিত্তিক কর্মচারী মো. আনোয়ার পারভেজ, পুলিশের সাবেক সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আমির হোসেন, সাবেক কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায় ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ নেতা ইমরান চৌধুরী ওরফে আকাশ। আদেশ প্রদানের সময় এসব আসামিরা উপস্থিত ছিলেন।

পলাতক বাকি ২৪ আসামির মধ্যে আছেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড.মো. হাসিবুর রশীদ, গণিত বিভাগের সাবেক সহযোগী অধ্যাপক মো. মশিউর রহমান, লোকপ্রশাসন বিভাগের সাবেক সহযোগী অধ্যাপক আসাদুজ্জামান মণ্ডল, চিকিৎসক মো. সরোয়ার হোসেন চন্দন, সাবেক সহকারী রেজিস্ট্রার মো. হাফিজুর রহমান, সাবেক সেকশন অফিসার মো. মনিরুজ্জামান পলাশ, রংপুর মহানগর পুলিশের (আরপিএমপি) সাবেক কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান, সাবেক উপ-কমিশনার মো. আবু মারুফ হোসেন, সাবেক অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মো. শাহ নূর আলম পাটোয়ারী, সাবেক সহকারী কমিশনার মো. আরিফুজ্জামান, সাবেক পরিদর্শক (নিরস্ত্র) রবিউল ইসলাম, সাবেক এসআই (নিরস্ত্র) বিভূতিভূষণ রায়; বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি পোমেল বড়ুয়া, সাধারণ সম্পাদক মাহাফুজুর রহমান, সহ-সভাপতি ফজলে রাব্বি ও আখতার হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক সেজান আহম্মেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক ধনঞ্জয় কুমার, দপ্তর সম্পাদক বাবুল হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাসুদুল হাসান, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এমএলএসএস মোহাম্মদ নুরুন্নবী মণ্ডল ও আমির হোসেন, নিরাপত্তা প্রহরী নুর আলম মিয়া ও অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর মো. মাহাবুবার রহমান।

‎পলাতক ২৪ আসামির পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত চারজন আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। তারা হলেন আইনজীবী সুজাত মিয়া, ইসরাত জাহান, শহীদুল ইসলাম ও মামুন উর রশীদ।

‎আবু সাঈদ হলেন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ। তিনি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন।

ঢাকা/‎সাজ্জাদ/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আস ম স ব ক সহক র ব গম র ক য় স ব ক উপ ল ইসল ম র রহম ন

এছাড়াও পড়ুন:

জবি প্রশাসনের ‘দায়সারা’ জবাবের প্রতিবাদ শিক্ষার্থীদের

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রণয়ন, দ্বিতীয় ক্যাম্পাস ও দুটি হলের কাজের অগ্রগতি এবং সম্পূরক বৃত্তি কার্যকর না হওয়ার প্রতিবাদ ব্যতিক্রমী কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (৬ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে একটি চেয়ারে ‘প্রশাসন’ লিখে বসিয়ে এ প্রতীকী প্রতিবাদ জানান শিক্ষার্থীরা।

ওই চেয়ারের সামনে রাখা প্ল্যাকার্ডে তারা ‘ছাত্র সংসদ কবে হবে?’, ‘দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ কবে শুরু হবে?’, ‘পুরান ঢাকায় দুটি হলের কাজ কবে হবে?’, ‘সম্পূরক বৃত্তি কবে হবে?’ লিখেছেন।

আরো পড়ুন:

রাবিতে বিজয় ফিস্টের খাবার খেয়ে অসুস্থ ৮৩ শিক্ষার্থী

চবি প্রশাসনকে নিয়ে পথনাটক ‘বহুতদিন অইয়ে আর মুলা ন ঝুলায়ো’

এসব প্রশ্নের উত্তরে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের বক্তব্যের অনুকরণে চেয়ারে লিখে দেন— ‘আলহামদুলিল্লাহ’, ‘চিঠি পাঠিয়েছি’, ‘বের হয়ে যাও’, ‘হচ্ছে, চলছে, চলমান’, ‘৮টা টু ৮টা’।

এ বিষয়ে আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য ও পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাসুদ রানা বলেন, “জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নীরবতা শিক্ষার্থীদের প্রতি চরম অবহেলার প্রতিফলন। ন্যায্য অধিকার- সম্পূরক বৃত্তি প্রদান ও জকসু নির্বাচনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে প্রশাসনের নির্লিপ্ত ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। আজকের প্রতীকী কর্মসূচির মাধ্যমে জানিয়ে দিচ্ছি— এই নীরবতা চলতে দেওয়া হবে না। প্রশাসন যদি দ্রুত সিদ্ধান্ত না নেয়, বৃহত্তর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হব।”

অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ফয়সাল আহমেদ বলেন, “এই জবাবদিহিতা কোনো আনুষ্ঠানিকতা নয়; অথর্ব ও মেরুদণ্ডহীন প্রশাসনের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ। গণঅভ্যুত্থানের পর যাদের ক্ষমতায় আনতে আমরা গেট লক কর্মসূচি পালন করেছিলাম, তারাই আজ মৌলিক অধিকার নিয়ে উদাসীন।”

তিনি বলেন, “আবাসন, ভাতা, ছাত্র সংসদ— সবখানেই ব্যর্থতা। দ্বিতীয় ক্যাম্পাস ও দুটি হলের কাজের কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়নি। এই প্রতীকী জবাবদিহিতা প্রশাসনের ব্যর্থতা ও গাফিলতির নগ্ন মুখোশ খুলে দিতেই।”

সম্প্রতি জকসু নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. শেখ গিয়াস উদ্দিনকে প্রশ্ন করলে তিনি দুই সাংবাদিকের ওপর চড়াও হন এবং জকসু ইস্যুতে কোনো মন্তব্য করতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেন।

২০০৫ সালে প্রণীত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইনে ছাত্র সংসদ গঠনের বিধান না থাকায় প্রতিষ্ঠার পর থেকে জকসু নির্বাচন হয়নি। গত ২ জানুয়ারি ৯৯তম সিন্ডিকেট সভায় জকসু গঠনতন্ত্র প্রণয়নের জন্য কমিটি গঠন করা হয়। ৭ মে ১০০তম বিশেষ সিন্ডিকেট সভায় আরো একটি উচ্চতর কমিটি গঠন করা হয়, যা বর্তমানে প্রাপ্ত মতামতের ভিত্তিতে গঠনতন্ত্রকে আইন আকারে প্রণয়নের প্রক্রিয়া চালাচ্ছে।

শিক্ষার্থীদের দাবি, গঠনতন্ত্র প্রণয়নের অজুহাত দেখিয়ে প্রশাসন সময়ক্ষেপণ করছে। ফলে শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের পথ আরো দীর্ঘ হচ্ছে।

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ