আলোকচিত্রী শহিদুল আলমের বিরুদ্ধে ৫৭ ধারার সেই মামলা বাতিল
Published: 7th, August 2025 GMT
আলোকচিত্রী শহিদুল আলমের বিরুদ্ধে ২০০৬ সালের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় ৭ বছর আগে করা মামলা বাতিল ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি তামান্না রহমান খালিদীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার এ রায় দেন।
নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন ঘিরে ২০১৮ সালে শহিদুল আলমের বিরুদ্ধে ৫৭ ধারায় মামলাটি করা হয়। ওই মামলার এফআইআর ও তদন্ত কার্যক্রম বাতিল চেয়ে গত বছরের আগস্টে হাইকোর্টে আবেদন করেন শহিদুল আলম। শুনানি নিয়ে গত বছরের ৪ নভেম্বর হাইকোর্ট রুল দিয়ে মামলার তদন্ত কার্যক্রম স্থগিত করেন। চূড়ান্ত শুনানি শেষে আজ রুল যথাযথ (অ্যাবসলিউট) ঘোষণা করে রায় দেওয়া হয়।
আদালতে শহিদুল আলমের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সারা হোসেন ও আইনজীবী আবদুল্লাহ আল নোমান শুনানিতে ছিলেন, সঙ্গে ছিলেন কাজী জাহেদ ইকবাল, আইনজীবী মনিরা হক ও প্রিয়া আহসান চৌধুরী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুলতানা আক্তার ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো.
পরে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সারা হোসেন বলেন, ‘হাইকোর্ট রায় দিলেন ড. শহিদুল আলমের মামলায়, যেখানে আমরা সাত বছর আগে থেকেই এই যাত্রা শুরু করেছি। ওনার বিরুদ্ধে অন্যায়ভাবে যে মামলা করা হয় তৎকালীন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনের সেই ৫৭ ধারার অধীনে, সেটিকে বাতিলের জন্য হাইকোর্টের শরণাপন্ন হয়েছিলাম। অনেক লম্বা পথ পেরিয়ে অবশেষে আমরা সেই গন্তব্যে পৌঁছেছি। হাইকোর্ট ড. শহিদুল আলমের বিরুদ্ধে ৫৭ ধারায় করা মামলাটি বাতিল করেছেন।... মামলাটি চলবে না। খুবই আনন্দিত, অবশেষে এই পর্যায়ে আমরা পৌঁছাতে পেরেছি।’
রায় ঘোষণার পর হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে কথা বলেন আলোকচিত্রী শহিদুল আলম ও তাঁর আইনজীবী সারা হোসেন। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলেউৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় ক্যাসিনো–কাণ্ডের সেলিম প্রধান রিমান্ডে
রাজধানীর গুলশান থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় ক্যাসিনো–কাণ্ডে আলোচিত সেলিম প্রধানের ৩ দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। তাঁর বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের মিছিলে অর্থ জোগান দেওয়ার অভিযোগ এনেছে রাষ্ট্রপক্ষ। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ সোমবার ঢাকার ভারপ্রাপ্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমান তাঁর রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হারুনুর রশিদ জানান, গত ২৬ অক্টোবর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান জোনাল টিমের পুলিশ পরিদর্শক মো. মোজাম্মেল হক আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। ওই দিন আদালত তাঁর উপস্থিতিতে শুনানির জন্য সোমবার দিন ধার্য করেছিলেন। শুনানির জন্য আজ সেলিম প্রধানকে আদালতে আনা হয়। আসামিপক্ষের আইনজীবী তাওহিদুল ইসলাম রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে বিচারক তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
শুনানিতে আসামিপক্ষের আইনজীবী তাওহিদুল ইসলাম বলেন, আগের সরকারের সময় সেলিম প্রধানকে নিয়ে অভিযোগ ছিল তিনি তারেক রহমানের কাছে টাকা পাঠাতেন এবং বর্তমান মামলাতেও একই রকম অভিযোগ আনা হচ্ছে, যা যৌক্তিক নয়।
এ সময় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জিজ্ঞেস করেন, ‘তারেক রহমানকে কে টাকা দিয়েছেন?’ উত্তরে আসামিপক্ষের আইনজীবী একটি সংবাদ প্রতিবেদনের কপি আদালতে দেখান। এ সময় আদালতের ভেতর হট্টগোল সৃষ্টি হয়।
একপর্যায়ে আদালতের অনুমতি নিয়ে সেলিম প্রধান বলেন, ২০১৯ সালের একটি মামলায় তিনি জামিন না পেয়ে কারাভোগ করেছেন। জেল থেকে মুক্ত হয়ে তিনি গাজী গ্রুপের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই শুরু করেন এবং আওয়ামী লীগের আমলে তাঁর ব্যক্তিগত বাড়িতে হামলা হয়েছে। তিনি জোসেফ হারিছের বিরুদ্ধেও মামলা করেছেন।
শুনানি শেষে আদালত সেলিম প্রধানের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গত ৫ সেপ্টেম্বর রাত আড়াইটার দিকে গুলশানের বারিধারার নেক্সাস ক্যাফে প্লেস নামক একটি রেস্তোরাঁ থেকে সেলিম প্রধানসহ ৯ জনকে আটক করে পুলিশ। পরে তাঁদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়।
এর গত ২২ অক্টোবর আওয়ামী লীগের মিছিলে অর্থ জোগান দেওয়ার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সেলিম প্রধানকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। মামলার অভিযোগ অনুযায়ী, গত ২২ এপ্রিল সকাল ৭টায় গুলশান-১ এর জব্বার টাওয়ারের পাশের রাস্তায় আসামিসহ ৩০ থেকে ৩৫ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি সমবেত হন। তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ সংগঠনের অর্থদাতা, পরামর্শদাতা ও নির্দেশদাতাদের নিয়ে সরকার ও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা এবং জননিরাপত্তা বিঘ্নিত করা। সেখানে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ব্যানার ও আওয়ামী লীগের অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মীরা দেশবিরোধী স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং বাকিরা পালিয়ে যান। এ ঘটনায় পুলিশ গুলশান থানায় মামলাটি দায়ের করে।