শাবিপ্রবির হিট প্রকল্পে স্বজনপ্রীতি ও রাজনৈতিক লবিংয়ের অভিযোগ
Published: 7th, August 2025 GMT
বিশ্বব্যাংক অর্থায়নে পরিচালিত ৪ হাজার কোটি টাকার ‘উচ্চশিক্ষা বেগবান ও রূপান্তর (হিট)’ প্রকল্পে স্বজনপ্রীতি ও রাজনৈতিক লবিংসহ নানা অভিযোগ তুলেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষকরা।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) দুপুর ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কেন্দ্রের সম্মেলন কক্ষে ‘বিক্ষুব্ধ শিক্ষকবৃন্দ’ ব্যানারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষকরা বলেন, প্রজেক্ট নির্বাচনে মেধা ও যোগ্যতার যথাযথ মূল্যায়ন করা হয়নি। রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত হয়ে স্বজনপ্রীতি করা হয়েছে। আমাদের পর্যবেক্ষণ বলে, প্রায় ৪০ শতাংশ লো প্রোফাইলধারী (টোটাল সাইটেশন ১০০ এর কম) গবেষকদের প্রজেক্ট নির্বাচন করা হয়েছে। এছাড়া ৫০০ সাইটেশনের কম আছে এমন ৪০ শতাংশ গবেষকদের প্রজেক্ট নির্বাচন করা হয়েছে। এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
আরো পড়ুন:
আহ্ছানউল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে মাইক্রোবাস উপহার দিল পূর্বালী ব্যাংক
জবিতে বাস সংকট চরমে, দুর্ভোগে শিক্ষার্থীরা
এ সময় রিভিউ প্রক্রিয়ার গুণগত মান ও স্বার্থের দ্বন্দ, ‘ব্লাইন্ড পিয়ার রিভিউ’ এর দাবি মিথ্যা, প্রেজেন্টেশনে নিয়ম বহির্ভুত মূল্যায়ন, অঘোষিত বিভাগভিত্তিক বৈষম্য, প্রাক-বাছাই পদ্ধতির অনুপস্থিতি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রতি অবহেলা, রিসার্চ কোয়ালিটির নামে বিভ্রান্তি এবং অনেক রিসার্চ ফিল্ডের প্রতি অবহেলার অভিযোগ করেন শিক্ষকরা।
এছাড়া করোনা মহামারিকালে জাতীয় অবদান থাকা স্বত্ত্বেও প্রকল্প বাতিল, শিল্প সহযোগী (পার্টনারিং এগ্রিমেন্ট) ছাড়াই ইন্ডাস্ট্রি প্রজেক্টে অনুমোদন, বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক বা বিভাগভিত্তিক প্রকল্প সংখ্যা ও অঞ্চলভিত্তিক বৈষম্য, নৈতিক ও আদর্শগত সংকট, রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা ও তার প্রভাব, চূড়ান্ত বাছাই বোর্ডে তাচ্ছিল্যমূলক ব্যবহার এবং হিট রিভিউ পদ্ধতির মাধ্যমে এবং ব্যবস্থাপনার নামে অর্থের অপচয় হয়েছে বলেও অভিযোগে জানান তারা।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষকরা তিনটি দাবি উত্থাপন করেন। দাবিগুলো হলো- সুষ্ঠু প্রক্রিয়া অবলম্বন না করায় নির্বাচিত প্রজেক্টগুলো বাতিল করতে হবে; ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ তানজিম উদ্দিন খান, প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক ড.
এসব দাবি না মানা হলে তারা লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়ে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে হুঁশিয়ারি দেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. আবুল হাসনাত, অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম, অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম, অধ্যাপক ড. সাহাবুল হক, অধ্যাপক ড. জামাল উদ্দিন প্রমুখ।
অভিযোগের বিষয়ে ইউজিসি সদস্য ড.মোহাম্মদ তানজিম উদ্দিন খানকে একাধিকবার কল দিলে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।
ঢাকা/ইকবাল/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব শ বব দ য শ বব দ য ল র জন ত ক শ ক ষকর প রকল প
এছাড়াও পড়ুন:
বুকে গুলি চালিয়ে শেষ পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছিল ফ্যাসিবাদী সরকার: প্রধান উপদেষ্টা
বিগত ১৬ বছরে মাফিয়াতন্ত্র কায়েম করা হয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি জানান, দেশের মানুষের বুকে গুলি চালিয়ে শেষ পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছিল ফ্যাসিবাদী সরকার।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) সকালে ঢাকা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “৫ আগস্ট শুধু একটা দিবস নয়, গণজাগরণের উপাক্ষান। ফ্যাসিবাদী শাসন থেকে জাতির পুনর্জন্ম।”
তিনি বলেন, “জুলাই-আগস্টে গুলিবিদ্ধ আহতদের চিকিৎসা নিতে দেওয়া হয়নি এবং তৎকালীন সরকার হাসপাতালগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে, যাতে আহদের চিকিৎসা দেওয়া না হয়।”
বক্তব্যের শুরুতে তিনি ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে সকল বীর মুক্তিযোদ্ধারে স্মরণ করে বলেন, “১৯৭১ সালে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এ দেশের জনগণ মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। লাখো প্রাণের বিনিময়ে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দি পরেও এ দেশের মানুষ সুবিচার ও গণতন্ত্র থেকে বঞ্চিত হয়েছে। মানুষ বৈষম্যের শিকার হয়েছে।”
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “২০২৪ সালের উত্তাল জুলাই ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসের এক সংকটময় অধ্যায়। ১৬ বছরের পুঞ্জিভূত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। এদেশের এই বিপুল সংখ্যক তরুণরা ১৬ বছর ধরে ক্রমাগত হতাশায় নিমজ্জিত ছিল। ভালো ফলাফল করেও চাকরির জন্য ক্ষমতাসীনদের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরেছে। চাকরিকে ঘিরে তৈরি হয়েছিল দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি আর তদবীর বাণিজ্য। যে তরুণ ঘুষ দিতে পারেনি এলাকার মাফিয়াদের সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলতে পারেনি, তার চাকরি হয়নি।”
তিনি বলেন, “সরকারি চাকরিতে বৈষম্যমূলক কোটা পদ্ধতি, যেটা মূলত ছিল দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির আরেকটা হাতিয়ার। এর বিরুদ্ধে তরুণ সমাজ দীর্ঘদিন প্রতিবাদ বিক্ষোভ করলেও ফ্যাসিবাদী শাসকের টনক নড়েনি। দীর্ঘদিন এই সেক্টরে মাফিয়াতন্ত্র কায়েম করে একটি সুবিধাভোগী শ্রেণি তৈরি করা হয়েছিল। যারা আর্থিক বা অন্য সুবিধার বিনিময়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলবে-কাজ করবে। স্বৈরাচারের পক্ষের সঙ্গী হলেই তার চাকরি হবে।”
ঢাকা/ইভা