ওকে প্রথম দেখি মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার মুরাছড়া ইকোপার্কের বাঁশঝাড় ও ডুমুরগাছের আড়ালে ৫ নভেম্বর ২০২১ সকালে। কিন্তু অতি চঞ্চল পাখিটির ছটফটানির কারণে ঠিকমতো ক্যামেরার ফ্রেমে আনতে পারছিলাম না। কিন্তু অনেক কষ্টে যখন ফ্রেমে পেয়ে ফোকাস করতে যাচ্ছি, তখনই চঞ্চল পাখিটি ঝোপের মধ্যে হারিয়ে গেল। ফলে জীবনে প্রথমবার দেখেও পাখিটির ছবি তুলতে পারলাম না। ১৫ মিনিট অপেক্ষা করেও যখন দ্বিতীয়বার ওকে আসতে দেখলাম না, তখন উঁচু-নিচু টিলার সর্পিল পথ ধরে সাগরনাল চা-বাগানের দিকে এগোতে থাকলাম। মিনিট দশেক হাঁটার পর ছোট্ট পাখিদের কিচিরমিচির শব্দে থামলাম। আশপাশটা ভালো করে খুঁজে তিন প্রজাতির খুদে পাখির দেখা পেলাম, কিন্তু কিছুক্ষণ আগে ক্যামেরার ফ্রেম থেকে ফসকে যাওয়া পাখিটির দেখা মিলল না।
এরপর প্রায় দুই কিলোমিটার টিলাময় সর্পিল পথ পার হয়ে সাগরনাল চা-বাগানে পৌঁছালাম। ওখানে ঘণ্টাখানেক বিভিন্ন প্রজাতির পাখির ছবি তুলে ফিরতি পর ধরলাম। প্রায় আড়াই কিলোমিটার পথ হেঁটে আবারও মুরাছড়া ইকোপার্কের সেই ঝোপের সামনে ১৫ থেকে ২০ মিনিট পজিশন নিয়ে বসে থাকলাম। কিন্তু অধরা পাখিটির দেখা পেলাম না। হাঁটুতে ব্যথা, তাই উঁচু-নিচু সর্পিল টিলায় হাঁটতে কষ্ট হচ্ছিল। সে কারণে দ্বিতীয় দিন আবারও মুরাছড়া ও সাগরনাল যাওয়ার চিন্তা বাদ দিলাম। হোটেলে ফিরে ব্যাগ গুছিয়ে শ্রীমঙ্গলের দিকে রওনা হয়ে গেলাম।
পরদিন ভোরে শ্রীমঙ্গল থেকে কমলগঞ্জের রাজকান্দি সংরক্ষিত বনের দিকে রওনা হলাম। ঠিক পাঁচ বছর পর এখানে এলাম। প্রায় দুই কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে একটি উল্লুক পরিবারের দেখা পেলাম। ওদের ছবি তুলে কিছুটা এগিয়ে ছড়ায় নেমে পড়লাম। ছড়ার এই অংশ যেন পাখি ও প্রজাপতির স্বর্গরাজ্য। ভ্রমণসঙ্গী খুকন থুনাউজামকে নিয়ে চুপিচুপি টিলার ওপরে উঠে কিছুটা আড়াল ও ছদ্মবেশ নিয়ে বসে পড়লাম। নানা প্রজাতির পাখির দেখা পেলাম। তবে যাদের সন্ধানে এসেছি, ওদের হদিস মিলল না। ঘণ্টাখানেক ওখানে থেকে ছড়ায় নেমে এলাম।
এরপর একটি ঝোপে পাখির আনাগোনা দেখে সেদিকে ক্যামেরা তাক করলাম। একটি পাহাড়ি দুধরাজের দেখা পেলাম। ওর ছবি তুলতে তুলতেই ক্ষুদ্র একটি পাখি এসে ঝোপের একটি ডালে বসল। আরে, এ যে দেখছি মুরাছড়ার সেই খুদে পাখিটি। যে চঞ্চল পাখি, কাজেই একমুহূর্ত সময় নষ্ট না করে শাটারে ক্লিক করলাম। মাত্র কটি ক্লিক করতেই চঞ্চল পাখিটি হাওয়া হয়ে গেল। আর ফিরে এল না। তবে আমাদের প্রত্যাশা পূরণ হলো। ঠিক ৯ মাস ২০ দিন পর আবারও পাখিটির দেখা মিলল আদমপুর সংরক্ষিত বনাঞ্চলে। এবার পেলাম মাটিতে।
মৌলভীবাজারের মুরাছড়া ও আদমপুরে দেখা খুদে পাখিটি এ দেশের এক বিরল আবাসিক পাখি নেপালি খুদে ছাতারে। পাখিটির কোনো প্রচলিত বাংলা নাম নেই। ইংরেজি নাম নেপাল ফুলভেত্তা। প্রাণিবিজ্ঞানী রেজা খানের বইয়ে নেপালের ছোট ছাতারে বলে উল্লেখ করা হয়েছে, যা একটি অনুবাদ নামমাত্র। তবে আমি নেপালি খুদে ছাতারে বলতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। Leiotrichidae গোত্রের শাখাচারী পাখিটির বৈজ্ঞানিক নাম Alcippe nipalensis। হিমালয়জুড়ে, নেপালের পূর্বাঞ্চল থেকে শুরু করে ইউনান প্রদেশ পর্যন্ত, উত্তর–পূর্ব ভারতের পাহাড়, বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চল এবং উত্তর ও পশ্চিম মিয়ানমারে বিস্তৃত।
এটি চড়ুই আকারের পাখি; দৈর্ঘ্য মাত্র ১২ থেকে ১৩ সেন্টিমিটার। ওজন ৯ থেকে ১৪ গ্রাম। পালকের রং বাদামি। মাথা, ঘাড় ও গাল কালচে-ধূসর। গলা, বুক ও পেটের রং সাদাটে। চোখের মণি বাদামি-ধূসর; চোখের চারদিকে সুস্পষ্ট সাদা বলয় রয়েছে। একটি লম্বা কালো দাগ চোখের ওপর থেকে ঘাড়ের পেছন পর্যন্ত চলে গেছে। চঞ্চু মেটে, যার গোড়া হলুদ। পা, পায়ের পাতা ও নখ মেটে বাদামি। স্ত্রী-পুরুষ দেখতে একই রকম। অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখির পিঠ হলদে, বগল ও লেজতল ঢাকনি বেশি হলদে।
ওরা মূলত বড় পাতার স্যাঁতসেঁতে পাতাঝরা ও মিশ্র চিরসবুজ বনের বাসিন্দা। সচরাচর বৃক্ষতলে জন্মানো গুল্মলতা, বাঁশকুঞ্জ, ঝোপঝাড় ও চা-বাগানে বিচরণ করে। এরা অত্যন্ত লাজুক। সচরাচর ছোট ছোট পতঙ্গভুক পাখির মিশ্র দলে থাকে। ছোট গাছের পাতায় হেঁটে খাবার খোঁজে, মাঝেমধ্যে মাটিতেও নামে। পোকামাকড়, রসালো ফল ও ফুলের মধু পছন্দ। প্রায়ই তীব্র কণ্ঠে ‘পি-পি-পি-পি-পি-পি.
মার্চ থেকে জুলাই প্রজননকাল। এ সময় ভূমির কাছে বাঁশঝাড় কিংবা ঝোপঝাড়ের দ্বিধাবিভক্ত ডালে ঘাস, বাঁশপাতা, ফার্ন, শিকড়-বাকড় ইত্যাদি দিয়ে বাটির মতো গোলগাল বাসা বানায়। তাতে স্ত্রী লালচে-বাদামি ঘন ছিটছোপসহ সাদা বা হালকা গোলাপি রঙের তিন থেকে পাঁচটি ডিম পাড়ে, যা ১২ দিনে ফোটে। আয়ুষ্কাল পাঁচ থেকে সাত বছর।
আ ন ম আমিনুর রহমান, পাখি ও বন্য প্রাণী প্রজনন ও চিকিৎসাবিশেষজ্ঞ, গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
নষ্ট করতে বলার পরও মোবাইল ফোন রেখে দিয়েছিলেন প্রেমিক, সেই ভুলে ফাঁস স্বামী খুনের রহস্য
মাদকাসক্ত স্বামীর উপর্যুপরি নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিলেন এক নারী। একপর্যায়ে ৩০ পেরোনো এই নারী নিজের স্বামীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। ভাড়াটে খুনির মাধ্যমে তাঁকে হত্যা করান। মরদেহ ফেলা হয় অন্য রাজ্যের এক নর্দমায়। এরপর প্রেমিকের সঙ্গে নতুন জীবনের প্রস্তুতি শুরু করেন। কিন্তু খুন হওয়া স্বামীর মুঠোফোন এবং প্রেমিকের একটি ভুলে সব পরিকল্পনা ভেস্তে যায়।
খুন হওয়া ব্যক্তির নাম প্রিতম প্রকাশ। একাধিক মামলা থাকায় দিল্লি পুলিশের অপরাধ বিভাগ তাঁকে খুঁজে বেড়াচ্ছিল। এক মামলায় তাঁকে পলাতক অভিযুক্ত ঘোষণা করা হয়েছিল। পলাতক প্রিতমকে খুঁজতে গিয়ে লোমহর্ষক এক ষড়যন্ত্রের হদিস পায় পুলিশ।
পুলিশের অনুসন্ধানে উঠে আসে, স্ত্রী সোনিয়া প্রিতমকে হত্যার জন্য ‘সুপারি’ দিয়েছিলেন, অর্থাৎ টাকা দিয়ে খুনি ভাড়া করেছিলেন। নতুন করে জীবন শুরুর আশায় তিনি প্রিতমকে হত্যা করেছিলেন। গ্রেপ্তারের পর সোনিয়া ও রোহিত পুলিশের কাছে এ কথা বলেছেন। জিজ্ঞাসাবাদে দুজনেই প্রিতমকে হত্যার কথা স্বীকারও করেছেন।
শুরু
জিজ্ঞাসাবাদে ৩৪ বছর বয়সী সোনিয়া পুলিশকে বলেন, ১৬ বছর বয়সে পরিবারের আপত্তি উপেক্ষা করে তিনি আট বছরের বড় প্রিতমকে বিয়ে করেন। এই দম্পতির এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। তাঁরা দিল্লির আলিপুর এলাকায় থাকতেন।
পুলিশকে সোনিয়া আরও বলেন, প্রিতম মাদকাসক্ত ছিলেন। একাধিক অপরাধে জড়িয়ে পড়েছিলেন। তিনি অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র রাখা, ডাকাতি ও অপহরণের মতো অপরাধে জড়িয়ে পড়েছিলেন। অনেকবার চেষ্টা করেও সোনিয়া স্বামীকে মাদক ছাড়ানো বা অপরাধের পথ থেকে ফেরাতে পারেননি। বরং মাদক নিয়েই প্রায় সময় বাড়ি ফিরতেন প্রিতম এবং তাঁর ওপর শারীরিক নির্যাতন চালাতেন।
২০২৩ সালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রোহিত নামের এক ক্যাবচালকের সঙ্গে সোনিয়ার পরিচয় হয়। রোহিতও অতীতে নানা অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ধীরে ধীরে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একসময় তাঁরা বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু সোনিয়ার নতুন জীবনের পথে স্বামী প্রিতম সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়ান। তাই নতুন জীবন শুরু করতে প্রিতমকে মেরে ফেলারই সিদ্ধান্ত নেন সোনিয়া।
হত্যার পরিকল্পনা
সোনিয়া পুলিশকে জানান, গত বছরের ২ জুলাই প্রিতমের সঙ্গে তাঁর ঝগড়া হয়। এরপর তিনি দিল্লির পাশের হরিয়ানা রাজ্যের সোনিপতে বোন দীপার বাসায় চলে যান। রোহিতই তাঁকে সেখানে পৌঁছে দেন।
হরিয়ানাতে যাওয়ার পথে রোহিতের কাছে প্রিতমকে হত্যার প্রস্তাব দেন সোনিয়া, যাতে তাঁরা একসঙ্গে থাকতে পারেন। রোহিতের বিরুদ্ধে আগে থেকেই চারটি ফৌজদারি মামলা ছিল। এর মধ্যে একটি ছিল খুনের মামলা। পরে তিনি দিল্লি-সোনিপত রুটে ক্যাব (ভাড়ায়চালিত কার) চালানোর কাজ শুরু করেন।
গাড়িতে করে দিল্লি ছেড়ে যেতে যেতে রোহিত সোনিয়াকে বলেন, তিনি নিজে প্রিতমকে খুন করতে পারবেন না। তবে ছয় লাখ রুপি জোগাড় করতে পারলে একজন ভাড়াটে খুনি নিয়োগ করা সম্ভব। কিন্তু সোনিয়ার কাছে এত টাকা ছিল না। এর ফলে সেদিন বিষয়টি আর এগোয়নি। রোহিত তাঁকে সোনিপতে বোনের বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে ফিরে আসেন।
খুন
গত বছরের ৫ জুলাই সোনিয়াকে বাড়ি ফিরিয়ে আনতে সোনিপতে যান প্রিতম। কিন্তু সেখানে তাঁদের মধ্যে আবারও ঝগড়া হয়। তখন সোনিয়া প্রিতমকে খুন করার ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন। এরপর তিনি বোন দীপার স্বামীর ভাই বিজয়ের শরণাপন্ন হন। বিজয় বলেন, এক লাখ রুপি দিলে তিনি প্রিতমকে খুন করতে পারবেন। সোনিয়া জানান, তিনি সর্বোচ্চ ৫০ হাজার রুপি দিতে পারবেন। শেষ পর্যন্ত এই টাকাতেই তাঁদের মধ্যে রফা হয়।
সেদিন সন্ধ্যায় প্রিতম আবারও সোনিয়াকে তাঁর সঙ্গে বাড়িতে ফেরার অনুরোধ করেন। কিন্তু সোনিয়া আসতে রাজি হননি। উল্টো প্রিতমকে ওই রাতে বোন দীপার বাসায় থাকতে বলেন। এরপর সোনিয়া বিজয়কে ওই রাতে প্রিতমকে শেষ করে দেওয়ার সংকেত দেন।
রাতে ঘরের নিচতলায় প্রিতম ও বিজয়ের ঘুমানোর ব্যবস্থা করা হয়। সোনিয়া ও অন্যরা চলে যান ছাদে। বিজয় রাতের কোনো এক সময় প্রিতমকে খুন করেন। প্রিতমের মরদেহ সাদা চাদরে মুড়িয়ে অদূরে একটি নর্দমায় ফেলে দেওয়া হয়।
প্রিতমের মুঠোফোন ঘরে পড়ে ছিল। পেয়ে তা নিজের সঙ্গে রেখে দেন সোনিয়া। নর্দমায় পড়ে থাকা প্রিতমের মরদেহ কয়েক দিন পর মানুষের নজরে আসে। কিন্তু পুলিশ তা সঙ্গে সঙ্গে শনাক্ত করতে পারেনি। এ অবস্থায় ঘটনাটি ওখানেই ধামাচাপা পড়ে যায়।
কিন্তু নিজের অপরাধ ঢাকতে সোনিয়া দিল্লির আলিপুর থানায় প্রিতমকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না মর্মে একটি লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগে তিনি লেখেন, তাঁর স্বামী প্রিতমকে ৫ জুলাই থেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এদিকে প্রিতমের ফোনটি তিনি রোহিতকে দিয়ে সেটি নষ্ট করে ফেলতে বলেন।
পুলিশের রহস্য উন্মোচন
প্রিতমের বিরুদ্ধে যেহেতু একাধিক ফৌজদারি মামলা ছিল, তাই পুলিশ নিয়মিতভাবে তাঁকে খুঁজছিল। পুলিশের গোয়েন্দা শাখার কাছে তথ্য ছিল, প্রিতম কয়েক মাস ধরে নিখোঁজ। এরপর তারা লক্ষ করে, স্ত্রী সোনিয়া প্রিতমের নিখোঁজ হওয়া নিয়ে একটি অভিযোগ দাখিল করেছেন। তারপরও পুলিশের অনুসন্ধানী দল নিখোঁজ প্রিতমের বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে বিশেষ কোনো তথ্য পায়নি।
এ পরিস্থিতিতে পুলিশ প্রিতমের ফোন ট্র্যাক বা ফোনের অবস্থান অনুসরণ করে দেখতে পায়, ফোনটি ব্যবহৃত হচ্ছে। সর্বশেষ তা সোনিপত এলাকায় ব্যবহৃত হয়েছে। সোনিয়ার নির্দেশনা সত্ত্বেও ধ্বংস না করে তখনো প্রিতমের ফোনটি ব্যবহার করে যাচ্ছিলেন রোহিত।
পুলিশ তখন রোহিতের ওপর নজরদারি শুরু করে। এতে করে তাঁর আগের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড সামনে চলে আসে। অবশেষে তাঁকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। প্রথমে রোহিত স্বীকার করেননি। রোহিত বলেন, অচেনা এক ব্যক্তির কাছ থেকে তিনি ফোনটি কিনেছেন।
কিন্তু পুলিশ রোহিতের ওপর চাপ প্রয়োগ করে। তখন একপর্যায়ে সোনিয়ার সঙ্গে নিজের সম্পর্ক, প্রিতমকে খুন করার পরিকল্পনা, সোনিয়ার আত্মীয়কে দেওয়া ‘সুপারি’এবং হত্যার পর প্রিতমের মরদেহ নর্দমায় ফেলা নিয়ে পুলিশকে বিস্তারিত তথ্য দেন রোহিত।
স্ত্রীর স্বীকারোক্তি
রোহিতের পর পুলিশ সোনিয়াকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে অপরাধ স্বীকার করেন তিনি। প্রিতমকে খুন করার জন্য বিজয়কে টাকা দেওয়ার কথাও তিনি পুলিশকে জানান।
সোনিয়া আরও বলেন, প্রিতমের মরদেহ ফেলে দেওয়ার পর সেটার ভিডিও ক্লিপও বিজয় তাঁকে পাঠিয়েছিল। এসব তথ্য উদ্ঘাটনের পর দিল্লি পুলিশের অপরাধ শাখা হরিয়ানার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে। হরিয়ানার পুলিশ জানায়, নর্দমায় পাওয়া মরদেহটি শনাক্ত করা যায়নি, তবে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
সোনিয়া পুলিশকে বলেন, প্রিতমকে খুন করার পর তিনি বিজয়কে ৫০ হাজার রুপি দিয়েছেন। এরপর তিনি প্রিতমের একটি গাড়ি ২ লাখ ৮০ হাজার রুপিতে বিক্রি করেন। ওখান থেকে কিছু অর্থ রোহিতকে দিয়েছেন আর কিছু অর্থ নিজে খরচ করেছেন। এই সময়টাতে সোনিয়া রোহিতের কাছে জানতে চেয়েছিলেন, প্রিতমের ফোন ধ্বংস করা হয়েছে কি না? রোহিত মিথ্যা বলেছিলেন। সেই মিথ্যাই তাঁদের জীবনে বড় বিপদ ডেকে আনে।
রোহিত ও সোনিয়া এখন কারাগারে। আগের একটি চুরির মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে বিজয়ও কারাগারে। পুলিশের তথ্যমতে, সোনিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক চলাকালে এপ্রিল মাসে বিয়ে করেন রোহিত।