সংঘাতের তিন মাস পর পাকিস্তানের ৫টি যুদ্ধবিমান ভূপাতিতের দাবি ভারতের
Published: 9th, August 2025 GMT
গত মে মাসে সামরিক সংঘাত চলার সময় পাকিস্তানের পাঁচটি যুদ্ধবিমান এবং একটি বড় সামরিক বিমান ভূপতিত করার দাবি করেছে ভারত। দেশটির বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল এ পি সিং আজ শনিবার এ দাবি করেন। প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ সামরিক সংঘাতের কয়েক মাস পর দেশটির পক্ষ থেকে এ ধরনের বিবৃতি এটি প্রথম। তবে ভারতের এ দাবি নিয়ে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী তাৎক্ষণিক মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
উল্লেখ্য, গত এপ্রিলে ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে গুলি করে ২৬ পর্যটককে হত্যার পর সংঘাতে জড়ায় দুই প্রতিবেশী দেশ ভারত ও পাকিস্তান। সর্বাত্মক যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গিয়েছিল তারা। চার দিন ধরে সীমান্তে এবং আকাশপথে লড়াইয়ের পর যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপে দুই দেশের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়।
বেঙ্গালুরু শহরে আজ এক অনুষ্ঠানে ভারতের বিমানবাহিনীর প্রধান বলেন, ‘পাকিস্তানের বেশির ভাগ বিমান ভারতের হাতে থাকা রাশিয়ার তৈরি এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্রব্যবস্থা ব্যবহার করে ভূপাতিত করা হয়েছে।’ এ ব্যবস্থায় ভূমি থেকে আকাশে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করা যায়। তিনি তাঁর দাবির প্রমাণ হিসেবে ইলেকট্রনিক ট্র্যাকিংয়ের ডেটা উপস্থাপন করেছেন।
পাকিস্তানের যুদ্ধবিমান ও সামরিক বিমান ভূপতিত হওয়ার বিষয়টি ইলেকট্রনিক ট্র্যাকিংয়ের ডেটা থেকে নিশ্চিত হওয়া গেছে বলে দাবি করেছেন ভারতের প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল এ পি সিং। ইলেকট্রনিক ট্র্যাকিংয়ের ডেটা বলতে রাডার, সেন্সর বা অন্যান্য যন্ত্র থেকে পাওয়া তথ্যকে বোঝায়। এসব তথ্য থেকে কোনো উড়োজাহাজের অবস্থান, গতিপথ, গতি সম্পর্কে জানা যায়।
এ পি সিং বলেন, ‘আমাদের হাতে অন্তত পাঁচটি যুদ্ধবিমান এবং একটি বড় বিমান ধ্বংস হওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত প্রমাণ আছে।’ তিনি আরও জানান, বড় বিমানটি সম্ভবত একটি নজরদারি করছিল। এটিকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার (১৮৬ মাইল) দূর থেকে ভূপতিত করা হয়েছিল।
এ পি সিং আরও বলেন, ‘ভূমি থেকে আকাশে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে বিমান ভূপাতিত করার এখন পর্যন্ত এটাই সবচেয়ে বড় রেকর্ড।’ তাঁর এ কথা শুনে অনুষ্ঠানে উপস্থিত দেশটির বিমানবাহিনীর কর্মকর্তা, অবসরপ্রাপ্ত সদস্য এবং সরকারি ও শিল্প খাতের কর্মকর্তারা করতালি দিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।
পাকিস্তানের ভূপাতিত যুদ্ধবিমানগুলোর ধরন (টাইপ) নিয়ে কিছু জানাননি ভারতের প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল এ পি সিং। তবে, পাকিস্তানের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের দুটি বিমানঘাঁটিতে থাকা আরও কিছু এফ-১৬ যুদ্ধবিমানেও আঘাত করার দাবি করেছেন তিনি।
পাকিস্তান বিমানবাহিনীর বহরে থাকা অধিকাংশ যুদ্ধবিমান চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি। এফ-১৬ যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি করা যুদ্ধবিমান। এদিকে ভারতের সঙ্গে গত ৭ থেকে ১০ মের সংঘাতে নিজেদের কোনো বিমান হারানোর কথা আগেই অস্বীকার করেছে পাকিস্তান।
তবে সংঘাত চলাকালেই পাকিস্তান দাবি করেছিল, তারা ভারতের ছয়টি বিমান ধ্বংস করেছে, যার মধ্যে ফ্রান্সের তৈরি অত্যাধুনিক প্রযুক্তির একটি রাফাল যুদ্ধবিমানও রয়েছে। প্রথমে অস্বীকার করলে পরে কিছু বিমানের ক্ষয়ক্ষতির কথা স্বীকার করে ভারত। কিন্তু ছয়টি বিমান হারানোর কথা তারা বারবার অস্বীকার করেছে।
ফ্রান্সের বিমানবাহিনীর প্রধান জেনারেল জেরোম বেল্লাঞ্জার জানিয়েছিলেন, তিনি ভারতের তিনটি যুদ্ধবিমানে হারানোর প্রমাণ পেয়েছেন। এর মধ্যে একটি রাফাল। তবে তাঁর মন্তব্য নিয়ে ভারতীয় বিমানবাহিনী কোনো মন্তব্য করেনি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ব ম নব হ ন র স ব ক র কর ত ত কর
এছাড়াও পড়ুন:
শেষ জীবনে সন্তানেরাও ছেড়ে চলে যান আলোচিত এই নায়িকার
রাজ কাপুর আর যশ চোপড়ার ছবিতে ছিলেন তিনি; অভিনয় করেছেন রাজেশ খান্না, দেব আনন্দদের মতো তারকাদের সঙ্গে। অথচ ব্যক্তিজীবনে তিনি হয়ে পড়েছিলেন অবহেলিত—সন্তানদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ার পর একাই কাটিয়েছেন জীবনের শেষ ১২ বছর।
অভিনেত্রী অচলা সচদেবের চলচ্চিত্রজীবন যেন সিনেমার মতোই। দেব আনন্দ, রাজ কাপুর, যশ চোপড়া, রাজেশ খান্না—বলিউডের সেরা–সেরাদের সঙ্গে একের পর এক হিট ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। ‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে’-তে কাজলের দাদির চরিত্রে তাঁকেই দেখা গিয়েছিল। আবার ১৯৬৫ সালের ‘ওয়াক্ত’ ছবির অমর গান ‘আয়ে মেরি জোহরা জবীন’-এর নায়িকাও ছিলেন অচলা। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে অন্য অনেক অভিনেত্রীর মতোই তাঁকেও মা-দাদির চরিত্রে সীমাবদ্ধ হতে হয়েছিল, তবু ২০০০-এর দশকের শুরু পর্যন্ত কাজ চালিয়ে গেছেন—করণ জোহরের ‘কাভি খুশি কাভি গম’ ছিল তাঁর শেষ দিকের আলোচিত কাজগুলোর একটি।
পঞ্চাশের দশকে শুরু হওয়া অচলার ছিল দীর্ঘ ক্যারিয়ার; কিন্তু শেষ জীবনটা ভীষণ কষ্টে কাটাতে হয় তাঁকে। পুনের নিজস্ব দুই কামরার ফ্ল্যাটে একাই থেকেছেন এক দশকেরও বেশি সময়, পাশে ছিলেন কেবল এক সেবিকা। দুই সন্তানের কেউই তাঁর খোঁজ নিতেন না। মৃত্যুর আগে নিজের বাড়িটি দান করে দেন একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে। বলিউডের জন্য জীবনের বহু বছর দেওয়া অনেক শিল্পীর মতো তিনিও ছিলেন অবহেলার শিকার।
অচলা সচদেব। আইএমডিবি