গত মে মাসে সামরিক সংঘাত চলার সময় পাকিস্তানের পাঁচটি যুদ্ধবিমান এবং একটি বড় সামরিক বিমান ভূপতিত করার দাবি করেছে ভারত। দেশটির বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল এ পি সিং আজ শনিবার এ দাবি করেন। প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ সামরিক সংঘাতের কয়েক মাস পর দেশটির পক্ষ থেকে এ ধরনের বিবৃতি এটি প্রথম। তবে ভারতের এ দাবি নিয়ে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী তাৎক্ষণিক মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

উল্লেখ্য, গত এপ্রিলে ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে গুলি করে ২৬ পর্যটককে হত্যার পর সংঘাতে জড়ায় দুই প্রতিবেশী দেশ ভারত ও পাকিস্তান। সর্বাত্মক যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গিয়েছিল তারা। চার দিন ধরে সীমান্তে এবং আকাশপথে লড়াইয়ের পর যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপে দুই দেশের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়।

বেঙ্গালুরু শহরে আজ এক অনুষ্ঠানে ভারতের বিমানবাহিনীর প্রধান বলেন, ‘পাকিস্তানের বেশির ভাগ বিমান ভারতের হাতে থাকা রাশিয়ার তৈরি এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্রব্যবস্থা ব্যবহার করে ভূপাতিত করা হয়েছে।’ এ ব্যবস্থায় ভূমি থেকে আকাশে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করা যায়। তিনি তাঁর দাবির প্রমাণ হিসেবে ইলেকট্রনিক ট্র্যাকিংয়ের ডেটা উপস্থাপন করেছেন।

পাকিস্তানের যুদ্ধবিমান ও সামরিক বিমান ভূপতিত হওয়ার বিষয়টি ইলেকট্রনিক ট্র্যাকিংয়ের ডেটা থেকে নিশ্চিত হওয়া গেছে বলে দাবি করেছেন ভারতের প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল এ পি সিং। ইলেকট্রনিক ট্র্যাকিংয়ের ডেটা বলতে রাডার, সেন্সর বা অন্যান্য যন্ত্র থেকে পাওয়া তথ্যকে বোঝায়। এসব তথ্য থেকে কোনো উড়োজাহাজের অবস্থান, গতিপথ, গতি সম্পর্কে জানা যায়।

এ পি সিং বলেন, ‘আমাদের হাতে অন্তত পাঁচটি যুদ্ধবিমান এবং একটি বড় বিমান ধ্বংস হওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত প্রমাণ আছে।’ তিনি আরও জানান, বড় বিমানটি সম্ভবত একটি নজরদারি করছিল। এটিকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার (১৮৬ মাইল) দূর থেকে ভূপতিত করা হয়েছিল।

এ পি সিং আরও বলেন, ‘ভূমি থেকে আকাশে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে বিমান ভূপাতিত করার এখন পর্যন্ত এটাই সবচেয়ে বড় রেকর্ড।’ তাঁর এ কথা শুনে অনুষ্ঠানে উপস্থিত দেশটির বিমানবাহিনীর কর্মকর্তা, অবসরপ্রাপ্ত সদস্য এবং সরকারি ও শিল্প খাতের কর্মকর্তারা করতালি দিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।

পাকিস্তানের ভূপাতিত যুদ্ধবিমানগুলোর ধরন (টাইপ) নিয়ে কিছু জানাননি ভারতের প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল এ পি সিং। তবে, পাকিস্তানের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের দুটি বিমানঘাঁটিতে থাকা আরও কিছু এফ-১৬ যুদ্ধবিমানেও আঘাত করার দাবি করেছেন তিনি।

পাকিস্তান বিমানবাহিনীর বহরে থাকা অধিকাংশ যুদ্ধবিমান চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি। এফ-১৬ যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি করা যুদ্ধবিমান। এদিকে ভারতের সঙ্গে গত ৭ থেকে ১০ মের সংঘাতে নিজেদের কোনো বিমান হারানোর কথা আগেই অস্বীকার করেছে পাকিস্তান।

তবে সংঘাত চলাকালেই পাকিস্তান দাবি করেছিল, তারা ভারতের ছয়টি বিমান ধ্বংস করেছে, যার মধ্যে ফ্রান্সের তৈরি অত্যাধুনিক প্রযুক্তির একটি রাফাল যুদ্ধবিমানও রয়েছে। প্রথমে অস্বীকার করলে পরে কিছু বিমানের ক্ষয়ক্ষতির কথা স্বীকার করে ভারত। কিন্তু ছয়টি বিমান হারানোর কথা তারা বারবার অস্বীকার করেছে।

ফ্রান্সের বিমানবাহিনীর প্রধান জেনারেল জেরোম বেল্লাঞ্জার জানিয়েছিলেন, তিনি ভারতের তিনটি যুদ্ধবিমানে হারানোর প্রমাণ পেয়েছেন। এর মধ্যে একটি রাফাল। তবে তাঁর মন্তব্য নিয়ে ভারতীয় বিমানবাহিনী কোনো মন্তব্য করেনি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ব ম নব হ ন র স ব ক র কর ত ত কর

এছাড়াও পড়ুন:

জি–২০ শীর্ষ সম্মেলন বর্জন করছে যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন, দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিতব্য জি–২০ শীর্ষ সম্মেলনে তিনি কিংবা কোনো মার্কিন কর্মকর্তা অংশগ্রহণ করবেন না। এতে আবার বিতর্কিত ও প্রমাণহীন দাবি উত্থাপন করে ট্রাম্প বলেছেন, দেশটির শ্বেতাঙ্গ কৃষকেরা সরকারের দুর্ব্যবহারের শিকার হচ্ছে। তিনি বলেন, এমনকি দক্ষিণ আফ্রিকার শ্বেতাঙ্গরা হত্যারও শিকার হচ্ছে।

ট্রাম্প এর আগে সেপ্টেম্বরে ঘোষণা করেছিলেন, তিনি আগামী ২২ ও ২৩ নভেম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠেয় জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন না, তবে তাঁর জায়গায় ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স যোগদান করবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ