উচ্চাকাঙ্ক্ষা থেকে মৃত্যুফাঁদ: টাইটান ট্র্যাজেডির অজানা গল্প
Published: 12th, August 2025 GMT
শত বছরের বেশি সময় আগে ডুবে গিয়েছিল টাইটানিক জাহাজ। উত্তর আটলান্টিকের গভীর তলদেশে থাকা এই জাহাজের ধ্বংসাবশেষ দেখতে ২০২৩ সালের ১৮ জুন পাঁচ আরোহী নিয়ে রওনা দিয়েছিল ডুবোযান টাইটান।
রওনার প্রায় ৯০ মিনিট পর ৩ হাজার ৩০০ মিটার গভীরে পানির প্রচণ্ড চাপে টাইটান চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যায়। একই সঙ্গে পাঁচ আরোহীর সবাই নিহত হন। এ ঘটনা সারা বিশ্বের মানুষের সহানুভূতি কেড়েছিল।
কী হয়েছিল, কেন হয়েছিল—এই বিপর্যয় রোধ করা যেত কি না, এমন সব প্রশ্ন ঘিরে তখন শুরু হয় বিতর্ক। প্রাথমিক তদন্তসহ ফাঁস হওয়া নানা তথ্যের ভিত্তিতে প্রকাশিত হতে থাকে সংবাদ প্রতিবেদন। টাইটান ট্র্যাজেডির দুই বছরের মাথায় এই বিপর্যয়ের পূর্ণাঙ্গ চিত্র উঠে এসেছে নেটফ্লিক্সের তথ্যচিত্র ‘টাইটান: দ্য ওশেনগেট সাবমার্সিবল ডিজাস্টার’–এ।
মার্ক মনরো পরিচালিত প্রায় দুই ঘণ্টার তথ্যচিত্রটি গত ১১ জুন মুক্তি পায়। তথ্যচিত্রে উঠে এসেছে, কীভাবে বছরের পর বছর নিরাপত্তার ইস্যুটিকে অবহেলা করা হয়েছে। আপত্তি-উদ্বেগ উপেক্ষা করে চালানো হয়েছে গভীর সমুদ্রে পর্যটন অভিযান। যার শেষ পরিণতি—‘টাইটান বিপর্যয়’।
ডুবোযানটির এই অভিযাত্রায় যাত্রী ছিলেন টাইটান পরিচালনাকারী মার্কিন কোম্পানি ওশানগেটের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) স্টকটন রাশ (৬১), ব্রিটিশ অভিযাত্রী হ্যামিশ হার্ডিং (৫৮), ব্রিটিশ-পাকিস্তানি ধনকুবের শাহজাদা দাউদ (৪৮), তাঁর ছেলে সুলেমান দাউদ (১৯) ও ফরাসি ডুবুরি পল-হেনরি নারগোলেট (৭৭)।
১৯১২ সালে উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরে হিমশৈলর সঙ্গে ধাক্কা লেগে ব্রিটিশ যাত্রীবাহী জাহাজ আরএমএস টাইটানিক ডুবে গিয়েছিল। টাইটানিক–ডুবিতে দেড় হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারায়। ১৯৮৫ সালে উত্তর আটলান্টিকের তলদেশে ৩ হাজার ৮০০ মিটার গভীরে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কৃত হয়। মূলত টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কারের পর গভীর সমুদ্রের পর্যটন ঘিরে বিশ্বজুড়ে আগ্রহ তৈরি হয়।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ট ইট ন ক
এছাড়াও পড়ুন:
হাসপাতালে নেই এন্টিভেনম, ২ সপ্তাহে সাপের কামড়ে মৃত ৫
ঠাকুরগাঁওয়ে সাপের কামড়ে গত দুই সপ্তাহে পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। জেলার হাসপাতালগুলোতে এন্টিভেনম না থাকায় সময়মতো চিকিৎসা না পেয়ে প্রাণ হারাচ্ছেন রোগীরা।
সর্বশেষ শুক্রবার (৮ আগস্ট) রাতে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার সীমান্ত এলাকার বড়পলাশবাড়ী ইউনিয়নের কদমতলা গ্রামের স্কুলছাত্র সাকিবুল ইসলাম (পঞ্চম শ্রেণি) বিষধর সাপের কামড়ে মারা যায়।
জানা যায়, সাপে কামড়ানোর পর তাকে প্রথমে বালিয়াডাঙ্গী, পরে হরিপুর, এরপর ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতাল এবং সবশেষে দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এসব হাসপাতালের কোথাও এন্টিভেনম মজুত ছিল না। পরে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু হয় সাকিবুলের।
সাকিবুলের বাবা ইসরাইল উদ্দীন বলেন, “চারটা হাসপাতালে নিয়েও ভ্যাকসিন পাইনি। কোলের উপরেই ছেলেকে হারালাম। আর যেন কোনো বাবার বুক খালি না হয়, সরকার দ্রুত ব্যবস্থা নিক।”
অন্যদিকে, সাকিবুলের মতো পীরগঞ্জের স্কুলছাত্র তারেক, রাণীশংকৈলের কলেজছাত্র মোকসেদ আলী এবং হরিপুরের গৃহবধূ সম্পা রানীসহ গত দুই সপ্তাহে জেলায় সাপের কামড়ে মারা গেছে অন্তত পাঁচ জন।
সম্পা রানীর স্বামী জিতেন বলেন, “হাসপাতালে ভ্যাকসিন না পেয়ে শেষ পর্যন্ত ওঝার কাছে যেতে হয়েছে। তবুও স্ত্রীকে বাঁচাতে পারিনি। দেড় বছরের সন্তান নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছি।”
স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক আজমুল হক বলেন, “বর্ষার সময়ে সাপের কামড়ের ঘটনা বেশি হয়। প্রতি বছর জেলা ও উপজেলা হাসপাতালগুলোতে ভ্যাকসিন পাঠানো হয় বর্ষা শেষের দিকে। অথচ আগে থেকেই মজুত রাখা উচিত।”
ঠাকুরগাঁও সিভিল সার্জন ডা. মো. আনিছুর রহমান বলেন, “চাহিদা পাঠানোর পরও কেন্দ্রীয় ঔষধাগার থেকে এন্টিভেনম পাওয়া যায়নি। সেখানেও সংকট রয়েছে। চেষ্টা করছি দ্রুত আনার।”
সাপের কামড়ে মৃত্যুর এই ধারাবাহিক ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে গ্রামাঞ্চলে। চিকিৎসক ও সচেতন মহল বলছে, বর্ষার শুরুতেই প্রতিটি উপজেলা ও জেলা হাসপাতালে পর্যাপ্ত এন্টিভেনম সরবরাহ করতে হবে।
ঢাকা/হিমেল/এস