শত বছরের বেশি সময় আগে ডুবে গিয়েছিল টাইটানিক জাহাজ। উত্তর আটলান্টিকের গভীর তলদেশে থাকা এই জাহাজের ধ্বংসাবশেষ দেখতে ২০২৩ সালের ১৮ জুন পাঁচ আরোহী নিয়ে রওনা দিয়েছিল ডুবোযান টাইটান।
রওনার প্রায় ৯০ মিনিট পর ৩ হাজার ৩০০ মিটার গভীরে পানির প্রচণ্ড চাপে টাইটান চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যায়। একই সঙ্গে পাঁচ আরোহীর সবাই নিহত হন। এ ঘটনা সারা বিশ্বের মানুষের সহানুভূতি কেড়েছিল।
কী হয়েছিল, কেন হয়েছিল—এই বিপর্যয় রোধ করা যেত কি না, এমন সব প্রশ্ন ঘিরে তখন শুরু হয় বিতর্ক। প্রাথমিক তদন্তসহ ফাঁস হওয়া নানা তথ্যের ভিত্তিতে প্রকাশিত হতে থাকে সংবাদ প্রতিবেদন। টাইটান ট্র্যাজেডির দুই বছরের মাথায় এই বিপর্যয়ের পূর্ণাঙ্গ চিত্র উঠে এসেছে নেটফ্লিক্সের তথ্যচিত্র ‘টাইটান: দ্য ওশেনগেট সাবমার্সিবল ডিজাস্টার’–এ।

মার্ক মনরো পরিচালিত প্রায় দুই ঘণ্টার তথ্যচিত্রটি গত ১১ জুন মুক্তি পায়। তথ্যচিত্রে উঠে এসেছে, কীভাবে বছরের পর বছর নিরাপত্তার ইস্যুটিকে অবহেলা করা হয়েছে। আপত্তি-উদ্বেগ উপেক্ষা করে চালানো হয়েছে গভীর সমুদ্রে পর্যটন অভিযান। যার শেষ পরিণতি—‘টাইটান বিপর্যয়’।
ডুবোযানটির এই অভিযাত্রায় যাত্রী ছিলেন টাইটান পরিচালনাকারী মার্কিন কোম্পানি ওশানগেটের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) স্টকটন রাশ (৬১), ব্রিটিশ অভিযাত্রী হ্যামিশ হার্ডিং (৫৮), ব্রিটিশ-পাকিস্তানি ধনকুবের শাহজাদা দাউদ (৪৮), তাঁর ছেলে সুলেমান দাউদ (১৯) ও ফরাসি ডুবুরি পল-হেনরি নারগোলেট (৭৭)।
১৯১২ সালে উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরে হিমশৈলর সঙ্গে ধাক্কা লেগে ব্রিটিশ যাত্রীবাহী জাহাজ আরএমএস টাইটানিক ডুবে গিয়েছিল। টাইটানিক–ডুবিতে দেড় হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারায়। ১৯৮৫ সালে উত্তর আটলান্টিকের তলদেশে ৩ হাজার ৮০০ মিটার গভীরে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কৃত হয়। মূলত টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কারের পর গভীর সমুদ্রের পর্যটন ঘিরে বিশ্বজুড়ে আগ্রহ তৈরি হয়।

প্রায় দুই ঘণ্টার তথ্যচিত্রটি গত ১১ জুন মুক্তি পায়.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ট ইট ন ক

এছাড়াও পড়ুন:

সাধারণ থেকে অসাধারণে সঞ্চারণ করতেন সুফিয়া কামাল

সাম্প্রদায়িকতা প্রশ্নে বেগম সুফিয়া কামালের দৃষ্টিভঙ্গি ছিল স্বচ্ছ। তিনি চাইতেন নেতৃত্ব তৈরি হোক সামগ্রিকভাবে। আইয়ুব খানের মুখের ওপরও প্রতিবাদ করার সাহস ছিল তাঁর। তাই ‘জননী সাহসিকা’ সুফিয়া কামালের আদর্শ সব সময়ই গুরুত্বপূর্ণ।

নারীমুক্তি, গণতন্ত্র, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনের পুরোধা কবি সুফিয়া কামালের ২৬তম প্রয়াণদিবস উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণ অনুষ্ঠানে সবার স্মৃতিকথায় উঠে এল এসব কথা। মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ) এবং সাঁঝের মায়া ট্রাস্টের পক্ষ থেকে আয়োজন করা হয় এই স্মরণসভার। ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে সুফিয়া কামালের বাড়ি সাঁঝের মায়ায় আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে ছিল গান, কবিতা ও নাচ।

মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম বলেন, সাম্প্রদায়িকতা প্রশ্নে সুফিয়া কামালের দৃষ্টিভঙ্গি ছিল স্বচ্ছ। আশির দিকে নারায়ণগঞ্জে কান্দুপট্টি উচ্ছেদের সময় কেউ কথা বলেনি, তখন সুফিয়া কামাল নিজে গিয়ে উদ্ধার করেছিলেন অনেককে। সুফিয়া কামালের জীবনব্যাপী যে সাহস, এর তুলনা হয় না। তাঁকে উপলব্ধি করাটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন ফওজিয়া মোসলেম।

এই সাঁঝের মায়া বাড়িতে সুফিয়া কামালকে নানারূপে অনেক মায়ায় দেখার স্মৃতিচারণা করেন মানবাধিকারকর্মী আরমা দত্ত। তিনি বলেন, ‘সুফিয়া কামাল শুধু মানুষ নয়, পশুপাখিকেও ধারণ করতেন।’ সুফিয়া কামাল কেন অক্ষরে অক্ষরে জননী সাহসিকা, সেই ইতিহাস উল্লেখ করতে গিয়ে আইয়ুব খানের মুখের ওপর তাঁর (সুফিয়া কামাল) জবাব দেওয়ার ইতিহাস তুলে ধরেন আরমা।

‘নিজেরা করি’র সমন্বয়কারী খুশী কবির বলেন, আজকের প্রেক্ষাপটে সুফিয়া কামালের সব লেখা গভীরভাবে পাঠ করা দরকার। সেসব লেখা অনুভব করা প্রয়োজন।

'এটা উচ্ছেদ, পুনর্বাসন নয়' সুফিয়া কামালের ২৬তম প্রয়াণদিবস উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণ অনুষ্ঠানে আয়োজক ও অতিথিরা

সম্পর্কিত নিবন্ধ