টিকটকের বিষয়ে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনায় অগ্রগতি, অক্টোবরে শীর্ষ বৈঠক
Published: 20th, September 2025 GMT
টিকটকের বিষয়ে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে আলোচনা এগিয়েছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আগামী ছয় সপ্তাহের মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ায় দুই নেতা মুখোমুখি বৈঠকে মিলিত হবেন বলেও তিনি জানিয়েছেন। বৈঠকে বাণিজ্য, অবৈধ মাদক, ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধসহ নানা বিষয়ে কথা হবে।
প্রায় তিন মাস পর ডোনাল্ড ট্রাম্প ও সি চিন পিংয়ের মধ্যে ফোনালাপ হয়েছে। এতে দুই পরাশক্তির সম্পর্কের টানাপোড়েন কিছুটা কমেছে বলে মনে করা হচ্ছে। বহুল আলোচিত শর্ট ভিডিও অ্যাপটির ভবিষ্যৎ নিয়ে যে চুক্তির আশা করা হচ্ছিল, সে প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে কি না, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
আগামী ৩১ অক্টোবর দক্ষিণ কোরিয়ার গুয়াংজুতে শুরু হতে যাওয়া এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনমিক কো-অপারেশন (অ্যাপেক) ফোরাম চলাকালীন আরও আলোচনা হবে বলেও দুই নেতা সম্মত হয়েছেন।
ট্রাম্প আরও জানান, তিনি আগামী বছরের শুরুর দিকে চীন সফর করবেন এবং সি চিন পিংও পরবর্তী সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে আসবেন। রয়টার্স আগে জানিয়েছিল, দুই পক্ষ এমন এক বৈঠকের পরিকল্পনা করছে।
হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, তিনি টিকটক চুক্তিতে অনুমোদন দিয়েছেন। বিষয়টি এখন আনুষ্ঠানিকতার পর্যায়ে আছে বলেই তিনি মনে করেন। অর্থাৎ টিকটক চুক্তির বিষয়ে যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে।
ট্রাম্প আরও ইঙ্গিত দেন, প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী ফোনালাপে বাণিজ্য, ফেন্টানিল ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে। এদিকে চলতি সপ্তাহে দুই দেশের মধ্যে কাঠামোগত চুক্তি হয়েছে। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের টিকটকের কার্যক্রম মার্কিন প্রতিষ্ঠানের মালিকানায় চলে যেতে পারে।
চুক্তিটি কার্যকর হলে মার্কিন-চীনা বাণিজ্য আলোচনায় বিরল সাফল্য হিসেবে বিবেচিত হবে। এই চুক্তি হলে অনেক বছর ধরে চলমান সমস্যার সমাধান হতে পারে। চুক্তিটি বাস্তবায়িত হলে যুক্তরাষ্ট্রের ১৭ কোটি টিকটক ব্যবহারকারীর ওপর কী প্রভাব ফেলবে এবং বিনিময়ে চীন কী পাবে, সে বিষয়ে এখনো অনেক কিছুই অস্পষ্ট রয়ে গেছে।
হোয়াইট হাউস ও চীনা সরকার এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে রয়টার্সের মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি।
বেইজিং ভরসা করছে সময় ও এই বিষয়ে মানুষ কী মনে করছে তার ওপর। অন্যদিকে ওয়াশিংটন দৌড়াচ্ছে টিকটক-সংক্রান্ত শিরোনাম আর এক শীর্ষ সম্মেলনের পেছনে। থিঙ্কট্যাংক ফাউন্ডেশন ফর ডিফেন্স অব ডেমোক্রেসির জ্যেষ্ঠ গবেষক ক্রেইগ সিঙ্গলটন বলেন, ভবিষ্যতে আরও সাফল্য আসবে, এমন আশা করছেন তাঁরা। বলেছেন, ‘আমার মনে হয়, বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে চীনারা গভীরভাবে সন্তুষ্ট।’
এদিকে ট্রাম্প টিকটক-সংক্রান্ত আইন কার্যকর করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। তাঁর প্রশাসন টিকটকের জন্য নতুন মালিক খুঁজছে। শুধু সে কারণেই নয়, তিনি আরও আশঙ্কা করছেন, অ্যাপটি নিষিদ্ধ করা হলে বিপুলসংখ্যক টিকটক ব্যবহারকারী ক্ষুব্ধ হবেন এবং রাজনৈতিক যোগাযোগে বিঘ্ন ঘটবে।
চুক্তি নিয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন এখনো অমীমাংসিত। এর মধ্যে আছে কোম্পানির সুনির্দিষ্ট মালিকানা কাঠামো কেমন হবে, অ্যাপটির অভ্যন্তরীণ কার্যক্রমে চীন কতটা নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখবে, সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর কাছ থেকে ট্রাম্প কী কী ছাড় চাইবেন কিংবা কংগ্রেস অনুমোদন দেবে কি না, ইত্যাদি।
সাংবাদিকদের উদ্দেশে ট্রাম্প বলেন, সবকিছুই এখনো ঠিক করা হচ্ছে। তাঁকে যখন জিজ্ঞাসা করা হয়, যুক্তরাষ্ট্র না চীন—অ্যাপটির অ্যালগরিদমের নিয়ন্ত্রণ কাদের হাতে থাকবে—এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘সবকিছু আমাদেরই কঠোর নিয়ন্ত্রণে থাকবে।’ মার্কিন সরকার কি টিকটকের পরিচালনা পর্ষদে প্রতিনিধিত্ব রাখবে—এমন প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা সেটা জানাব।’
এ ছাড়া ট্রাম্প ইঙ্গিত দেন, টিকটক অনলাইনে চালু রাখতে মধ্যস্থতা করবে যুক্তরাষ্ট্র এবং এর বিনিময়ে মাশুল নেওয়া হতে পারে। তিনি আরও বলেন, এ ধরনের শর্ত এখনো পুরোপুরি আলোচনায় আসেনি। দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছে, এই মাশুলের পরিমাণ কয়েক শ কোটি ডলার হতে পারে।
রয়টার্স জানিয়েছে, এই চুক্তির মাধ্যমে বাইটড্যান্স থেকে টিকটকের যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সম্পদ মার্কিন মালিকানায় হস্তান্তর করা হবে। চুক্তির বিষয়ে ওয়াকিবহাল সূত্রগুলো বলছে, মার্কিন টিকটক তখনো বাইটড্যান্সের অ্যালগরিদম ব্যবহার করবে।
এই ব্যবস্থাপনা নিয়ে উদ্বিগ্ন আইনপ্রণেতারা মনে করছেন, বেইজিং এ সুযোগে মার্কিনিদের ওপর গুপ্তচরবৃত্তি করতে পারে অথবা অ্যাপের মাধ্যমে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা চালাতে পারে। তবে চীন জানিয়েছে, এই অ্যাপ থেকে হুমকি আসে, এমন কোনো প্রমাণ নেই।
ট্রাম্পের লক্ষ্য চীনের রপ্তানি বাণিজ্যজানুয়ারি মাসে আবার ক্ষমতায় ফেরার পর ট্রাম্প নতুন করে যে শুল্কযুদ্ধ শুরু করেছেন, তার মূল লক্ষ্য চীনের রপ্তানিনির্ভর অর্থনীতির বারোটা বাজানো। পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে চীনও শুল্ক বৃদ্ধি করে। ফলে এপ্রিল মাসে শুল্কের হার তিন অঙ্কে পৌঁছায়। মে মাস থেকে কয়েক দফা সীমিত চুক্তির কল্যাণে এ পাল্টাপাল্টির শুল্কযুদ্ধে সাময়িক বিরতি আসে।
ট্রাম্প এ শুল্ককে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, বাণিজ্যঘাটতি কমানো ও বাণিজ্য ভারসাম্য ঠিক করার উপায় হিসেবে দেখছেন। যদিও অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, এটি অকার্যকর। চীন এখনো যুক্তরাষ্ট্রের তৃতীয় বৃহৎ বাণিজ্য অংশীদার ও সবচেয়ে বড় ঘাটতির উৎস। রাশিয়ার তেল কেনা, তাইওয়ান, দক্ষিণ চীন সাগর ও ফেন্টানিল নিয়ে দুই দেশের টানাপোড়েন অব্যাহত আছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র র ট কটক র
এছাড়াও পড়ুন:
শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ দেবে না ওয়াইম্যাক্স ইলেকট্রোডস
পুঁজিবাজারে ওয়াইম্যাক্স ইলেকট্রোডস লিমিটেডের পরিচালনার পর্ষদ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য লভ্যাংশ না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
২০২৫ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ।
বুধবার (৫ নভেম্বর) ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই-সিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এর আগে মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত কোম্পানিগুলোর পরিচালনা পর্ষদ সভায় সর্বশেষ হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর লভ্যাংশ সংক্রান্ত এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
তথ্য মতে, লভ্যাংশ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত শেয়ারহোল্ডারদের সম্মতি অনুমোদনের জন্য কোম্পানিটির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) আগামী ৩০ ডিসেম্বর হাইব্রড সিস্টেমে অনুষ্ঠিত হবে। আর এ জন্য রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ ডিসেম্বর।
২০২৫ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরের কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ০.০৩ টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা ছিল ০.৭৮ টাকা।
এদিকে কোম্পানিটির ঋণাত্মক শেয়ারপ্রতি নিট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো (এনওসিএফপিএস) দাঁড়িয়েছে (৪৩.৪৪) টাকা হয়েছে। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে কোম্পানিটির ঋণাত্মক শেয়ারপ্রতি নিট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো ছিল (১৪.৫০) টাকা।
আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৩.২৭ টাকায়।
এই করপোরেট ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে এদিন কোম্পানিটির শেয়ারের লেনদেনের কোনো মূল্য সীমা থাকবে না।
ঢাকা/এনটি/ইভা