যেকোনো ‘পুনর্বহাল’ করা নিষেধাজ্ঞা মোকাবিলার মতো প্রস্তুতি ইরানের রয়েছে বলে প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান। শনিবার দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনের সম্প্রচারিত এক বক্তব্যে তিনি এ প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

এর আগে শুক্রবার ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা স্থায়ীভাবে প্রত্যাহার করা হবে কি না, তা নিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হয়। দক্ষিণ কোরিয়া প্রস্তাবটি উত্থাপন করে।

নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্যের মধ্যে ৯টি দেশ প্রস্তাবটির বিপক্ষে ভোট দেয়। শুধু চীন, রাশিয়া, পাকিস্তান ও আলজেরিয়া প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়। দক্ষিণ কোরিয়া নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়ে ভোটদান থেকে বিরত থাকে। ভোটদানে বিরত থাকে গায়ানাও।

রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনে সম্প্রচারিত বক্তব্যে পেজেশকিয়ান বলেন, ‘স্ন্যাপব্যাক’ দিয়ে তারা পথ বন্ধ করে দেয়। কিন্তু মনে রাখতে হবে, মস্তিষ্ক ও চিন্তাধারা তা খুলে দেয় বা নতুন পথ তৈরি করে। প্রসঙ্গত, ‘স্ন্যাপব্যাক’ বলতে কোনো কিছু হঠাৎ পুনরায় ফিরে আসা বা শুরু করাকে বোঝায়।

ইরানের প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ‘তারা আমাদের থামাতে পারবে না। তারা নাতাঞ্জ বা ফর্দো (পারমাণবিক স্থাপনায়) হামলা চালাতে পারে। কিন্তু তারা এটা বোঝে না যে নাতাঞ্জ মানুষই তৈরি করেছে। মানুষই আবার সেটি নতুন করে গড়ে তুলবে।’ গত জুনে ইরানের নাতাঞ্জ বা ফর্দো পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল বিমান হামলা চালিয়েছিল।

শুক্রবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ভোটাভুটির আগে গত মাসে ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের জন্য যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি ৩০ দিনের প্রক্রিয়া শুরু করেছিল। তাদের অভিযোগ, ইরান ২০১৫ সালের চুক্তির শর্ত মানছে না। দেশটিকে পরমাণু অস্ত্র তৈরি থেকে বিরত রাখাই ছিল সেই চুক্তির উদ্দেশ্য।

ইরান বরাবর বলে এসেছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচির উদ্দেশ্য শান্তিপূর্ণ। পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কোনো উদ্দেশ্য তাদের নেই।

ইরানের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘বাড়াবাড়ি রকমের দাবির মুখে আমরা কখনোই নতি স্বীকার করব না। কারণ, পরিস্থিতি বদলে দেওয়ার মতো ক্ষমতা আমাদের আছে।’

আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে যদি তেহরান ও ইউরোপের প্রধান শক্তিগুলোর মধ্যে সমঝোতা না হয়, তাহলে ইরানের ওপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা আবারও কার্যকর হবে।

ইরানের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ও পুনঃ প্রক্রিয়াজাতকরণে নিষেধাজ্ঞা, পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রসম্পর্কিত কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা পুনরায় আরোপ করা হবে। পাশাপাশি দেশটির বৈশ্বিক সম্পদ জব্দ এবং ইরানি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ভ্রমণেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে।

ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে ঘিরে নিরাপত্তা পরিষদ সর্বপ্রথম ২০০৬ সালের ডিসেম্বর দেশটির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। পরবর্তী সময়ে ২০০৭, ২০০৮ ও ২০১০ সালে আরও তিনটি নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।

২০১৫ সালে ছয় বিশ্বশক্তির সঙ্গে চুক্তি করেছিল ইরান, যা জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন (জেসিপিওএ) নামে পরিচিত। চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী দেশগুলো হলো যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, রাশিয়া, চীন ও জার্মানি। এই চুক্তির বিনিময়ে ইরানের ওপর থেকে কিছু নিষেধাজ্ঞা শিথিল করেছিল জাতিসংঘ। ২০১৮ সালে তৎকালীন ট্রাম্প প্রশাসন চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেয়।

আরও পড়ুনইরানের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান, কে কোন পক্ষে ভোট দিল১৯ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রস ত ব য ক তর দ শট র

এছাড়াও পড়ুন:

শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ দেবে না ওয়াইম্যাক্স ইলেকট্রোডস

পুঁজিবাজারে ওয়াইম্যাক্স ইলেকট্রোডস লিমিটেডের পরিচালনার পর্ষদ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য লভ্যাংশ না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

২০২৫ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ।

বুধবার (৫ নভেম্বর) ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই-সিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

এর আগে মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত কোম্পানিগুলোর পরিচালনা পর্ষদ সভায় সর্বশেষ হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর লভ্যাংশ সংক্রান্ত এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

তথ্য মতে, লভ্যাংশ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত শেয়ারহোল্ডারদের সম্মতি অনুমোদনের জন্য কোম্পানিটির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) আগামী ৩০ ডিসেম্বর হাইব্রড সিস্টেমে অনুষ্ঠিত হবে। আর এ জন্য রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ ডিসেম্বর।

২০২৫ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরের কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ০.০৩ টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা ছিল ০.৭৮ টাকা।

এদিকে কোম্পানিটির ঋণাত্মক শেয়ারপ্রতি নিট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো (এনওসিএফপিএস) দাঁড়িয়েছে (৪৩.৪৪) টাকা হয়েছে। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে কোম্পানিটির ঋণাত্মক শেয়ারপ্রতি নিট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো ছিল (১৪.৫০) টাকা।

আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৩.২৭ টাকায়।

এই করপোরেট ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে এদিন কোম্পানিটির শেয়ারের লেনদেনের কোনো মূল্য সীমা থাকবে না।

ঢাকা/এনটি/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ