ডেটিং-অ্যাপ দুনিয়ায় বিপ্লব ঘটানো নাম হুইটনি ওলফ হার্ড। টিন্ডার অ্যাপের সহপ্রতিষ্ঠাতা ছিলেন হুইটনি, পরে সেই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করে খবরের শিরোনামে আসেন। মামলা, হুমকি, অপবাদ আর পুরুষতান্ত্রিক করপোরেট সংস্কৃতির ভেতরেও হাল ছাড়েননি তিনি। বরং নিজের ভাঙন থেকেই গড়ে তুলেছেন নতুন সাম্রাজ্য—বাম্বল। সেই সিদ্ধান্তই তাঁকে বানিয়েছে বিশ্বের কনিষ্ঠতম স্বোপার্জিত নারী কোটিপতি। হুইটনির বৈচিত্র্যময় জীবনের গল্প নিয়ে তৈরি হয়েছে ওয়েব সিনেমা ‘সোয়াইপড’। টরন্টো উৎসবে প্রিমিয়ারের পর ১৯ সেপ্টেম্বর হুলুতে মুক্তি পেয়েছে সিনেমাটি। র‍্যাচেল লি গোল্ডেনবার্গের সিনেমাটিতে হুইটনির চরিত্রে অভিনয় করেছেন লিলি জেমস।

টিন্ডারের সূচনা
২০১২ সালে যৌথভাবে টিন্ডার প্রতিষ্ঠা করেন হুইটনি। তরুণ প্রজন্মের জন্য সহজে ব্যবহারযোগ্য অ্যাপ বানানোর আইডিয়া তখনো নতুন। নামকরণ, বিপণন কৌশল আর অ্যাপটিকে জনপ্রিয় করতে ক্যাম্পাস থেকে ক্যাম্পাসে ছুটে বেড়ানো—সব একা হাতে করেছেন হুইটনি। সিনেমার একটি দৃশ্যে দেখা যায়, হুইটনি কীভাবে শিক্ষার্থীদের কাছে অ্যাপ ব্যবহার করতে অনুরোধ করছেন। তাঁর পরিশ্রম বৃথা যায়নি; দ্রুতই তরুণদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে টিম্বার।

সোয়াইপড–এর দৃশ্য। ছবি: আইএমডিবি.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: হ ইটন

এছাড়াও পড়ুন:

ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি কমাতে চালাতে হবে সাইকেল

সাইকেল চালানো শরীরের জন্য ভালো। পকেটের ওপরও চাপ কমায়। সম্প্রতি করা এক গবেষণায় সাইকেল চালানোর উপকারিতার তালিকা আরও দীর্ঘ হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, চলাচলের জন্য কেউ যদি গাড়ির বদলে সাইকেল বেছে নেন, তবে তা মস্তিষ্কের বিভিন্ন জটিলতা কমানোর ক্ষেত্রেও বেশ কাজে আসে।

এই গবেষণা করেছে যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য গবেষণাবিষয়ক তথ্যের সবচেয়ে বড় ভান্ডার ‘ইউকে বায়োব্যাংক’। সম্প্রতি গবেষণাটি জেএএমএ নেটওয়ার্ক ওপেন সাময়িকীতে প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, প্রাইভেট কার, বাস, ট্রেনে ভ্রমণের চেয়ে সাইকেল ব্যবহার করলে ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি ১৯ শতাংশ এবং আলঝেইমার রোগের ঝুঁকি ২২ শতাংশ পর্যন্ত কমে।

ডিমেনশিয়া বলতে মস্তিষ্কের চিন্তাশক্তি, স্মৃতিশক্তি ও কাজ করার ক্ষমতা হ্রাসকে বোঝায়। বিভিন্ন রোগের কারণে ডিমেনশিয়া হতে পারে। এমন একটি রোগ হলো আলঝেইমার। যুক্তরাজ্যের জাতীয় স্বাস্থ্যসেবার (এনএইচএস) তথ্য অনুযায়ী, মস্তিষ্কের কোষের ভেতরে ও আশপাশে অস্বাভাবিকভাবে প্রোটিন জমলে আলঝেইমার হতে পারে।

এই গবেষণায় ২০০৬ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত প্রায় ৪ লাখ ৮০ হাজার মানুষ অংশ নেন। তাঁদের গড় বয়স ছিল সাড়ে ৫৬ বছর। গবেষণায় যাতায়াতের চারটি বিকল্প তুলে ধরা হয়। অংশগ্রহণকারীদের কাছে জানতে চাওয়া হয়—বিগত চার সপ্তাহে যাতায়াতের জন্য তাঁরা কোন বিকল্পটি সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করেছেন।

যাতায়াতের ওই বিকল্পগুলোর মধ্যে ছিল—একেবারেই সক্রিয় না থাকা, অর্থাৎ বাস বা ট্রেনে করে যাতায়াত করা। আরেকটি ছিল হেঁটে যাতায়াত। তৃতীয় বিকল্পটি ছিল হাঁটা ও সক্রিয় থাকা লাগে না—এমন সব মাধ্যম ব্যবহার করে যাতায়াত। আর শেষ ধরনটি ছিল সাইকেল চালিয়ে এবং অন্য ধরনগুলো ব্যবহার করে যাতায়াত।

গবেষণায় অংশগ্রহণকারীরা নিজেদের যাতায়াতের ধরনগুলো নির্বাচন করার ১৩ বছরের বেশি সময় পর দেখা যায়, ৮ হাজার ৮৪৫ জনের মস্তিষ্কে ডিমেনশিয়া দেখা দিয়েছে। আর ৩ হাজার ৯৫৬ জন আলঝেইমারে আক্রান্ত। এ ছাড়া যাঁরা যাতায়াতের ক্ষেত্রে হাঁটাহাঁটির ওপর ভরসা করেন, তাঁদের ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি ৬ শতাংশ কম।

গবেষণায় সাইকেল চালানোর ফলে ডিমেনশিয়া ও আলঝেইমারের ঝুঁকি কমার প্রমাণও পাওয়া গেছে। এ–ও দেখা গেছে যে মস্তিষ্কের হিপোক্যাম্পাস নামক অংশের তুলনামূলক বড় আয়তনের সঙ্গে সাইকেল চালানোর সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। মস্তিষ্কের এই অংশে স্মৃতি সংরক্ষণ থাকে এবং কোনো কিছু শেখার সঙ্গে জড়িত।

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের স্টোনি ব্রুক ইউনিভার্সিটির স্নায়ুবিদ্যা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক জো ভারগেস বলেন, দশকের পর দশক ধরে চালানো গবেষণায় দেখা গেছে, ব্যায়াম মস্তিষ্কের জন্য ভালো। সাইকেল চালানো হৃৎপিণ্ড সুস্থ রাখে এবং মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল ও পরিপাকের সক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এতে করে হয়তো ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি কমে। তবে কেউ যদি সাইকেল চালানো শুরু করতে চান, তাহলে আগে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করতে হবে। দেখে নিতে হবে তিনি এখনই সাইকেল চালানো শুরু করার জন্য যথেষ্ট সুস্থ কি না। নাকি এর জন্য আগে নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ