সম্প্রতি বিভিন্ন দেশে, বিশেষ করে ভারতের কেরালায় এই অ্যামিবার সংক্রমণে বেশ কয়েকজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে বিভিন্ন গণমাধ্যমে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য উদ্বেগজনক।

ফলে উষ্ণ মিঠাপানিতে বেড়ে ওঠা প্রাণঘাতী জীবাণুটি নিয়ে স্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞরা সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।

২০১৮ সালে বাংলাদেশে ‘ব্রেন ইটিং অ্যামিবা’র প্রথম স্বীকৃত রোগী হিসেবে ১৫ বছরের এক কিশোরকে শনাক্ত করা হয়েছিল।

কীভাবে ছড়ায়

এই অ্যামিবা উষ্ণ পানির মাধ্যমে ছড়ালেও সরাসরি পানি পান করার ফলে বা একজন থেকে আরেকজনের মধ্যে বা হাঁচি–কাশি দিয়ে ছড়ায় না। বরং নাক দিয়ে দূষিত পানি প্রবেশ করলে অ্যামিবাটি ঘ্রাণ স্নায়ুর মাধ্যমে মস্তিষ্কে পৌঁছায় এবং দ্রুত সংক্রমণ ঘটায়।

আরও পড়ুনফল খাওয়ার পর পানি খেলে কী হয়২৮ এপ্রিল ২০২৫লক্ষণ

প্রাথমিকভাবে তীব্র মাথাব্যথা, জ্বর, বমি ও ঘাড় শক্ত হয়ে যায়। চিকিৎসা শুরু না হলে বা অনেক ক্ষেত্রে হলেও দ্রুত অবস্থা খারাপ হয়ে খিঁচুনি, ভারসাম্যহীনতা, হ্যালুসিনেশন, ঘ্রাণ না পাওয়া, ঝাপসা দৃষ্টি, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, কোমায় চলে যাওয়া, এমনকি কয়েক দিনের মধ্যে রোগীর মৃত্যু হতে পারে। চিকিৎসা না পেলে মৃত্যুহার ৯৬-৯৮ শতাংশ।

চিকিৎসা

সংক্রমণ অত্যন্ত মারাত্মক হলেও কিছু ক্ষেত্রে অ্যান্টিফাঙ্গাল ও অ্যান্টিবায়োটিকের যৌথ প্রয়োগে রোগী সুস্থ হয়। সাধারণত অ্যামফোটেরিসিন বি, মিল্টেফোসাইন, ফ্লুকোনাজোল, রিফাম্পিন ইত্যাদি ওষুধের যৌথ ব্যবহার করা হয়। তবে দ্রুত শনাক্তকরণ ও চিকিৎসা শুরু করাই একমাত্র ভরসা।

আরও পড়ুনডাবের পানি সবার জন্য নয়, কারা এবং কেন অবশ্যই এড়িয়ে চলবেন১৪ আগস্ট ২০২৫প্রতিরোধ

অজানা বা অপরিষ্কার উষ্ণ পানিতে সাঁতার না কাটা।

নাক দিয়ে পানি প্রবেশ এড়াতে নাক ক্লিপ ব্যবহার বা হাত দিয়ে নাক বন্ধ করা।

নাক পরিষ্কারে ফুটানো বা ফিল্টার করা পানি ব্যবহার করা।

সুইমিংপুলে নিয়মিত পরিমাণমতো ক্লোরিন দেওয়া।

বাংলাদেশের জন্য ঝুঁকি

বাংলাদেশের আবহাওয়া উষ্ণ ও আর্দ্র এবং অনেক জায়গায় অপরিষ্কার জলাশয় বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হয়। তাই ঝুঁকি পুরোপুরি উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

যদিও এখনো এ সংক্রমণ খুব বিরল, তবে জলবায়ু পরিবর্তন ও তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে ভবিষ্যতে এর ঝুঁকি বাড়তে পারে। সতর্কতা অবলম্বন করলেই মারাত্মক এই সংক্রমণ থেকে নিরাপদ থাকা সম্ভব।

আরও পড়ুনঅতিরিক্ত গরমে প্লাস্টিকের বোতলে পানি বহন করা কি নিরাপদ১২ মে ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ক রমণ ব যবহ

এছাড়াও পড়ুন:

চাঁদপুরে বিলে শাপলা তুলতে গিয়ে পানিতে ডুবে মৃত্যু

চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলায় বিলে শাপলা তুলতে গিয়ে পানিতে ডুবে মিজানুর রহমান (৪৫) নামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। গতকাল রোববার বিকেলে উপজেলার উপাদী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

মারা যাওয়া মিজানুর রহমান ওই এলাকার মৃত শিক্ষক আবদুর রহিমের মেজ ছেলে। তিনি উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সফিকুল ইসলামের ছোট ভাই। এক ছেলে ও এক মেয়ের বাবা মিজানুর মানসিক প্রতিবন্ধী ছিলেন।

পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গতকাল বিকেল পাঁচটার দিকে মিজানুর রহমান বাড়ির পাশে একটি বিলে শাপলা তুলতে যান। এরপর তিনি আর ফেরেননি। গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত বাড়ি না ফেরায় স্বজনেরা বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করেও তাঁর হদিস পাননি। এরপর খুঁজতে খুঁজতে গতকাল রাত ৯টায় ওই বিলের পানিতে তাঁর ভাসমান মরদেহ দেখতে পান স্বজনেরা। পরে তাঁরা মরদেহ উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসেন।

মিজানুর রহমানের বড় ভাই সফিকুল ইসলাম বলেন, তাঁর ভাই মানসিক ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ছিলেন। খুব সহজ-সরল স্বভাবের মানুষ ছিলেন তিনি। সাঁতার জানতেন না। ভাইয়ের মৃত্যুতে পরিবার গভীর শোকাহত।

মতলব দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালেহ আহাম্মদ বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়েছিল। এ ঘটনায় থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ বা মামলা হয়নি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ