রাকসু নির্বাচন পেছাবে কি না সিদ্ধান্ত বিকেলে
Published: 22nd, September 2025 GMT
শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ডাকা কম্পলিট শাটডাউনের মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেট প্রতিনিধি ভোট পিছিয়ে দেওয়া হবে কি না সে সিদ্ধান্ত সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নেবে নির্বাচন কমিশন। বিকেল ৫টায় নির্বাচন কমিশন এ ব্যাপারে সভা ডেকেছে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. এফ নজরুল ইসলাম দুপুর দেড়টায় সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এ তথ্য জানিয়েছেন।
আরো পড়ুন:
দুর্গাপূজার পরে রাকসু নির্বাচন চায় ছাত্রদল
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সোমবার থেকে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’
তিনি বলেন, “বিকেলে নির্বাচন কমিশনের সভা ডাকা হয়েছে। শিক্ষক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের শাটডাউন কর্মসূচির কারণে যদি নির্বাচনের পরিবেশ না থাকে, তাহলে সে বিষয়ে কমিশনে আলোচনা হবে। আগামী ২৫ সেপ্টেম্বরই ভোট গ্রহণ হবে কিনা সে সিদ্ধান্তই সভায় নেওয়া হবে।”
প্রধান নির্বাচন কমিশনার ব্রিফ করার আগে সচেতন শিক্ষার্থী সংসদ, রাকসু ফর র্যাডিকাল চেঞ্জ, সর্বজনীন শিক্ষার্থী সংসদ ও ইউনাইটেড ফর রাইটস প্যানেলের প্রার্থীরা তাকে একটি স্মারকলিপি দেন। এতে তারা উল্লেখ করেন, পোষ্য কোটা ইস্যুতে শিক্ষক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের চলমান আন্দোলন কর্মসূচির মধ্যে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হতে পারে না। তারা এ বিষয়টি বিবেচনার জন্য নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ জানান।
এর আগে, আজ দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মাকেটে প্যানেল চারটির পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সেখানে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সর্বজনীন শিক্ষার্থী সংসদের ভিপি প্রার্থী ও সাবেক সমন্বয়ক তাসিন খান।
তিনি বলেন, “আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর রাকসু নির্বাচন উপলক্ষ্যে আমরা সবাই উৎসবমুখর পরিবেশে প্রচারণা করছিলাম। পোষ্য কোটাকে সামনে এনে বিশ্ববিদ্যালয়ে যে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি হয়েছে সেখানে ছাত্র, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী সবাই পরষ্পরের মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে, যা আমাদের কখনোই কাম্য নয়। রাকসু আমরা চাই, রাকসু দিতে হবেই। নির্বাচন কোনোভাবেই বন্ধ করা চলবে না। নির্বাচনের প্রাণ শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ না হলে সেই নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবেই।”
তাসিন বলেন, “পোষ্য কোটা ইস্যুতে ক্যাম্পাস কমপ্লিট শাটডাউনের শিক্ষার্থীরা অলরেডি বাসায় যাওয়া শুরু করেছে। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দুর্গাপূজা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ ছুটির পাশাপাশি অনাকাঙ্ক্ষিত এই কমপ্লিট শাটডাউন আমাদের সব প্যানেলের, সব সতন্ত্র প্রার্থীর প্রচারণায় বাঁধা হয়ে দাড়িয়েছে এবং দীর্ঘ ৩৫ বছর পর হতে যাওয়া রাকসু নির্বাচনকে সরাসরি প্রশ্নবিদ্ধ করবে।”
তিনি বলেন, “আমরা চাই শান্তিপূর্ণ, আনন্দমুখর পরিবেশে রাকসু নির্বাচন যা শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের নিয়েই সম্ভব যে পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় এখন নেই। বিশ্ববিদ্যালয়কে কমপ্লিট শাটডাউনে রেখে কোনোভাবে রাকসু নির্বাচন হতে পারে না। এটা সুস্পষ্ট রাকসু নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র।”
সংবাদ সম্মেলন থেকে বলা হয়, রাকসু নির্বাচন হতে হবে এবং কোনোভাবে সেটা প্রশ্নবিদ্ধ করা যাবে না। তবে ক্যাম্পাস শাটডাউন, ক্লাস অফ রেখে শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাস বিমুখ রেখে কোনোভাবে রাকসু নির্বাচন হতে পারে না। সবার অংশগ্রহণে সুষ্ঠু রাকসু নির্বাচন হবার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অতি দ্রুত পোষ্য কোটা ইস্যু মিমাংসা করে ক্যাম্পাসের স্থিতিশীল পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে।
তাসিন বলেন, “লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড রেখে রাকসু নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে। আমরা কোনোভাবে আমাদের প্রাণের রাকসু নির্বাচনকে একতরফা নির্বাচন হতে দিতে চাই না। ক্যাম্পাসের অস্থিতিশীল পরিবেশ, কমপ্লিট শাটডাউন, পূজার ছুটি সব কিছু বিবেচনা করে রাকসু নির্বাচন কমিশনারকে পরবর্তী পদক্ষেপ অতি দ্রুত নিতে হবে।”
সংবাদ সম্মেলনে এই প্যানেলগুলোর তাপসি রাবেয়া, সোহরাওয়ার্দী হল, জিয়া হল, বিজয় ২৪ হল ও সৈয়দ আমির আলি হলের প্রার্থীরাও উপস্থিত ছিলেন।
রাকসু নির্বাচনে মোট ১১টি প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। এর মধ্যে চারটি প্যানেল শাটডাউনের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে স্মারকলিপি দিল।
ঢাকা/কেয়া/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কর মকর ত পর ব শ র পর ব
এছাড়াও পড়ুন:
দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ছাত্রী সালমার স্বপ্নপূরণে ডিসি জাহিদুলের সহায়তা
বেসরকারি প্রাইম ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ছাত্রী সালমা জেরিনের হাতে একটি ল্যাপটপ তুলে দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাক জাহিদুল ইসলাম মিঞা
বাবাহীন এই মেধাবী শিক্ষার্থীর পরিবারের আর্থিক অবস্থা অত্যন্ত সংকটপূর্ণ।
তার মা জটিল কিডনি রোগে আক্রান্ত, আর তিন ভাইবোনই দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। ফলে সালমার পড়ালেখার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ জোগাড় করা তার পরিবারের পক্ষে সম্ভব হচ্ছিল না।
নারায়ণগঞ্জের বাসিন্দা সালমা জানান, নিয়মিত শ্রুতিলিপি লেখা, অনলাইন ক্লাস ও পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য একটি ল্যাপটপ তার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছিল।
তিনি দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন সংস্থা ও স্বচ্ছল ব্যক্তিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছেন, তবে আশ্বাস ছাড়া কেউ সহযোগিতা করেননি।
জেলা প্রশাসকের মানবিক কার্যক্রমের কথা শুনে তিনি আজ বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে দেখা করেন। ব্যস্ত সময়সূচির মধ্যেও জেলা প্রশাসক দীর্ঘক্ষণ সময় দেন সালমাকে এবং তার পরিবারের দুরবস্থার কথা মনোযোগ দিয়ে শোনেন।
এরপর জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে অত্যাধুনিক একটি ল্যাপটপ সালমা জেরিনের হাতে তুলে দেন জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিঞা।
ল্যাপটপ পেয়ে উচ্ছ্বসিত সালমা জেরিন বলেন,“আমাদের পরিবারের আর্থিক দুরবস্থার কারণে আমার পক্ষে নিজে থেকে একটি ল্যাপটপ কেনা সম্ভব ছিল না। ডিসি স্যার ল্যাপটপ সরবরাহ করায় আমার শিক্ষাজীবন ও ভবিষ্যৎ কর্মসংস্থানের পথ সহজ হবে।”
সালমার মেধা ও অধ্যবসায়ের প্রশংসা করে জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম বলেন, “সালমা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন হয়েও ইংরেজি বিষয়ের মতো কঠিন বিষয়ে পড়াশোনা করছে এবং তার ফলাফল অত্যন্ত ভালো।
সমাজে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের পাশে আমাদের সবাইকে দাঁড়ানো উচিত। তারা সমাজের বোঝা নয়, বরং সম্পদ। সালমা, তুমি নিজেকে কখনো অসহায় ভাববে না—আমরা তোমার পাশে আছি।”
একই অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক স্থানীয় সাংবাদিকদের পেশাগত কাজে ব্যবহারের জন্য দুইটি অত্যাধুনিক কম্পিউটার ও প্রিন্টার উপহার দেন।
তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, “মাদকবিরোধী গণসচেতনতা তৈরি ও মাদক প্রতিরোধে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে। পাশাপাশি সমাজে ঘটে যাওয়া ভালো ঘটনাগুলোও তুলে ধরতে হবে। আমরা সবাই উন্নত দেশ, শহর ও জীবন চাই, কিন্তু নাগরিক হিসেবে উন্নত মানসিকতা গড়ে তোলাও জরুরি।”
তিনি আরও বলেন,“বিদেশি সংবাদপত্রের প্রথম পাতায় কোনো নেতিবাচক খবর থাকে না। আমাদের দেশেও অপরাধের খবর অবশ্যই প্রকাশ করতে হবে, তবে সমাজের ইতিবাচক দিকগুলো তুলে ধরলে মানুষ অনুপ্রাণিত হবে।”
এ সময় উপস্থিত সাংবাদিকরা জেলা প্রশাসকের ‘গ্রীন অ্যান্ড ক্লিন নারায়ণগঞ্জ’ উদ্যোগ ও নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত মেট্রোরেল সম্প্রসারণে তার প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা নাঈমা ইসলাম এবং জেলা প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।