গকসু: শেষ সময়ে গানে–স্লোগানে জমে উঠেছে প্রচার
Published: 23rd, September 2025 GMT
ঢাকার সাভারের বংশী নদীর তীর ঘেঁষে ৩২ একরে বিস্তৃত গণ বিশ্ববিদ্যালয় (গবি)। কখনো বাদামতলার ছায়াঘেরা গাছতলায়, কখনো একাডেমিক ভবনের করিডরে কিংবা ট্রান্সপোর্ট চত্বরে—যেদিকেই তাকানো যায়, কানে ভেসে আসে সুর আর স্লোগান।
কেউ হাতে গিটার, কেউ দোতারা বা ডুগডুগি বাজাচ্ছেন, আর আশপাশে দাঁড়িয়ে থাকা সমর্থকেরা তালমিলিয়ে গাইছেন। দীর্ঘ ৭ বছর পর গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (গকসু) নির্বাচনের আমেজে এমন প্রাণচাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে।
আরো পড়ুন:
রাকসু নির্বাচন পেছানোয় ক্যাম্পাস ছাড়ছেন শিক্ষার্থীরা
গকসু নির্বাচনে পিছিয়ে নেই নারীরা
আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ভোট। এর আগে প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে চলেছে জোরদার প্রচার। শেষ দিন মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) এসে সেই প্রচার যেন রূপ নিয়েছে রঙিন উৎসবে।
বাংলা ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের করিডোরে ঢুকলেই চোখে পড়ে একদল শিক্ষার্থীকে। সামনে হাঁটছেন এক প্রার্থী, হাতে ছোট বাদ্যযন্ত্র। পাশে দাঁড়িয়ে সমর্থকেরা দোহার দিচ্ছেন।
সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদপ্রার্থী মারুফের কণ্ঠে গানের সুরে শোনা গেল, “২৫ তারিখে সারাদিন ভাই, ২৮ নম্বর ব্যালটে ভোট দিবেন সবাই।” চারপাশের শিক্ষার্থীরাও থমকে দাঁড়িয়ে শুনছেন। অনেকেই হাততালি দিয়ে উৎসাহ যোগাচ্ছেন।
অন্যদিকে, বাদামতলার বেঞ্চে বসে আরেক প্রার্থী ও সমর্থক। কারো হাতে লিফলেট, কেউবা গিটার বাজাচ্ছেন। গানের সুরে সুর মিলিয়ে চলেছেন সহ-সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদপ্রার্থী লীশা চাকমা ও তার সমর্থকরা। চারপাশে জড়ো হওয়া শিক্ষার্থীরা মুগ্ধ শ্রোতার মতো তাকিয়ে শুনছেন।
বাদামতলা থেকেই প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী চাঁদনী বললেন, “এভাবে গান দিয়ে প্রচারণা খুব সুন্দর লাগছে। গত কয়দিন টানা শুধু লিফলেট বিতরণ ও ইশতেহার ঘোষণার পর আজ প্রচারের এই ধরণ ক্যাম্পাসে এক ধরনের উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি করেছে। এটা শুধু প্রচার নয়, বরং বন্ধুত্বপূর্ণ এক পরিবেশ তৈরি করছে।”
এবারে আলোচনার কেন্দ্রে এসেছে এই গানে–গানে প্রচার। কেবল স্লোগান নয়, প্রার্থীরা গানের ছন্দে নিজের পরিকল্পনা, ইশতেহার ও স্বপ্ন তুলে ধরছেন। প্রতিদ্বন্দ্বীরা একত্রিত হয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে গানের সুরে সুর মেলাচ্ছেন। এ দৃশ্য যেন উৎসবে মেতেছে পুরো বিশ্ববিদ্যালয়।
প্রার্থীরা বলেন, আমরা চাই প্রচারণা হোক ইতিবাচক ও পরিবেশবান্ধব। এতদিন লিফলেট ও জনসংযোগের পর আজ প্রচারণার শেষ সময়ে ক্যাম্পাসে উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি করে গান ও আলাপে শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করেছি।
প্রচারের শেষ সময়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে কৌতূহল ও উত্তেজনা দুই-ই দেখা যাচ্ছে। কেউ বলছেন, অনেকদিন পর ক্যাম্পাসে এমন প্রাণবন্ত পরিবেশ এসেছে। আবার কেউ মনে করছেন, প্রার্থীরা যেন শুধু গানেই সীমাবদ্ধ না থেকে বাস্তবে প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেন।
দুপুর গড়াতেই জমে উঠে ট্রান্সপোর্ট চত্বর। হঠাৎ করে জায়গাটা যেন পরিণত হলো ছোট্ট কনসার্টে। কেউ গাইছে, কেউ গিটার বাজাচ্ছে, আবার কেউ নেচে উঠছে তালে তালে। প্রতিদ্বন্দী-সমর্থকরাও কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে গেয়ে উঠছেন একই সুরে। ক্যাম্পাসে যে সাধারণ দিনগুলোতে থাকে নিস্তব্ধতা, আজ সেখানে ভেসে বেড়াচ্ছে প্রাণের উচ্ছ্বাস।
আইন বিভাগের শিক্ষার্থী সোহেল রানা বলেন, “৭ বছর পর নির্বাচন হচ্ছে। তাই প্রার্থীরা যত প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন, এগুলো বাস্তবায়ন করতে পারলে শিক্ষার্থীরাই উপকৃত হবে। আমরা চাই, নির্বাচিত পরিষদ শিক্ষার্থীদের সকল সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নিক। শুধু প্রচারণার গান নয়, কাজেও সেটা প্রতিফলিত হোক।”
এখন সবার চোখ ২৫ সেপ্টেম্বরে। সেই দিনেই জানা যাবে, গানে–স্লোগানে মেতে ওঠা প্রার্থীদের মধ্যে কাকে বেছে নিচ্ছেন গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
ঢাকা/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গকস পর ব শ
এছাড়াও পড়ুন:
ধর্মের মর্মবাণী মানব কল্যাণ, শান্তি ও দেশপ্রেম: নৌপরিবহন উপদেষ্টা
নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, সকল ধর্মের মর্মবাণী মানব কল্যাণ, শান্তি ও দেশপ্রেম।
রবিবার ( ২১ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর গুলশান-বনানী সার্বজনীন পূজা ফাউন্ডেশন কর্তৃক শুভ মহালয়া ১৪৩২ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে দেশের কল্যাণে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘‘সকল ধর্মই আমাদের অন্যায়, অবিচার ও অনাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করার প্রেরণা যোগায়। আমাদের আত্মশুদ্ধির সুযোগ করে দেয়। মানবসেবা ও দেশাত্মবোধের চেতনাকে উদ্বুদ্ধ করে।’’
শারদীয় দুর্গোৎসবকে বাংলাদেশের সার্বজনীন উৎসব উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, ‘‘আবহমানকাল ধরে শারদীয় দুর্গাপূজা বাংলাদেশসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশে সাড়ম্বরে উদযাপিত হয়ে আসছে। এটি শুধু হিন্দু সম্প্রদায়ের নয়, বাংলাদেশের সকলের উৎসব। এ উৎসব উদযাপনের মাধ্যমে মানুষে মানুষে নিবিড় বন্ধন রচিত হয়, সমাজের সকল মানবসৃষ্ট ভেদাভেদ, বৈষম্য দূরীভূত হয় এবং সকলের মধ্যে সহমর্মিতা ও ভ্রাতৃত্ববোধ জাগরিত হয়।’’
দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে নৌপরিবহন উপদেষ্টা এ সময় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় এ ধর্মীয় উৎসব আনন্দমুখর পরিবেশ ও শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে সরকারের পক্ষ থেকে সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে মর্মে তিনি আশ্বাস প্রদান করেন। একইসঙ্গে দুর্গোৎসবকে কেন্দ্র করে যেন কোনো স্বার্থান্বেষী মহল অপচেষ্টা চালাতে না পারে সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেন।
অনুষ্ঠানে গুলশান-বনানী সার্বজনীন পূজা ফাউন্ডেশনের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ অন্যান্য সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/এএএম//