সব নির্মাতাকে কি লাইভস্ট্রিমার বানাতে চাইছে ইউটিউব
Published: 24th, September 2025 GMT
বিশ্বব্যাপী বিনোদনজগতে এখন সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম ইউটিউব। দর্শক কোন ধরনের আধেয় বা কনটেন্ট দেখবেন কিংবা নির্মাতারা কী বানাবেন—এসব ক্ষেত্রেও প্রভাবশালী ভূমিকা রাখছে প্রতিষ্ঠানটি। যেমন ইউটিউব যখন ভিডিওর মাঝপথে বিজ্ঞাপন চালু করল, তখন ভিডিওর দৈর্ঘ্যও বাড়তে শুরু করল। আবার যখন পডকাস্ট নির্মাতাদের ভিডিও বানাতে উৎসাহিত করা হলো, তখন তাঁরাও ভিডিও নির্মাণে ঝুঁকলেন। ধারণা করা হচ্ছে, ইউটিউবের পরবর্তী লক্ষ্য হলো সব নির্মাতাকে লাইভস্ট্রিমিংয়ে যুক্ত করা।
গত সপ্তাহে অনুষ্ঠিত ‘মেড অন ইউটিউব’ অনুষ্ঠান ঘিরে নানা তথ্য তুলে ধরেন দ্য ভার্জের সাংবাদিক মিয়া সাতো। দ্য ভার্জকাস্টের এক পর্বে তিনি বলেন, লাইভ কনটেন্ট ইউটিউবের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। তবে একই সঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, দর্শকদের ধরে রাখা ও লাইভস্ট্রিমিং জনপ্রিয় করে তোলা এখনো বেশ কঠিন চ্যালেঞ্জ। চলতি বছর ইউটিউবের আরেকটি বড় মনোযোগের জায়গা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই)। মিয়া সাতোর বিশ্লেষণে উঠে এসেছে, এআই হয়তো ইউটিউবকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে পারে। আবার এটিকে একেবারেই অনাকর্ষণীয় করে দেওয়ার ঝুঁকিও রয়েছে। ফলে প্ল্যাটফর্মটির ভবিষ্যৎ একই সঙ্গে সম্ভাবনা ও শঙ্কা দুটিই বয়ে আনতে পারে।
অনুষ্ঠানের পরবর্তী অংশে প্রচারিত হয় বিশেষ আয়োজন ‘সামার টেকস’–এর দ্বিতীয় ও শেষ পর্ব। সেখানে ডেভিড নানা বিতর্কিত মতামত তুলে ধরেন। পডকাস্ট শোনার গতি, ফোনকল, থ্রেডসসহ আরও কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। দ্য ভার্জের জেক ক্যাস্ট্রেনাকস ও হেইডেন ফিল্ড তাঁর কিছু মতের সঙ্গে একমত হলেও বেশ কিছু বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করেন। কিছু মতামত আবার তাঁদের একেবারেই বিস্মিত করে দেয়। সবশেষে হেইডেন যোগ দেন ভার্জকাস্ট হটলাইনে আসা এক প্রশ্নের আলোচনায়। প্রশ্ন ছিল, আমরা যখন এআই নিয়ে কথা বলি, তখন আসলে কোন শব্দ ব্যবহার করি। এখন যেহেতু প্রায় সবকিছুকেই এআই বলা হচ্ছে, তাই শব্দটির প্রকৃত অর্থ ক্রমেই দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে, ‘আমরা হয়তো এমন এক সময়ের দিকে এগোচ্ছি, যখন “এআই” শব্দটির আলাদা অর্থ আর খুঁজে পাওয়া যাবে না।’
সূত্র: দ্য ভার্জ
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সোনারগাঁয়ে ভূমি অফিসে গ্রাহক হয়রানী, দেড় মাস ধরে বন্ধ নামজারী
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে কাঁচপুর রাজস্ব সার্কেল অফিসে দেড় মাস ধরে নামজারি বন্ধ রাখা হয়েছে। ফলে গ্রাহকদের সেবায় হয়রানীর শিকার হতে হচ্ছে।
এলআর (লোকাল রিলেশন্স) ফান্ডের টাকা নিয়ে এসিল্যান্ড ও ওই কার্যালয়ের কর্মচারীদের মধ্যে দ্বন্দে নামজারী বন্ধ করে রাখা হয়েছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছেন।
ভূমি কার্যালয়ে সেবা গ্রহিতাদের দাবি, নামজারি বন্ধ থাকার কারণে জমি রেজিষ্ট্রি বন্ধ হয়ে আছে। ফলে তাদের দূরারোগের চিকিৎসা,মেয়ের বিয়েসহ আর্থিক জরুরী কাজ কর্ম করতে পারছেন না।
জানা যায়, উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে সোনারগাঁ উপজেলা অঞ্চল গঠিত। ভূমি সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনের সোনারগাঁওয়ে একটি ভূমি কার্যালয় ছিল। পরবর্তীতে গ্রাহক সেবার মান বৃদ্ধির জন্য ২০২৩ সালে জামপুর,সাদিপুর,নোয়াগাঁও, বারদী ও কাঁচপুর ইউনিয়নকে আলাদা করে কাঁচপুর সার্কেল অর্ন্তভূক্ত করা হয়।
বিগত সময়ে কাঁচপুর রাজস্ব সার্কেলে ভূমি সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম স্বাভাবিক গতিতে পরিচালিত হলেও বর্তমান সহকারী কমিশনার (ভূমি) এসিল্যান্ড ফাইরুজ তাসনিম যোগদানের পর থেকে জটিলতা তৈরি হয়। ওই রাজস্ব সার্কেল অফিসে সেবা গ্রহিতাদের কাছ থেকে প্রাপ্ত এলআর ফান্ডের টাকা বন্টন নিয়ে এসিল্যান্ড ও কর্মচারীদের মধ্যেদ্বন্ধ তৈরি হয়।
বিগত দিনে এলআর ফান্ড থেকে মাস শেষে এসিল্যান্ড ৫০শতাংশ ও কর্মচারী, অফিস খরচ এবং ওমেদারদের সম্মানী বাবদ ৫০ শতাংশ খচর করা হতো। এসিল্যান্ড ফাইরুজ তাসনিম যোগদান করার পর এলআর ফান্ড থেকে ৭০শতাংশ তিনি দাবি করেন।
কর্মচারীরা ৩০ শতাংশ টাকায় তাদের খরচ যোগান দেওয়া সম্ভব না বলে দাবি করেন। এসিল্যান্ড তার ৭০শতাংশ টাকা ছাড়া তিনি কোন নামজারি করবেন না বলে কর্মচারীদের জানিয়ে দেন। ফলে দেড় মাস ধরে নামজারি বন্ধ হয়ে আছে। এসিল্যান্ডের আইডি থেকে দেড় মাস ধরে সেকেন্ড অর্ডার দিচ্ছেন না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কার্যালয়ে এক কর্মচারী জানান, এসিল্যান্ড আসার পর ওই কার্যালয়ে ওমেদারদের অপসারণ করা হয়। এলআর ফান্ডের টাকা নিয়ে তাদের মধ্যে মনমালিন্য হয়। তাই নামজারী হচ্ছে না। তবে দু’একটি নামজারী হলেও সেগুলো মোটা অংকের টাকা বিনিময়ে গোপনে হচ্ছে।
হুমায়ুন কবির নামে এক সেবা গ্রহিতার দাবি, বর্তমানে এলআর ফান্ডের টাকা দ্বিগুন করা হয়েছে। আগে নামজারির জন্য নামজারি থেকে নামজারি করতে হলে আড়াই হাজার টাকা দিতে হতো। এখন ৫ হাজার টাকা দিতে হয়। মূলজোত থেকে আগে বিঘা প্রতি ৫ হাজার দিতে হতো। এখন সেটা ১১হাজার করা হয়েছে। বর্তমান এসিল্যান্ড যোগদান করার পর থেকে এ নিয়ম করা হয়েছে। ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়গুলোতেও দ্বিগুন টাকা নেওয়া হয়েছে।
সেবা গ্রহিতাদের দাবি, এক/দেড় মাস আগে নামজারির আবেদন করেছেন। ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা নামজারী দেওয়ার জন্য প্রস্তাব দিলেও এসিল্যান্ড সেকেন্ড অর্ডার করছেন না। ফলে নামজারী করার প্রক্রিয়ার দ্বিতীয় ধাপে আটকে আছে। এসব সমাধানের জন্য কেউ দেখার নেই।
সেবা গ্রহিতার আব্দুল মজিদ মিয়া জানান, বারদী ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ের আওতায় লাধুরচর মৌজায় তার ২৬ শতাংশ জমি নামজারির জন্য গত সেপ্টেম্বর মাসে আবেদন করেছেন। ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা প্রস্তাব পাঠালেও এসিল্যান্ড সেকেন্ড অর্ডার না করার কারনে নামজারি হচ্ছে না। ৫দিন এসিল্যান্ড অফিসে ঘুরেও কোন সাড়া পাচ্ছেন না।
কাঁচপুর ইউনিয়নের বেহাকৈর এলাকার তাহমিনা আক্তার জানান, ১৪ই নভেম্বর তার মেয়ের বিয়ে। জমি বিক্রি করে সকল ব্যয় বহন করবেন। জমি নামজারি না হওয়ার তার মেয়ের বিয়েতে ঋণ করতে হচ্ছে। পরবর্তীতে জমি বিক্রি করে ঋণের সুদসহ ফেরত দিবেন।
কাঁচপুর রাজস্ব সার্কেল সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফাইরুজ তাসনিমকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলে তিনি রিসিভ করেননি। ক্ষুদে বার্তা দিয়েও সাড়া পাওয়া যায়নি।
নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, বিষয়টি জানা নেই। তবে নামজারির রেকর্ড খতিয়ে দেখা হবে। এবিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।