জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে হেলিকপ্টার দিয়ে বোম্বিং করতে চেয়েছিলেন শেখ হাসিনা
Published: 24th, September 2025 GMT
জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় ছত্রীসেনা মোতায়েন করতে চেয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি আরও বলেছিলেন, হেলিকপ্টার দিয়ে সেখানে বোম্বিং করা হবে।
আজ বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল-১-এ শেখ হাসিনা ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনুর সঙ্গে কথোপকথনের একটি অডিও শোনানো হয়। শেখ হাসিনাকে সেখানে এ কথা বলতে শোনা গেছে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে করা মামলায় আজ ৫৩তম সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেন তানভীর হাসান জোহা। তিনি এই মামলার বিশেষ তদন্ত কর্মকর্তা। সেই সঙ্গে তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের একজন প্রসিকিউটর।
জবানবন্দির শেষ পর্যায়ে ট্রাইব্যুনালকে পাঁচটি অডিও দেন তানভীর হাসান। এর মধ্যে চারটি অডিও প্লে (চালানো) করা হয়। যার মধ্যে দুটি অডিও শেখ হাসিনা ও হাসানুল হক ইনুর কথোপকথনের। ট্রাইব্যুনালের আজকের এই বিচারিক কার্যক্রম সরাসরি সম্প্রচার করা হয়েছে।
শেখ হাসিনা ও হাসানুল হক ইনুর কথোপকথনের একটি অডিও অনুযায়ী,
হাসানুল হক ইনু: আমি মনে করি যে আপনার পদক্ষেপটা সঠিকই হয়েছে। এখন পর্যন্ত যা রিপোর্ট বাংলাদেশে পাচ্ছি আর কি। খালি ঢাকাতে আপনার রামপুরার দিকে এবং শনির আখড়াতে.
শেখ হাসিনা: না, রামপুরা ক্লিয়ার। শনির আখড়ায় একটু ঝামেলা এখনো আছে।
ইনু: শনির আখড়ায় কিছু মোল্লারাই...।
শেখ হাসিনা: খালি মোল্লা না, সেখানে অনেক মাদ্রাসা। ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। মাইকিং করতে বলেছি। নারায়ণগঞ্জে ঢুকতে দিচ্ছে না আর্মিকে। আমরা ছত্রীসেনা নামাচ্ছি।
ইনু: ওহ, আচ্ছা।
শেখ হাসিনা: আমি বলছি, ক্যাজুয়ালটির দরকার নাই। ওরা ব্যারিকেড দিয়ে আছে তো, ঠিক আছে, আকাশ থেকে নামবে৷ কারণ, দুই পাশ দিয়ে ধরবে... ম্যাসেজটা দিয়ে দিতে পারেন।
ইনু: আচ্ছা।
শেখ হাসিনা: ছত্রীসেনা পাঠানো হচ্ছে। ঠিক আছে, হেলিকপ্টার দিয়ে সোজা বোম্বিং করা হবে। হেলিকপ্টার যাক, ওপর দিয়ে মারবে।
ইনু: আচ্ছা, ওপর দিয়ে সাউন্ড বোম যাবে আর কি।
হাসিনা: হুম।
জবানবন্দিতে তানভীর হাসান বলেন, গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর শেখ হাসিনার ফোনালাপের ৬৯টি অডিও ক্লিপ এবং ৩টি মুঠোফোন নম্বরের সিডিআর এনটিএমসি থেকে জব্দ করেন। জুলাই আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী লেথাল উইপন ব্যবহার করে সরাসরি গুলির নির্দেশে দিয়েছেন। আন্দোলনকারীদের অবস্থান নির্ণয় করে হেলিকপ্টার ব্যবহার করে বোম্বিং করার কথা বলেছিলেন এবং পরিকল্পিতভাবে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দিয়েছিলেন।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ছাগলের তিন নাম্বার বাচ্চা থেকে নায়ক হয়েছি: শুভ
ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় নায়ক আরিফিন শুভ। নায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত ও সফল। তবে তার সাফল্যের পেছনে রয়েছে দীর্ঘ পথচলার গল্প, রয়েছে সংগ্রাম, পরিশ্রম ও আত্মবিশ্বাসের অনন্য উদাহরণ।
সম্প্রতি মোটিভেশনাল ট্রেইনার ডন সামদানি আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে অংশ নেন শুভ। সেখানে নিজের জীবনের শুরুর দিনগুলোর কথা হাসিমুখে স্মরণ করেন। কীভাবে তিনি প্রডাকশনের একদম নিচের স্তর থেকে উঠে এসেছেন, সেই গল্প শুনিয়েছেন।
আরো পড়ুন:
দীপিকার লিভারের ২২ শতাংশ কেটে ফেলা হয়েছে
অকৃতজ্ঞ মানুষদের সাহায্য করা বন্ধ করুন: ভাবনা
স্মৃতিচারণ করে শুভ বলেন, “আমি একসময় প্রডাকশনে অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করতাম। কাজটা ছিল ছোট, কিন্তু শেখার আগ্রহ ছিল বিশাল। কখনো পানি দেওয়া, কখনো শিল্পীর স্যান্ডেল পরিষ্কার করা—এসবই ছিল আমার দায়িত্ব।”
হাস্যরসের সুরে শুভ বলেন, “আমি তখন ছিলাম প্রডাকশনের ছাগলের তিন নাম্বার বাচ্চা!”
এই ছোট্ট রসিকতার পেছনেই লুকিয়ে আছে এক গভীর বাস্তবতা। তখনকার সেই সহকারী কর্মী আজ দেশের অন্যতম নায়ক। শুভ বলেন, “জীবনের চক্র ঠিক এমনই—যদি স্বপ্ন বড় হয়, পরিশ্রম করলে সেটি একদিন বাস্তব হয়ে ওঠে।”
মডেলিং দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করা আরিফিন শুভ পরে টেলিভিশন নাটকে অভিনয় করে দর্শকের হৃদয় জয় করেন। ২০১৩ সালে ‘ভালোবাসা জিন্দাবাদ’ সিনেমার মাধ্যমে বড় পর্দায় অভিষেক ঘটে তার। এরপর ‘ছুঁয়ে দিলে মন’, ‘ঢাকা অ্যাটাক’, ‘মিশন এক্সট্রিম’, ‘ব্ল্যাক ওয়ার’সহ একাধিক সফল সিনেমায় অভিনয় করেছেন শুভ।
ঢাকা/রাহাত/শান্ত