তিন দফা দাবিতে আন্দোলনরত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের ওপর ‘পুলিশের হামলার’ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ, তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে গণ অধিকার পরিষদ, ছাত্র ইউনিয়ন এবং আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। আজ রোববার পৃথক বিবৃতিতে এ ঘটনার বিচার দাবি করেছে তারা।

বিবৃতিতে গণ অধিকার পরিষদের নেতারা বলেছেন, শিক্ষকদের যৌক্তিক ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশে পুলিশ কর্তৃক কাঁদানে গ্যাসের শেল, সাউন্ড গ্রেনেড এবং জলকামান থেকে গরম পানি ছোড়ার ঘটনা ‘অমানবিক’ ও ‘নিন্দনীয়’।

একই সঙ্গে ​এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং আহত শিক্ষকদের সুচিকিৎসা নিশ্চিতের দাবিও জানিয়েছে গণ অধিকার পরিষদ।

বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় সংসদের (একাংশ) সভাপতি তামজীদ হায়দার চঞ্চল ও সাধারণ সম্পাদক শিমুল কুম্ভকার যৌথ বিবৃতিতে শিক্ষকদের দাবি ও কর্মসূচির সঙ্গে পূর্ণ সংহতি এবং তাঁদের ওপর পুলিশি হামলার তীব্র নিন্দা জানান।

একই সঙ্গে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আন্দোলনে পাশে থাকার অঙ্গীকার জানিয়ে শিক্ষার সার্বিক মানোন্নয়ন এবং গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল সংস্কারের লক্ষ্যে আপসহীন ও প্রতিজ্ঞাবদ্ধ অবস্থান জানিয়েছে ছাত্র ইউনিয়ন।

শিক্ষকদের ওপর ‘পুলিশের হামলার’ ঘটনায় পৃথক বিবৃতি দিয়েছে আসক। অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা এবং আহত শিক্ষকদের যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠনটি।

পাশাপাশি শিক্ষকদের দাবিগুলো গুরুত্বসহকারে পর্যালোচনা করে সংলাপের মাধ্যমে সমস্যার স্থায়ী সমাধান করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে আসক।

উল্লেখ্য, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের বেতন ১০ম গ্রেডে করার দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন শিক্ষকেরা। ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের’ ডাকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির পাশাপাশি আজ রোববার বিদ্যালয়গুলোতে কর্মবিরতিও পালন করছেন শিক্ষকেরা।

গত শনিবার আন্দোলনরত এসব শিক্ষকের ওপর চড়াও হয়েছিল পুলিশ। রাজধানীর শাহবাগে শিক্ষকদের পদযাত্রা কর্মসূচিতে পুলিশ লাঠিপেটা করে। পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল, সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান ব্যবহার করে শিক্ষকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে শতাধিক শিক্ষক আহত হয়েছেন।

আরও পড়ুনসহকারী শিক্ষকদের বেতন গ্রেড ১১ করতে মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব, হলে কত টাকা লাগবে২ ঘণ্টা আগে

শিক্ষকদের অপর দুটি দাবি হলো শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি এবং চাকরির ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড দেওয়া। কিছুদিন আগে তাঁরা সহকারী শিক্ষকদের বেতন গ্রেড ১১তম করার দাবিতে আন্দোলন করেছিলেন। তবে সেখান থেকে সরে এসে এখন ১০ম গ্রেড দাবি করছেন।

এদিকে সম্প্রতি দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের বেতন গ্রেড দুই ধাপ বাড়িয়ে ১১তম করতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এবং অর্থ বিভাগে প্রস্তাব পাঠিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে কর্মরত সহকারী শিক্ষকদের বর্ধিত গ্রেডে বেতন দিতে বছরে অতিরিক্ত খরচ হবে প্রায় ৮৩১ কোটি ৯১ লাখ টাকা।

আরও পড়ুনপ্রাথমিক শিক্ষকদের তিন দফা দাবিতে কর্মবিরতি শুরু৮ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সহক র র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

শাহবাগে লাঠি, কাঁদানে গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড নিয়ে শিক্ষকদের ওপর চড়াও পুলিশ

বেতন গ্রেড বাড়ানোসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলনরত প্রাথমিক শিক্ষকদের মিছিল শাহবাগে ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে পুলিশ। বেশ কয়েকজন শিক্ষক আহত হয়েছেন পুলিশের লাঠিপেটায়। শিক্ষকদের ওপর কাঁদানে গ্যাসের শেল, সাউন্ড গ্রেনেড এবং জলকামান থেকে গরম পানিও ছোড়া হয়।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এই সহকারী শিক্ষকেরা আজ শনিবার সকাল থেকে ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান করছিলেন। বিকেলে তাঁরা মিছিল নিয়ে শাহবাগে এলে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে মিছিল আটকে দেয়। শিক্ষকেরা ব্যারিকেড ভাঙতে চাইলে পুলিশ তাঁদের ওপর চড়াও হয়।

শিক্ষকেরা অভিযোগ করেছেন, পুলিশ বিনা উসকানিতে তাঁদের ওপর হামলা চালায়। অন্যদিকে পুলিশ বলছে, শিক্ষকেরা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার দিকে এগোতে চাইলে তাঁদের বাধা দেওয়া হয়।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এই সহকারী শিক্ষকদের তিন দফা দাবি হলো—সহকারী শিক্ষকদের বেতন ১০ম গ্রেডে দেওয়া, শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি এবং চাকরির ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রদান।

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে থেকে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে শিক্ষকেরা শাহবাগ অভিমুখে রওনা দেন। বিকেল চারটার দিকে শাহবাগের কেন্দ্রীয় গণগ্রন্থাগারের সামনে এসে তাঁরা পুলিশ ব্যারিকেডে পড়েন।

শিক্ষকেরা জানান, শহীদ মিনার থেকে শাহবাগ চত্বর অভিমুখে পদযাত্রা ও প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষরের জন্য কর্তৃপক্ষের উদ্দেশ্যে কলম সমর্পণের কর্মসূচি ছিল তাঁদের। গণগ্রন্থাগারের সামনে পুলিশ তাঁদের আটকে দিলে তাঁরা ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করেন। পুলিশ প্রথমে কাঁদানে গ্যাসের শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। এরপর লাঠিপেটার পাশাপাশি জলকামান ব্যবহার করে।

বেতন গ্রেড বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলনরত প্রাথমিক শিক্ষকদের ওপর পুলিশ চড়াও হতে গেলে বাধা হয়ে দাঁড়ান এক শিক্ষক। আজ শনিবার বিকেলে ঢাকার শাহবাগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শহীদ মিনারে প্রাথমিক শিক্ষকদের অবস্থান, ২ উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি
  • শাহবাগে লাঠি, কাঁদানে গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড নিয়ে শিক্ষকদের ওপর চড়াও পুলিশ