নিউইয়র্কে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করলেন আখতার
Published: 25th, September 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে হামলার অভিযোগে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন।
নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় অনুযায়ী বুধবার দিবাগত রাত একটায় (বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা) জন এফ কেনেডি বিমানবন্দরের পাশে পোর্ট অথোরিটি পুলিশ ডিপার্টমেন্ট থানায় আখতার হোসেন মামলা দায়ের করেছেন।
আজ বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক ভিডিও বার্তায় এনসিপির এই নেতা এ তথ্য জানান।
আরও পড়ুননিউইয়র্কে এনসিপি নেতা আখতারকে হেনস্তা করলেন আওয়ামী লীগ নেতা–কর্মীরা, ডিম নিক্ষেপ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ভিডিও বার্তায় আখতার হোসেন বলেন, ‘এয়ারপোর্টে হামলার পরে আজ সন্ধ্যাবেলা আওয়ামী সন্ত্রাসীরা আবার হোটেলের লবিতে এসেছিল হামলা করার উদ্দেশ্যে। সে সময় যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত এনসিপির সদস্যরা এবং আমার শুভাকাঙ্ক্ষীরা তাদের প্রতিহত করেন এবং পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরবর্তীতে পুলিশ ইনভেস্টিগেশন অফিসার এসে মামলা দায়ের করার জন্য আমাদের পরামর্শ দেন। তারই প্রেক্ষিতে আমি এয়ারপোর্টের খুব কাছের যে থানা রয়েছে সেখানে গিয়েছি। যারা সেই দিন আমাদের ওপর হামলা করেছিল, হত্যা চেষ্টা করেছিল এবং থ্রেট দিয়েছিল তাদের ব্যাপারে আমরা এখানে মামলা দায়ের করেছি।’
ওই মামলায় আখতার দুজনের নাম উল্লেখ করেছেন। পাশাপাশি ১৫ থেকে ২০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করেছেন।
মামলার অভিযোগে আখতার হোসেন বলেছেন, জেএফকে বিমানবন্দরে হামলার পরও এয়ারপোর্টের লবিতে এবং অন্যান্য জায়গায় নানাভাবে হেনস্তা করার চেষ্টা করেছে হামলাকারীরা।
আরও পড়ুননিউইয়র্কে নেতাদের হেনস্তা: সমস্যার সূত্রপাত যেভাবে২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ভিডিও বার্তায় আখতার আরও বলেন, ‘একই সঙ্গে ইউএস পুলিশকে আমরা এই বিষয়টা অবহিত করেছি যে যারা ওই ঘটনাগুলো যুক্তরাষ্ট্রে ঘটাচ্ছেন তারা বাংলাদেশে নিষিদ্ধ এমন একটি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত, যারা গত বছর বাংলাদেশে গণহত্যা চালিয়েছেন। মানবতাবিরোধী অপরাধ চালিয়েছেন। ইউএন-এর (জাতিসংঘ) যে রিপোর্ট সে ব্যাপারে আমরা তাদের অবহিত করেছি, আমরা মনে করি যে, আওয়ামী সন্ত্রাসীরা তারা দেশে হোক দেশের বাইরে যেখানেই হোক আমরা তাদের ব্যাপারে আইনগতভাবে যে প্রতিকারের ব্যবস্থা সেটা আমরা গ্রহণ করব এবং আমরা এ কথা বিশ্বাস করি যে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা তারা যত ধরনের অপরাধ করেছেন সে অপরাধগুলোকে আইনগতভাবেই নিষ্পত্তি করা সম্ভব এবং আওয়ামী লীগ তার সন্ত্রাস নিয়ে বাংলাদেশে আর ফিরে আসার সুযোগ পাবে না।’
নিউইয়র্কের জেএফকে বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর এনসিপি নেতা আখতার হোসেনকে লক্ষ্য করে ডিম ছোড়া হয়.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আখত র হ স ন ন উইয়র ক সন ত র স য় আখত র কর ছ ন এনস প
এছাড়াও পড়ুন:
এপস্টেইন–কাণ্ডে নিজেকে বাঁচাতেই কি বিল ক্লিনটনের বিরুদ্ধে তদন্তের দাবি করলেন ট্রাম্প
যৌন নিপীড়নকারী কুখ্যাত মার্কিন ধনকুবের জেফরি এপস্টেইনের সঙ্গে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের কী সম্পর্ক ছিল, তা নিয়ে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রধানদের তদন্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর আহ্বানের পর মার্কিন বিচার বিভাগ ক্লিনটনের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে।
প্রয়াত এপস্টেইনের সঙ্গে ট্রাম্পের সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন ক্রমেই বাড়ছে। এ পরিস্থিতিতে মানুষের দৃষ্টি অন্যদিকে সরিয়ে দিতেই গতকাল শুক্রবার তিনি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রধানদের প্রতি এ আহ্বান জানান বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ট্রাম্প বহুজাতিক বিনিয়োগ ব্যাংক ও আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠান জে পি মরগান চেজ এবং হার্ভার্ডের সাবেক প্রেসিডেন্ট ল্যারি সামারসের বিরুদ্ধেও বিচার বিভাগ ও এফবিআই তদন্তের দাবি করেছেন। ল্যারি সামারস ক্লিনটনের অর্থমন্ত্রী ছিলেন।
সম্প্রতি যৌন নিপীড়ন ও নারী পাচারের দায়ে দোষী সাব্যস্ত এপস্টেইনের নতুন একগুচ্ছ ই-মেইল প্রকাশ পেয়েছে। সেখানে একাধিকবার ট্রাম্পের নাম এসেছে। এতে ট্রাম্পের ওপর চাপ বাড়ছে।
এপস্টেইনের প্রেমিকা ম্যাক্সওয়েল অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের যৌনকাজে সম্পৃক্ত করতেন। ই-মেইলে দেখা গেছে, ট্রাম্প ওই মেয়েদের সম্পর্কে জানতেন। শুধু তাই নয়, ট্রাম্প একজন কিশোরীর সঙ্গে তাঁর নিজের বাড়িতে কয়েক ঘণ্টা সময় কাটিয়েছেন।বার্তা সংস্থা রয়টার্সের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, নতুন প্রকাশিত ই-মেইলগুলো এপস্টেইন পাঠিয়েছিলেন তাঁর সহযোগী ও সাবেক প্রেমিকা গিসলেইন ম্যাক্সওয়েল এবং ট্রাম্প–ঘনিষ্ঠ লেখক মাইকেল ওলফকে। প্রায় ১৫ বছর ধরে তিনি ওইসব ই–মেইল লিখেছিলেন।
এপস্টেইনের প্রেমিকা ম্যাক্সওয়েল অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদেরও জোরপূর্বক যৌনকাজে সম্পৃক্ত করতেন। ই–মেইলে দেখা গেছে, ট্রাম্প ওই মেয়েদের সম্পর্কে জানতেন। শুধু তাই নয়, ট্রাম্প একজন কিশোরীর সঙ্গে তাঁর নিজের বাড়িতে কয়েক ঘণ্টা সময় কাটিয়েছেন।
শিশুদের যৌন নিপীড়নের দায়ে দোষী সাব্যস্ত ও নারী পাচারের অভিযোগে গ্রেপ্তার এপস্টেইন ২০১৯ সালের ১০ আগস্ট নিউইয়র্কের ম্যানহাটানে কারাবন্দী অবস্থায় আত্মহত্যা করেন। তাঁর প্রেমিকা ম্যাক্সওয়েলের ২০ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে। তিনি বর্তমানে কারাগারে আছেন।
এপস্টেইন–কেলেঙ্কারিতে যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে অনেক ধনী ও প্রভাবশালী ব্যক্তির নাম এসেছে।
৭৯ বছর বয়সী ট্রাম্পের অভিযোগ, ডেমোক্র্যাটরা এপস্টেইন–কেলেঙ্কারিতে তাঁর নাম জড়ানোর ‘ষড়যন্ত্র’ করছে।
শুক্রবার এয়ার ফোর্স ওয়ানে করে ছুটি কাটাতে ফ্লোরিডা যাওয়ার সময় ট্রাম্প উড়োজাহাজে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। তাদের এটা অনেক আগেই ঘোষণা দেওয়া উচিত ছিল। বহু বছর ধরে জেফরি এপস্টেইনের সঙ্গে আমার খুবই খারাপ সম্পর্ক ছিল।’
নথিতে দেখা যাচ্ছে, এই ব্যক্তিরা এবং আরও অনেকে তাঁদের জীবনের একটি বড় অংশ এপস্টেইনের সঙ্গে তাঁর দ্বীপে কাটিয়েছেন।ডোনাল্ড ট্রাম্প, মার্কিন প্রেসিডেন্টএ বছরের জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর ট্রাম্পকে বারবার এপস্টেইনের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে।
২০১৯ সালে এপস্টেইনের বিরুদ্ধে যৌনকর্মে নারী পাচারের অভিযোগে হওয়া মামলার বিচার প্রস্তুতি চলছিল। তাঁকে গ্রেপ্তার করে নিউইয়র্কের একটি কারাগারে রাখা হয়েছিল। কারাগারে নিজের কক্ষ থেকে পরে তাঁর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এপস্টেইনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি এমন একটি যৌন চক্র চালাতেন, যেখানে কিশোরী মেয়েদের যৌনকর্মের জন্য সমাজের ধনী ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের কাছে পাঠানো হতো।
আরও পড়ুনজেফরি এপস্টেইনের ব্যক্তিগত ইমেইলে একাধিকবার ট্রাম্পের নাম১২ নভেম্বর ২০২৫ট্রাম্প তাঁর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে লিখেছেন, তিনি অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডি ও এফবিআইকে জেফরি এপস্টেইনের সঙ্গে বিল ক্লিনটন, ল্যারি সামারস, রেইড হফম্যান, জে পি মরগ্যান চেজ এবং আরও অনেক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পর্ক ও জড়িত থাকার বিষয়টি তদন্ত করার জন্য অনুরোধ করবেন।
ট্রাম্প আরও লিখেছেন, ‘নথিতে দেখা যাচ্ছে, এই ব্যক্তিরা এবং আরও অনেকে তাঁদের জীবনের একটি বড় অংশ এপস্টেইনের সঙ্গে তাঁর দ্বীপে কাটিয়েছেন।’
আরও পড়ুনএকই নারীর সঙ্গে ট্রাম্প ও যৌন নিপীড়ক এপস্টেইনের সম্পর্ক ছিল১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫