শাপলাই কেন লাগবে, যে ব্যাখ্যা দিল এনসিপি
Published: 3rd, October 2025 GMT
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) প্রতীক হিসেবে শাপলা বরাদ্দ পেতে দলটি একটি ব্যাখ্যা দিয়েছে।
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) বিকেলে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের বরাত দিয়ে ব্যাখ্যাটি নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করেছেন দলের মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। এতে উল্লেখ করা হয়, দেশের মানুষ এনসিপির প্রতীক হিসেবে শাপলাকে হৃদয় দিয়ে বরণ করে নিয়েছে।
আরো পড়ুন:
পারস্পরিক সৌহার্দ্যই আমাদের শক্তি: হাসানাত
নিউইয়র্কে ডিমকাণ্ড: হার্ড লাইনে এনসিপি, ‘প্রভাব পড়বে রাজনীতিতে’
ব্যাখ্যায় এনসিপি বলছে, “নির্বাচন কমিশনের তালিকায় প্রতীক যুক্ত করতে কমিশন একটি কমিটি গঠন করে এবং সংশ্লিষ্ট কমিটি মোট ১৫০টি প্রতীক অন্তর্ভুক্ত করার জন্য চূড়ান্ত খসড়া প্রস্তুত করেছিল। উক্ত কমিটির একজন সদস্যের সঙ্গে এনসিপির একটি প্রতিনিধি দল গত ৪ জুন নির্বাচন কমিশনে বৈঠক করেন এবং বৈঠকে তিনি চূড়ান্ত তালিকায় ‘শাপলা’ প্রতীক থাকার বিষয়টি আশ্বস্ত করেন।এছাড়া এ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে গণমাধ্যমেও সংবাদ প্রকাশিত হয়।”
এনসিপি বলছে, “এরপর গত ২২ জুন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন সচিবালয় কর্তৃক প্রকাশিত ১০ মার্চ তারিখের গণবিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধনের জন্য আবেদন দাখিল করে এবং দলের অনুকূলে শাপলা প্রতীক সংরক্ষণের জন্য আবেদন জানায়। ‘শাপলা’ প্রতীক বরাদ্দ চেয়ে আবেদন করার সাথে সাথে সারা দেশের আপামর জনসাধারণ এনসিপির প্রতীক হিসাবে শাপলাকে চিনতে শুরু করে এবং গণমানুষের সাথে এনসিপির শাপলা প্রতীক কেন্দ্রীক এক অভূতপূর্ব আত্মীক সম্পর্ক স্থাপিত হয়। এছাড়াও ২০২৫ সালের জুলাই মাসে এনসিপি দেশজুড়ে জুলাই পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করে এবং উক্ত কর্মসূচিতে বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণ এনসিপিকে আপন করে নেয় এবং স্বতস্ফূর্তভাবে খাল-বিল-জলাশয় থেকে শাপলা সংগ্রহ করে উক্ত কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে এনসিপি’র প্রতীক হিসাবে শাপলাকে হৃদয় থেকে বরণ করে নেয়।”
আরো উল্লেখ করা হয়, “অত্যন্ত দুঃখের বিষয় হঠাৎ করে গত ৯ জুলাই সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ সূত্রে এনসিপি জানতে পারে যে, নির্বাচন কমিশন শাপলাকে নির্বাচনী প্রতীক হিসেবে তফসিলভুক্ত না করার নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। শাপলা জাতীয় প্রতীক হওয়ায় নির্বাচনের প্রতীক হিসেবে এটি বিধিমালার তফসিলভুক্ত না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে বলে সংবাদমাধ্যমকে জানায় নির্বাচন কমিশন।”
পোস্টে বলা হয়, “এরপর গত ১৩ জুলাই এনসিপির একটি প্রতিনিধিদল প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্যান্য কমিশনারদের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনে এক বৈঠকে মিলিত হন, এবং বৈঠকের আলোচনায় এবং একটি লিখিত আবেদনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনকে জানিয়ে দেন যে, শাপলাকে জাতীয় প্রতীক হিসেবে উল্লেখ করে নির্বাচন কমিশনের প্রদত্ত ব্যাখ্যা আইনানুগভাবে সঠিক নয় এবং এই বিষয়ে কমিশনের গৃহীত অবস্থানের আইনি ভিত্তি নেই।”
সংবিধানের কথা উল্লেখ করে ব্যাখ্যায় বলা হয়, “উক্ত বৈঠকে এনসিপি স্পষ্ট করে জানায় যে, বাংলাদেশের সংবিধান অনুসারে শাপলা প্রতীক তফসিলে অন্তর্ভুক্ত করা এবং রাজনৈতিক দলকে বরাদ্দ দিতে কোনো আইনগত বাধা নেই। ১৯৭২ সালের অর্ডারের ৩য় তফসিল এবং ১৯৭২ সালের বিধিমালার পরিশিষ্ট-ক তে জাতীয় প্রতীকের নকশা অংকিত আছে। উক্ত নকশা অনুযায়ী জাতীয় প্রতীক হচ্ছে লালচে এবং হলুদ রঙের যুগল বৃত্তের ভেতরে লালচে এবং হলুদ রঙে অংকিত পানির ওপর ভাসমান শাপলা ফুল, দুপাশে দুটি ধানের শীষ, উপরে তিনটি সংযুক্ত পাট পাতা যার ঠিক দুই পাশে দুটি করে চারটি তারকা-এর সন্নিবেশ ও সামষ্টিক রূপ। অর্থাৎ জাতীয় প্রতীকের নকশা এবং রঙ ১৯৭২ সালের অর্ডারের ৩য় তফসিল ও বিধিমালার পরিশিষ্ট-ক দ্বারা সুনির্দিষ্ট। তাছাড়া জাতীয় প্রতীকের শাপলাটি পানিতে ভাসমান কিন্তু ভাসমান শাপলা নামে কোন প্রতীক তফসিলে অন্তর্ভুক্ত করার আয়োজন ছিল না। শাপলা জাতীয় প্রতীকের চারটি স্বতন্ত্র উপাদানের একটি মাত্র উপাদান। নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপিকে জাতীয় প্রতীকের চারটি উপাদানের একটি উপাদান ধানের শীষ বরাদ্দ দিয়েছে এবং বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল - জেএসডিকে আরেকটি উপাদান তারা প্রতীক হিসেবে বরাদ্দ দিয়েছে। সেহেতু নির্বাচন কমিশন শাপলাকে প্রতীকের তালিকাভুক্ত করে রাজনৈতিক দলকে বরাদ্দ দিতে পারে। এছাড়াও নির্বাচন কমিশন জাতীয় ফল কাঁঠালকে ইতোমধ্যে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির প্রতীক হিসেবে বরাদ্দ দিয়েছে এবং তৃণমূল বিএনপি নামের আরেকটি দলকে সোনালী আঁশ প্রতীক বরাদ্দ দিয়েছে। সুতরাং শাপলা জাতীয় ফুল হলেও দলের প্রতীক হিসেবে তালিকাভুক্ত হতে আইনগত কোনো বাধা নেই। ধানের শীষ, শাপলা, পাটপাতা এবং তারকা আলাদা আলাদা করে চারটি ভিন্ন ভিন্ন বিষয়। আর এই চারের সমষ্টিই হচ্ছে জাতীয় প্রতীক যা দুই রঙের দুটি বৃত্ত দ্বারা পরিবেষ্টিত। জাতীয় প্রতীকের উপাদানের মধ্যে দুইটি উপাদান ইতোমধ্যে দুইটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের প্রতীক হিসেবে বরাদ্দকৃত। সর্বোপরি, ‘শাপলা’কে প্রতীকের তালিকায় তালিকাভুক্ত না করার বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের নীতিগত সিদ্ধান্ত ভুল আইনি ভিত্তি ও বোঝাপড়ার ওপর দাড়িয়ে আছে।”
এরপর এনসিপির প্রতিনিধিদল দফায় দফায় কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হয় জানিয়ে তারা বলছে, “কমিশনের কাছে থেকে উক্ত ১৩ জুলাই আবেদনের অগ্রগতি জানতে চাইলেও কমিশন উক্ত বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যা ও অবস্থান স্পষ্ট করে নাই। উল্লেখ্য ১৩ জুলাইয়ের বৈঠকের পরবর্তী কোনো বৈঠকে নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে শাপলা প্রতীক বিধিমালায় অন্তর্ভুক্ত করার ক্ষেত্রে কোন ধরনের আইনি বাধার বিষয়টি আর উল্লেখ করা হয় নাই, এবং সংবাদমাধ্যমেও আইনি বাধার বিষয়ে কমিশন কোন বক্তব্য প্রদান করেননি। অর্থাৎ শাপলাকে প্রতীক হিসাবে অন্তর্ভুক্ত না করার ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত কোন আইনি ভিত্তি দ্বারা গঠিত নয় বরং এনসিপির প্রতি বিরূপ মনোভাব ও স্বেচ্ছাচারী দৃষ্টিভঙ্গির বহিঃপ্রকাশ বলে প্রতীয়মান হয়।”
এনসিপি জানায়, “গত ৩ আগস্ট কমিশনের কাছে চিঠির মাধ্যমের পার্টির অনুকূলে প্রতীক সংরক্ষণের ক্রম হিসাবে ১.
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর পোস্টের কিছু অংশ
“৩ আগস্টের বৈঠকের ব্যাপারে দলটি জানায়, ‘নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে শাপলাকে প্রতীক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার ক্ষেত্রে প্রধান নির্বাচন কমিশনার সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক ও আশ্চর্যজনকভাবে ডিজিএফআইসহ আরো বেশ কিছু সংস্থার লোগোতে শাপলা রয়েছে এবং এ কারণে আইনগত কোনো বাধা না থাকলেও এনসিপিকে শাপলা বরাদ্দ না দেওয়ার ক্ষেত্রে কমিশনের মনোভাবের কথা ব্যক্ত করেন। কিন্তু উক্ত বৈঠকে এনসিপির প্রতিনিধি দল স্পষ্ট করে উল্লেখ করেন যে, বাংলাদেশ পুলিশের লোগোর উল্লেখযোগ্য অংশজুড়ে ধানের শীষ প্রতীক বর্তমান থাকা, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর লোগোর উল্লেখযোগ্য অংশ জুড়ে ঈগল প্রতীক বর্তমান থাকা এবং মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের লোগোর পুরোটা অংশ জুড়ে দাঁড়িপাল্লা প্রতীক থাকা সত্ত্বেও নির্বাচন কমিশন ইতোপূর্বে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) প্রতীক হিসাবে ধানের শীষ, আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) প্রতীক হিসাবে ঈগল এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রতীক হিসাবে দাঁড়িপাল্লা প্রতীক বরাদ্দ দিয়েছে। কিন্তু শুধুমাত্র ডিজিএফআইয়ের লোগোর সঙ্গে কিছুটা সাদৃশ্য থাকার কারণ দেখিয়ে এনসিপিকে শাপলা প্রতীক বরাদ্দ না দেওয়া বৈষম্যমূলক এবং স্বেচ্ছাচারী। নির্বাচন কমিশনের এ ধরনের মনোভাব প্রকাশের ফলে তাদের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হয় এবং স্বাধীন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও নির্বাচন কমিশন রাষ্ট্রীয় কোন বাহিনীর কাছে নতি স্বীকার করছে কিনা এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলকে বিশেষ সুবিধা প্রদান করে এবং তাদের কারো কারো কথায় প্রভাবিত হয়ে পরিচালিত হচ্ছে কিনা এমন প্রশ্ন জনমনে তৈরি হয়। উল্লেখ্য এনসিপিকে যেন প্রতীক হিসাবে শাপলা বরাদ্দ না দেওয়া হয়, এ বিষয়ে একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দলের তৎপড়তা জনপরিসরে দৃশ্যমান এবং রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচিত রয়েছে।”
এনসিপি বলছে, “সম্প্রতি মাঠ পর্যায়ে সকল যাচাই-বাছাই সম্পন্ন হওয়ার পর এবং নিবন্ধনের সকল শর্ত প্রতিপালন করার ফলশ্রুতিতে নির্বাচন কমিশন জাতীয় নাগরিক পার্টি—এনসিপিকে রাজনৈতিক দল হিসাবে নিবন্ধন প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। কিন্তু গত ২৩ সেপ্টম্বর ২০২৫ তারিখের কমিশনের সিনিয়র সচিব সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন যে, নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালার প্রতীক তালিকায় শাপলা-কে অন্তর্ভুক্ত করা হয় নাই এবং একারণে এনসিপি-কে শাপলা প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া যাবে না। নির্বাচন কমিশনের এমন স্বেচ্ছাচারী সিদ্ধান্ত এবং উক্তরূপ বক্তব্য অনভিপ্রেত ও দুঃখজনক। নির্বাচন কমিশনের এহেন একরোখা কার্যকলাপে তাদের নিরপেক্ষতা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উত্থাপিত হয় এবং একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন ও সকল দলের ক্ষেত্রে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির ক্ষেত্রে তাদের আগ্রহ প্রশ্নবিদ্ধ হয়।”
এনসিপির আশা, “নির্বাচন কমিশন ২০০৮ সালের নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালায় প্রয়োজনীয় সংশোধনী এনে জাতীয় নাগরিক পার্টি’র অনুকূলে ১. শাপলা, ২. সাদা শাপলা, এবং ৩. লাল শাপলা থেকে যেকোন একটি প্রতীক বরাদ্দ করবে এবং এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন নিজের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে ইতোপূর্বের স্বেচ্ছাচারী ও একরোখা মনোভাব পরিত্যাগ করবে এবং এমনভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে যাতে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন ও সকল দলের ক্ষেত্রে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির ক্ষেত্রে তাদের আগ্রহ জনমনে প্রশ্নবিদ্ধ না হয়।”
ঢাকা/এসবি
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন হ দ ইসল ম জ ত য় ন গর ক প র ট এনস প স দ ধ ন ত গ রহণ কর কর র ক ষ ত র বর দ দ দ এনস প ক ন বন ধ উপ দ ন ন শ পল শ পল ক প রক শ মন ভ ব র একট তফস ল
এছাড়াও পড়ুন:
বিমানবন্দরে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি, এম এ মালিককে সতর্ক করল বিএনপি
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও দলের যুক্তরাজ্য শাখার সভাপতি এম এ মালিককে সতর্ক করে নোটিশ দিয়েছে বিএনপি। লন্ডন থেকে আসা ও ফেরার সময় ঢাকা ও সিলেট বিমানবন্দরে লোকসমাগম করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টির অভিযোগে তাঁকে এ নোটিশ দেওয়া হয়।
‘বিমানবন্দরে দুর্ভোগ ও জনমনে বিরক্তি সৃষ্টি প্রসঙ্গে’ শিরোনামে আজ বুধবার এম এ মালিককে সতর্ক করে চিঠি দেওয়া হয়। বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তরের দায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এম এ মালিক যখনই লন্ডন থেকে ঢাকায় পৌঁছান, আবার ঢাকা থেকে সিলেটে নিজ এলাকায় যান, তখনই দুই বিমানবন্দরে অনেক জনসমাগম হয়। দলের নেতা-কর্মীদের অনেকের অভিযোগ, তিনি আগে থেকে লোকজনকে বিমানবন্দরে সংগঠিত করেন, এতে বিমানবন্দরে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয়। সাধারণ যাত্রীরা বিরক্ত হন। সর্বশেষ গত ২৯ সেপ্টেম্বর এম এ মালিক লন্ডন থেকে সিলেট আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে তাঁর সমর্থক স্থানীয় নেতা-কর্মীরা তাঁকে স্বাগত জানান। বিমানবন্দরে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথাও বলেন।
এম এ মালিক সিলেট-৩ আসন (দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ) থেকে বিএনপির মনোনয়নে নির্বাচন করতে চান। এ লক্ষ্যে তিনি এলাকায় যাওয়া–আসা শুরু করেছেন।
এর আগে গত বছরের ১৩ অক্টোবর এম এ মালিক ১৬ বছর পর লন্ডন থেকে দেশে আসেন। তাঁর ফেরা উপলক্ষে ঢাকা ও সিলেট বিমানবন্দরে কয়েক হাজার নেতা-কর্মী জড়ো করা হয়।
এম এ মালিককে সতর্ক করে বিএনপির নোটিশে বলা হয়েছে, ‘আপনি বিদেশ থেকে দেশে আসা-যাওয়ার সময় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বা সিলেট ওসমানী বিমানবন্দরে আপনাকে স্বাগত ও বিদায় জানানোর সময় অসংখ্য লোক সমাগম করেন, যা অপরিণামদর্শী কাজ এবং তাতে জনদুর্ভোগ তীব্রতর হয়। আপনার অবিবেচনাপ্রসূত এই কর্মকাণ্ডে বিমানবন্দরে অসংখ্য যাত্রীকে বিড়ম্বনা ও কষ্টকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হয়। ইতিপূর্বেও আপনি বিমানবন্দরে মাত্রাতিরিক্ত লোকসমাগম ঘটিয়ে বিমানবন্দর এলাকার আশপাশের সড়কগুলোতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি করেন।’
নোটিশে আরও বলা হয়, দলের একজন দায়িত্বশীল নেতা হিসেবে এ ধরনের লোকসমাগম সাংগঠনিক নীতির পরিপন্থী, যা দৃষ্টিকটু ও জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।
নোটিশে এখন থেকে এম এ মালিককে দেশে আসা ও বিদেশে যাওয়ার সময় বিমানবন্দরে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে লোকসমাগম করলে তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের হুঁশিয়ারি জানানো হয়।
এম এ মালিক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি তো কাউকে অর্গানাইজ করি না। নেতা-কর্মীরা আমাকে ভালোবেসে আসেন। কারণ, আমি বিএনপির একজন ত্যাগী কর্মী, একজন যোদ্ধা। আমি লন্ডনে শেখ হাসিনার চায়ের দাওয়াত প্রত্যাখ্যান করেছিলাম। বিগত আন্দোলনে আমার ভূমিকার কারণে নেতা-কর্মীরা হয়তো আমাকে ভালোবাসেন। দল যেহেতু সতর্ক করেছে, ভবিষ্যতের জন্য এ বিষয়ে আমি সতর্ক থাকব।’