নারায়ণগঞ্জ জেলাজুড়ে ডেঙ্গুর প্রকোপ মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। সরকারি হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ এখন ধারণক্ষমতার প্রায় দ্বিগুণ। ফলে শত শত ডেঙ্গু আক্রান্তকে হাসপাতালের করিডর ও মেঝেতে বিছানা পেতে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। আগস্ট মাসের তুলনায় সেপ্টেম্বরে ডেঙ্গু রোগী ভর্তির সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ। ডেঙ্গু প্রতিরোধে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন ও সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে দায়িত্ব পালনে উদাসীনতার অভিযোগ উঠেছে।

প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল ও ৩০০ শয্যা হাসপাতাল—দুটি প্রধান সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রেই শয্যাসংকট ভয়াবহ। জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন ও ডেঙ্গু ওয়ার্ডে শয্যার দ্বিগুণ রোগী ভর্তি। যেখানে রোগীর বিশেষ যত্ন প্রয়োজন, সেখানে গরমের মধ্যে মেঝেতে চিকিৎসা নিতে বাধ্য হওয়াটা অমানবিক। জেলা সিভিল সার্জন ও হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তারা স্বীকার করছেন যে পরিস্থিতি ‘অন্য সময়ের তুলনায় খারাপ’ এবং শয্যাসংকটের কথাও তাঁরা বলছেন। কিন্তু রোগীর সংখ্যা দ্বিগুণ হওয়ার পরও যদি হাসপাতালগুলোকে করিডরে চিকিৎসা দিতে হয়, তবে বোঝা যায়, স্বাস্থ্য বিভাগ এই জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য কোনো আগাম প্রস্তুতি বা সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণ করেনি। বেসরকারি রোগনির্ণয়কেন্দ্রগুলোতে দৈনিক প্রায় দেড় হাজার ডেঙ্গু পরীক্ষা হওয়ার তথ্য প্রমাণ করে, এ পরিস্থিতি হঠাৎ তৈরি হয়নি; বরং এর বিস্তার ছিল ব্যাপক।

ডেঙ্গুর বর্তমান ভয়াবহতার মূল কারণ হলো মশা নিধনে কর্তৃপক্ষের চরম অবহেলা। রোগী ও স্থানীয় বাসিন্দারা সরাসরি অভিযোগ করছেন, গত দুই মাসে একবারও মশার ওষুধ ছিটানো হয়নি। খাল-নালায় পানি জমে মশার বংশবৃদ্ধি হচ্ছে এবং এর ফলস্বরূপ এখন শিশুরাও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে। স্থানীয় ব্যক্তিদের অভিযোগ, প্রশাসন শুধু ঘোষণায় সীমাবদ্ধ। বাস্তবে কোনো কার্যক্রম চোখে পড়ে না। সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা যদিও ‘নিয়মিত ওষুধ ছিটানোর’ দাবি করছেন এবং নগরবাসীকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। কিন্তু হাসপাতালগুলোর উপচে পড়া ভিড় এবং নাগরিকদের সরাসরি অভিযোগ তঁার দাবির অসাড়তা প্রমাণ করে।

যদি নিয়মিতভাবে কার্যকর ওষুধ ছিটানো হতো এবং নালা পরিষ্কারে মনোযোগ দেওয়া হতো, তবে ডেঙ্গুর প্রকোপ এমন মারাত্মক আকার ধারণ করত না। এ দায় সিটি করপোরেশনকে নিতে হবে। ডেঙ্গু পরিস্থিতি ক্রমে উদ্বেগজনক হলেও সময় ফুরিয়ে যায়নি। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন ও জেলা স্বাস্থ্য বিভাগকে অবশ্যই সমন্বিতভাবে জরুরি ভিত্তিতে কাজ শুরু করতে হবে। সিটি করপোরেশনকে এখনই মশার প্রজননস্থল ধ্বংসের কাজে নামতে হবে এবং সেটি নিয়মিতভাবে চালিয়ে যেতে হবে। ওষুধ ছিটানোর কার্যক্রমও জোরালোভাবে করা হোক। খাল–নালা পরিষ্কার, পরিবেশ সুরক্ষা ও গণসচেতনতা বৃদ্ধিতে এলাকায় সব ধরনের নাগরিক সংগঠন, সামাজিক সংগঠন ও রাজনৈতিক সংগঠনগুলোকে ভূমিকা রাখতে উদ্বুদ্ধ করা হোক।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন র য ণগঞ জ পর স থ ত

এছাড়াও পড়ুন:

জুবিনের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাঠাল সিঙ্গাপুর

গত বৃহস্পতিবার শোনা গিয়েছিল, স্কুবা ডাইভিং নয়, বরং সাঁতার কাটতে গিয়েই পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়েছে জুবিন গার্গের। গতকাল শুক্রবার সেই গুঞ্জনের সত্যতা মিলল। সিঙ্গাপুর সরকার ময়নাতদন্তের রিপোর্ট তুলে দিল গায়কের স্ত্রী গরিমা শইকীয়া গার্গের হাতে। সেখানে স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে, স্কুবা ডাইভিং করার সময় নয়, সিঙ্গাপুরের একটি দ্বীপে সাঁতার কাটতে গিয়ে ডুবে মারা গেছেন তিনি।

সিঙ্গাপুর পুলিশ (এসপিএফ) প্রয়াত গায়কের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এবং তার ওপর ভিত্তি করে তৈরি প্রাথমিক অনুসন্ধানের একটি অনুলিপি ভারতীয় হাইকমিশনের হাতে তুলে দিয়েছে। পাশাপাশি, সিঙ্গাপুর পুলিশ জুবিনের স্ত্রী গরিমার সঙ্গেও কথা বলে। প্রসঙ্গত, ভারত-সিঙ্গাপুর কূটনৈতিক সম্পর্কের ৬০তম বার্ষিকী এবং ভারত ‘আসিয়ান’ পর্যটনের বর্ষপূর্তি উদ্‌যাপনে যোগ দিতে গিয়েছিলেন গায়ক।

জুবিন গার্গ

সম্পর্কিত নিবন্ধ