বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্ধেকের বেশি শিক্ষকের নেই উচ্চতর ডিগ্রি
Published: 4th, October 2025 GMT
পিএইচডি করা যাবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েও, হচ্ছে নীতিমালাকলেজশিক্ষকদের পদোন্নতি পেতে লাগবে গবেষণাওপরের পদে শিক্ষক বেশি, পিছিয়ে উচ্চতর ডিগ্রিতে
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় বাদে বাকি ৫০টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট শিক্ষক ১৬ হাজার ৮০৫ জন এবং শিক্ষার্থী প্রায় তিন লাখ। বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট শিক্ষকের মধ্যে ৫ হাজার ৩৪১ জন অধ্যাপক, ৩ হাজার ৪৮ জন সহযোগী অধ্যাপক, ৫ হাজার ৯৭ জন সহকারী অধ্যাপক এবং প্রভাষক ২ হাজার ২৮৮ জন। এ ছাড়া অন্যান্য পদে শিক্ষক আছেন ১ হাজার ৩১ জন। যেমন ২০২৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮৪টি বিভাগে ২ হাজার ৪১৮ জন শিক্ষক ছিলেন। এর মধ্যে ৯২৩ জন অধ্যাপক, ৪৫৯ জন সহযোগী অধ্যাপক, ৫২৯ জন সহকারী অধ্যাপক, ৩৮২ জন প্রভাষক এবং ১২৫ জন অন্যান্য পদে আছেন।
সব বিশ্ববিদ্যালয় মিলে মোট ৬ হাজার ৪০৭ জন শিক্ষকের পিএইচডি এবং ১ হাজার ৩২ জনের এমফিল বা সমমানের ডিগ্রি আছে। অর্থাৎ উচ্চতর ডিগ্রিধারী শিক্ষক ৭ হাজার ৪৩৯ জন, যা মোট শিক্ষকের ৪৪ দশমিক ২৭ শতাংশ। শিক্ষকদের মধ্যে শিক্ষাছুটিতে আছেন ২ হাজার ৬৮৩ জন।
ইউজিসির কর্মকর্তারা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বার্ষিক প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। এবার কোনো সুপারিশও রাখা হয়নি।
বিশেষজ্ঞরা কী বলছেনবিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের পিএইচডি থাকার আবশ্যকতা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই সোচ্চার আছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুন। এ নিয়ে তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও লেখালেখি করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে শুরুর পদেই ন্যূনতম পিএইচডি থাকার ওপর গুরুত্বারোপ করে অধ্যাপক কামরুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, যেহেতু ইউনিভার্সিটি, তাই তার আইন ও নিয়মকানুনও সেই মানেরই হতে হবে। বহু আগে ইউরোপের দেশগুলোর বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর পাস ব্যক্তিদের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হতো। এখন সেখানে শিক্ষক নিয়োগে কেবল পিএইচডিই যথেষ্ট নয়, পোস্টডক্টরাল গবেষণাও থাকতে হয়। এমনকি পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের অনেক উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক হতে হলে পিএইচডি ও পোস্টডক্টরাল গবেষণা থাকতে হয়। চীন, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানেও এ নিয়ম আছে। বাংলাদেশেও শুরুর পদে পোস্টডক্টরাল গবেষণা না থাকলেও অন্তত পিএইচডি থাকা দরকার।
কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে সহযোগী অধ্যাপক হওয়ার জন্য পিএইচডি বাধ্যতামূলক করায় অধ্যাপক কামরুল হাসান আশা প্রকাশ করে বলেন, একসময় শুরুর পদেও পিএইচডি বাধ্যতামূলক হবে।
পিএইচডিধারী শিক্ষক কমছে, মানে ঘাটতি১৫ শতাংশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা খাতে এক টাকাও বরাদ্দ নেই.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান নাম নিয়ে যারা ইসলামের বিরুদ্ধে কাজ করে, তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী বলেছেন, বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে বদদ্বীনি, কুফরি ও ভ্রান্ততার বিরুদ্ধে উলামায়ে কেরামকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। বিশেষ করে যারা মুসলমান নাম নিয়ে ইসলামের বিরুদ্ধে কাজ করে, তাদের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে হেফাজত আমির এ কথা বলেন। জাতীয় উলামা কাউন্সিল বাংলাদেশের আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে ‘জাতীয় উলামা সম্মেলন-২০২৫’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানে তিনি প্রধান অতিথি ছিলেন।
জাতীয় উলামা কাউন্সিলের সভাপতি ও বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়ার মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন। তিনি বলেন, ‘অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, আগামী জাতীয় নির্বাচনে অনেক আলেম-উলামা অংশ নেবেন। আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, আগামী জাতীয় নির্বাচনে উলামায়ে কেরামের পরস্পরে প্রতিদ্বন্দ্বিতা কাম্য নয়।’
সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ‘ইসলামি রাজনীতিতে সব সময় প্রতিপক্ষের মুখোমুখি দাঁড়ানো যায় না। সঠিক সময়ের অপেক্ষা করে লক্ষ্য অর্জনের জন্য ভূমিকা রাখতে হয়। আজ ইসলামি রাজনীতির সোনালি সময় চলছে। আমরা যদি সুযোগ কাজে না লাগাই, তাহলে সামনে বড় ধরনের ভোগান্তি তৈরি হবে।’
মুন্সিগঞ্জের জামি’আ ইসলামিয়া হালীমিয়া মাদ্রাসার প্রধান ও মধুপুরের পীর মাওলানা আবদুল হামিদ বলেন, ‘আমরা প্রয়োজনে বাতিলের বিরুদ্ধে একসঙ্গে লড়তে লড়তে মরব, কিন্তু বিভক্ত হব না ইনশা আল্লাহ।’ তিনি বলেন, ১৬ নভেম্বরের কাদিয়ানিবিরোধী আন্দোলন শেষ হয়নি, শুরু হয়েছে মাত্র। সরকারকে সুযোগ দেওয়া হয়েছে, পরেরবার আর সুযোগ দেওয়া হবে না।
হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমান বলেন, ‘আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকব। যারা কাজ করতে চায়, তাদের বাধা দেব না। আমরা নিজেরা নিজেদের শত্রু হব না, ইনশা আল্লাহ।’
সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমাদ, জাতীয় উলামা কাউন্সিলের মহাসচিব মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী, মাওলানা নূরুল ইসলাম ওলিপুরী, মাওলানা সালাহুদ্দীন নানুপুরী, মাওলানা মুশতাক আহমদ প্রমুখ।