জন্মনিয়ন্ত্রণের সুখী বড়ির ফয়েল পেপার বেশি দামে কিনল এসেনসিয়াল
Published: 5th, October 2025 GMT
খুচরা বাজারে ভালো মানের এক পিস ফয়েল পেপার বিক্রি হয় ৯০ পয়সায়। কিন্তু এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেড (ইডিসিএল) প্রতি পিস ফয়েল পেপার ২ টাকা ৫৭ পয়সায় কিনেছে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, জন্মনিয়ন্ত্রণের সুখী বড়ির প্যাকেট বানাতে মাত্রাতিরিক্ত দামে এই ফয়েল পেপার কিনেছে সরকারি প্রতিষ্ঠানটি।
ইডিসিএল একটি শতভাগ রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানি। প্রতিষ্ঠানটির নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়। ইডিসিএলের মূল উদ্দেশ্য সাশ্রয়ী মূল্যে মানসম্পন্ন ওষুধ তৈরি করা। সরকারি হাসপাতালসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে তা সরবরাহ করা।
আরও পড়ুন৪৭৭ কোটি টাকা লোপাটের ঘটনা দুদককে অনুসন্ধানের নির্দেশ হাইকোর্টের১২ মার্চ ২০২৩সুখী বড়ির প্যাকেট বানাতে ফয়েল ও শ্রিঙ্ক পেপার ব্যবহার করা হয়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইডিসিএল দীর্ঘদিন ফয়েল ও শ্রিঙ্ক পেপার কিনে এসেছে কেজি হিসেবে। কিন্তু ইডিসিএলের বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো.
নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের মধ্যে গত বছরের ২ অক্টোবর ইডিসিএলের এমডির পদ থেকে ইস্তফা দেন এহসানুল কবির। পরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সামাদ মৃধাকে ইডিসিএলের নতুন এমডি হিসেবে নিয়োগ দেয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, সুখী বড়ির প্যাকেট তৈরির জন্য ১ কোটি ৭৮ লাখ পিস ফয়েল পেপার এবং ১৮ লাখ পিস শ্রিঙ্ক পেপার কিনতে গত জুলাইয়ে দরপত্রের বিজ্ঞাপন দেয় ইডিসিএল। ফয়েল পেপার সরবরাহের কাজ পায় এস এস ফ্লেক্সিপ্যাক লিমিটেড। আর শ্রিঙ্ক পেপার সরবরাহের কাজ পায় সুরাইয়া প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠান দুটির মালিক মোস্তাফিজুর রহমান ও তাঁর স্ত্রী সুকানা কামাল। অভিযোগ আছে, তাঁদের প্রতিষ্ঠানকে অতিরিক্ত ব্যবসার সুযোগ দিতে কেজির পরিবর্তে এসব পণ্য পিস হিসেবে কেনা হয়েছে। এমডি হিসেবে সামাদ মৃধার যোগদানের পর এ দুই প্রতিষ্ঠান ইডিসিএলের অধিকাংশ কেনাকাটার কাজ পাচ্ছে।
নথি অনুযায়ী, প্রতি পিস ফয়েল পেপার ২ টাকা ৫৭ পয়সায় কিনেছে ইডিসিএল। আর প্রতি পিস শ্রিঙ্ক পেপার কিনেছে ৪ টাকা ৪৫ পয়সায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, আগে এক কেজি ফয়েল পেপার কেনা হতো ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা দরে। আর এখন তা পিস হিসেবে কেনা হচ্ছে। পিস থেকে কেজিতে রূপান্তর করলে প্রতি কেজি ফয়েল পেপারের দাম পড়ছে প্রায় দুই হাজার টাকা।
অন্যান্য কোম্পানির থেকে তাঁদের কেনা ফয়েল ও শ্রিঙ্ক পেপার উন্নত মানের। তাই বাজারের সঙ্গে তুলনা করা যাবে না। প্রতিযোগিতামূলক দরপত্রের মাধ্যমে এগুলো কেনা হয়েছে। এতে পিস অথবা কেজি মুখ্য বিষয় নয়।মো. আ. সামাদ মৃধা, ইডিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি)বেশি দামে কেনাকাটার বিষয়ে জানতে চাইলে ইডিসিএলের এমডি সামাদ মৃধা প্রথম আলোকে বলেন, অন্যান্য কোম্পানির থেকে তাঁদের কেনা ফয়েল ও শ্রিঙ্ক পেপার উন্নত মানের। তাই বাজারের সঙ্গে তুলনা করা যাবে না। প্রতিযোগিতামূলক দরপত্রের মাধ্যমে এগুলো কেনা হয়েছে। এতে পিস অথবা কেজি মুখ্য বিষয় নয়। কেজিতে হিসাব করলে তাঁদের কেনা ফয়েল পেপারের দাম ১ হাজার ৫০০ টাকার বেশি হবে। আর প্যাকেটের ওজন বেশি হওয়ায় প্রতি কেজিতে ৬০০ পিসের মতো হবে।
আরও পড়ুনস্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন এসেনসিয়াল ড্রাগসে ৩ হাজারের বেশি বাড়তি লোক ০৫ অক্টোবর ২০২৪নথি অনুযায়ী, প্রতি পিস ফয়েল পেপার ২ টাকা ৫৭ পয়সায় কিনেছে ইডিসিএল। আর প্রতি পিস শ্রিঙ্ক পেপার কিনেছে ৪ টাকা ৪৫ পয়সায়।পুরান ঢাকার ফয়েল ও শ্রিঙ্ক পেপারের একাধিক ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলেছে প্রথম আলো। তাঁদের একজন মো. ফারুক হোসেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, তিন স্তরের ভালো মানের এক পিস ফয়েল পেপারের মূল্য সর্বোচ্চ ৯০ পয়সা। আর এক পিস শ্রিঙ্ক পেপার বিক্রি হয় ১ টাকা ২০ পয়সায়। বেশি পরিমাণ কিনলে দাম আরও কম হয়।
আরও পড়ুনসরানো হচ্ছে এসেনসিয়াল ড্রাগসের তেজগাঁও কারখানা২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১আরও পড়ুনযাঁরা অনিয়ম ধরবেন, তাঁদের স্বজনেরাই পান চাকরি০৮ জুন ২০২১আরও পড়ুনকোম্পানি কি এমপি ইলেকশন করবে যে নির্বাচনে প্রভাব পড়বে?০২ আগস্ট ২০২৩উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: বড় র প য ক ট ব যবস পয়স য়
এছাড়াও পড়ুন:
বিশ্ববাজারে খাদ্যপণ্যের দাম কিছুটা কমেছে: এফএও
বিশ্ববাজারে সদ্য সমাপ্ত সেপ্টেম্বরে খাদ্যপণ্যের দাম কিছুটা কমেছে। বিশেষ করে চিনি ও দুগ্ধজাত পণ্যের দাম হ্রাস পেয়েছে। যদিও মাংসের মূল্য কিছুটা বেড়েছে।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) আজ শুক্রবার জানিয়েছে, গত মাসে বৈশ্বিক খাদ্য মূল্যসূচক কিঞ্চিৎ কমে ১২৮ দশমিক ৮ পয়েন্ট হয়েছে, যা আগের মাস আগস্টে (সংশোধিত) ছিল ১২৯ দশমিক ৭ পয়েন্ট।
এফএওর প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্ববাজারে চিনির দাম কমে ২০২১ সালের পর সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমেছে। যদিও গত জুলাইয়ে পণ্যটির দাম দুই বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ছিল। পরের মাসেও সেই দাম স্থিতিশীল ছিল। তবে সেপ্টেম্বরে চিনির মূল্যসূচক ৪ দশমিক ১ শতাংশ কমে।
চিনির দাম কমার মূল কারণ হচ্ছে, সরবরাহ পরিস্থিতির উন্নতি। এবার ব্রাজিলে উৎপাদন প্রত্যাশার চেয়ে বেশি হয়েছে। ভারত ও থাইল্যান্ডেও ভালো ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে দুগ্ধজাত পণ্যের মূল্যসূচক গত মাসে ২ দশমিক ৬ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। মূলত মাখনের দাম কমার কারণে এটির মূল্য হ্রাস হয়েছে। প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে দুগ্ধজাত পণ্যের উৎপাদন বৃদ্ধির সম্ভাবনাও ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
এফএওর শস্যসূচক আগস্টের তুলনায় সেপ্টেম্বরে শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ কমেছে। এর মধ্যে বৈশ্বিক চাহিদা কমার ফলে গমের দাম তিন মাস ধরে কমছে। আর্জেন্টিনা রপ্তানি কর সাময়িকভাবে স্থগিত করায় ভুট্টার দামও কমেছে। আবার ফিলিপাইন ও আফ্রিকার ক্রেতাদের ক্রয়াদেশ কমায় চালের মূল্যসূচকও গত মাসে হ্রাস পেয়েছে।
গরু ও ভেড়ার মাংসের দাম বাড়ার কারণে গত মাসে মাংসের মূল্যসূচক শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ বেড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে দেশীয় সরবরাহ সীমিত ও তার বিপরীতে চাহিদা বৃদ্ধির কারণে গরুর মাংসের দাম নতুন করে শীর্ষে পৌঁছেছে।
এফএওর এক পৃথক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালে বৈশ্বিক শস্য উৎপাদন ২ দশমিক ৯৭১ বিলিয়ন মেট্রিক টন হতে পারে, যা আগস্টে দেওয়া ২ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন টনের পূর্বাভাসের চেয়ে বেশি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরে বৈশ্বিক শস্য উৎপাদন গত বছরের তুলনায় ৩ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি হতে পারে। তাহলে তা হবে ২০১৩ সালের পর সর্বোচ্চ বার্ষিক প্রবৃদ্ধি।