Prothomalo:
2025-10-05@11:36:21 GMT

বিপদে আল্লাহর অপার ভরসা

Published: 5th, October 2025 GMT

কখনো কখনো আমাদের দুঃখ-কষ্টগুলো এত বড় মনে হয় যে সবরের সীমানা যেন তার প্রাচীর ছুঁয়ে ফেলে। অজান্তেই মনের গভীর থেকে বেরিয়ে আসে, ‘আর কত সবর করব?’

এমন মুহূর্তে নিজেকে অপরাধী বা গুনাহগার মনে হয়। বারবার প্রশ্ন জাগে, ‘আমি কি আল্লাহর ভালোবাসা পাওয়ার যোগ্য হতে পেরেছি? আমি কি তাঁর প্রিয় বান্দা হতে পেরেছি?’

মনে হয়, আল্লাহ কেবল তাঁর প্রিয় বান্দাদেরই পরীক্ষা নেন। তবে অন্তরের গভীরে এই সত্য জানা থাকে যে, আল্লাহ দয়াময়, তিনি তাঁর বান্দাকে মায়ের চেয়েও অনেক বেশি ভালোবাসেন। মা সন্তানের প্রতি ভুল করতে পারে, কিন্তু দয়ালু রব কখনো তাঁর বান্দার অকল্যাণ চান না।

যে ব্যক্তি আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করে, তার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট।সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ২,৫১৬

তবু কখনো কখনো পাহাড়সম কষ্টের মুহূর্তে মনে হয়, হয়তো গুনাহের কারণেই আল্লাহ এই শাস্তি দিচ্ছেন। মনে হয়, এটি গুনাহের কাফফারা। অথচ আমরা জানি না, আল্লাহ আসলে কী করছেন। কষ্টের সময়ে মন কিছুই মানতে চায় না।

তাই বিপদ ও কষ্টের মুহূর্তে আল্লাহর প্রতি তাওয়াক্কুলকে শক্তভাবে ধরে রাখতে হয়।

বিপদে তাওয়াক্কুলের গুরুত্ব

তাওয়াক্কুল মানে আল্লাহর ওপর ভরসা রাখা। বিপদে ভীত বা দিশাহারা হয়ে আল্লাহর প্রতি আশা ও ভালোবাসা হারানো ঠিক নয়। এ সময়ে সবর, সালাত এবং দোয়ার মাধ্যমে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া জরুরি।

আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনগণ, ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে সাহায্য চাও। নিশ্চয় আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৫৩)

আরও পড়ুনকুনুতে নাজেলা: বিপদে আল্লাহর কাছে আশ্রয়ের দোয়া০৮ জুলাই ২০২৫

তিনিই সর্বোত্তম সাহায্যকারী ও পরিত্রাণদাতা। তাওয়াক্কুল, অর্থাৎ আল্লাহর ওপর পূর্ণ ভরসা, বিপদের সময় আমাদের সবরের প্রধান হাতিয়ার।

রাসুল (সা.

) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করে, তার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ২,৫১৬)

তাওয়াক্কুলের অর্থ হলো আল্লাহর ওপর পূর্ণ নির্ভরতা ও বিশ্বাস রাখা যে তিনি আমাদের জন্য সর্বোত্তম ফলাফল নির্ধারণ করবেন।

সদকা বিপদ থেকে মুক্তি দেয় এবং ইস্তিগফার গুনাহ ক্ষমার পথ খুলে দেয়।সবর ও দোয়ার মাধ্যমে তাওয়াক্কুল

কষ্টের সময়ে সবর করা কঠিন, কিন্তু এর কোনো বিকল্প নেই। সবর মানে বিপদকে তাকদির হিসেবে মেনে নিয়ে ধৈর্য ধরা। এ সময় সদকা ও ইস্তিগফার (ক্ষমা প্রার্থনা করা) অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘ইস্তিগফারের মাধ্যমে রিজিক বৃদ্ধি পায় এবং দুঃখ-কষ্ট দূর হয়।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস: ৩৮১৯)

সদকা বিপদ থেকে মুক্তি দেয় এবং ইস্তিগফার গুনাহ ক্ষমার পথ খুলে দেয়।

আল্লাহর কাছে দোয়া করা তাওয়াক্কুলের একটি অপরিহার্য অংশ। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘দোয়া হলো ইবাদতের মূল।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ৩,৩৭১)

বিপদের সময় আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে, কিন্তু ফলাফলের ওপর অতিরিক্ত উদ্বেগ না করে আল্লাহর প্রতি পূর্ণ ভরসা রাখতে হবে।

আরও পড়ুনধর্মে পূর্বপুরুষদের অন্ধ অনুকরণের বিপদ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫বিপদকে দোয়া ও ক্ষমায় রূপান্তর

আল্লাহ তাঁর প্রিয় বান্দাদের বিপদ ও কষ্ট দিয়ে পরীক্ষা করেন, যাতে তাঁদের গুনাহ ক্ষমা করা যায় এবং তাঁদের ইমানের শক্তি পরীক্ষা করা যায়। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘কোনো মুসলিমের ওপর এমন কোনো বিপদ আসে না, এমনকি একটি কাঁটার আঘাতও, যার দ্বারা আল্লাহ তার গুনাহ ক্ষমা করেন না।’ (বুখারি, সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫,৬৪১)

তাই বিপদকে শাস্তি হিসেবে না দেখে এটিকে আল্লাহর রহমত ও ক্ষমার মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করতে হবে।

তাওয়াক্কুলের শক্তিশালী ছায়াতলে সবর ও দোয়ার মাধ্যমে আমরা আমাদের দুঃখ-কষ্টগুলোকে আল্লাহর দয়ায় রূপান্তর করতে পারি। ইস্তেগফারের মাধ্যমে গুনাহ ক্ষমা হয় এবং দোয়ার মাধ্যমে বিপদ থেকে মুক্তির পথ খোলে।

বিপদে তাওয়াক্কুল একজন মুমিনের ইমানের শক্তির পরিচায়ক। কষ্টের সময় সবর, সালাত, দোয়া, সাদাকা এবং ইস্তিগফারের মাধ্যমে আল্লাহর প্রতি পূর্ণ ভরসা রাখলে আমাদের দুনিয়া ও আখিরাতে সফলতার পথ প্রশস্ত হবে। আল্লাহর ওপর ভরসার মন্ত্র

বিপদ, দুঃখ-কষ্টে আমাদের একমাত্র অভিভাবক আল্লাহ। তাই সর্বাবস্থায় আমাদের উচিত এই দোয়া পড়া: হাসবুনাল্লাহু ওয়া নি’মাল ওয়াকিল। (আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট এবং তিনিই উত্তম সাহায্যকারী, কার্যসম্পাদনকারী)। (সুরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৭৩)

বিপদে তাওয়াক্কুল একজন মুমিনের ইমানের শক্তির পরিচায়ক। কষ্টের সময় সবর, সালাত, দোয়া, সাদাকা এবং ইস্তিগফারের মাধ্যমে আল্লাহর প্রতি পূর্ণ ভরসা রাখলে আমাদের দুনিয়া ও আখিরাতে সফলতার পথ প্রশস্ত হবে।

আল্লাহ আমাদের যাকে বেশি ভালোবাসেন, তাকে বিপদ দিয়ে পরীক্ষা করেন, যাতে তিনি তাকে গুনাহমুক্ত করেন এবং তাঁর নৈকট্যে আনেন। তাই বিপদকে ভয় না করে তাওয়াক্কুলের ছায়াতলে আল্লাহর দয়া ও ক্ষমার আশায় এগিয়ে যেতে হবে। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে বিপদে সবর ও তাওয়াক্কুলের তৌফিক দান করুন।

আরও পড়ুনআল্লাহর ওপর ভরসা রাখার ৪ উপায়০৪ মে ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প র ণ ভরস আম দ র দ পর ক ষ বল ছ ন আল ল হ র জন য র ভরস র ওপর ব পদক

এছাড়াও পড়ুন:

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাসাভাড়া বেড়েছে, পরিপত্র জারি

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাসাভাড়া ৫০০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। এর ফলে শিক্ষকেরা এখন থেকে দেড় হাজার টাকা বাসাভাড়া পাবেন। আজ রোববার অর্থ মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে ভাড়া বৃদ্ধির পরিপত্র প্রকাশ করা হয়েছে। গত ৩০ সেপ্টেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রবিধি শাখার পরিপত্রে এ–সংক্রান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়।

আরও পড়ুনসহকারী শিক্ষকের বেতন কম্পিউটার অপারেটরের সমান, কলেজ অধ্যাপকের যুগ্ম সচিবেরও নিচে৪ ঘণ্টা আগে

পরিপত্রে বলা হয়েছে, ‘বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া ভাতা নিম্নোক্ত শর্তাদি পালন সাপেক্ষে ১ হাজার টাকা হতে বৃদ্ধি করে ১ হাজার ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হলো।’ শর্তে বলা হয়েছে, ‘এ ভাতা প্রদানের ক্ষেত্রে যাবতীয় আর্থিক বিধিবিধান যথাযথভাবে অবশ্যই অনুসরণ করতে হবে; এ ভাতা–সংক্রান্ত ব্যয়ে ভবিষ্যতে কোনো অনিয়ম দেখা দিলে বিল পরিশোধকারী কর্তৃপক্ষ উক্ত অনিয়মের জন্য দায়ী থাকবেন।’ প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় থেকে আদেশ জারির তারিখ থেকে ভাতা কার্যকর হবে। প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় কর্তৃক জিও জারি করে জিওর চার কপি অর্থ বিভাগে পৃষ্ঠাঙ্কনের জন্য পাঠাতে হবে।

আরও পড়ুনঅক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ফ্রি অনলাইন কোর্স, ঘরে বসেই শিখুন নতুন দক্ষতা৯ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ