আওয়ামী লীগের ‘রাতের ভোটকেও হার মানিয়েছে’ বিসিবি নির্বাচন: রেদোয়ান
Published: 5th, October 2025 GMT
বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল ও ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান নাজমুল আবেদীনের সঙ্গে বিসিবি নির্বাচনে অংশ নেয়ার কথা ছিল বিসিবি পরিচালক এসএম আব্দুল্লাহ আল ফুয়াদ রেদোয়ানের।
কিন্তু আজ রবিবার (০৫ অক্টোবর) নির্বাচনের ২৪ ঘণ্টা আগে নিজের নাম প্রত্যাহার করে নেন রেদোয়ান। ফলে ঢাকা বিভাগ থেকে আমিনুল ও ফাহিম নির্বাচন করে জিতে যাচ্ছেন খুব সহজে। এর আগে নির্বাচন কমিশন তার মনোনয়ন নিয়ে আপত্তি তুলেছিল। পরে সুপারিশ করে সেই মনোনয়ন ফিরে পান।
আরো পড়ুন:
‘ফাঁকা মাঠে গোল’ আমিনুল-ফাহিমের, বললেন, ‘ক্রিকেটের স্বার্থে আছি’
বিসিবি নির্বাচনে বাধা নেই
সব মিলিয়ে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনে ১৬ জন ও পরে নির্বাচনের আগের দুই দিনে আরও ৪ জন নির্বাচন বয়কট করলেন। প্রত্যেকের অভিযোগ ঘুরে-ফিরে এগুলোই, ‘অনিয়ম, অস্বচ্ছতা, স্বেচ্ছাচারিতা, দুর্নীতি।’
আবদুল্লাহ আল ফুয়াদ রেদোয়ান সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ের ‘রাতের ভোট’কেও হার মানিয়েছে এবারের বিসিবি নির্বাচন। তিনি বলেন, ‘‘রাতের ভোট তো.
“এই অবস্থায় ক্রিকেটের স্বার্থে, আমার সর্বশেষ কথা, এই অবস্থার পরিবর্তন চাই। এসব থাকুক, আমরা চাই না। সকলকে নিয়ে এই নির্বাচন বাতিল করে পুনরায় একটি স্বচ্ছ ও সুন্দর নির্বাচন হোক। সেখানে যে নির্বাচিত হবে, তাকেই স্যালুট দেব।”
ঢাকা বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটিতে আমিনুল ইসলাম বুলবুলকে ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার কমিটিতে নাজমুল আবেদীনকে রাখা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি, “আমিনুল ইসলাম বুলবুল বাংলাদেশের ক্রিকেটের কিংবদন্তি। লেজেন্ড হিসেবে উনাকে শ্রদ্ধা করি। তবে উনার উচিত হয়নি এই ঢাকা বিভাগীয় ক্রিকেট সংস্থা থেকে প্রার্থী হওয়া। উনি কোনোদিনই ঢাকা বিভাগের কোনো জেলারই কোনো সদস্য ছিলেন না। কোনো জেলারই কোনো ক্রিকেট নিয়ে উনি কাজ করেননি।’’
“একই প্রকার নাজমুল আবেদিন ফাহিম। উনার অ্যাডহক কমিটির সদস্য হওয়ার ব্যাপার দেখেন, ঢাকা জেলা ক্রীড়া সংস্থায় উনি কবে, কোন সময়, কোন উপজেলায়, কোন সময় সদস্য ছিলেন, কোন খেলা পরিচালনা করছেন? আমি একটু জানতে চাই। উনিও একই প্রক্রিয়ায় ঢাকা জেলা ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটির সদস্য হয়েছেন।’’
“যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, ক্রিকেট বোর্ডের আমিনুল আর ফাহিম সাহেবরা ও নির্বাচন কমিশন— বিনি সুঁতোর মালা গেঁথে ফেলেছেন। যে মালা আমার গলায় কস্মিনকালেও পরবে না। সুতরাং আমার আমি আজকে আপনাদের মাধ্যমে এই অস্বচ্ছ একটি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াচ্ছি।” - যোগ করেন তিনি।
ঢাকা/আমিনুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আম ন ল সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
শহীদ নূর হোসেন, বৃদ্ধ মজিবুর রহমান এবং শামসুর রাহমানের কবিতা
কবি আর কবিতার প্রতি ভালোবাসা, অনুপ্রাণিত আকর্ষণ সব সময়েরই সঙ্গী আমার। এক সময়ে, ষাটের দশকের শুরু থেকে উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থানের সময়কাল পর্যন্ত কবিতাচর্চায় বেশ নিমগ্ন সময় কেটেছিল।
এরপরও কোনো কোনো সময়ে হঠাৎ আলোর ঝলকানির মতো কবিতার রাজ্যে ফিরে গেলেও তা কখনই ষাটের দশকের সে দিনগুলোর মতো উজ্জ্বল হয় না। আর, ১৯৬৪ সালের একুশে ফেব্রুয়ারির কার্জন হলের অনুষ্ঠানে দর্শক-শ্রোতার সামনে কবিতা পাঠের মতো সাহস প্রদর্শনের সুযোগও আসেনি কোনো দিন।
তবে কবি আর কবিতার রাজ্যে বিচরণ আজও অব্যাহত রয়েছে। সেদিন, ২০ জানুয়ারি সকালে, নিজ বাসগৃহের ছোট বারান্দায় হঠাৎ যে অনিন্দ্য কাব্যিক পরিবেশ গড়ে উঠেছিল, তা আগামী দিনগুলোর জন্য এক মধুর স্মৃতি হয়ে বিরাজ করবে। শ্রোতা তিনজন।
বৃদ্ধ মজিবুর রহমান, বন্ধু অজয় এবং শৈশব আর কৈশোরের সন্ধিক্ষণের সাশা। অনভ্যস্ত এবং অপরিশীলিত কণ্ঠে পাঠ করছি সাপ্তাহিক একতা থেকে আজকের বাংলাদেশের প্রধান কবি শামসুর রাহমানের সদ্য প্রকাশিত কবিতা ‘বুক তার বাংলাদেশের হৃদয়’। আবৃত্তি নয়, বিলম্বিত তালে ধীরে ধীরে পড়ছি। শ্রোতা তিনজন গভীর মগ্নতায় শুনছেন। কবিতা পাঠ চলছে, কবিতার কথা, ভাষা আর ভাবে বৃদ্ধ মজিবুর রহমানের দুচোখ সজল হয়ে উঠছে। কবিতা পাঠ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রুদ্ধশ্বাস দমন করে, অশ্রুভরা দুচোখ নিয়ে ডুকরে কেঁদে উঠে বৃদ্ধ মজিবুর রহমান বলতে থাকলেন, বারবার বলতে থাকলেন, ‘ধন্য কবি’, ‘ধন্য কবি’। তিনি চোখ মুছছেন দুহাতে, আর বুকফাটা আর্তনাদ চেপে, কান্নাভেজা কণ্ঠে বলছেন, ‘গণতন্ত্র মুক্তি পাক’।
গণতন্ত্র যেন প্রতিষ্ঠিত হয়। তিনি বলছেন, আমি দোয়া করছি, ২২-দলের ঐক্য টিকে থাকুক। মানুষের মঙ্গল হোক। সকলের চোখ তখন সজল। অশ্রুধারা রুখতে সকলেরই চলেছে কষ্টপ্রয়াস। পিতা পুত্র হারানোর শোকে বিহ্বল, আর উপস্থিত সকলে গভীরভাবে আলোড়িত, অনুপ্রাণিত। এমন সুন্দর এক মহতী পরিবেশ জীবনে কতবার আসে?
আরও পড়ুনইতিহাসের দায় ও শহীদ নূর হোসেন১২ নভেম্বর ২০১৯বৃদ্ধ মজিবুর রহমানের সঙ্গে পরিচয়ের ঘটনাটিও বড় বেদনাদায়ক। ২৮ নভেম্বর (’৮৭ সাল) ওয়ারী থেকে বেবি ট্যাক্সিতে মণিপুরীপাড়ায় শিল্পী কামরুল হাসানের বাসা হয়ে বংশালের দিকে রওনা দিয়েছি। বেবি ট্যাক্সি ইন্দিরা রোড হয়ে ফার্মগেটের দিকে যাচ্ছে। এ সময়েই বৃদ্ধ ট্যাক্সিচালক চকিতে পেছনে ফিরে বললেন, ‘আমি আপনাকে চিনি। আপনি পত্রিকার লোক। আর আমি শহীদ নূর হোসেনের বাবা।’ আমি চমকে উঠলাম। বেবি ট্যাক্সিচালক মজিবুর রহমান নানা কথা বলছেন। আমি নির্বাক আর অভিভূত। লজ্জায় কুণ্ঠিত।
বুকে-পিঠে স্লোগান লিখে রাজপথের আন্দোলনে নূর হোসেন