শিকাগোতে ৩০০ ন্যাশনাল গার্ড সদস্য মোতায়েনের অনুমোদন ট্রাম্পের
Published: 6th, October 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের শিকাগো শহরে ‘লাগামহীন অপরাধ’ দমনের অজুহাতে ৩০০ ন্যাশনাল গার্ড সদস্য মোতায়েনের অনুমোদন দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই পদক্ষেপের কয়েক ঘণ্টা আগে অভিবাসন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, ডেমোক্র্যাট শাসিত শহরটিতে বিক্ষোভকারীদের তাদের সংঘর্ষ হয়। বিক্ষোভকারীরা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গাড়ির ওপর গাড়ি উঠিয়ে দেয়। এ সময় অস্ত্রধারী এক নারীকে গুলি করা হয়। হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ জানায়, গুলিবিদ্ধ নারী নিজেই স্থানীয় হাসপাতালে যান। তবে তার শারীরিক অবস্থা জানা যায়নি।
এদিকে কয়েক সপ্তাহ ধরে শিকাগোয় সেনা মোতায়েন পরিকল্পনার সমালোচনা করে আসছেন অঙ্গরাজ্য সরকার এবং স্থানীয় নেতারা। তাঁরা এটিকে ক্ষমতার অপব্যবহার বলে আখ্যা দিয়েছেন। ইলিনয়ের গভর্নর জেবি প্রিটজকার বলেন, ‘ট্রাম্প একটি কৃত্রিম সংকট তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছেন।’
এর আগে অরিগনের পোর্টল্যান্ড শহরেও ২০০ ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের পদক্ষেপ নিয়েছিলেন ট্রাম্প। কিন্তু ফেডারেল বিচারক কারিন ইমারগুট সাময়িকভাবে তা স্থগিত করে দেন। তিনি বলেন, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ সংবিধানবিরোধী এবং অঙ্গরাজ্যের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি।
হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের সহকারী সচিব ট্রিশা ম্যাকলাফলিন এক বিবৃতিতে বলেছেন, শিকাগোয় বিক্ষোভের কারণে ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাদের যানবাহন সরাতে পারছিলেন না। ফলে তাঁরা গাড়ি থেকে নেমে যেতে বাধ্য হন। যে গাড়িটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যানবাহনে ধাক্কা দিয়েছিল, সেটির চালকের হাতে একটি বন্দুক ছিল।’
শিকাগোতে ন্যাশনাল গার্ডের কোনো সেনা পৌঁছেছেন কি না তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ নিশ্চিতভাবে আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে বলেই মনে হচ্ছে।
ডেমোক্র্যাট শাসিত শহরগুলোতে বিতর্কিতভাবে সেনা মোতায়েনের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের চেষ্টা চালাচ্ছেন ট্রাম্প। ওয়াশিংটন, লস অ্যাঞ্জেলেস, মেমফিস ও পোর্টল্যান্ডের পর এবার শিকাগোতে সেনা মোতায়েনের ঘোষণা এল।
ন্যাশনাল গার্ড সাধারণত অঙ্গরাজ্যের গভর্নরের অনুমতিতে মোতায়েন করা হয়। কিন্তু অঙ্গরাজ্যের অনুমতি ছাড়াই কেন্দ্র সরকারের অধীনে বিভিন্ন শহরে সেনা মোতায়েনের বিষয়টি আইনি ও সাংবিধানিক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির বিরুদ্ধে শিকাগোতে বিক্ষোভ ক্রমাগত বাড়ছে। সেখানকার ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট কার্যালয়ের সামনে বেশ কিছু বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছে।
হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র অ্যাবিগেইল জ্যাকসন বলেছেন, শিকাগোর গভর্নর প্রিটজকারের মতো স্থানীয় নেতারা চলমান সহিংস দাঙ্গা ও বিশৃঙ্খল দমনে এগিয়ে আসেননি। এমন পরিস্থিতিতে কেন্দ্র সরকারের কর্মকর্তা ও সরকারি সম্পদ রক্ষার জন্য শহরটিতে ৩০০ ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের অনুমোদন দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের শহরগুলোতে ছড়িয়ে পড়া অরাজকতার মধ্যে চোখ বন্ধ করে বসে থাকবেন না।
শিকাগোতে বিভিন্ন অপরাধ ও গোলাগুলির ঘটনা উল্লেখ করে প্রায় এক মাস ধরে সেখানে সেনা পাঠানোর হুমকি দিয়ে আসছিলেন ট্রাম্প।
তবে পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, শিকাগোতে গত দুই বছরে সহিংস অপরাধের ঘটনা উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। কাউন্সিল অন ক্রিমিনাল জাস্টিসের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত শহরটিতে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় এক-তৃতীয়াংশ কমেছে। যদিও শিকাগোতে সামগ্রিক অপরাধের মাত্রা যুক্তরাষ্ট্রের অনেক শহরের তুলনায় বেশি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পদক ষ প র অন ম সরক র অপর ধ র ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
শিকাগোতে ৩০০ ন্যাশনাল গার্ড সদস্য মোতায়েনের অনুমোদন ট্রাম্পের
যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের শিকাগো শহরে ‘লাগামহীন অপরাধ’ দমনের অজুহাতে ৩০০ ন্যাশনাল গার্ড সদস্য মোতায়েনের অনুমোদন দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই পদক্ষেপের কয়েক ঘণ্টা আগে অভিবাসন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, ডেমোক্র্যাট শাসিত শহরটিতে বিক্ষোভকারীদের তাদের সংঘর্ষ হয়। বিক্ষোভকারীরা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গাড়ির ওপর গাড়ি উঠিয়ে দেয়। এ সময় অস্ত্রধারী এক নারীকে গুলি করা হয়। হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ জানায়, গুলিবিদ্ধ নারী নিজেই স্থানীয় হাসপাতালে যান। তবে তার শারীরিক অবস্থা জানা যায়নি।
এদিকে কয়েক সপ্তাহ ধরে শিকাগোয় সেনা মোতায়েন পরিকল্পনার সমালোচনা করে আসছেন অঙ্গরাজ্য সরকার এবং স্থানীয় নেতারা। তাঁরা এটিকে ক্ষমতার অপব্যবহার বলে আখ্যা দিয়েছেন। ইলিনয়ের গভর্নর জেবি প্রিটজকার বলেন, ‘ট্রাম্প একটি কৃত্রিম সংকট তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছেন।’
এর আগে অরিগনের পোর্টল্যান্ড শহরেও ২০০ ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের পদক্ষেপ নিয়েছিলেন ট্রাম্প। কিন্তু ফেডারেল বিচারক কারিন ইমারগুট সাময়িকভাবে তা স্থগিত করে দেন। তিনি বলেন, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ সংবিধানবিরোধী এবং অঙ্গরাজ্যের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি।
হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের সহকারী সচিব ট্রিশা ম্যাকলাফলিন এক বিবৃতিতে বলেছেন, শিকাগোয় বিক্ষোভের কারণে ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাদের যানবাহন সরাতে পারছিলেন না। ফলে তাঁরা গাড়ি থেকে নেমে যেতে বাধ্য হন। যে গাড়িটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যানবাহনে ধাক্কা দিয়েছিল, সেটির চালকের হাতে একটি বন্দুক ছিল।’
শিকাগোতে ন্যাশনাল গার্ডের কোনো সেনা পৌঁছেছেন কি না তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ নিশ্চিতভাবে আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে বলেই মনে হচ্ছে।
ডেমোক্র্যাট শাসিত শহরগুলোতে বিতর্কিতভাবে সেনা মোতায়েনের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের চেষ্টা চালাচ্ছেন ট্রাম্প। ওয়াশিংটন, লস অ্যাঞ্জেলেস, মেমফিস ও পোর্টল্যান্ডের পর এবার শিকাগোতে সেনা মোতায়েনের ঘোষণা এল।
ন্যাশনাল গার্ড সাধারণত অঙ্গরাজ্যের গভর্নরের অনুমতিতে মোতায়েন করা হয়। কিন্তু অঙ্গরাজ্যের অনুমতি ছাড়াই কেন্দ্র সরকারের অধীনে বিভিন্ন শহরে সেনা মোতায়েনের বিষয়টি আইনি ও সাংবিধানিক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির বিরুদ্ধে শিকাগোতে বিক্ষোভ ক্রমাগত বাড়ছে। সেখানকার ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট কার্যালয়ের সামনে বেশ কিছু বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছে।
হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র অ্যাবিগেইল জ্যাকসন বলেছেন, শিকাগোর গভর্নর প্রিটজকারের মতো স্থানীয় নেতারা চলমান সহিংস দাঙ্গা ও বিশৃঙ্খল দমনে এগিয়ে আসেননি। এমন পরিস্থিতিতে কেন্দ্র সরকারের কর্মকর্তা ও সরকারি সম্পদ রক্ষার জন্য শহরটিতে ৩০০ ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের অনুমোদন দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের শহরগুলোতে ছড়িয়ে পড়া অরাজকতার মধ্যে চোখ বন্ধ করে বসে থাকবেন না।
শিকাগোতে বিভিন্ন অপরাধ ও গোলাগুলির ঘটনা উল্লেখ করে প্রায় এক মাস ধরে সেখানে সেনা পাঠানোর হুমকি দিয়ে আসছিলেন ট্রাম্প।
তবে পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, শিকাগোতে গত দুই বছরে সহিংস অপরাধের ঘটনা উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। কাউন্সিল অন ক্রিমিনাল জাস্টিসের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত শহরটিতে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় এক-তৃতীয়াংশ কমেছে। যদিও শিকাগোতে সামগ্রিক অপরাধের মাত্রা যুক্তরাষ্ট্রের অনেক শহরের তুলনায় বেশি।