জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (উত্তাঞ্চল) সারজিস আলম বলেছেন, “আমরা (এনসিপি) আগামী নির্বাচনে শাপলা প্রতীক নিয়েই অংশগ্রহণ করব। অন্য কোনো অপশন নেই।”

সোমবার (৬ অক্টোবর) দুপুরে নাটোর শহরের একটি রেস্তোরাঁয় এনসিপির জেলা কমিটি আয়োজিত সমন্বয় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। 

আরো পড়ুন:

শেখ হাসিনাকে ফেরত দেওয়া ছাড়া প্রত্যাশিত আচরণ পাবে না ভারত: সারজিস

ইসির রুচিবোধ নিয়ে সারজিসের প্রশ্ন

নাটোর জেলা এনসিপির প্রধান সমন্বয়ক এস এম জার্জিস কাদিরের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান ইমন, সংগঠক ফয়সাল আহমেদ, নাটোর জেলা এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম সমন্বয়ক আব্দুল মান্নাফসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নাটোর জেলার নেতাকর্মীরা। 

সারজিস আলম বলেছেন, “আমরা নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ করব, তারা যেন তাদের স্ট্যান্ডার্ডের প্রমাণ দেয়। যে রাজনৈতিক দল যে মার্কাটা নিয়ে জনগণের কাছে যেতে পারবে, ওই ধরনের মার্কা আমরা লিস্টে যুক্ত করতে বলব। যে মার্কাগুলো হাসির খোরাক যোগায়, সেই মার্কাগুলো বাদ দিতে অনুরোধ করব। এই নির্বাচন কমিশন যদি তাদের সক্রিয়তা বজায় রাখতে না পারে বা কোনো প্রভাবের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে আমাদের ন্যায়সঙ্গত অধিকারটা না দেয়, এনসিপিকে শাপলা প্রতীক না দেয়; আমরা মনে করি, এই কমিশন আগামী নির্বাচনে সম্পূর্ণ আস্থা হারিয়ে ফেলবে। যে নির্বাচনে কমিশন একটা দলকে মার্কা দেওয়ার মেরুদণ্ড দেখাতে পারে না, সেই নির্বাচন কমিশনের ওপর আমরা কীভাবে আস্থা রাখব?”

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা পার্বত্য জেলা বলতে তিনটি পাহাড়ি জেলাকে বুঝি। এগুলো বাংলাদেশের অংশ, দেশের সার্বভৌমত্বের সাথে জড়িত। বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের সাথে বিন্দুমাত্র আপস করার সুযোগ নেই। যারা এর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করবে, দেশের ভিতর থেকে হোক অথবা দেশের বাইরে থেকে হোক, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। এক্ষেত্রে দেশের জনগণ ও সকল রাজনৈতিক দলের সহযোগিতা থাকবে।”

এনসিপির এই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, “আমরা আরো দেখেছি, ভারত বিভিন্ন জেলা দিয়ে পুশইন করা চেষ্টা করেছে। ভারতের মিডিয়াগুলো প্রপাগান্ডা মিডিয়া হিসেবে নিজেদেরকে প্রমাণ করেছে। আমরা মনে করি, সরকার এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে এসব প্রপাগান্ডা প্রতিহত করতে হবে।”

ঢাকা/আরিফুল/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জ ত য় ন গর ক প র ট এনস প এনস প র

এছাড়াও পড়ুন:

সুষ্ঠু-গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য সেনাবাহিনীর পূর্ণ ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা প্রয়োজন

সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য, নিরাপদ ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন আয়োজনে সশস্ত্র বাহিনীর সক্রিয় ও নিরপেক্ষ ভূমিকা অত্যাবশ্যক। সেনাবাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা, পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বিত নিরাপত্তাব্যবস্থার মাধ্যমে নির্বাচনে ভোট কারচুপি ও সহিংসতা প্রতিরোধ সম্ভব। সরকার এসব প্রস্তুতি নিলে নির্বাচন নিয়ে জনগণের আস্থা বাড়বে। ভোট সুষ্ঠু হবে। দেশ স্থিতিশীল থাকবে।

‘নির্বাচনে সুষ্ঠু ভোট নিশ্চিতকরণে সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকা: সম্ভাবনা ও করণীয়’ শীর্ষক এক সেমিনারে বক্তারা এ কথাগুলো বলেছেন। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তন কক্ষে এই সেমিনার হয়। সেমিনারের আয়োজক এক্স-ফোর্সেস অ্যাসোসিয়েশন।

সেমিনারে প্রধান বক্তার বক্তব্যে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. রোকন উদ্দিন বলেন, অতীতের অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, ভোট কারচুপি ও সহিংসতায় দলীয় প্রশাসনই মূল ভূমিকা রাখে। তাই সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সশস্ত্র বাহিনীকে পূর্ণ ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে মাঠে নামানো জরুরি। এ ছাড়া দেশে এখনো বিপুল অবৈধ অস্ত্র ছড়িয়ে আছে, যা উদ্ধার না হলে নির্বাচনের আগে সহিংসতা বাড়বে। দীর্ঘদিন মাঠে থাকার ফলে সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণ, পারিবারিক জীবন ও মনোবল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাই তাদের দায়িত্ব সীমাবদ্ধ ও স্পষ্ট হওয়া উচিত। সেনাবাহিনী জনগণের আস্থা ও দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতীক। বিদেশি প্রভাব ও ভুয়া প্রচারণা জনগণ-সেনাবাহিনীর সম্পর্ক দুর্বল করতে চায়।

রাজনৈতিক দলগুলো দলীয় কোন্দল, দুর্নীতিবাজ ও অযোগ্য প্রার্থী মনোনয়ন এবং পুরোনো ধরনের রাজনীতি পরিত্যাগ না করলে গণতন্ত্র শক্তিশালী হবে না বলে মন্তব্য করেন রোকন উদ্দিন।

সেমিনারে গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেন, নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও অবাধ করতে সেনাবাহিনীর সক্রিয় ভূমিকা অত্যন্ত জরুরি। সরকার নির্বাচনী পরিবেশ তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে জনগণের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে সন্দেহ বাড়ছে। আদৌ নির্বাচন হবে কি না, সেই প্রশ্নও জনগণের মনে তৈরি হচ্ছে। তাই সেনাবাহিনীসহ সব বাহিনীকে জনগণের পাশে থাকতে হবে। তাহলে ফ্যাসিবাদমুক্ত সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব হবে।

অতীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বহাল থাকলে একতরফা বা রাতের ভোট সম্ভব হতো না বলে মন্তব্য করেন রাশেদ খান। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সেই ব্যবস্থাকে বাতিল করে দেশকে ফ্যাসিবাদের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছিল।

আগামী নির্বাচন বানচালের জন্য বিদেশি প্রভাব ও নিষিদ্ধ রাজনৈতিক গোষ্ঠীর কিছু নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থিতার আড়ালে চক্রান্ত করছে বলে মন্তব্য করেন সেমিনারে গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, এসব প্রচেষ্টা প্রতিহত করতে রাজনৈতিক দলগুলোকে সম্মিলিত ভূমিকা নিতে হবে। নিষিদ্ধ বা বিতর্কিত রাজনৈতিক শক্তিগুলো নির্বাচনে অংশ নিলে অরাজকতা বাড়বে। তাই নির্বাচন কমিশনকে কঠোর থাকতে হবে। জনগণকে সচেতনভাবে ফ্যাসিবাদী শক্তির প্রত্যাবর্তন ঠেকাতে হবে।

বাংলাদেশ আম জনগণ পার্টির সদস্যসচিব ফাতিমা তাসনীম বলেন, দীর্ঘ ১৬ বছর তরুণসহ সাধারণ মানুষ ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। নতুন সরকারের প্রতি জনগণের আস্থা ধরে রাখতে সুষ্ঠু নির্বাচন জরুরি। বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে ভোট দখলের শঙ্কা রয়েছে। তাই সশস্ত্র বাহিনীকে পূর্ণ ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে ভোটের পাঁচ-সাত দিন আগে থেকেই টহলে নামানো দরকার। সব হটস্পটে নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে। যাতে নারী, বয়স্ক ও নতুন ভোটাররা কেন্দ্রে যেতে উৎসাহিত হয়।

সেমিনারে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন এক্স-ফোর্সেস অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি লেফটেন্যান্ট (অব.) সাইফুল্লাহ খান। তিনি বলেন, অ্যাসোসিয়েশন আগামী জাতীয় নির্বাচনে স্থিতিশীলতা, স্বচ্ছতা ও গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করতে সশস্ত্র বাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতার ন্যায়সংগত ও জিরো টলারেন্স প্রয়োগের প্রত্যাশা করে। তারা মনে করে, উপমহাদেশে সহিংসতা, পেশিশক্তি ও প্রশাসনিক পক্ষপাতমুক্ত নির্বাচনী পরিবেশেই বড় চ্যালেঞ্জ। তাই সেনাবাহিনীকে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপমুক্ত রেখে পেশাদার ও নিরপেক্ষ ভূমিকা পালনের সুযোগ দিতে হবে।সংগঠনটি আশা প্রকাশ করেছে, প্রযুক্তিনির্ভর তদারকি—যেমন ড্রোন মনিটরিং, বডি-ওন ক্যামেরা ও লাইভ বিশ্লেষণ নির্বাচনকে আরও স্বচ্ছ করবে। পাশাপাশি সেনাবাহিনী, র‍্যাব, পুলিশ, বিজিবি ও প্রশাসনের সমন্বিত কমান্ড স্ট্রাকচার দ্রুত প্রতিক্রিয়াসহ নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে, যা একটি শান্তিপূর্ণ ও আন্তর্জাতিক মানের নির্বাচন উপহার দিতে সহায়ক হবে।

অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি মুশফিকুর রহমানের সঞ্চালনায় সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন পরিবেশবাদী সংগঠন সবুজ আন্দোলনের সভাপতি বাপ্পী সরকার। সেমিনারে অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ধানের শীষে ভোট দেয়ার জন্য উদগ্রীব জনগণ : মাসুদুজ্জামান
  • তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালের মধ্য দিয়ে জনগণের বিজয় হয়েছে: খেলাফত মজলিস
  • কথায় নয়, কাজে প্রমাণ দেব: সাতক্ষীরার ডিসি
  • নাশকতাকারীদের ঢাকায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হবে: ডিএমপি কমিশনার
  • শঙ্কা ও ভীতি দূর না হলে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সম্ভব নয়  
  • জনগণের টাকায় শিক্ষিত হয়, জনগণের জীবন বদলানোর বেলায় নেই
  • সুষ্ঠু-গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য সেনাবাহিনীর পূর্ণ ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা প্রয়োজন
  • গণভোটে ‘হ্যাঁ’ পাস করলে কী হবে, ‘না’ পাস করলে কী হবে
  • যশোরে জামায়াতে ইসলামীর হিন্দু সম্মেলন অনুষ্ঠিত
  • দিনের ভোট রাতে করতে রাষ্ট্রের ৮ হাজার কোটি টাকা লুট করেছিলেন শেখ হাসিনা: রিজভী