চাচাতো ভাইয়ের ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা, গর্ভপাতের পর গ্রেপ্তার ২
Published: 6th, October 2025 GMT
গাজীপুরের কালীগঞ্জে বিসমিল্লাহ ডায়াগনস্টিক সেন্টার অ্যান্ড ট্রমা জেনারেল হাসপাতালের টয়লেট থেকে নবজাতকের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
নবজাতকের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় মামলা দায়েরের পর তদন্তে নামে পুলিশ। হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজের সূত্র ধরে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ প্রথমে এ ঘটনায় জড়িত এক কিশোরীকে গ্রেপ্তার করে। পরে কিশোরীর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তার চাচাতো ভাইকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আরো পড়ুন:
শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার দায়ে বৃদ্ধের ৫ বছরের কারাদণ্ড
কুড়িগ্রামে গৃহবধূকে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগ, বিচার দাবি
কিশোরীর অভিযোগ, ওই চাচাতো ভাই তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করায় সে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে।
জানা গেছে, গত শুক্রবার (৩ অক্টোবর) দুপুর আড়াইটার দিকে হাসপাতালের এক আয়া টয়লেট পরিষ্কার করার সময় ময়লার ঝুড়িতে টিস্যু দিয়ে ঢাকা একটি নবজাতকের মরদেহ দেখতে পান। বিষয়টি জানাজানি হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকরা ঘটনাস্থলে গিয়ে নিশ্চিত হন যে, নবজাতকটি জন্মের আগেই মৃত ছিল।
হাসপাতালের পরিচালক মো.
মামলার তদন্তে নেমে পুলিশ হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে। তাতে দেখা যায়, এক কিশোরী টয়লেটের দিকে যায়। এর কিছুক্ষণ পর সে বাইরে বেরিয়ে হয়। ফুটেজ যাচাই করে পুলিশ ওই কিশোরীকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে।
জিজ্ঞাসাবাদে কিশোরী জানায়, গত ৬ মার্চ বিকেলে তার চাচাতো ভাই তাকে ঘরে একা পেয়ে ধর্ষণ করে। পরবর্তীতে একাধিকবার একই ঘটনা ঘটে। এতে সে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। কিন্তু লোকলজ্জার ভয়ে বিষয়টি গোপন রাখে। শুক্রবার (৩ অক্টোবর) গর্ভপাতের পর নবজাতকটি মৃত অবস্থায় সে টয়লেটে ফেলে আসে।
এদিকে, ভুক্তভোগীর কিশোরীর মা বাদী হয়ে রবিবার (৫ অক্টোবর) নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে নতুন মামলা দায়ের করেন। মামলায় কিশোরীর ওই চাচাতো ভাইকে আসামি করা হয়েছে।
ওই কিশোরীর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তার মায়ের দায়ের করা মামলায় পুলিশ চাচাতো ভাইকে গ্রেপ্তার করে। পৃথক দুটি মামলায় তাদের দুইজনকেই আদালতে পাঠানো হয়েছে। পরে কিশোরীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
ভুক্তভোগী কিশোরীর মা বলেন, “শুক্রবার সকালে মেয়ের পেটে ব্যথা হলে প্রথমে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাই। সেখানে কিছু পরীক্ষা করার পরামর্শ দেওয়া হয়। পরে এক আত্মীয়ের সঙ্গে বিসমিল্লাহ ডায়াগনস্টিকে যায় মেয়ে। দুপুর ১২টার দিকে ওরা যায়, আর দুপুর ২টার পর জানতে পারি হাসপাতালের টয়লেটে নবজাতকের লাশ পাওয়া গেছে।”
কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আলাউদ্দিন বলেন, “হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মামলা দায়েরর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আমরা পুরো ঘটনা তদন্ত করে অপরাধীদের সনাক্ত করি। পরে পৃথক দুটি মামলায় কিশোর ও কিশোরীকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। পুরো ঘটনার তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
ঢাকা/রফিক/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গ র প ত র কর টয়ল ট তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান নাম নিয়ে যারা ইসলামের বিরুদ্ধে কাজ করে, তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী বলেছেন, বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে বদদ্বীনি, কুফরি ও ভ্রান্ততার বিরুদ্ধে উলামায়ে কেরামকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। বিশেষ করে যারা মুসলমান নাম নিয়ে ইসলামের বিরুদ্ধে কাজ করে, তাদের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে হেফাজত আমির এ কথা বলেন। জাতীয় উলামা কাউন্সিল বাংলাদেশের আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে ‘জাতীয় উলামা সম্মেলন-২০২৫’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানে তিনি প্রধান অতিথি ছিলেন।
জাতীয় উলামা কাউন্সিলের সভাপতি ও বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়ার মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন। তিনি বলেন, ‘অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, আগামী জাতীয় নির্বাচনে অনেক আলেম-উলামা অংশ নেবেন। আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, আগামী জাতীয় নির্বাচনে উলামায়ে কেরামের পরস্পরে প্রতিদ্বন্দ্বিতা কাম্য নয়।’
সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ‘ইসলামি রাজনীতিতে সব সময় প্রতিপক্ষের মুখোমুখি দাঁড়ানো যায় না। সঠিক সময়ের অপেক্ষা করে লক্ষ্য অর্জনের জন্য ভূমিকা রাখতে হয়। আজ ইসলামি রাজনীতির সোনালি সময় চলছে। আমরা যদি সুযোগ কাজে না লাগাই, তাহলে সামনে বড় ধরনের ভোগান্তি তৈরি হবে।’
মুন্সিগঞ্জের জামি’আ ইসলামিয়া হালীমিয়া মাদ্রাসার প্রধান ও মধুপুরের পীর মাওলানা আবদুল হামিদ বলেন, ‘আমরা প্রয়োজনে বাতিলের বিরুদ্ধে একসঙ্গে লড়তে লড়তে মরব, কিন্তু বিভক্ত হব না ইনশা আল্লাহ।’ তিনি বলেন, ১৬ নভেম্বরের কাদিয়ানিবিরোধী আন্দোলন শেষ হয়নি, শুরু হয়েছে মাত্র। সরকারকে সুযোগ দেওয়া হয়েছে, পরেরবার আর সুযোগ দেওয়া হবে না।
হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমান বলেন, ‘আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকব। যারা কাজ করতে চায়, তাদের বাধা দেব না। আমরা নিজেরা নিজেদের শত্রু হব না, ইনশা আল্লাহ।’
সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমাদ, জাতীয় উলামা কাউন্সিলের মহাসচিব মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী, মাওলানা নূরুল ইসলাম ওলিপুরী, মাওলানা সালাহুদ্দীন নানুপুরী, মাওলানা মুশতাক আহমদ প্রমুখ।