নিরুত্তাপ নির্বাচন, কারা জয়ী হচ্ছেন, সেটাও অনেকটাই জানা ছিল সবার। বিসিবির নির্বাচনের ফল নিয়েও তাই ছিল না তেমন কোনো কৌতূহল। নির্বাচন কমিশনের ঘোষণাটা তাই হয়ে পড়েছিল শুধুই আনুষ্ঠানিকতা। তবে অন্য দুই ক্যাটাগরিতে প্রার্থিতা প্রত্যাহার ও নির্বাচন বর্জনের ঘটনা ঘটলেও নির্বাচনের ময়দানে ছিলেন ক্যাটাগরি-৩ এর দুই প্রার্থী দেবব্রত পাল ও খালেদ মাসুদ।

সেখানেও বেশ অসম লড়াইই হয়েছে। ৪৫টি ভোটের মধ্যে এই ক্যাটাগরিতে ভোট পড়েছে ৪৩টি, যার একটি বাতিল হয়েছে। বাকি ৪২ ভোটের ৩৫টি পেয়ে ক্যাটাগরি-৩ থেকে বিসিবি পরিচালক নির্বাচিত হয়েছেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাসুদ। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী কোয়াবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত পাল পেয়েছেন মাত্র ৭ ভোট। খেলোয়াড়ি জীবন শেষে কোচ এবং ব্যবসায়ীর ভূমিকায়ই এত দিন ছিলেন মাসুদ। এবার হলেন বোর্ড পরিচালক।

তবে আনুষ্ঠানিকভাবে ফল ঘোষণার আগেই নির্বাচনে ‘ক্রীড়াঙ্গনের সর্বোচ্চ ব্যক্তির প্রভাবে’র অভিযোগ তুলে ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছেন দেবব্রত। তাঁর দাবি, শুরু থেকেই মাসুদের পক্ষে নির্বাচনকে প্রভাবিত করেছে একটি পক্ষ। যদিও মাসুদ এই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।

বিসিবির এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ছিলেন ১৯১ জন। তবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়া পরিচালকদের বিভাগের ভোটারদের বাদ দিয়ে ১৫৬ জন ভোটারের আজ ভোট দেওয়ার কথা ছিল। তাঁদের মধ্যে ১১৫জন ভোট দিয়েছেন, মোট ভোটারের ৭৩.

৭১ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা শেখ জোবায়েদ হোসেন।

জেলা ও বিভাগের ক্যাটাগরি-১ এ নির্বাচন হয়েছে শুধু ঢাকা, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে। রাজশাহীতে তিন প্রার্থীর মধ্যে হাসিবুল আলম আগেই নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন। এই ক্যাটাগরিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকা মুখলেসুর রহমান ৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। রংপুর বিভাগে হাসানুজ্জামানও ৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন, বাকি দুজনের মধ্যে নূর এ শাহাদাৎ ১ ও রেহাতুল ইসলাম খান শূন্য ভোট পেয়েছেন।

ঢাকা বিভাগে আনুষ্ঠানিকভাবে ভোট হলেও গতকালই নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন আবদুল্লাহ আল ফুয়াদ রেদুয়ান। এই বিভাগে বিসিবির সর্বশেষ পরিচলনা পর্ষদের সভাপতি আমিনুল ১৫ ও সহ সভাপতি নাজমূল ১৫টি করে ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।

চট্টগ্রাম বিভাগে আহসান ইকবাল চৌধুরী ও আসিফ আকবর, খুলনায় আব্দুর রাজ্জাক ও জুলফিকার আলী খান, সিলেটে রাহাত শামস ও বরিশালে শাখাওয়াত হোসেন আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।

ক্যাটাগরি-২ থেকে পরিচালক নির্বাচিত হয়েছেন ১২জন। মোট ৭৬টি ভোটের মধ্যে সর্বোচ্চ ৪২টি করে ভোট পেয়েছেন বিসিবির সাবেক সভাপতি ও রেঞ্জার্স ক্রিকেট একাডেমির কাউন্সিলর ফারুক আহমেদ, ধানমন্ডি স্পোর্টস ক্লাবের কাউন্সিলর ইসতিয়াক সাদেক ও ঢাকা মেরিনারের শানিয়ান তানিম। এ ছাড়া ঢাকা স্পারটাসের আমজাদ হোসেন ও যাত্রাবাড়ী ক্রীড়া চক্রের মেহরাব আলম চৌধুরী ৪১টি করে ভোট পেয়েছেন।

৪০টি করে ভোট পেয়েছেন রূপগঞ্জ টাইগার্সের আদনান রহমান, উত্তরা স্পোর্টিং ক্লাবের ফায়াজুর রহমান ও প্রাইম দোলেশ্বরের আবুল বাশার। ৩৯টি ভোট পেয়েছেন সাবেক বিসিবি পরিচালক ও রেগুলার স্পোর্টিং ক্লাবের কাউন্সিলর মনজুর আলম, ৩৭টি ভোট পেয়েছেন ট্যালেন্ট হান্ট ক্রিকেট একাডেমির এম নাজমুল ইসলাম ও সাবেক বিসিবি পরিচালক এবং ভাইকিংস ক্রিকেট একাডেমির ইফতেখার রহমান পেয়েছেন ৩৪ ভোট।

এ ছাড়া জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ মনোনীত দুই পরিচালকের নামও ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। তাঁরা দুজন হলেন ইশফাক আহসান ও ইয়াসির মো. ফয়সাল আশিক। ইশফাক ও ইয়াসির দুজনই ব্যবসায়ী।

নির্বাচিত পরিচালকদের ভোটে আজ রাতেই বিসিবির নতুন সভাপতি ও সহসভাপতি নির্বাচিত হওয়ার কথা।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: রহম ন

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান নাম নিয়ে যারা ইসলামের বিরুদ্ধে কাজ করে, তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী বলেছেন, বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে বদদ্বীনি, কুফরি ও ভ্রান্ততার বিরুদ্ধে উলামায়ে কেরামকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। বিশেষ করে যারা মুসলমান নাম নিয়ে ইসলামের বিরুদ্ধে কাজ করে, তাদের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে হেফাজত আমির এ কথা বলেন। জাতীয় উলামা কাউন্সিল বাংলাদেশের আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে ‘জাতীয় উলামা সম্মেলন-২০২৫’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানে তিনি প্রধান অতিথি ছিলেন।

জাতীয় উলামা কাউন্সিলের সভাপতি ও বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়ার মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন। তিনি বলেন, ‘অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, আগামী জাতীয় নির্বাচনে অনেক আলেম-উলামা অংশ নেবেন। আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, আগামী জাতীয় নির্বাচনে উলামায়ে কেরামের পরস্পরে প্রতিদ্বন্দ্বিতা কাম্য নয়।’

সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ‘ইসলামি রাজনীতিতে সব সময় প্রতিপক্ষের মুখোমুখি দাঁড়ানো যায় না। সঠিক সময়ের অপেক্ষা করে লক্ষ্য অর্জনের জন্য ভূমিকা রাখতে হয়। আজ ইসলামি রাজনীতির সোনালি সময় চলছে। আমরা যদি সুযোগ কাজে না লাগাই, তাহলে সামনে বড় ধরনের ভোগান্তি তৈরি হবে।’

মুন্সিগঞ্জের জামি’আ ইসলামিয়া হালীমিয়া মাদ্রাসার প্রধান ও মধুপুরের পীর মাওলানা আবদুল হামিদ বলেন, ‘আমরা প্রয়োজনে বাতিলের বিরুদ্ধে একসঙ্গে লড়তে লড়তে মরব, কিন্তু বিভক্ত হব না ইনশা আল্লাহ।’ তিনি বলেন, ১৬ নভেম্বরের কাদিয়ানিবিরোধী আন্দোলন শেষ হয়নি, শুরু হয়েছে মাত্র। সরকারকে সুযোগ দেওয়া হয়েছে, পরেরবার আর সুযোগ দেওয়া হবে না।

হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমান বলেন, ‘আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকব। যারা কাজ করতে চায়, তাদের বাধা দেব না। আমরা নিজেরা নিজেদের শত্রু হব না, ইনশা আল্লাহ।’

সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমাদ, জাতীয় উলামা কাউন্সিলের মহাসচিব মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী, মাওলানা নূরুল ইসলাম ওলিপুরী, মাওলানা সালাহুদ্দীন নানুপুরী, মাওলানা মুশতাক আহমদ প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ