পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে ব্যাংকগুলোকে ৭ আইনি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করতে বলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক
Published: 6th, October 2025 GMT
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবার এবং ১০ শিল্প গ্রুপের পাচার করা অর্থ উদ্ধারে ব্যাংকগুলোকে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর অংশ হিসেবে স্বনামধন্য সাতটি আইনি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করতে বলা হয়েছে, যারা পাচার করা অর্থ উদ্ধার করতে পারবে। পাচার অর্থ দেশে আনতে পারলেই তারা কমিশন হিসেবে কিছু অর্থ নেবে।
আজ সোমবার ব্যাংকগুলোর সঙ্গে এক সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর এমন নির্দেশনা দিয়েছেন। এ সময় পাচার করা অর্থ উদ্ধারের জন্য নিয়োজিত গভর্নরের উপদেষ্টা ফারহানুল গনি চৌধুরী, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) নির্বাহী পরিচালক মফিজুর রহমান খান চৌধুরীসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
জানা যায়, সভায় শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের পাশাপাশি আরও ১০ শিল্প গোষ্ঠীর অর্থ পাচারের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরে বিএফআইইউ। ১০টি গ্রুপ হলো এস আলম গ্রুপ, বেক্সিমকো গ্রুপ, নাবিল গ্রুপ, সামিট গ্রুপ, ওরিয়ন গ্রুপ, জেমকন গ্রুপ, নাসা গ্রুপ, বসুন্ধরা গ্রুপ, সিকদার গ্রুপ ও আরামিট গ্রুপ। এর বাইরে আরও যেসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান অর্থ পাচার করেছে, তা বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। এসব অর্থে গন্তব্য কোথায় তা–ও জানানো হয়। এ জন্য অন্য দেশ কী ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে, তা তুলে ধরে বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোকেও একই পথ অনুসরন করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
সভা শেষে ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ওমর ফারুক খান সাংবাদিকদের বলেন, বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফেরাতে আন্তর্জাতিক আইন ও সম্পদ পুনরুদ্ধার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। কয়েকটি ব্যাংক নেতৃত্ব দেবে, অন্য ব্যাংকগুলো তাদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবে। এরপর বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তি সম্পন্ন করে টাকা ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু হবে।
সভা শেষে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের এমডি মতিউল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, যেসব অর্থ পাচার হয়ে গেছে, তা ফেরাতে হবে বিদেশে প্রতিষ্ঠানের সহায়তা নিয়েই। তাদের সঙ্গে চুক্তি করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তারা টাকা আনতে পারলে একটা অংশ কমিশন হিসেবে নেবে। এখন ব্যাংকগুলো সেই পথ অনুসরন করবে।
সভা শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান সাংবাদিকদের বলেন, দেশ থেকে যেসব অর্থ পাচার হয়েছে, তা উদ্ধারে ব্যাংকগুলোকে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। আবার ব্যাংকগুলো নিজস্ব চিন্তায় যদি কোনো প্রতিষ্ঠান থাকে, যারা পাচার করা অর্থ উদ্ধারে কাজ করে, তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করতে বলা হয়। এসব প্রতিষ্ঠান আগ্রহী হলে প্রাথমিকভাবে চুক্তির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিদেশি প্রতিষ্ঠান নিয়োগ হলে তারা ডকুমেন্ট নিয়ে যাচাই-বাছাই করে দেখতে পারবে—কোন সম্পদ উদ্ধার করা যাবে, কোনটি যাবে না।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অর থ প চ র প চ র কর
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান নাম নিয়ে যারা ইসলামের বিরুদ্ধে কাজ করে, তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী বলেছেন, বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে বদদ্বীনি, কুফরি ও ভ্রান্ততার বিরুদ্ধে উলামায়ে কেরামকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। বিশেষ করে যারা মুসলমান নাম নিয়ে ইসলামের বিরুদ্ধে কাজ করে, তাদের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে হেফাজত আমির এ কথা বলেন। জাতীয় উলামা কাউন্সিল বাংলাদেশের আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে ‘জাতীয় উলামা সম্মেলন-২০২৫’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানে তিনি প্রধান অতিথি ছিলেন।
জাতীয় উলামা কাউন্সিলের সভাপতি ও বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়ার মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন। তিনি বলেন, ‘অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, আগামী জাতীয় নির্বাচনে অনেক আলেম-উলামা অংশ নেবেন। আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, আগামী জাতীয় নির্বাচনে উলামায়ে কেরামের পরস্পরে প্রতিদ্বন্দ্বিতা কাম্য নয়।’
সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ‘ইসলামি রাজনীতিতে সব সময় প্রতিপক্ষের মুখোমুখি দাঁড়ানো যায় না। সঠিক সময়ের অপেক্ষা করে লক্ষ্য অর্জনের জন্য ভূমিকা রাখতে হয়। আজ ইসলামি রাজনীতির সোনালি সময় চলছে। আমরা যদি সুযোগ কাজে না লাগাই, তাহলে সামনে বড় ধরনের ভোগান্তি তৈরি হবে।’
মুন্সিগঞ্জের জামি’আ ইসলামিয়া হালীমিয়া মাদ্রাসার প্রধান ও মধুপুরের পীর মাওলানা আবদুল হামিদ বলেন, ‘আমরা প্রয়োজনে বাতিলের বিরুদ্ধে একসঙ্গে লড়তে লড়তে মরব, কিন্তু বিভক্ত হব না ইনশা আল্লাহ।’ তিনি বলেন, ১৬ নভেম্বরের কাদিয়ানিবিরোধী আন্দোলন শেষ হয়নি, শুরু হয়েছে মাত্র। সরকারকে সুযোগ দেওয়া হয়েছে, পরেরবার আর সুযোগ দেওয়া হবে না।
হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমান বলেন, ‘আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকব। যারা কাজ করতে চায়, তাদের বাধা দেব না। আমরা নিজেরা নিজেদের শত্রু হব না, ইনশা আল্লাহ।’
সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমাদ, জাতীয় উলামা কাউন্সিলের মহাসচিব মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী, মাওলানা নূরুল ইসলাম ওলিপুরী, মাওলানা সালাহুদ্দীন নানুপুরী, মাওলানা মুশতাক আহমদ প্রমুখ।