সাবমেরিন ইস্যুতে আটকে গেল দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে ট্রাম্পের চুক্তি
Published: 11th, November 2025 GMT
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে মিয়ং বাণিজ্য ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত দ্বিপাক্ষিক চুক্তিতে পৌঁছানোর ঘোষণা দেওয়ার দুই সপ্তাহ পরও, উভয় পক্ষ এখনো কাগজে-কলমে কোনো চুক্তি প্রকাশ করেনি।
দক্ষিণ কোরিয়ার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন তৈরির অনুমতি নিয়ে আলোচনা চলায় চুক্তির কাগজপত্র প্রকাশে দেরি হচ্ছে।
আরো পড়ুন:
আইএসবিরোধী মার্কিন নেতৃত্বধীন জোটে যোগ দিচ্ছে সিরিয়া
শাটডাউন অবসানে মার্কিন সিনেটে তহবিল বিল পাস
মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মিয়ং গত মাসে সিউলে অনুষ্ঠিত এশিয়া–প্যাসিফিক ফোরামের ফাঁকে ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় সাবমেরিন ইস্যুটি প্রকাশ্যে তুলেছিলেন। সেই বৈঠকের পর কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন, সাবমেরিনসহ নিরাপত্তা সংক্রান্ত চুক্তির রূপরেখাসহ একটি যৌথ তথ্যপত্র শিগগিরই প্রকাশ করা হবে। সেইসাথে জুলাই মাসে প্রথম ট্রাম্প-লি শীর্ষ সম্মেলনে ঘোষিত বাণিজ্য চুক্তির রূপরেখাও প্রকাশ করা হবে, যার অধীনে দক্ষিণ কোরিয়া কম শুল্কের বিনিময়ে মার্কিন প্রকল্পগুলোতে শত শত বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী আহন রবিবার স্থানীয় সম্প্রচারক কেবিএসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় দক্ষিণ কোরিয়ার পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন তৈরির বিষয়টি উত্থাপিত হওয়ার পর থেকে, যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিভাগের তাদের মতামত সমন্বয় করার জন্য কিছুটা সময় লাগছে বলে মনে হচ্ছে।”
দক্ষিণ কোরিয়ার এক জ্যেষ্ঠ প্রেসিডেন্ট সহকারী শুক্রবার জানান, ওয়াশিংটন পারমাণবিক জ্বালানি ব্যবহারে সিউলকে নীতিগতভাবে অনুমোদন দিয়েছে, কিন্তু সংশ্লিষ্ট মার্কিন বিভাগগুলো এখনও মতামত দিচ্ছে এবং শব্দ চয়নে পরিবর্তন আনছে- ফলে চূড়ান্তকরণে সময় লাগছে।
হোয়াইট হাউজে এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে রয়টার্সের মন্তব্যের অনুরোধে জবাব দেয়নি।
আনুষ্ঠিত চুক্তি ঘোষণায় দেরী নিয়ে উদ্বেগের কারণে মঙ্গলবার দক্ষিণ কোরিয়ান মুদ্রা ‘ওন’ ০.
বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র সাবমেরিন প্রযুক্তি হস্তান্তর নিয়ে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। ট্রাম্পের সাম্প্রতিক সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে, সাবমেরিন নির্মাণ অনুমোদিত হয়েছে, তবে তা মার্কিন কারখানায় করা হবে। ট্রাম্পের এই মন্তব্য দক্ষিণ কোরিয়ার অবস্থানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
সাবমেরিন নিয়ে আলোচনা এক সময় শুরু হয় যখন দেশ দুটি দাবি করে যে, তারা বাণিজ্য বিষয়ে একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে একমত হয়েছে। তবে বিনিয়োগ তহবিলের কাঠামো নিয়ে মতবিরোধের কারণে ট্রাম্প-লি বৈঠকের পর কোনো যৌথ বিবৃতি দেওয়া সম্ভব হয়নি।
দক্ষিণ কোরিয়ার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, শুল্ক সংক্রান্ত খসড়াটি প্রায় চূড়ান্ত এবং যৌথ তথ্যপত্র ঘোষণার জন্য প্রস্তুত হলে তা প্রকাশ করা হবে।
আজ মঙ্গলবার দক্ষিণ কোরিয়ার শিল্পমন্ত্রী কিম জং কোয়ান সংসদীয় শুনানিতে বলেন, যৌথ তথ্যপত্র নিয়ে আলোচনা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। তবে তিনি ঘোষণার সময় সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানাননি।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা জানান, ৩৫০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ প্যাকেজের একটি সমঝোতা স্মারকও (এমওইউ) প্রস্তুত। তবে এটি এখনও স্বাক্ষরিত হয়নি। কবে হবে তা এখনও নির্ধারণ করা হয়নি।
তিনি বলেন, “আমরা আনুষ্ঠানিক ঘোষণার অপেক্ষায় আছি, যাতে এটি সংসদে উপস্থাপনসহ পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া যায়।”
ঢাকা/ফিরোজ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ক তর ষ ট র কর মকর ত স বম র ন মন ত র
এছাড়াও পড়ুন:
‘ইটস নেভার টু লেট’
জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল মনে করেন, ক্রিকেট ফর অল নিশ্চিতের আগে সিফটি ফর অল বেশি জরুরি। যেভাবে নারী ক্রিকেটাররা একের পর এক বিস্ফোরক অভিযোগ করে যাচ্ছেন তাতে ভবিষ্যতে নারীদের ক্রিকেট এগিয়ে যাওয়ার পথ বাঁধা সৃষ্টি হতে পারে।
যারা এগিয়ে এসে নিজেদের নিপীড়নের খবর জানিয়েছে, তাদের সাহসিকতার জন্য সম্মান জানিয়েছেন তামিম। যারা এখনও ভয় পাচ্ছেন তাদের উৎসাহ দিয়ে বলেছেন, ‘ইটস নেভার টু লেট।’
গণমাধ্যমে জাহানারা আলম যৌন নির্যাতনের অভিযোগ তোলার পর ক্রিকেটাঙ্গনে শোরগোল পড়ে যায়। পরে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে মুখ খোলেন আরেক জাতীয় ক্রিকেটার রোমানা আহমেদ, সাবেক ক্রিকেটার ও কোচ রেশমা আক্তার আদুরি। রেশমা অভিযোগ করেছেন, বিসিবির বর্তমান পরিচালক নাজমুল আবেদীন ফাহিমের বিরুদ্ধে যিনি এক সময় নারী বিভাগের প্রধানের দায়িত্ব পালন করেছেন।
তামিম এর আগেও এক পোস্টে, স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠনের আহ্বান জানিয়েছিলেন। গতকাল পোস্টেও প্রায় একই দাবি তুললেন। সঙ্গে সরকারের দৃষ্টিও চাইলেন, ‘‘জাহানারা আলম অভিযোগ করার পর আরও অনেকেই মুখ খুলতে শুরু করেছেন, যা খুবই আশাব্যঞ্জক ব্যাপার। কিন্তু শঙ্কার জায়গা রয়েই গেছে। এখনও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ বা সরকারী পর্যায় থেকে কোনো কমিটি গঠন করা হয়নি কিংবা তেমন কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।’’
‘‘গত কয়েক দিনে যাদের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ আসছে, তাদের প্রায় সবাই বিসিবির উঁচু জায়গা থেকে শুরু করে নানা পদে আছে। বিসিবির তদন্ত কমিটি নিয়ে তাই নানামুখী সংশয়ের জায়গা থাকছেই।’’
‘‘দেশের ক্রিকেটে তোলপাড় পড়ে যাওয়ার পরও সরকার বা মন্ত্রণালয়ের নিষ্ক্রিয়তা ভীষণ দুঃখজনক। আগের লেখায় যেমন বলেছিলাম, তেমনি আবারও দাবি জানাচ্ছি, অতি দ্রুত যেন একটি স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়, যেখানে বিসিবি সংশ্লিষ্ট কেউ থাকবেন না। নারী অধিকার নিয়ে কাজ করেন, যৌ*ন হয়রানিমূলক অপরাধ নিয়ে কাজ করেন এবং এই ব্যাপারগুলো মনস্তাত্ত্বিক ও পারিপার্শ্বিক দিক সম্পর্কে ভালো জ্ঞান আছে, এমন বিশেষজ্ঞদের প্রতিনিধি সেখানে থাকতে হবে। এই ব্যাপারগুলোর সুরাহা আমরা যদি ঠিকভাবে করতে না পারি, তাহলে শুধু ক্রীড়াঙ্গন নয়, গোটা দেশের নারীদের কাছে আমরা অপরাধী থাকব।’’
বাধার দেয়াল ভেঙে যারা এগিয়ে এসেছেন, যারা প্রতিবাদ করেছেন তাদেরকে সম্মান জানিয়ে তামিম যোগ করেন, ‘‘যারা মানসিক ব্যারিকেড ভেঙে মুখ খুলতে পেরেছেন, সবার প্রতি সবটুকু সম্মান জানাচ্ছি সাহসিকতার জন্য। এখনও যারা নানা সঙ্কোচে মুখ খুলতে পারছেন না, তাদেরকে বলছি, ‘ইটস নেভার ঠু লেট।’ আওয়াজ তুলুন, আমরা থাকব পাশে।’’
‘‘বিসিবিতে এখন একটা স্লোগান শুনি- ‘ক্রিকেট ফর অল।’ আমার মনে হয়, এর আগে জরুরি ‘সেফটি ফর অল’ নিশ্চিত করা। আরেকটি ব্যাপার, দেশের সবচেয়ে বড় ক্রীড়া ফেডারেশনের দায়িত্বও সবচেয়ে বেশি। আমাদের সবারই উচিত দেশের সব খেলাকে সম্মান করা। প্রতিটি খেলাই আমাদের। প্রতিটি খেলাই বাংলাদেশের।’’
ঢাকা/ইয়াসিন