ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির দুই নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জবাব দেওয়ার নির্দেশ
Published: 14th, January 2025 GMT
সম্মেলনবিরোধী সমাবেশ করার অভিযোগ এনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির দুই নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দিয়েছে কেন্দ্রীয় বিএনপি। দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক চিঠির মাধ্যমে তাঁদের এ নোটিশ দেওয়া হয়েছে। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কেন্দ্রীয় বিএনপির নয়াপল্টনের কার্যালয়ে নোটিশের লিখিত জবাব দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
যাঁদের নোটিশ দেওয়া হয়েছে তাঁরা হলেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র হাফিজুর রহমান মোল্লা এবং সাবেক সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক। তাঁরা দুজনই জেলা বিএনপির ৩২ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। এ কমিটির নেতৃত্ব নিয়ে জেলা বিএনপি দুই ভাগে বিভক্ত। একটি পক্ষের নেতৃত্বে রয়েছেন হাফিজুর ও জহিরুল হক। অন্য অংশের নেতৃত্বে রয়েছেন আহ্বায়ক আবদুল মান্নান ও সিরাজুল ইসলাম। দুই বছর ধরে উভয় পক্ষ দলীয় সব কর্মসূচি পৃথকভাবে পালন করে আসছে। সম্মেলন ঘিরে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ আরও বেড়েছে।
নেতা–কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৮ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন। কিন্তু নানা অভিযোগে এ সম্মেলনের বিরোধিতা করে আসছে হাফিজুর রহমান ও জহিরুল হকের নেতৃত্বে জেলা বিএনপির একটি বড় অংশ। গত রোববার সমাবেশ করে তারা এ সম্মেলন প্রতিহতের ঘোষণা দিয়েছে। ১৬ জানুয়ারি সমাবেশের ডাক দিয়েছে তারা।
কারণ দর্শানোর নোটিশ সূত্রে জানা গেছে, ৮ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উজান-ভাটি রেস্টুরেন্টে কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লা (বুলু), সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, অর্থনীতিবিষয়ক সম্পাদক খালেদ হোসেন মাহবুব ওরফে শ্যামল, সহসাংগঠনিক সম্পাদক মো.
দাবিগুলো আলোচনার ভিত্তিতে বাস্তবায়নের পূর্বে হাফিজুর ও জহিরুল সম্মেলনবিরোধী সভা-সমাবেশ করে যাচ্ছেন, যা সম্পূর্ণরূপে সংগঠনবিরোধী কার্যকলাপ। এ বিষয়ে কেন তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তার যথাযথ কারণ দর্শিয়ে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে একটি লিখিত জবাব দলের নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য তাঁদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জানতে চাইলে হাফিজুর রহমান মোল্লা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা কারণ দর্শানোর নোটিশ পেয়েছি। উত্তর প্রস্তুত করছি। তবে আগামী ১৬ জানুয়ারি বিএনপির আমরণ কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত অপরিবর্তিত থাকবে।’
ফেসবুকের মাধ্যমে কারণ দর্শানোর নোটিশ পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন জহিরুল হক। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘ইতিমধ্যে কারণ দর্শানোর জবাব লেখা হয়ে গেছে। আমরা সংগঠন ও সম্মেলনবিরোধী কোনো সমাবেশ করিনি। রোববার আমরা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঘোষিত রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতে ৩১ দফা দাবি বাস্তবায়নে সমাবেশ করেছি। ব্যানারে সেটিই লেখা ছিল। আমরা কোনো শর্ত ভঙ্গ করি নাই। আহ্বায়ক কমিটির সভাপতি-সদস্যসচিব পাঁচটির মধ্যে তিনটি শর্ত ভঙ্গ করেছেন। তাই আমাদের কারণ দর্শানো উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মনে হচ্ছে।’
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ফতুল্লায় প্রয়াসের ২২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন
ফতুল্লার লামাপাড়ায় মাদকাসক্ত পূনর্বাসন ও সহায়তা কেন্দ্র প্রয়াসের ২২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রয়াসের ২২তম প্রতিষ্ঠাবাষির্কী উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা, কোর্স সমাপনী সনদ প্রদান, বিভিন্ন মেয়াদে সুস্থতার বর্ষপূর্তি ও খেলাধূলার আয়োজন করা হয়।
বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে প্রয়াসের জেনারেল ম্যানেজার দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে এ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করা হয়।
মাদকাসক্ত পূনর্বাসন ও সহায়তা কেন্দ্র প্রয়াসের জেনারেল ম্যানেজার দেলোয়ার হোসেন তার বক্তব্যে বলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলায় মাদকাসক্তদের চিকিৎসা সেবা প্রদানে প্রয়াস বিগত ২২ বছর যাবত নিরবিচ্ছিন্নভাবে সেবা করে যাচ্ছে।
সব ধরনের আইন ও বিধি-বিধান মেনে সেবার মানোন্নয়ন প্রয়াসের বর্তমান লক্ষ্য। শুধু চিকিৎসা সেবা প্রদান নয়, বরং মানসম্পন্ন টেকসই সেবা নিশ্চিত করার জন্য চিকিৎসা পরবর্তী বিভিন্ন কার্যক্রম কেন্দ্রটি পরিচালনা করে থাকে।
জেনারেল ম্যানেজার দেলোয়ার হোসেন বলেন, প্রয়াসে চিকিৎসা কোর্স সম্পন্নকারীদের সার্টিফিকেট প্রদান, প্রাক্তন সদস্যদের মনিটরিং, বিভিন্ন মেয়াদে সুস্থ থাকার স্বীকৃতি ও জনসচেতনতামূলক প্রচার-প্রচারনায় অংশগ্রহণ প্রয়াসের টেকসই চিকিৎসা পরিকল্পনার অংশ।
তিনি আরো বলেন, আমরাই প্রথম নারায়ণগঞ্জে ৪০ বেডে লাইসেন্স প্রাপ্ত মাদকাসক্ত চিকিৎসা কেন্দ্র। প্রয়াসের প্রতিষ্ঠা ২০০৩ সালে হলেও আমরা লাইসেন্স পেয়েছি ২০০৬ সালে। গত ২০২১ সাল থেকে আমরা প্রতিবছর সরকারি অনুদানের জন্য নির্বাচিত হয়ে আসছি।
এসময় তিনি অভিভাবক প্রতিনিধি ও প্রাক্তন সদস্যদের প্রয়াসের সামগ্রিক কার্যক্রমে সংযুক্ত থাকার জন্য ধন্যবাদ জানান।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, মাদকাসক্ত পূনর্বাসন ও সহায়তা কেন্দ্র প্রয়াসের কাউন্সিলর মোঃ সাইফুল ইসলাম, অফিসার এডমিন সাজ্জাদ হোসেন, প্রোগ্রাম অফিসার শেখ ফরিদ উদ্দিন ও মেডিকেল অফিসার ডা. রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ। অন্যান্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন, শওকত হোসেন, লিটন, আমজাদ, বাবুসহ রিকোভারীবৃন্দ।