রাজনীতি নিষিদ্ধ চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) ছাত্রদলের কমিটি দেওয়ার ঘোষণায় বিক্ষোভ মিছিল করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার রাতে ছাত্রদলের ফেসবুক পেজে চুয়েট শাখা ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা করা হয়। কিছুক্ষণ পর ওই পোস্টটি সরিয়ে ফেলা হয়। বিষয়টি জানাজানি হলে রাত ১১টায় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ  করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। পরে মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় হলগুলো প্রদক্ষিণ করে তারা।

এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘ছাত্র রাজনীতি ঠিকানা, এই চুয়েটে হবে না, চুয়েটের মাটি, চুয়েটিয়ানদের ঘাঁটি, রেড কার্ড, রেড কার্ড- ছাত্রদল রেড কার্ড, রেড কার্ড, রেড কার্ড, ইউনিয়ন রেড কার্ড, রেড কার্ড, রেড কার্ড, শিবির রেড কার্ড’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

শিক্ষার্থীরা জানান, বিভিন্ন সময়ে ছাত্র রাজনীতির কারণে ক্যাম্পাসে অনেক শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের সম্মুখীন হতে হয়েছে। সব দলের প্রতিই তাদের সম্মান রয়েছে। কিন্তু চুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ। এই চুয়েটে কুয়েটের মতো পরিস্থিতি হক, এটি তারা চাই না। এ অবস্থায় ক্যাম্পাসে কোনোভাবেই ছাত্রদলের কমিটি মেনে নেওয়া হবে না। শুধু ছাত্র দল নয়, ছাত্রশিবির কিংবা ছাত্র ইউনিয়নের কমিটিও মেনে নেওয়া হবে না। 

তারা আরও জানান, জুলাই বিপ্লবে আবু সাঈদ, মুগ্ধরা জীবন দিয়েছেন। তাদের রক্তের বিনিময়ে পাওয়া এ স্বাধীনতাকে এত সহজে হারাতে দেওয়া যাবে না। ছাত্র রাজনীতির ভয়াবহ রূপ তারা ইতোমধ্যেই দেখে ফেলেছেন। এর পুনরাবৃত্তি হতে দেওয়া হবে না। এছাড়া কমিটিতে যাদের রাখা হবে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে দাবি জানান তারা।

‘ক্যাম্পাসে লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি থাকবে না’ এমন দাবি ছিল চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) অধিকাংশ শিক্ষার্থীর। জুলাই-আগস্টের বিপ্লবের পর এ দাবি আরও জোরালো হয়। শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ৭ আগস্ট ক্যাম্পাসে সব ধরনের রাজনীতি নিষিদ্ধ করে চুয়েট প্রশাসন। 

বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট জরুরি সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সব ধরনের রাজনৈতিক সংগঠন এবং এর কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ততা নিষিদ্ধ। এ আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় বিধান অনুযায়ী শাস্তি দেওয়া হবে।

কমিটি দেওয়ার বিষয়ে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, এটি খসড়া কমিটি ছিল, তা প্রত্যাহার করা হয়েছে। পরে আমরা পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রকাশ করব।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ছ ত র র জন ত ছ ত রদল র ক

এছাড়াও পড়ুন:

ঋণ নেওয়ার আগে যে ১০টি বিষয় অবশ্যই জানা উচিত

নানা কারণে আপনার ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। অনেক সময় মানুষ ব্যক্তিগত ঋণ, গৃহঋণ নেয়। আবার গাড়ি কেনার জন্যও অনেকে ঋণ নেন। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেও ঋণ নেওয়া হয়।

কিন্তু অনেকেই ঋণের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু মৌলিক শব্দ সম্পর্কে জানেন না। ব্যাংকের কর্মকর্তারা যখন এসব শব্দ বলেন, তখন অনেক কিছুই বোঝেন না ঋণ নিতে ইচ্ছুক গ্রাহকেরা। ফলে নিয়মকানুন না জেনেই ঋণ নেন। এতে নানা অপ্রত্যাশিত ঝামেলা তৈরি হয়। তাই ঋণ নেওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বোঝা খুব দরকার।

১. আসল টাকা (প্রিন্সিপাল)

আপনি যে পরিমাণ টাকা ঋণ নিচ্ছেন, সেটিই আসল। এর ওপরই সুদ ধরা হয়। কিস্তি পরিশোধের সঙ্গে আসল ধীরে ধীরে কমতে থাকে।

২. সুদের হার (ইন্টারেস্ট রেট)

ঋণ নেওয়ার আগে সবচেয়ে ভাবতে হয় সুদের হার নিয়ে। সুদের হার বেশি হলে খরচ বেড়ে যায়। ঋণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সুদের হার। এটি স্থিরও হতে পারে, আবার বাজারদরের ওপর নির্ভর করে বাড়তে-কমতেও পারে।

৩. মাসিক কিস্তি (ইএমআই)

ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ বাবদ প্রতি মাসে যে নির্দিষ্ট টাকা আপনাকে দিতে হবে। সেটি হলো ইএমআই বা ঋণের কিস্তি।

৪. ঋণের মেয়াদ

কত বছরের মধ্যে ঋণ শোধ করতে হবে, সেটিই হলো ঋণের মেয়াদ। মেয়াদ বেশি হলে কিস্তি ছোট হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা বেড়ে যায়। ছোট মেয়াদে কিস্তি বড় হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা কমে।

৫. অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)

শুধু সুদ ও আসল নয়, বরং ঋণের সব খরচ (যেমন ফি, চার্জ) মিলিয়ে আসল ব্যয় কত হবে, তার হিসাব হলো অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)। এটিই প্রকৃত খরচ বোঝায়।

৬. আগাম পরিশোধ (প্রিপেমেন্ট)

ঋণের বোঝা কমাতে অনেকে ঋণের সুদ ও আসলের টাকা আগেই শোধ করে দিতে চান। এতে সুদের খরচ কমে যায়।

৭. প্রসেসিং ফি

আপনি ঋণের জন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আবেদন করলেন। কিন্তু ঋণ আবেদন মঞ্জুর থেকে শুরু করে ছাড় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কিছু মাশুল দিতে হয়। এটিই প্রসেসিং ফি। এটি কখনো ঋণের টাকা থেকে কেটে নেওয়া হয়, আবার কখনো আলাদা দিতে হয়।

৮. স্থগিতকাল (মোরাটোরিয়াম)

বিশেষ পরিস্থিতিতে কিছুদিনের জন্য কিস্তি বন্ধ রাখার সুযোগকেই বলে স্থগিতকাল। তবে এই সময়েও সুদ জমতে থাকে। অনেক সময় ঋণ পরিশোধের জন্য বিশেষ কিস্তি ভাগও করে দেওয়া হয়।

৯. জামানত (কোলেটারাল)

ঋণের নিরাপত্তা হিসেবে আপনার সম্পদ (যেমন বাড়ি, সোনা, জমি) ব্যাংকে বন্ধক রাখা হয়। কিস্তি না দিলে ব্যাংক ওই সম্পদ বিক্রি করে টাকা তুলে নেয়।

১০. লোন-টু-ভ্যালু রেশিও

আপনি যত টাকা ঋণ নিচ্ছেন আর জামানতের মূল্য কত—এই অনুপাতকে বলে লোন টু ভ্যালু রেশিও (এলটিভি)। এর অনুপাত যত কম হয়, ব্যাংকের ঝুঁকি তত কম।

সম্পর্কিত নিবন্ধ