চ্যাম্পিয়নস ট্রফি শুরুর আগেই শেষ নরকিয়ার
Published: 16th, January 2025 GMT
গেল বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর আর আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা হয়নি দক্ষিণ আফ্রিকার তারকা পেসার অ্যানরিখ নরকিয়ার। আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির মতো গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্টের দলে তাকে রেখেছিলেন কোচ রব ওয়াল্ডার। কিন্তু ভাগ্য সুপ্রসন্ন হলো না। পিঠের ইনজুরির কারণে দল থেকে ছিটকে গেছেন তিনি। চ্যাম্পিয়নস ট্রফি শুরুর আগেই শেষ হয়ে গেল তার জন্য। তার বদলি খেলোয়াড়ের নাম শিগগিরই ঘোষণা করবে দক্ষিণ আফ্রিকা।
শুধু চ্যাম্পিয়নস ট্রফিই নয়, ইনজুরির কারণে দক্ষিণ আফ্রিকার ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট এসএ-টোয়েন্টি থেকেও ছিটকে গেছেন তিনি।
নরকিয়ার পরিবর্তে দলে জায়গা পেতে পারেন জেরাল্ড কোয়েৎজে। যিনি ইনজুরি থেকে ফিরে খেলতে শুরু করেছেন। অবশ্য দল বাছাইয়ের আগে কোচ রব ওয়াল্ডার নরকিয়া ও কোয়েৎজের মধ্যে অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে নরকিয়াকেই বেছে নিয়েছিলেন।
আরো পড়ুন:
টস জিতে ব্যাটিংয়ে ঢাকা
নেইমারকে নিতে তিন ক্লাবের কাড়াকাড়ি
কিন্তু দল ঘোষণার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকা এক বিবৃতি দিয়ে জানাতে বাধ্য হলো যে, নরকিয়া খেলতে পারবেন না। তার ইনজুরির একটি স্ক্যান করানো হয়। সেখানে দেখা যায় তিনি খেলার জন্য পুরোপুরি ফিট নন। পুরোপুরি সেরে উঠতে সময় লাগবে। সেক্ষেত্রে তিনি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলতে পারবেন না।
এ নিয়ে সবশেষ ছয়টি আইসিসি ইভেন্টের মধ্যে তিনটি থেকেই ইনজুরির কারণে ছিটকে গেলেন নরকিয়া। ২০১৯ বিশ্বকাপের আগে আঙ্গুল ভেঙে ছিটকে যান। এরপর ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপও মিস করেন কোমরের নিচের অংশের ইনজুরির কারণে। এবার ছিটকে গেলেন চ্যাম্পিয়নস ট্রফি থেকে। তবে তারকা এই পেসার ২০২১, ২০২২ ও ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলেছিলেন প্রোটিয়াদের হয়ে।
২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরের পর থেকে তিনি আর ওয়ানডে খেলতে পারেননি। আর একই বছরের মার্চের পর খেলে আর খেলেননি টেস্ট ক্রিকেট। এবার ফেরার সুযোগ এসেছিল, কিন্তু শেষ হয়ে গেল ইনজুরির থাবায়।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সুদানে কারা গণহত্যা চালাচ্ছে, আরব আমিরাতের ভূমিকা কী
২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে সুদান এক ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের মধ্যে পড়ে। ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নিতে দেশটির সামরিক বাহিনী এবং শক্তিশালী আধা সামরিক গোষ্ঠী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে শুরু হওয়া তীব্র লড়াই থেকে এই গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এই যুদ্ধে পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয় এবং সেখানে গণহত্যা সংঘটিত হওয়ার অভিযোগও ওঠে।
সম্প্রতি আরএসএফ এল-ফাশের শহরটি দখল করার পর এর বাসিন্দাদের নিয়ে বড় ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত সারা দেশে দেড় লাখের বেশি মানুষ মারা গেছেন এবং প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। জাতিসংঘ এটিকে বিশ্বের বৃহত্তম মানবিক সংকট বলে অভিহিত করেছে।
পাল্টাপাল্টি অভ্যুত্থান ও সংঘাতের শুরু১৯৮৯ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা দীর্ঘদিনের প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরকে ২০১৯ সালে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকেই দফায় দফায় যে উত্তেজনা চলছিল, তার সর্বশেষ পরিস্থিতি হচ্ছে বর্তমান গৃহযুদ্ধ।
বশিরের প্রায় তিন দশকের শাসনের অবসানের দাবিতে বিশাল জনবিক্ষোভ হয়েছিল। তারই প্রেক্ষিতে তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয় সেনাবাহিনী। কিন্তু দেশটির মানুষ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন চালিয়ে যায়। যার পরিপ্রেক্ষিতে একটি যৌথ সামরিক-বেসামরিক সরকার গঠিত হয়। কিন্তু ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে আরও একটি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকারটিকে উৎখাত করা হয়। এই অভ্যুত্থানের কেন্দ্রে ছিলেন সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান ও দেশটির কার্যত প্রেসিডেন্ট জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং তাঁর ডেপুটি ও আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো।
এই দুই জেনারেল দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ ও বেসামরিক শাসনে ফিরে যাওয়া নিয়ে প্রস্তাবিত পদক্ষেপে একমত হতে পারেননি। তাঁদের মধ্যে মূল বিরোধের বিষয় ছিল প্রায় এক লাখ সদস্যের আরএসএফ-কে সেনাবাহিনীর সঙ্গে একীভূত করার পরিকল্পনা এবং নতুন এই যৌথ বাহিনীর নেতৃত্ব নিয়ে। ধারণা করা হয়, দুজন জেনারেলই তাঁদের ক্ষমতা, সম্পদ ও প্রভাব ধরে রাখতে চেয়েছিলেন।
আরএসএফ সদস্যদের দেশের বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন করা হলে সেনাবাহিনী বিষয়টিকে নিজেদের জন্য হুমকি হিসেবে দেখে। এ নিয়ে ২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়। সেই লড়াই দ্রুত তীব্র আকার ধারণ করে এবং আরএসএফ খার্তুমের বেশির ভাগ অংশ দখল করে নেয়। যদিও প্রায় দুই বছর পর সেনাবাহিনী খার্তুমের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায়।
জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান (বামে) এবং আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো (ডানে)