সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, তার পরিবার ও স্বার্থ সংশ্লিষ্ট দুইটি প্রতিষ্ঠানের ২৫টি ব্যাংক হিসাব ফ্রিজের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এসব হিসাবে ৯ কোটি ৪২ লাখ ৫৪ হাজার ৯০৩ টাকা রয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. জাকির হোসেন গালিবের আদালত দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন।

ফ্রিজ হওয়া ব্যাংক হিসাবের মধ্যে মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের ১৩টি হিসাব, তার স্ত্রী এমা ক্লেয়ার বাটর্নের পাঁচটি, নওফেল ও তার স্ত্রী এমা ক্লেয়ার বাটর্নের যৌথ অ্যাকাউন্ট দুটি, তার মেয়ে নীনা ইমেলী ফৌজিয়া চৌধুরী মিনরের একটি, হান্না শাহরিয়া এনি চৌধুরী মিনরের দুটি হিসাব রয়েছে।

আরো পড়ুন:

বিএমডিএ’র ২ দপ্তরে দুদকের অভিযান, নথিপত্র তলব

কুষ্টিয়ায় বিএডিসি কার্যালয়ে দুদকের অভিযান

এছাড়া তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান নিহান ইনভেস্টমেন্ট হোল্ডিং কোম্পানি লিমিটেডের একটি ও সিল অরুনিমা ফ্ল্যাট ওনার্সের একটি হিসাব রয়েছে।

এদিন দুদকের উপ-পরিচালক কমলেশ মণ্ডল তাদের ব্যাংক হিসাব ফ্রিজের আবেদন করেন। আবেদনে বলা হয়, নওফেল অসৎ উদ্দেশ্যে অসাধু উপায়ে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ ২ কোটি ২৭ লাখ ৫৯ হাজার ৩০৮ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের মালিকানা অর্জন করে অসদাচরণ এবং ৪১টি ব্যাংক হিসাবে সন্দেহজনকভাবে ১১৩ কোটি ৮৯ লাখ ৪৩ হাজার ৬২৮ টাকা লেনদেন করে মানিলন্ডারিংয়ের সম্পৃক্ত অপরাধ ‘দুর্নীতি ও ঘুষ’ সংঘটনের মাধ্যমে প্রাপ্ত অর্থ বা সম্পত্তির অবৈধ উৎস গোপন বা আড়াল করার উদ্দেশ্যে তা রূপান্তর বা স্থানান্তর বা হস্তান্তর করে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ধারা, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারাসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীত প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করায় তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন মামলা করা হয়।

তিনি ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শিক্ষা উপমন্ত্রী হিসেবে এবং ২০২৪ সালের জানুয়ারি হতে আগস্ট পর্যন্ত ওই মন্ত্রণালয়ের শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে তিনি অবৈধ ঘুষ লেনদেন ও দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অবৈধ অর্থ উপার্জন করেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলার পর থেকে তিনি তার ব্যাংকে রক্ষিত টাকা উত্তোলনের চেষ্টা করছেন। অপরাধলব্ধ আয়ের মাধ্যমে অর্জিত সম্পত্তির বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে তা বেহাত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাদের অস্থাবর সম্পত্তি উত্তোলন, হস্তান্তর বা মালিকানা বদল রোধের জন্য অবরুদ্ধ করা প্রয়োজন।

ঢাকা/মামুন/এসবি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

দলগুলো একমত হলে বর্ষপূর্তিতেই ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ প্রকাশ

ছাত্র গণ-অভ্যুত্থান ২০২৪-এর উপযুক্ত রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়া হবে। বিশেষ করে নির্বাচিত সরকারের সংস্কার করা সংবিধানের প্রস্তাবনায় এই স্বীকৃতির উল্লেখ থাকবে। এ ছাড়া সংবিধানের তফসিলেও ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ সংযুক্ত থাকবে। এ ঘোষণাপত্র ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট থেকে কার্যকর বলে ধরে নেওয়া হবে।

বহুল আলোচিত জুলাই ঘোষণাপত্রের খসড়ায় এ কথাগুলো বলা হয়েছে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর থেকে রাজনৈতিক অঙ্গনে অন্যতম আলোচিত বিষয় এই ঘোষণাপত্র। অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি সামনে রেখে সম্প্রতি জুলাই ঘোষণাপত্রের চূড়ান্ত খসড়া বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) বিভিন্ন দলকে পাঠিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। দলগুলোর সবুজ সংকেত পেলে অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতেই ঘোষণা করা হতে পারে জুলাই ঘোষণাপত্র।

ঘোষণাপত্রের খসড়ায় ২৬টি দফা রয়েছে। প্রথম ২১ দফায় মহান মুক্তিযুদ্ধসহ বাংলাদেশের মানুষের অতীতের বিভিন্ন ঐতিহাসিক ও গণতান্ত্রিক সংগ্রাম থেকে শুরু করে জুলাই অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপট বর্ণনা করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক সংকট মোকাবিলায় গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ব্যক্ত জনগণের সার্বভৌমত্বের প্রত্যয় ও প্রয়োগ রাজনৈতিক এবং আইনি উভয় দিক থেকে যুক্তিসংগত, বৈধ ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত।’

আরও পড়ুনমৌলিক সংস্কারের সব বিষয়ে মতৈক্য হয়নি ৫ ঘণ্টা আগে

পরের পাঁচটি দফায় রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক সংস্কারের আকাঙ্ক্ষা, আওয়ামী লীগ শাসনামলে গুম-খুন, গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধ ও সব ধরনের নির্যাতন-নিপীড়ন এবং রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি লুণ্ঠনের অপরাধের দ্রুত উপযুক্ত বিচার, আইনের শাসন ও মানবাধিকার, দুর্নীতি, শোষণমুক্ত বৈষম্যহীন সমাজ এবং গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়েছে।

খসড়া ঘোষণাপত্রে শেখ মুজিবুর রহমান সরকারের প্রতিষ্ঠিত বাকশাল বা একদলীয় শাসনব্যবস্থার সমালোচনা করা হয়েছে। এর প্রতিক্রিয়ায় পঁচাত্তরের ৭ নভেম্বর দেশে সিপাহি জনতার ঐক্যবদ্ধ বিপ্লব সংঘটিত হয় বলে ঘোষণাপত্রে উল্লেখ করা হয়। নব্বইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের কথা যেমন এতে উল্লেখ রয়েছে, পাশাপাশি এক-এগারোর ‘ষড়যন্ত্রমূলক বন্দোবস্তের’ কড়া সমালোচনাও ঘোষণাপত্রে আছে।

জনগণের লড়াইকে সমর্থন দেয় সামরিক বাহিনী

ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের দুঃশাসন, পিলখানা ট্র্যাজেডি, শাপলা চত্বরে গণহত্যার মতো আইনবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম-খুন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ, একদলীয় স্বার্থে সংবিধান সংশোধন ও পরিবর্তন বাংলাদেশের সব রাষ্ট্রীয় এবং সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একটি চরম গণবিরোধী, একনায়কতান্ত্রিক ও মানবাধিকার হরণকারী শক্তি বাংলাদেশকে একটি ফ্যাসিবাদী, মাফিয়া ও ব্যর্থ রাষ্ট্রের রূপ দিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে।

অবৈধভাবে ক্ষমতা অব্যাহত রাখতে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকার তিনটি প্রহসনের নির্বাচনে (২০১৪, ’১৮ ও ’২৪) দেশের মানুষকে ভোটাধিকার ও প্রতিনিধিত্ব থেকে বঞ্চিত করে বলেও জুলাই ঘোষণাপত্রের খসড়ায় উল্লেখ রয়েছে। বলা হয়, তথাকথিত উন্নয়নের নামে শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী সরকারের নেতৃত্বে সীমাহীন দুর্নীতি, ব্যাংক লুট, অর্থ পাচার ও অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংসের মধ্য দিয়ে বিগত পতিত দুর্নীতিবাজ আওয়ামী সরকার বাংলাদেশ ও এর অমিত অর্থনৈতিক সম্ভাবনাকে বিপর্যস্ত করে তোলে এবং এর পরিবেশ-জলবায়ু ও প্রাণবৈচিত্র্য বিপন্ন করে।

খসড়া ঘোষণাপত্রে আরও বলা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা ৯ দফা দাবি ঘোষণা করে, যা পরে ১ দফায় রূপান্তরিত হয়। আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্যায়ে সামরিক বাহিনীর সদস্যরা জনগণের গণতান্ত্রিক লড়াইকে সমর্থন দেন। তীব্র আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্যায়ে গণভবনমুখী জনতার উত্তাল যাত্রার মুখে অবৈধ, অনির্বাচিত, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ৫ আগস্ট (২০২৪) পদত্যাগ করেন এবং তিনি মন্ত্রী, সংসদ সদস্যসহ দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পিডিবির ভুলে ২৪৫ কোটি টাকা জরিমানা দিতে হলো বাংলাদেশকে
  • জুলাইয়ের ৩০ দিনে রেমিট্যান্স ২৩৬ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে
  • দলগুলো একমত হলে বর্ষপূর্তিতেই ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ প্রকাশ
  • নির্বাচনের রোডম্যাপে কবে যাত্রা শুরু করবে বাংলাদেশ
  • ভারতের ৬ প্রতিষ্ঠানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা
  • এ দেশে খুচরা ব্যাংকিং বন্ধ করে দিচ্ছে এইচএসবিসি
  • রাবিপ্রবির ১০ শিক্ষার্থীর সনদ-ছাত্রত্ব বাতিল
  • জন্মহার বাড়াতে চীনের নতুন উদ্যোগ, শিশুদের জন্য মা-বাবা পাবেন ভাতা
  • সন্ধানী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ১২ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা
  • ‘রাষ্ট্রীয় শোক’ প্রত্যাখ্যান