নওফেল ও তার পরিবারের ২৫ ব্যাংক হিসাব ফ্রিজের আদেশ
Published: 16th, January 2025 GMT
সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, তার পরিবার ও স্বার্থ সংশ্লিষ্ট দুইটি প্রতিষ্ঠানের ২৫টি ব্যাংক হিসাব ফ্রিজের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এসব হিসাবে ৯ কোটি ৪২ লাখ ৫৪ হাজার ৯০৩ টাকা রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. জাকির হোসেন গালিবের আদালত দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন।
ফ্রিজ হওয়া ব্যাংক হিসাবের মধ্যে মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের ১৩টি হিসাব, তার স্ত্রী এমা ক্লেয়ার বাটর্নের পাঁচটি, নওফেল ও তার স্ত্রী এমা ক্লেয়ার বাটর্নের যৌথ অ্যাকাউন্ট দুটি, তার মেয়ে নীনা ইমেলী ফৌজিয়া চৌধুরী মিনরের একটি, হান্না শাহরিয়া এনি চৌধুরী মিনরের দুটি হিসাব রয়েছে।
আরো পড়ুন:
বিএমডিএ’র ২ দপ্তরে দুদকের অভিযান, নথিপত্র তলব
কুষ্টিয়ায় বিএডিসি কার্যালয়ে দুদকের অভিযান
এছাড়া তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান নিহান ইনভেস্টমেন্ট হোল্ডিং কোম্পানি লিমিটেডের একটি ও সিল অরুনিমা ফ্ল্যাট ওনার্সের একটি হিসাব রয়েছে।
এদিন দুদকের উপ-পরিচালক কমলেশ মণ্ডল তাদের ব্যাংক হিসাব ফ্রিজের আবেদন করেন। আবেদনে বলা হয়, নওফেল অসৎ উদ্দেশ্যে অসাধু উপায়ে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ ২ কোটি ২৭ লাখ ৫৯ হাজার ৩০৮ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের মালিকানা অর্জন করে অসদাচরণ এবং ৪১টি ব্যাংক হিসাবে সন্দেহজনকভাবে ১১৩ কোটি ৮৯ লাখ ৪৩ হাজার ৬২৮ টাকা লেনদেন করে মানিলন্ডারিংয়ের সম্পৃক্ত অপরাধ ‘দুর্নীতি ও ঘুষ’ সংঘটনের মাধ্যমে প্রাপ্ত অর্থ বা সম্পত্তির অবৈধ উৎস গোপন বা আড়াল করার উদ্দেশ্যে তা রূপান্তর বা স্থানান্তর বা হস্তান্তর করে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ধারা, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারাসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীত প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করায় তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন মামলা করা হয়।
তিনি ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শিক্ষা উপমন্ত্রী হিসেবে এবং ২০২৪ সালের জানুয়ারি হতে আগস্ট পর্যন্ত ওই মন্ত্রণালয়ের শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে তিনি অবৈধ ঘুষ লেনদেন ও দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অবৈধ অর্থ উপার্জন করেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলার পর থেকে তিনি তার ব্যাংকে রক্ষিত টাকা উত্তোলনের চেষ্টা করছেন। অপরাধলব্ধ আয়ের মাধ্যমে অর্জিত সম্পত্তির বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে তা বেহাত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাদের অস্থাবর সম্পত্তি উত্তোলন, হস্তান্তর বা মালিকানা বদল রোধের জন্য অবরুদ্ধ করা প্রয়োজন।
ঢাকা/মামুন/এসবি
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স।
গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’
পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।
আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’
তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ