সারাবিশ্বে প্রতিনিয়ত ছড়াচ্ছে ডিজিটাল পরিষেবার পরিসর। বিপরীতে গুরুত্ব বাড়ছে ডিজিটাল মাধ্যমে গোপনীয়তা ও সুরক্ষার। সামাজিক যোগাযোগের সবকটি প্ল্যাটফর্ম আগের যোগাযোগের ধরন পুরোপুরি বদলে দিয়েছে। নিত্যনতুন উদ্ভাবন যুক্ত করেছে বাড়তি স্বাচ্ছন্দ্য ও সুরক্ষা।
নিত্যযোগাযোগে ব্যবহার হচ্ছে বহুমাত্রিক অ্যাপ। তবে সবাই এখন এমন অ্যাপ ব্যবহারের দিকেই ঝুঁকছেন, যেখানে ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা ও সুরক্ষা অগ্রাধিকার পায়। নির্বাচিত কয়েকটি অ্যাপের মধ্যে ইমো গ্রাহকের নিরাপত্তা, গোপনীয়তা ও সুরক্ষা নিশ্চিতে ধারাবাহিক উদ্যোগ নিয়ে কাজ করছে।
ইতোমধ্যে অ্যাপটি বেশ কিছু আধুনিক ফিচার উন্নয়ন করেছে, যা গ্রাহককে রিয়েল টাইম সুরক্ষা দেয়। অ্যাপের এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন (ইটুইই) ফিচার বার্তাকে বিশেষ সুরক্ষা দেবে। অন্যদিকে নিশ্চিত করবে কনটেন্ট প্রেরক ও প্রাপকের উদ্দেশ করে পাঠানো বার্তা। ব্যক্তিজীবন বা পেশাগত প্রয়োজনে ফিচারটি সময়োপযোগী ও বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।
চ্যাট ও ফোনকলের জন্য অ্যাপে রয়েছে বিশেষ কিছু প্রাইভেসি ফিচার। যেমন– টাইম মেশিন, ডিসঅ্যাপিয়ারিং মেসেজ, ব্লক স্ক্রিনশট ও ব্লক স্ক্রিন রেকর্ডিং।
টাইম মেশিন
তথ্যের সংবেদনশীলতা সময়ের গুরুত্বের সঙ্গে বদলে যায়। এমন ধারণার ওপর ভিত্তি করে টাইম মেশিন ফিচার আনা হয়। উল্লিখিত ফিচার দিয়ে বার্তা প্রেরক ও প্রাপক উভয়েই পুরোনো কথোপকথন পুনরায় দেখতে পারবেন। প্রয়োজনে তা যে কোনো সময় মুছে ফেলতে পারবেন।
ডিসঅ্যাপিয়ারিং
অন্যদিকে, ডিসঅ্যাপিয়ারিং মেসেজ ফিচারে গ্রাহক বার্তার জন্য নির্দিষ্ট টাইম সেট করতে পারবেন। নির্ধারিত সময় শেষ হলে বার্তাটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে মুছে যাবে। বার্তা বিনিময়ে নির্দিষ্ট কনটেন্ট কতক্ষণ থাকবে, তা নিয়ন্ত্রণ করার সুযোগ দেয় ও গোপনীয়তা নিশ্চিত হয়। চ্যাট ও ফোনকলের সময় কেউ যেন স্ক্রিনশট নিতে না পারে বা রেকর্ড করতে না পারে, তা নিশ্চিত করবে ব্লক স্ক্রিনশট ও ব্লক স্ক্রিন রেকর্ডিং ফিচার। অ্যাপের উল্লিখিত তিনটি ফিচার গোপনীয়তা ও সুরক্ষায় গ্রাহক শঙ্কা দূর করে বলে ইমো ফিচার উন্নয়ন বিভাগ সূত্রে জানানো হয়।
বর্তমান সময়ে ই-কমার্স পরিষেবায় ব্যক্তিতথ্য, অর্থ ও আর্থিক লেনদেনে অবাধে ডিজিটাল তথ্যবিনিময়ের অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠেছে উল্লিখিত অ্যাপ।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম, এখানে সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই: জেড আই খান পান্না
মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।
আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বারের হলরুমে ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার সংকট ও আইনি প্রতিকার পাওয়ার পথ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেড আই খান পান্না। সেমিনারটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিস (এইচআরসিবিএম), বাংলাদেশ চ্যাপ্টার।
বক্তব্যে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘এখানে সংখ্যালঘুর কথা বলা হচ্ছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখন আমি সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু। আজ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা দেখি, জুতা দিয়ে বাড়ি দিতে দেখি, কিন্তু কিছু করতে পারি না। তাই আমি সবচেয়ে বড় অসহায়।’
এসব কথা বলতে বলতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না কেঁদে ফেলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, জীবনে কখনো জেনে-বুঝে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন, তাঁদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
জেড আই খান পান্না আরও বলেন, ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, কারও সঙ্গে এর তুলনা চলে না। এটা সাম্প্রদায়িকতার দেশ না। সংবিধানে যেন কেউ হাত না দেয়। সরকারের অনেকেই বিদেশি হয়েও স্বদেশি ভাব দেখাচ্ছেন।
সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। সমাজে ন্যায়বিচার বা সুবিচার পাওয়ার কথা থাকলেও তা মিলছে না। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিচার হয় না। কেউ কেউ ধরা পড়লেও পরে বেরিয়ে যায়।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমন কুমার রায় বলেন, সব সরকারের আমলেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত। বর্তমান নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘুদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা হলেও সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া আসে না, এমনকি দুঃখও প্রকাশ করে না।
গত বছরের ৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ শুরু হলে তা দমন করতেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সুমন কুমার দাবি করেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সনাতনী সম্প্রদায়ের বাক্স্বাধীনতা বন্ধ করতে, নেতৃত্ব দমন করতে এসব করা হচ্ছে।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে কে পাল। সঞ্চালনায় ছিলেন এইচআরসিবিএমের বাংলাদেশ চ্যাপটারের আহ্বায়ক লাকি বাছাড়। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরশেদ ও মো. গোলাম মোস্তফা।