মাদকতার কুফল বর্তমানে সারাদেশে বিস্তার লাভ করছে। নতুন প্রজন্ম এর দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছে ভয়াবহ রূপে। এটা দেশের আইনশৃঙ্খলা জনগণের নীতি নৈতিকতাবোধ এবং পারিবারিক সমাজ ও রাষ্ট্রীয় শৃঙ্খলার ওপর মারাত্মকভাবে কুপ্রভাব ফেলেছে। 

সোমবার ডিআরইউর নসরুল হামিদ মিলনায়তন, অনুষ্ঠিত দেশ ও জাতির কল্যাণে 'মাদকতার কুফল ও প্রতিকার' শীর্ষক একটি জাতীয় সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। 

সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (গ্রেড-১) খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান-এনডিসি। বিশেষ অতিথি ছিলেন, অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্নেল মোস্তফা কামাল। আন্তর্জাতিক আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওলাদে রাসুল সায়্যিদ আফফান মানসুরপুরী, ভারত।

সেমিনারের প্রধান আলোচক মাদানী মজলিস বাংলাদেশ'র সভাপতি শায়খ মুফতি হাফীজুদ্দীন তার বক্তব্যে বলেন, মাদকতা বর্তমান সময়ের একটি মারাত্মক ব্যাধি হিসেবে ক্রমশ সারাদেশে বিস্তার লাভ করছে। নতুন প্রজন্ম এর দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছে ভয়াবহ রূপে। এটা দেশের আইনশৃঙ্খলা, জনগণের নীতি নৈতিকতাবোধ এবং পারিবারিক, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় শৃঙ্খলার ওপর মারাত্মকভাবে কুপ্রভাব ফেলছে। এই ভয়াবহ ব্যাধি থেকে দেশবাসী এবং বিশেষত নতুন প্রজন্মকে উদ্ধার ও মুক্ত রাখার জন্য সরকার, সুশীল সচেতন নাগরিক এবং আলেম-উলামা, ইমাম-খতীব ও ধর্মীয় ব্যক্তিবৃন্দের সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি। এ বিষয়ে সুচিন্তিত ও সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ এবং মাঠপর্যায়ে কর্ম-তৎপরতা বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব আল্লামা সাজিদুর রহমান।

সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন, শায়খুল হাদীস মাওলানা আব্দুল গাফফার, ভাইস প্রিন্সিপাল, জামিয়াতুল উলূমিল ইসলামিয়া, ঢাকা, মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক নদভী দা.

বা., কমান্ডার মাহবুবর রহমান (অব. নেভি), মিজানুর রহমান, কমিশনার, ইনকাম টেক্স, মেজর জেনারেল (অব.) মহিউদ্দিন চৌধুরী মোহন ক্যাপ্টেন (অব.) এস. এম. হেলাল মশিউর রহমান খান, বিশিষ্ট সিনিয়র সাংবাদিক জনাব, গোলাম দস্তগীর বাবু, বিশিষ্ট শিল্পপতি। এছাড়াও সেমিনারটিতে অংশ নেন বিভিন্ন গণমাধ্যমকর্মী ও সুশীল সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিগণ।

সেমিনারে 'মাদকতার কুফল ও প্রতিকার' শিরোনামে একটি গবেষণা-প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয় এবং মদ ও মাদকতা' বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

সেমিনারে উপস্থিত ডিজি এবং কারা মহাপরিদর্শকের মাধ্যমে সরকার এবং উচ্চ নীতি নির্ধারণী কর্তৃপক্ষের কাছে কিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়।

প্রস্তাবনা গুলো হচ্ছে ইমাম-খতিবগণ, জন-প্রতিনিধি ও সুশীল সমাজের সমন্বয়ে সরকার যদি কমিশন গঠন করে মাঠ পর্যায়ে মাদকতা বন্ধের উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারে। মাদকদ্রব্য উৎপাদন এবং চোরাচালানের ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করে সেগুলো বন্ধের কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের যথাযথ প্রয়োগের ব্যাপারে আরও কার্যকরী ভূমিকা অনুষ্ঠিত করা। মদের নেশার সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের বিচারে শরিয়া আইনকে প্রাধান্য দেওয়া। অবৈধ বার এবং মাদকদ্রব্য বিক্রয় কেন্দ্রগুলো বন্ধ করা। বিদেশি অমুসলিম নাগরিকদের জন্য সরকারের লাইসেন্সধারী কোনো বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান যেন শর্ত লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে মদ নেশাদ্রব্য বিক্রি করতে না পারে এ বিষয়টি কঠোরভাবে তদারকি ও নিয়ন্ত্রণ করা। অবৈধ কোন প্রতিষ্ঠান নজরে আসলে সেগুলোকে বন্ধ এবং উচ্ছেদ করা।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে জব্দ হওয়া মাদকদ্রব্য দৃষ্টান্ত হিসেবে জনসমক্ষে প্রকাশ্যে বিনষ্ট করা এবং আটক আসামিদের বিচারিক পদক্ষেপগুলো মিডিয়ার মাধ্যমে জনগণের সামনে তুলে ধরা।

মাদকাসক্ত কয়েদিদের মানসিকতা পরিবর্তনের জন্য চিন্তাশীল আলেমদের পাক্ষিক কাউন্সিলের ব্যবস্থা গ্রহণ করা। মাদকাসক্তদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

এ পদক্ষেপগুলোর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা গেলে মাদকতার ছোবল থেকে দেশ ও জাতিকে উদ্ধার করা।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ড আরইউ পদক ষ প র রহম ন উপস থ সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

বিএনপির ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে রূপগঞ্জে লিফলেট বিতরণ 

আওয়ামীলীগ দেশের মানুষের অধিকার হনন করেছে। তাই, দেশে এক গণবিপ্লবের সৃষ্টি হয়েছে। ২৪এর গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামীলীগ এ দেশ থেকে বিতারিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও রূপগঞ্জ আসনের বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী মোহাম্মদ দুলাল হোসেন। 

বৃহস্পতিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের ভোলাব ইউনিয়নের আতলাপুর বাজার এলাকায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঘোষিত রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে লিফলেট বিতরণকালে মোহাম্মদ দুলাল হোসেন এসব কথা বলেন। 

লিফলেট বিতরণকালে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সাধারণ মানুষ, বিএনপি-যুবদলসহ অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। 

মোহাম্মদ দুলাল হোসেন আরও বলেন, “গত ১৭ বছর ধরে এ দেশের জনগণ একদলীয় শাসন ও ফ্যাসিবাদের শিকার হয়ে জিম্মি হয়ে ছিল। মানুষের বাকস্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার হরণ করা হয়েছিল। কিন্তু ২০২৪ সালের গণজাগরণের মধ্য দিয়ে জনগণ আবারও তাদের অধিকার পুনরুদ্ধার করতে পেরেছে। এখন সময় এসেছে মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার, একটি সত্যিকার গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার।”

তিনি আরও বলেন, “তারেক রহমানের ৩১ দফা দেশের পুনর্গঠনের পথনির্দেশনা। এই দফাগুলোতে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, মানবাধিকার, দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার রূপরেখা দেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসতে হবে।”

এসময় স্থানীয় যুবদল ও ছাত্রদল নেতৃবৃন্দও লিফলেট বিতরণে অংশগ্রহণ করেন। তারা সাধারণ মানুষকে বিএনপির পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করেন যে, দেশকে সঠিক পথে এগিয়ে নিতে তারা রাজনৈতিকভাবে প্রস্তুত এবং জনগণের পাশে থাকবে।

স্থানীয়রা জানান, তারা দীর্ঘদিন ধরে নিপীড়ন-নির্যাতনের শিকার। একটি সত্যিকারের গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা এবং নাগরিক অধিকার ফিরিয়ে আনার প্রত্যাশা করছেন তারা। এ ধরনের লিফলেট বিতরণ কার্যক্রমে জনগণ আরও বেশি সচেতন হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তারা।

প্রসঙ্গত, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান চলতি বছরের শুরুতে ৩১ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেন, যেখানে রাষ্ট্র সংস্কার ও জনগণের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্য তুলে ধরা হয়।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইসির প্রতিটি কাজে জবাবদিহি থাকতে হবে
  • জুলাই সনদে আমাদের যে সম্মতি সেটি আইনের ঊর্ধ্বে: সালাহউদ্দিন
  • সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও মাদকমুক্ত বন্দর গড়তে চাই : সাখাওয়াত
  • বিএনপির ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে রূপগঞ্জে লিফলেট বিতরণ 
  • জুলাই আন্দোলনকে মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে জড়াবেন না: টুকু
  • সবাই অপেক্ষা করছে একটা নির্বাচনের জন্য
  • সরকারের ভুল সিদ্ধান্তে দেশে ফ্যাসিবাদ, উগ্রবাদ মাথাচাড়া দিতে পারে: তারেক রহমান
  • সরকারের একটি অংশ অপকৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে: তারেক রহমান
  • ট্রাম্পের প্রতি মার্কিন জনগণের সমর্থন ৪০ শতাংশে ঠেকেছে
  • জাতিসংঘে সম্মেলনের ফাঁকে বাংলাদেশ-পাকিস্তান বৈঠক, ফিলিস্তিন ইস্যুতে উদ্বেগ