শিক্ষাব্যবস্থা খুবই নাজুক, তিন মাসে কিছু করা সম্ভব নয়: উপদেষ্টা
Published: 22nd, January 2025 GMT
শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, “দেশের শিক্ষা খাত ও শিক্ষাব্যবস্থার অবস্থা খুবই নাজুক। স্বল্প সময়ে এ খাতে তেমন সংস্কার করা সম্ভব নয়। আর তিন মাস কাজ করে কিছুই করা সম্ভব নয়। এজন্য সংস্কার কমিশন করেও খুব একটা লাভ নেই। এটা আমার অভিমত। আমি এটা বলেছিও।”
বুধবার (২২ জানুয়ারি) শিক্ষা বিটের সাংবাদিকদের সংগঠন এডুকেশন রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশের (ইরাব) সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন তিনি। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পরিকল্পনা কমিশনে এ মতবিনিময় হয়।
শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, “শিক্ষাব্যবস্থা একটা দেশে নষ্ট হতে অনেক সময় লাগে। এটা একটা সাইকেল (চক্র)। প্রাইমারি স্কুল খারাপ হলে, মাধ্যমিকেও খারাপ হবে। গ্র্যাজুয়েশন শেষ করে তারাই তো আবার শিক্ষক হবে, পড়াবে। এভাবে পর্যায়ক্রমে শিক্ষাব্যবস্থা ভেঙে পড়ে।”
ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, “বাংলাদেশে শিক্ষাব্যবস্থা প্রথম খারাপ হয় ১৯৭২ সালে। বঙ্গবন্ধুর সময়ে শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন ইউসুফ আলী। তার একটা প্রচণ্ড ভুল সিদ্ধান্ত ছিল। সেটা হলো—ভালো যে কলেজগুলো ছিল, নামকরা কলেজ যাকে বলে; বিএম কলেজ, ঢাকা কলেজ, মুরারীচাঁদ কলেজ, রাজশাহী কলেজ; প্রথমে এগুলোকে ইউনিভার্সিটি কলেজ বানিয়ে দিয়েছিল।”
তিনি আরও বলেন, “এরপর পলিটিক্যালি সব কলেজকে জাতীয়করণ করা হলো। জাতীয়করণ না করলেও ব্যক্তি উদ্যোগে গ্রামে গ্রামে কলেজ গড়ে তোলা হলো, অনুমোদন নেওয়া হলো। এভাবে গড়ে উঠল আজকের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। এখন এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা শিক্ষার্থীরাই সবচেয়ে বেশি বেকার।”
ঢাকা/হাসান/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ ক ষ ব যবস থ
এছাড়াও পড়ুন:
প্রতীকী মূল্যে কাউকে সরকারি জমি দেওয়া হবে না: অর্থ উপদেষ্টা
এখন থেকে সরকারি জমি প্রতীকী মূল্য কাউকে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেছেন, সরকারি জমি যারা নিতে চাইবে যথাযথ মূল্য দিয়ে নিতে হবে।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সচিবালয়ে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি এবং সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
চট্টগ্রামে বাংলাদেশ সমরাস্ত্র কারখানা সম্প্রসারণের জন্য বন্ধ থাকা চট্টগ্রামের জলিল টেক্সটাইল মিলসের ৫৪.৯৯ একর জমি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নিকট হস্তান্তরের একটি প্রস্তাব অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে উপস্থান করা হয়।
এ প্রসঙ্গে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘‘জলিল টেক্সটাইল মিলস তারা নিতে চাচ্ছে। আমরা প্রস্তাব দিয়েছি প্রতীকী মূল্যে দেব না। এখন থেকে প্রতীকী মূল্যটা এভয়েড (এড়িয়ে চলা) করবো। যারাই নিতে চায় অর্থ দিয়ে নেবে। কারণ প্রতীকী মূল্যে দিলে যারা নিয়ে যায়, তারা ঠিকমত ইউটিলাইজ করে না। অনেক ক্ষেত্রে ১০ একর জমির প্রয়োজন থাকলেও প্রতীকী মূল্যের কারণে ১০০ একর জমি দরকার বলে জানানো হয়।’’
তাহলে কি জলিল টেক্সটাইল মিলসের জমি হস্তান্তরের বিষয়টি অনুমোদন দেওয়া হয়নি? সাংবাদিকদের করা প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘তাদেরকেই দেওয়া হবে, তবে মূল্যটা নির্ধারণ করে প্রস্তাব আসতে হবে।’’
এদিকে বৈঠক শেষে বৈঠকের সিদ্ধান্তের বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, চট্টগ্রামে বাংলাদেশ অর্ডিন্যান্স ফ্যাক্টরি (বিওএফ) সম্প্রসারণের জন্য বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলের নিয়ন্ত্রণাধীন চট্টগ্রাম জেলার ভাটিয়ারিতে অবস্থিত জলিল টেক্সটাইল মিলস হস্তান্তরের নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, ব্যক্তি মালিকানায় ১৯৬১ সালে চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুন্ড উপজেলার ফৌজদারহাট এলাকায় মেসার্স জলিল টেক্সটাইল মিলস স্থাপন করা হয়। মিলের জমির পরিমাণ ৫৪.৯৯ একর। ১৯৭২ সালে জাতীয়করণ করার পর উইভিং এবং ডাইং বিভাগ স্থাপনের মাধ্যমে মানসম্মত উৎপাদনের জন্য ৩ বার স্বর্ণপদক লাভ করে মিলটি।
লাভজনকভাবে পরিচালিত মিলটি বিরাষ্ট্রীয়করণ নীতিমালার আওতায় ১৯৮২ সালের ১৫ ডিসেম্বর মিলের সাবেক শেয়ার হোল্ডারদের নিকট হস্তান্তর করা হয়। মালিক পক্ষের মধ্যে অর্ন্তকলহের কারণে ১৯৯৭ সালে মিলটি বন্ধ হয়ে যায়। শ্রমিক-কর্মচারীদের আন্দোলনের একপর্যায়ে তৎকালীন সরকার দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ১৯৯৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর মিলটি অধিগ্রহণ করে। ওই দিন সরকার মিলের সাবেক ৪০ শতাংশ শেয়ার হোল্ডার সেলিম চৌধুরী গংদের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদনের মাধ্যমে মিলটি হস্তান্তর করে।
সেলিম চৌধুরী গং মাত্র ১২ লাখ ২২ হাজার টাকা দিয়ে মিলটি অধিগ্রহণের পর হস্তান্তর চুক্তির শর্তানুযায়ী সরকারি পাওনা, ৬০ শতাংশ শেয়ার হোল্ডারদের ক্ষতিপূরণ, শ্রমিক-কর্মচারীদের পাওনা, ২০০০ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে মিল চালু, অর্থ মন্ত্রণালয়, বস্ত্র মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের প্রতিনিধি নিয়ে পরিচালনা পর্ষদ না করে চুক্তির সব শর্ত লঙ্ঘন করে। সুচতুরভাবে মালিকপক্ষ ২০০০ সালের শেষের দিকে নামমাত্র ১টি ইউনিট চালু করে পরবর্তীতে শ্রম আইন বহির্ভূতভাবে ২০০৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউনিটটিও বন্ধ করে দেয়।
এ অবস্থায় ২০০৪ সালের ২ সেপ্টেম্বর বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় মালিকপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিদের নিয়ে অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক ৬ মাসের মধ্যে মালিকপক্ষ মিল চালু না করলে হস্তান্তর চুক্তির শর্তানুযায়ী সরকার মিলটি অধিগ্রহণ করার ঘোষণা দেয়। মালিকপক্ষ এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন না করে ২০০৫ সালের ২০ নভেম্বর সরকারের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে মিলটি বন্ধ ও পরিত্যক্ত অবস্থায় ফেলে রাখে। দীর্ঘ আইনী প্রক্রিয়া শেষে ২০১৭ সালের ৫ জানুয়ারি জলিল টেক্সটাইল মিলস পুনঃগ্রহণ করে সরকার এবং মিলটি বিটিএমসির নিয়ন্ত্রণে ন্যস্ত করা হয়।
ঢাকা/হাসনাত//