সোনারগাঁয়ে লোকজ উৎসবে মালেকের আঁকা ছবি দেখতে পর্যটকদের ভিড়
Published: 23rd, January 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনে মাসব্যাপী লোকজ উৎসবে এস এ মালেকের রং তুলিতে আঁকা ছাত্র-জনতার গণ অভ্যুত্থানে দৃশ্যপটের সেই ছবিসহ গ্রামীন দৃশ্যপট দেখতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পর্যটকদের পাশাপাশি বিদেশি পর্যটকেরাও ভিড় করছেন।
লোক ও কারুশিল্প মেলা এবং লোকজ উৎসবে গিয়ে দেখা গেল, রঙ তুলির আঁচড়ে মনোযোগ সহকারে চিত্রাঙ্কন করছেন আর্টিষ্ট এস এ মালেক। রং তুলিতে আঁকা সেই ছবি মাধ্যমে গ্রামীন দৃশ্যসহ ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে ছাত্র-জনতার গণ অভ্যুত্থানে দৃশ্যপটের ছবি রিকশাচিত্রে ফুটিয়ে তুলেছেন মেলার মাঠে প্রদর্শিত কারু পল্লীর গ্যালারিতে।
মেলার মাঠে প্রদর্শিত কারু পল্লীর গ্যালারিতে এই অনুশীলন চত্বর দেওয়া হয়েছে। লোকজ উৎসবে এই অনুশীলন চতুর পেয়ে উচ্ছসিত শিশু-কিশোরেরা।
মেলায় কথা হয় আর্টিষ্ট এস এ মালেক সঙ্গে রিকশাচিত্রে পেশায় তার দীর্ঘ অভিজ্ঞতার কথা ব্যক্ত করেন। এই পেশার সঙ্গে দীর্ঘদিনের সম্পর্ক। পূর্বসূরিদের এ পেশাকে ভালোবেসে আঁকড়ে ধরে আছেন।
তিনি আরও বলেন, রাজধানী ঢাকায় প্রবেশ করলেই যে বাহনটি সবচেয়ে বেশি চোখে পড়রে সেটি হলো তিন চাকার বাহন রিকশা। বছরের পর বছর ধরে রিকশাচিত্রে শুধু আমাদের চলচ্চিত্র জগতের তারকা, ফুল, পাখি ও প্রকৃতিই স্থান পায়নি, আমাদের রাজনৈতিক ও সাস্কৃতিক পটপরিবর্তনের সাক্ষীও এটি।আমাদের দেশে এ রিকশাচিত্র আশির দশকে বেশ দাপটে ছিল।
মুন্সিগঞ্জ থেকে আগত এক দর্শনার্থী আরমান জানান, সোনারগাঁয়ে মাসব্যাপী লোকজ উৎসবে অসে অনেক ভালো লাগছে। মেলায় অনেক হারিয়ে ঐতিহ্য তুলে ধরা হয়েছে। আমাদের নতুন প্রজন্মের কাছে খুবই অপরিচিত এই সকল ঐতিহ্য। মেলায় রিকশা চিত্রে এস এ মালেক গ্রামীণ অনেক হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য ছবি স্টিলের পাতের মধ্যে কত সুন্দর করে তুলে ধরছেন।
বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক একে এম আজাদ সরকার জানান, বাংলার প্রায় হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য, সংস্কৃতিকে নতুন প্রজন্মের কাছে পরিচয় ঘটিয়ে দেয়ার জন্যই মাসব্যাপী এ মেলার আয়োজন।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ এস এ ম ল ক
এছাড়াও পড়ুন:
নাচ-গান-আবৃত্তিতে চারুকলায় বর্ষাবরণ
আবার এসেছে আষাঢ় আকাশ ছেয়ে। তাই আজ রোববার আষাঢ়ের প্রথম দিনটিকে নাচ-গান-আবৃত্তিতে বরণ করে নেওয়া হলো।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের বকুলতলায় আজ সকালে ‘বর্ষা উৎসব ১৪৩২’ আয়োজন করা হয়। আয়োজক বর্ষা উৎসব উদ্যাপন পরিষদ।
সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে শিল্পী সোহানী মজুমদারের সেতারবাদনে ‘আহির ভৈরব’ রাগ পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়।
আয়োজনে বর্ষা নিয়ে সংগীত পরিবেশন করেন বিভিন্ন শিল্পী। ইয়াসমিন মুশতারি ‘রিম্ ঝিম্ ঘন ঘন রে বরষে’, সালাউদ্দিন আহমেদ ‘বরষা ঐ এলো বরষা’, বিজন চন্দ্র মিস্ত্রী ‘শাওন আসিল ফিরে সে ফিরে এল না’, নবনীতা জাইদ চৌধুরী ‘শ্যামা-তন্বী আমি মেঘ-বরণা’, অনিমা রায় ‘বাদল-দিনের প্রথম কদম ফুল করেছ দান’, শামা রহমান ‘মেঘের ’পরে মেঘ জমেছে, আঁধার করে আসে’, মকবুল হোসেন ‘আবার এসেছে আষাঢ় আকাশ ছেয়ে’, ফেরদৌসী কাকলি ‘গহন রাতে শ্রাবণধারা পড়িছে ঝরে’ পরিবেশন করেন।
বিমান চন্দ্র বিশ্বাস ‘আষাঢ় মাইস্যা ভাসা পানিরে’ লোকসংগীত গেয়ে শোনান। শ্রাবণী গুহ রায় বিখ্যাত ‘কে যাস রে ভাটির গাঙ বাইয়া’ গানটি করেন।
আবৃত্তি করেন নায়লা তারাননুম চৌধুরী কাকলি, আহসান উল্লাহ তমাল। আবৃত্তি, সংগীত ও নৃত্যের কোলাজ পরিবেশন করে শিল্পবৃত্ত।
বর্ষা উৎসব উদ্যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মানজার চৌধুরী সুইট ঘোষণা পাঠ করেন। ঘোষণায় বলা হয়, ষড়্ঋতুর দেশে বাংলার জীবনধারা পাল্টে যাচ্ছে দ্রুত। সেই সঙ্গে বদলে যাচ্ছে ঋতুর চরিত্র। গ্রীষ্ম হয়ে উঠছে খরতর, বর্ষা অনেক রুষ্ট এলোমেলো, শীত একাধারে নরম ও চরম, বসন্ত ক্ষীয়মাণ। প্রকৃতির ওপর মানুষের সীমাহীন অনাচার জন্ম দিয়েছে বিশ্বজনীন সংকটের। ভূপৃষ্ঠ হয়েছে তপ্ততর, সমুদ্রজল স্ফীত, ওজন–বলয় ক্ষতিগ্রস্ত। আধুনিক জীবনযাত্রা গড়ে তুলছে অপচয়ের পাহাড়। মাটি খুঁড়ে প্রকৃতির সম্পদ গোগ্রাসে গিলছে মানুষ। প্রয়োজনের সীমানা ছাপানো অপ্রয়োজনের ভারে পিষ্ট ও বিপন্ন আজকের পৃথিবী। সভ্যতার দন্ত ও প্রকৃতির ঔদায়ের মধ্যে বৈরিতা মানব অস্তিত্বের জন্য তৈরি করছে হুমকি। প্রকৃতি আজ মানবের কাছে দাবি করছে সংবেদনশীলতা ও সহমর্মিতা। জীবনযাপন ও প্রকৃতির মধ্যে সমঝোতা তৈরি ছাড়া মানবের মুক্তির ভিন্ন পথ নেই।
মানজার চৌধুরী বলেন, ‘অনন্তকালের বাণী নিয়ে আজকের বর্ষাবন্দনায় আমরা মুখর হই গীতি-কবিতা-নৃত্য ছন্দে, প্রকৃতির সঙ্গে মানবের মিলনের প্রত্যয় নিয়ে। বর্ষার মিলনপিয়াসী মানস আমাদের সচকিত করে মানবসমাজে সৃষ্ট ঘৃণা–বিদ্বেষ সংঘাত রোধে, প্যালেস্টাইনে, দেশে দেশে, স্বদেশে। বর্ষার জলধারায় সিক্ত হোক সবার জীবন, হোক আনন্দময় ও কল্যাণব্রতী।’
অনুষ্ঠানে ধরিত্রীকে সবুজ করার লক্ষ্যে প্রতীকীভাবে শিশু-কিশোরদের মাঝে বনজ, ফলদ ও ঔষধি গাছের চারা বিতরণ করা হয়।