কক্সবাজারে সাবেক ডিসি, জজসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে পরোয়ানা
Published: 25th, January 2025 GMT
কক্সবাজারের সাবেক জেলা প্রশাসক (ডিসি) রুহুল আমিন, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ সাদিকুল ইসলাম তালুকদারসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে ২০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মুন্সী আব্দুল মজিদ গত ২৩ জানুয়ারি এই আদেশ দেন।
অন্য আসামিরা হলেন- কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আইনজীবী মোস্তাক আহমদ চৌধুরী, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নাজির স্বপন কান্তি পাল এবং জেলা ও দায়রা জজ আদালতের স্টেনোগ্রাফার জাফর আহমদ।
ওই আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) সিরাজ উল্লাহ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দেওয়া প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আদালত এই পরোয়ানা জারি করেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের ১৯ নভেম্বর মহেশখালীর মাতারবাড়ীতে তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য ১,৪১৪ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। চিংড়ি ঘের, ঘরবাড়ি ও অন্যান্য অবকাঠামোর জন্য ক্ষতিপূরণ হিসেবে বরাদ্দ ছিল ২৩৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে চিংড়ি ঘের অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণ বাবদ বরাদ্দ ছিল ৪৬ কোটি টাকা। তদন্তে উঠে আসে, মনগড়া ২৫টি চিংড়ি ঘের দেখিয়ে ৪৬ কোটি টাকার মধ্যে ১৯ কোটি ৮২ লাখ ৮ হাজার ৩১৫ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করা হয়।
এ ব্যাপারে মাতারবাড়ীর বাসিন্দা কায়সারুল ইসলাম চৌধুরী তৎকালীন জেলা প্রশাসক রুহুল আমিনসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। তদন্ত চলাকালে আসামিদের স্বাক্ষর জাল করে প্রধান আসামি রুহুল আমিনের নাম বাদ দেওয়া হয়। জেলা ও দায়রা জজ সাদিকুল ইসলাম তালুকদার এই জালিয়াতিতে যুক্ত ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ ঘটনায় দ্বিতীয় মামলায় রুহুল আমিনসহ সাতজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। তদন্ত শেষে দুদক পাঁচজনের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিল করে। জালিয়াতির বিষয়টি সিআইডির হস্তলিপি বিশেষজ্ঞরা প্রমাণ পান।
জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, চিংড়ি ঘের অধিগ্রহণের জন্য প্রাথমিকভাবে ২৩ কোটি টাকার চেক বিতরণ করা হয়েছিল। পরবর্তীতে তিনটি চেক বাতিল করা হয়। অবশিষ্ট ১৯ কোটি ৮২ লাখ টাকা যারা উত্তোলন করেছেন, তাদের বিরুদ্ধেও মামলা হয়। ২০১৪ সালের ৭ ডিসেম্বর কক্সবাজার সদর মডেল থানায় আরো একটি মামলা হয়। দীর্ঘ তদন্ত শেষে দুদক ২০ কোটি টাকা আত্মসাতের প্রমাণ পায়।
এদিকে ২০১৭ সালের ২২ মে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে রুহুল আমিনকে কারাগারে পাঠানো হয়। পরে তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। বর্তমানে তিনি জামিনে রয়েছেন। অন্য আসামিদের মধ্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জাফর আলমকে ঢাকার সেগুনবাগিচা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ শাখার সাবেক উচ্চমান সহকারী আবুল কাশেম মজুমদার ও সাবেক সার্ভেয়ার ফখরুল ইসলামকেও গ্রেপ্তার করা হয়। মামলাটি বর্তমানে চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতে বিচারাধীন।
ঢাকা/তারেকুর/ইমন
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জন র ব র দ ধ ল ইসল ম তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যুর সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব।’’
তিনি মনে করেন, আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান এলে যেকোনো অসাংবিধানিক প্রক্রিয়া ঠেকানো যাবে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘‘আগামী নির্বাচনকে যদি অনিশ্চিত করা হয় বা বিলম্বিত করা হয়, তাহলে তার সুযোগ নেবে ফ্যাসিবাদী বা অসাংবিধানিক শক্তি। এর পরিণতি জাতি অতীতে বহুবার ভোগ করেছে। আমরা আবার সে পরিস্থিতি চাই না।’’
অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নিয়ে পৃথক এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের মতামতের ভিত্তিতেই সাংবিধানিকভাবে এই সরকার গঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রপতির রেফারেন্সে দেওয়া সেই মতামত এখনো বহাল আছে। এর বিপরীতে সুপ্রিম কোর্ট কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। তাই এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলা আসলে রাজনৈতিক বক্তব্য, এর কোনো আইনি ভিত্তি নেই।’’
সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘যেকোনো সাংবিধানিক আদেশ জারি হলে তা আগামীকাল বা পরশু চ্যালেঞ্জ হতে পারে। আমরা এমন খারাপ নজির জাতির সামনে আনতে চাই না। তাই সমাধানের বিকল্প প্রস্তাব উত্থাপন করেছি। সবাইকে বিবেচনায় নিতে আহ্বান জানাচ্ছি।’’
পিআর পদ্ধতি প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলের আন্দোলনের অধিকার আছে। তবে পিআর পদ্ধতি চাপিয়ে দেওয়ার বিষয় নয়, শেষ পর্যন্ত জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে।’’
তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘‘পিআর পদ্ধতিতে ঝুলন্ত পার্লামেন্টের ঝুঁকি থেকে যায়। তাতে রাষ্ট্র ও জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ সম্ভব হয় না। আমরা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে যেতে পারি না।’’
সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘জনগণই হলো সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ। এই দেশের জনগণ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে এবং বারবার গণতন্ত্রকে সংকট থেকে উদ্ধার করেছে।’’
আগামী সংসদে কিছু মৌলিক বিষয়ে সংশোধনের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন তিনি বলেন, ‘‘আমরা কিছু বিষয়ে ইতোমধ্যে একমত হয়েছি। তবে, ঐকমত্য কমিশনের সনদের ভেতরে যেসব পরিবর্তন হবে, সেগুলোতে অবশ্যই গণভোট নিতে হবে।’’
ঢাকা/আসাদ/রাজীব