গাজীপুরের মহানগর এলাকার ধীরাশ্রমে রেললাইন বাঁকা হয়ে গেলে সেখানে লাল পতাকা দেখে দ্রুতগামী ট্রেনটি থামান চালক। এতে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা চাঁপাইনবাবগঞ্জগামী বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেনটি দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পায়। আর এভাবে অল্পের জন্য বেঁচে যায় ট্রেনের সহস্রাধিক যাত্রী।

রবিবার (২৬ জানুয়ারি) বিকেলে বিষিয়টি নিশ্চিত করেছেন জয়দেবপুর রেলওয়ে জংশন স্টেশনের মাস্টার হানিফ আলী। এর আগে দুপুর আড়াইটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

হানিফ আলী বলেন, ধীরাশ্রম এলাকায় রেললাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ কারণে ঢাকা থেকে চাঁপাইগামী বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেনটি সেখানে আটকে আছে। লাইন মেরামত করার পর ট্রেনটি গন্তব্যের উদ্দেশে যাত্রা করবে। এ ঘটনার কারণে ঢাকা-জয়দেবপুর ডুয়েল গেজ ডাবল লাইনের আপলাইনটি বন্ধ রয়েছে। অপর লাইন দিয়ে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

আরো পড়ুন:

রাজবাড়ী‌তে ট্রেনে কাটাপ‌ড়ে যুবকের মৃত্যু

মাইলেজ না দিলে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির হুমকি রেল কর্মচারীদের

স্থানীয়রা জানায়, ট্রেনটি থামার মাত্র আধা ঘণ্টা আগে আরেকটি ট্রেন এই লাইন অতিক্রম করে গেছে। পরে রেলের কর্মীরা এখানে এসে দেখতে পান ঢাকা-গাজীপুর ডুয়েল গেজ আপলাইনের একটি রেললাইন প্রায় ২০ মিটার বাঁকা হয়ে স্লিপার লক ভেঙে সরে গেছে। এ সময় রেলের নিরাপত্তাকর্মীরা বিষয়টি দেখতে পান। তারা বেঁকে যাওয়া রেললাইনের পাশে লাল পতাকা টানিয়ে দেন। তারা উভয় পাশের স্টেশনকে বিষয়টি জানান। 

ঢাকা থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জগামী বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেনটি এই বার্তা পায়নি। দ্রুতগামী ট্রেন সহস্রাধিক যাত্রী নিয়ে মহানগরীর ধীরাশ্রম রেলস্টেশন অতিক্রম করে কিছু দূর এগিয়ে রেললাইনের ওপর লাল পতাকা দেখতে পায়। বিপদ চিহ্ন দেখে ট্রেনের লোকোমাস্টার সেখানে ট্রেনটি থামিয়ে দেন। ট্রেনটি বেঁকে যাওয়া রেললাইন থেকে মাত্র ৪০ মিটার দূরে এসে থেমে যায়।

ঢাকা-চাঁপাইগামী বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেনের পরিচালক মোখলেছুর রহমান জানান, ধীরাশ্রম এলাকায় এসে রেললাইনের ওপর লাল পতাকা দেখতে পান। তাৎক্ষণিকভাবে নির্দেশ দিলে ট্রেনটি এখানে থামানো হয়। পরে নেমে এসে নিরাপত্তাকর্মীদের কাছ থেকে ঘটনা জানা যায়।

তিনি আরো জানান, কীভাবে রেললাইনের স্লিপারের লকগুলো খুলে গেল এবং রেললাইন বাঁকা হয়ে গেল, তা বোঝা যাচ্ছে না। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। টেকনিক্যাল লোকজন এলে বিষয়টি জানা যাবে। 

ঢাকা/রফিক/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব ষয়ট

এছাড়াও পড়ুন:

অফিসে ঢুকে প্রধান শিক্ষককে জুতাপেটা করার অভিযোগ

টাঙ্গাইলের মধুপুরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অশালীন আচরণের অভিযোগে নারী অভিভাবকরা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল জব্বারকে জুতাপেটা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বুধবার দুপুরে মধুপুরের আকাশী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, গত বছরের এপ্রিলে আকাশী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন আব্দুল জব্বার। গতকাল দুপুরে হঠাৎ করেই কয়েকজন নারী অভিভাবক তাঁর কক্ষে গিয়ে প্রধান শিক্ষকের ওপর হামলা করেন। এ সময় সহকারী শিক্ষক সাজেদা বেগমসহ কয়েকজন তাদের হাত থেকে শিক্ষককে রক্ষার চেষ্টা করেন। এতে তাদের ওপরও ক্ষিপ্ত হন হামলাকারীরা। পরে স্থানীয় কয়েকজন যুবক গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় স্থানীয়রা বিদ্যালয় মাঠে সমবেত হয়ে প্রধান শিক্ষকের বিচার দাবি করেন।

হামলায় অংশ নেওয়া জাহিন ওরফে জাহি ও ঝুমা বেগম বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল জব্বার পড়ানোর সময় মেয়েদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেছেন। একই অভিযোগ করেন সুমি বেগম নামে আরেকজন।

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সাজেদা বেগম বলেন, ‘আমি বিষয়টি সকালেই জানতে পেরে স্যারকে জানিয়েছিলাম। স্যার তখন অফিস কক্ষেই ছিলেন। আমরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই হামলাকারীরা অফিসে প্রবেশ করে হামলা করেন। এক পর্যায়ে জুতা দিয়ে পেটাতে থাকেন। আমরা অনেক কষ্টে তাঁকে হামলাকারীদের কবল থেকে উদ্ধার করি।’

মারধরের শিকার প্রধান শিক্ষক আব্দুল জব্বার বলেন, ‘আমার মেয়েকে স্থানীয় এক যুবক উত্ত্যক্ত করত। তাকে বিভিন্ন সময়ে বোঝানো হয়েছে। কথা না শোনায় তাকে শাসন করা হয়েছিল। সেই ছেলে ষড়যন্ত্র করে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তদন্ত করলে সত্য ঘটনা বেরিয়ে আসবে।’ তিনি বলেন, ‘আমি শিক্ষার্থীদের সন্তানের মতো দেখি। সেভাবেই আদর-শাসন করি। তদন্ত করে সঠিক বিষয়টি বের করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’

মধুপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শফিকুল ইসলামের ভাষ্য, বিষয়টি জেনে সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম ও নাজমুল ইসলামকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তাদের তথ্যের ভিত্তিতে ওই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ