নারায়ণগঞ্জের বাজারগুলোতে বেড়েছে সবজির সরবরাহ, দামেও স্বস্তি
Published: 31st, January 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জের বাজারগুলোতে বেড়েছে সবজির সরবরাহ ফলে দাম গত কয়েক সপ্তাহ ধরে কমে যাচ্ছে। আর দাম কমায় স্বস্তি ফিরেছে ক্রেতাদের। বিক্রেতারা বলছে গত দুই মাস আগের তুলনায় বাজারে সবজির সরবরাহ বেড়েছে, সেই সঙ্গে বেড়েছে বিক্রিও।
শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) নারায়ণগঞ্জ শহরের প্রধান পাইকারি কাঁচাবাজার দিগুবাবুর বাজারসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে সবজির দামের এমন চিত্র দেখা গেছে।
বাজারে প্রতি কেজি মিষ্টি কুমড়া বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকায়, শালগম প্রতি কেজি ৩০ টাকা, মুলা ৩০ টাকা, সাধারণ শিম ৩০ টাকা, আর বিচিসহ শিম ৪০ টাকা, লম্বা আকৃতির ৪০ টাকা, গোল বেগুন ৫০ টাকা, শসা ৫০ টাকা, খিঁড়া ৪০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, করলা (হাইব্রিড) ৬০ টাকা প্রতি কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া ফুলকপি, বাঁধাকপি প্রতি পিস ২০ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, গাজর ৪০ টাকা, ৩০ থেকে ৪০ টাকা, ঝিঙা ৫০ টাকা প্রতি কেজি এবং লাউ প্রতি পিস ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
শহরের দিগুবাবুর বাজারে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বাজার করতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী অপূর্ব আহমেদ বলেন, বাজারের সবজির দাম তুলনামূলক কম যে কারণে এই সময়ে এসে ইচ্ছেমতো সবজি কেনা যাচ্ছে।
দুই একটি সবজি যেগুলোর এখন মৌসুম নয় সেগুলো ছাড়া সবধরনের সবজির দামই কম। দুই তিন মাস আগেও সবজির দাম খুবই চড়া ছিল তখন ক্রেতারা, আমি নিজেও হাফ কেজি, আড়াইশো গ্রাম করে সবজি কিনেছি।
সেই তুলনায় এখন সবজির দাম অনেক কম, এসে করে ক্রেতাদের স্বস্তি ফিরেছে। সবজি দামের মত যদি অন্যান্য সব পণ্যের দাম কম থাকতো তাহলে সাধারণ ক্রেতারা আরো স্বাচ্ছন্দ্যে কেনাকাটা করতে পারতেন।
বাজারের আরেক ক্রেতা রাজু আহমেদ বলেন, কিছুদিন আগেও অতিরিক্ত দামের কারণে আমরা সবজি কিনতে পারতাম না। সেই তুলনায় এখন সবজির দাম কম, মূলত শীতকালীন সবজির সরবরাহ বেশি থাকায় দামটা আমরা কম পাচ্ছি।
তবে শীত চলে গেলে মনে হয় আবারও সবজির দাম বেড়ে যাবে। বাজার সংশ্লিষ্ট যারা আছেন তাদের উচিত হবে সবসময়ের জন্য বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখার উদ্যোগ গ্রহণ করা। নইলে ফের সবজির দাম বেড়ে যাবে।
বর্তমানে সবজির যে বাজার দর আছে তাতে করে ক্রেতারা স্বাচ্ছন্দ্যে কিনতে পারছেন। নিম্নআয়ের মানুষ থেকে শুরু করে মধ্যবিত্ত শ্রেণি সবার জন্যই বর্তমানে সবজির বাজার নাগালের মধ্যে।
সবজির দাম বিষয়ে দিগুবাবুর বাজারের সবজি বিক্রেতা আঃ হাকিম বলেন, পুরো বছরের মধ্যে বর্তমানে সবজির দাম সবচেয়ে কম। সবধরনের সবজির সরবরাহ বেড়েছে বাজারে, শীতকালীন পুরো সময়জুড়েই সবজির এমন সরবরাহ থাকবে।
যে কারণে বাজারের সবচেয়ে কম দামে সবজি কিনতে পারছেন ক্রেতারা। এতে করে আমাদের বিক্রির পরিমাণও বেড়েছে। দাম বেশি থাকার সময় একজন ক্রেতা আধা কেজি, আড়াইশো গ্রাম করে ও সবজি কিনত।
বর্তমানে দাম কম থাকায় সেই ক্রেতাই অনেক বেশি পরিমাণে সবজি কিনছে। এতে করে আগে যদি এক আইটেম সবজি ৫ কেজি বিক্রি হতো, এখন সেই সবজি বিক্রি হয় ১০-১৫ কেজি।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ সবজ র সরবর হ সবজ র দ ম র সবজ র ৪০ ট ক দ ম কম ৩০ ট ক
এছাড়াও পড়ুন:
হাসপাতালে ডায়রিয়ার প্রকোপ শয্যা ও স্যালাইন সংকট
আক্কেলপুরে ডায়রিয়ার প্রকোপ ক্রমেই বাড়ছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর ভিড় বেড়েছে। শয্যাসংকটে রোগীদের মেঝে ও বারান্দায় থাকতে হচ্ছে। এদিকে হাসপাতালে খাওয়ার স্যালাইনের সংকট দেখা দিয়েছে। বাইরে থেকে বেশি দামে রোগীদের স্যালাইন কিনতে হচ্ছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালে শয্যা রয়েছে ৫০টি। গতকাল সোমবার পর্যন্ত এখানে ভর্তি ছিলেন ৭৫ জন রোগী। এর মধ্যে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগী ২৯ জন। শয্যা না পেয়ে তাদের অনেককেই বারান্দায়, মেঝেতে ঠাঁই নিতে হয়েছে। এ সময় কথা হয় রামশালা গ্রামের আসমা খাতুনের সঙ্গে। তিনি বলেন, রাতে ডায়রিয়া ও বমি শুরু হলে হাসপাতালে ভর্তি হই। রোগী বেশি থাকায় শয্যা পাইনি। বারান্দার মেঝেতে বিছানা পেতে চিকিৎসা নিচ্ছি। হাসপাতাল থেকে একটি স্যালাইন পেলেও ৪টি স্যালাইন বাইরে থেকে কিনতে হয়েছে। একই অভিযোগ করেন তেমারিয়া গ্রামের নুর বানু। তিনি ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ১০ মাস বয়সী মেয়েকে রোববার হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। এদিকে রোগীর চাপ বাড়লেও এ হাসপাতালে রয়েছে চিকিৎসক সংকট। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ ২৬টি পদের বিপরীতে মাত্র ৩ জন চিকিৎসক সেবা দিচ্ছেন। রয়েছে তীব্র স্যালাইন সংকট। রোগীদের বাইরে থেকে স্যালাইন কিনতে হচ্ছে।
হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কলেরা স্যালাইনের জন্য সর্বশেষ ফেব্রুয়ারি মাসে চাহিদা দেওয়া হয়েছিল চার হাজার পিস। এর মধ্যে এক হাজার মি.লি. স্যালাইন ২ হাজার পিস ও ৫০০ মি.লি. স্যালাইন ২ হাজার পিস। পাওয়া গেছে মাত্র ৬০০ পিস। ইতোমধ্যে ৩০০ পিস রোগীদের মধ্যে সরবরাহ করা হয়েছে।
আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. আসিফ আদনান জানান, হঠাৎ করে আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। অন্য সময়ের তুলনায় ৩ গুণ বেশি ডায়রিয়া রোগী হাসপাতালে আসছে। রোগীর চাপ বাড়লেও চিকিৎসক সংকট রয়েছে। স্যালাইনের সরবরাহও কম। রোগীদের বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে। নানা সীমাবদ্ধতায় সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম অবস্থা আমাদের। তিনি ডায়রিয়া হলে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন থেকে কিছু নিয়ম মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শফি মাহমুদ বলেন, চিকিৎসক সংকটের বিষয়ে কয়েকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। সরকারিভাবে নিয়োগ না হওয়ায় আমরাও প্রয়োজনীয় চিকিৎসক পাচ্ছি না। স্যালাইনের সরবরাহ বাড়াতে চাহিদাপত্র দেওয়া হয়েছে।