৫ আগস্টের ঐক্য ম্লান হতে দেওয়া যাবে না: আদিলুর রহমান
Published: 1st, February 2025 GMT
‘‘যে কোনো দুর্বলতার সুযোগে ফ্যাসিবাদ ফিরে আসতে পারে। আগ্রাসন কিংবা বিভিন্ন ধরনের আক্রমণ থেকে আমরা মুক্ত নই। অভ্যুত্থানে নিহত, আহত এবং সংগ্রামের মূল প্রেক্ষাপট সম্পর্কে লিখিতভাবে প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে। ৫ আগস্ট যে ঐক্য রচিত হয়েছিল, তা কোনো অবস্থায় ম্লান হতে দেওয়া যাবে না।’’
আজ শনিবার চট্টগ্রামের এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের জিমনেশিয়াম মাঠে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন আয়োজিত একুশে বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় গৃহায়ন, গণপূর্ত ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান এ সব কথা বলেন।
এবারের বইমেলার নেরেটিভটা আলাদা উল্লেখ করে আদিলুর রহমান খান বলেন, ‘‘জুলাইয়ের ৩৬ দিনে ছাত্র-জনতা রক্ত দিয়ে দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসান ঘটিয়ে বাংলাদেশ বদলে দিয়েছে। গণমানুষের অধিকার ও অন্যায় অবিচার এবং ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে যে সংগ্রাম, সে নেরেটিভের উপর দাঁড়িয়ে আজকের বইমেলা। গণমানুষের ও ছাত্রসমাজের ঐক্য বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।’’ এ বইমেলা জুলাইয়ের ৩৬ দিনে ছাত্রজনতা যে আত্মত্যাগ তা প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।
এ সময় সিটি মেয়র ডা.
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) উদ্যোগে আয়োজিত এ মেলা আজ ১ ফেব্রুয়ারি বইমেলা শুরু হয়েছে, যা আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে। প্রতিদিন বিকাল ৩টা থেকে রাত ৯টা এবং ছুটির দিনগুলোতে সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে মেলা প্রাঙ্গণ। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের পক্ষ থেকে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বইমেলাকে ঘিরে রবীন্দ্র উৎসব, নজরুল উৎসব, লেখক সমাবেশ, যুব উৎসব, শিশু উৎসব, মুক্তিযুদ্ধ উৎসব, ছড়া উৎসব, কবিতা উৎসব, মাতৃভাষা দিবস ২১ ফেব্রুয়ারির আলোচনা, লোক উৎসব, তারুণ্য ও ছাত্র সমন্বয় উৎসব, নারী উৎসব, বসন্ত উৎসব, মরমী উৎসব, আবৃত্তি উৎসব, নৃগোষ্ঠী উৎসব, পেশাজীবী সমাবেশ, কুইজ প্রতিযোগিতা, চাটগাঁ উৎসবসহ নানা আয়োজন রাখা হয়েছে।
ঢাকা/রেজাউল/বকুল
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ভালো ফলনের আশায় গাছকে খাওয়ান তাঁরা
চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পাহাড়ি প্রদেশ গুইঝৌতে প্রাচীনকাল থেকে ‘গেলাও’ জনগোষ্ঠীর বসবাস। ভিয়েতনামেও এই জনগোষ্ঠীর মানুষ বাস করেন। চীনে তাঁদের সংখ্যা প্রায় ৬ লাখ ৭৭ হাজার।
কৃষিনির্ভর গেলাও জনগোষ্ঠীর সদস্যরা আজও প্রাচীনকালের পুরোনো এক ঐতিহ্য আগলে রেখেছেন। বছরের নির্দিষ্ট দিনে তাঁরা গাছকে খাওয়ান, যা চীনা ভাষায় ‘ওয়েই শু’ রীতি নামে পরিচিত।
এই প্রাচীন রীতি মূলত একধরনের প্রার্থনা। স্থানীয় অধিবাসীদের বিশ্বাস, এতে প্রকৃতি তুষ্ট হয়, ফসল ভালো হয়, পরিবারে শান্তি ও সমৃদ্ধি আসে। প্রতিবছর দুটি উৎসবের সময় এই অনুষ্ঠান পালন করা হয়—চীনা নববর্ষে, যা বসন্ত উৎসব নামে পরিচিত। আর গেলাও নববর্ষে, যা চান্দ্র পঞ্জিকার তৃতীয় মাসের তৃতীয় দিনে পালিত হয়।
অনুষ্ঠানের দিন সকালে আত্মীয়স্বজন ও গ্রামবাসী পাহাড়ের ঢালে জড়ো হন। তাঁরা সঙ্গে করে চাল থেকে তৈরি মদ, শূকরের মাংস, মাছ ও লাল আঠালো চাল নিয়ে আসেন। পাহাড়ে পৌঁছে প্রথমে আতশবাজি পোড়ানো হয়। এতে করে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
এর মধ্যেই একটি পুরোনো ও শক্তিশালী গাছ বাছাই করা হয়। এরপর সবাই ধূপ জ্বালিয়ে নতজানু হয়ে প্রার্থনা করেন। সবশেষে মূল পর্ব ‘গাছকে খাওয়ানো’ শুরু হয়।
একজন কুঠার বা ছুরি দিয়ে গাছে তিনটি জায়গায় ছোট করে কেটে দেন। সেই ক্ষতস্থানে চাল, মাংস ও মদ ঢেলে দেওয়া হয়, যাতে গাছ তাঁদের দেওয়া ভোগ গ্রহণ করতে পারে। পরে ওই জায়গা লাল কাগজে মুড়ে দেওয়া হয়।
এ ছাড়া গাছের গোড়া ঘিরে আগাছা পরিষ্কার করা হয়, মাটি আলগা করে দেওয়া হয়। এতে নতুন জীবনের বার্তা মেলে বলে মনে করেন গেলাও জনগোষ্ঠীর সদস্যরা।
যে গাছকে খাওয়ানো হয়, সেটি যদি ফলদ হয়, তাহলে ভোগ দানকারীরা একটি আশাব্যঞ্জক শ্লোক উচ্চারণ করেন। বলেন, ‘তোমায় চাল খাওয়াই, ফল দিয়ো গুচ্ছ গুচ্ছ; তোমায় মাংস খাওয়াই, ফল দিয়ো দলা দলা।’