বিনিয়োগকারীদের দাবি নিয়ে উপদেষ্টরা খেলছেন: ফুয়াদ
Published: 3rd, February 2025 GMT
আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেছেন, “পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের পক্ষ থেকে বারবার যৌক্তিক যে দাবিগুলো করা হচ্ছে, আমরা দেখতে পারছি অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টাসহ অন্যান্য উপদেষ্টরা এগুলোকে ছেলেখেলার মোয়ার মতো করে নাচনিবুড়ির মতো করে খেলছেন। অর্থ উপদেষ্টাকে বলছি, নাচানাচি বন্ধ করেন। আপনাদেরকে আমরা যেভাবে দয়া করে চেয়ারে বসিয়েছি, আবার দয়াকরে চেয়ার থেকে নামিয়ে দিতে পারি।”
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর মতিঝিলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পুরোনো ভবনের সামনে বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট ইনভেস্টর অ্যাসোসিয়েশনের (বিসিএমআইএ) উদ্যোগে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশ তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় অতিথিদের মধ্যে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের অর্থ সম্পাক দিদারুল আলম ভূঁইয়া উপস্থিত ছিলেন।
আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, “যখন পুঁজিবাজারের লাখ লাখ বিনিয়োগকারী ভাই-বোন খেতে না পেরে ভুগছে, দিনের পর দিন প্রতিবাদ করছে। মাসের পর মাস বিনিয়োগ ফিরে পাওয়ার জন্য, পলিসির জন্য আন্দোলন করছে, ঠিক সেই সময় আমরা দেখলাম অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একদল বাটপার, লুটেরাদেরকে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে এনে স্টক এক্সচেঞ্জে বসিয়ে প্রমাণ করেছে বাংলাদেশে যাদের আমরা জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে রক্ত দিয়ে দয়া করে উপদেষ্টা বানিয়েছিলাম, তারা ৩৩ লাখ পরিবারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে।”
তিনি বলেন, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বলতে চাই-যেই রাশেদ মাকসুদের জায়গা হওয়ার কথা ছিলো জেলখানায়, ৩৩ লাখ মানুষের অভিভাবকত্ব এই ডাকাতের হাতে আপনার কিভাবে তুলে দিলেন? এটা গণমানুষের সিদ্ধান্ত হতে পারে না।”
তিনি বলেন, “বিল্ডিংয়ের ভিতরে যেসব কমিশনাররা অবৈধভাবে লুটপাটের চেয়ারে বস মার্কেটে ডাকাতি করার চক্রান্ত করে যাচ্ছেন দিনের পর দিন এবং মাসের পর মাস, আপনারা অবিলম্বে পদত্যাগ করবেন। ভদ্রভাবে পদত্যাগ করবেন। ভদ্রবাবে দুদকের মামলায় আত্মসমর্পণ করবেন। লুটপাটকারীদেরকে পুনবার্সন করার রাজনীতি বাংলাদেশে আর হতে দেওয়া যাবে না।”
তিনি বলেন, “শুধু রাশেদ মাকসুদ না, এর আগের যে চেয়ারম্যান পুঁজিবাজারকে লুটপাট করে শেষ করে দিয়ে গেছে, যার লুটপাটের প্রপাটি, সিঙ্গাপুরে টাকা পাচারের ঘটনা পৃথিবীর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে, তাকে এখনো পর্যন্ত গ্রেপ্তার করেননি। তিনি নাকি আপনাদের কোন কোন উপদেষ্টার শাশুড়ি লাগেন, বউ লাগেন, দেবরের জামাই লাগেন। গণঅভ্যুত্থানের রক্তে কোনো দেবর-ভাবির সম্পর্ক চলবে না। গণঅভ্যুত্থানের রক্তের একটাই সম্পর্ক সেটা হচ্ছে ন্যায্যতার সম্পর্ক। সেটা হচ্ছে ইনসাফের সম্পর্ক। সেটা হচ্ছে বৈষ্যমহীন পুঁজিবাজার গঠনের সম্পর্কে।”
গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থানের পর আমাদের সবার সমর্থন নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে। আমাদের প্রত্যাশা ছিল সেই সরকার জনগণের সরকার হবে। আমাদের দুঃখ্য, কষ্ট, দুর্দশা বুঝবে। গত ৫ মাসের যে অভিজ্ঞতা-সরকার জনগণের পালস বুঝতে পারছে না এবং জনগণের দুঃখ্য, দুর্দশা অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে পারছে না। তার একটা উদাহরণ শেয়ারবাজারের ভুক্তভোগী বিনিয়োগকারীরা এখানে দাঁড়িয়েছেন। তাই বলতে চাই, বিগত সময়ে যারা পুঁজিবাজারে লুটপাটের সঙ্গে জড়িত ছিল তাদের অবিলম্বে শাস্তির আওতায় আনা হোক।
প্রতিবাদ সমাবেশে সংগঠনটির সমন্বয়ক নুরুল ইসলাম মানিকের সভাপতিত্বে মুখপাত্র ফরিদ আহমেদ, এস এম ইকবাল হোসেনসহ অন্যান্য বিনিয়োগকারীরা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/এনটি/এসবি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপদ ষ ট সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
জাতীয় ঐক্যমত কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে গণঅধিকার পরিষদ
সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলোর আলোকে জাতীয় ঐক্য গঠনের জন্য জাতীয় ঐক্যমত কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে বসেছে গণঅধিকার পরিষদ। আজ সোমবার জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূরের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল এ বৈঠকে অংশ নেয়। শুরুতে বক্তব্য দেন জাতীয় ঐক্যমত কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রিয়াজ।
তিনি বলেন, ‘২০১৮ সালের কোটাবিরোধী আন্দোলন ছিল ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের সূচনা। সেই সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় আজ আমরা একটি অভূতপূর্ব রাজনৈতিক পরিবর্তনের মুখোমুখি। এই পরিবর্তনকে অর্থবহ করতে কেবল সংস্কার কমিশনের সুপারিশ যথেষ্ট নয়, বরং সব রাজনৈতিক দলের সম্মিলিত অংশগ্রহণের মাধ্যমে একটি নতুন বাংলাদেশ গঠন করতে হবে।’
কমিশনের সহসভাপতি বলেন, এই আলোচনা কেবল কথার মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে রাজপথে ও রাজনৈতিক চর্চার মাধ্যমে জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে একটি জাতীয় সনদ গঠনের লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে হবে।
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর তার বক্তব্যে বলেন, গত ১৬ বছর ধরে দেশের মানুষ ফ্যাসিবাদী শাসনের চাপে নিপীড়নের শিকার হয়েছে। ভবিষ্যতে কেউ যেন এমন দমন-পীড়ন চালাতে না পারে, সে লক্ষ্যে জাতীয় ঐক্যমত কমিশনের মাধ্যমে একটি কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি।
তিনি বলেন, ২০১৮ সালের কোটাবিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে যে লড়াই শুরু হয়েছিল, সেটি আট মাসেরও বেশি সময় ধরে চলেছে। হামলা-মামলা ও গ্রেপ্তার সত্বেও আমরা আন্দোলন চালিয়ে গিয়েছি। ব্যক্তি দল গোষ্ঠীর চেয়ে জাতীয় স্বার্থ ও রাষ্ট্রের স্বার্থকে আমরা যেন প্রাধান্য দেই এটিই আমাদের চাওয়া।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন গণঅধিকার পরিষদের মুখপাত্র ও জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ফারুক হাসান, সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান, কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার ও ইফতেখারুজ্জামান।