আগামী ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের বাজেটের খসড়া অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে উপস্থাপন করবেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। 

আগামী বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে অর্থ উপদেষ্টার নেতৃত্বে খসড়া উপস্থাপনকালে অর্থ বিভাগের সচিব ড. খায়েরুজ্জামান মজুমদার ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডেও (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে। প্রধান উপদেষ্টা সামনে আগামী অর্থবছরের বাজেটের একটি সম্ভাব্য সার সংক্ষেপ উপস্থাপন করবেন অর্থ সচিব। এ সময় পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড.

ওয়াহেদ উদ্দিন মাহমুদও উপস্থিত থাকতে পারেন। 

অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত সম্পদ ও বাজেট ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সভায় আগামী অর্থবছরে জন্য ৮ লাখ ৪৮ হাজার কোটি টাকার একটি বাজেটের খসড়া তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) আকার ধরা হয় ২ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু এখন নির্দেশনা দেওয়া  হয়েছে বাজেট আকার আরো খানিকটা কমানোর জন্য। এ জন্য এডিপি আকারও কমানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এরই আলোকে অর্থ বিভাগের পক্ষ থেকে বাজেটের একটি খসড়া তৈরি করা হয়েছে।  

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অর্থ বিভাগের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে বাজেটের আকার ৮ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার মধ্যে রাখার চেষ্টা করা হবে। এ জন্য এডিপি আকারও কমানোর প্রয়োজন পড়বে। এর ফলে এডিপির আকার ১৫ থেকে ২০ হাজার কোটি টাকা কমানো হতে পারে।

 তিনি বলেন, “এবারকার উন্নয়ন বাজেট অভ্যন্তরীণ অর্থায়ন বেশি করা হবে। এক্ষেত্রে রেশিও (অনুপাত) হবে ৬৩: ৩৭। অভ্যন্তরীণ অর্থায়ন হবে ৬৩ শতাংশ এবং বিদেশি অর্থায়ন ধরা হবে ৩৭ শতাংশ। অন্যান্যবার দেশীয় অর্থায়নের হার হয় ৬০ শতাংশ এবং বিদেশি অর্থায়ন ধরা হয় ৪০ শতাংশ।

সূত্র জানায়, আগামী অর্থবছরে বাজেটে দেশের অভ্যন্তরীণ খাত থেতে রাজস্ব আয় বৃদ্ধি জন্য একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এবারই প্রথম করজাল সম্প্রসারণের জন্য জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সম্ভব্য আয়কর দাতাদের চিহ্নিত করা হবে। বাজেটে আয়কর খাত থেকে বেশি রাজস্ব আদায়ের চেষ্টা করা হবে।

সূত্র জানায়,  আগামী ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে জন্য এনবিআরকে রাজস্ব আদায়ের প্রাথমিক লক্ষ্যমাত্রা দেওয়ার চিন্তা ছিল পাঁচ লাখ ২১ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু এখন তা কমিয়ে আনার প্রস্তাব করা হবে। অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজস্ব আদায়ের এই টার্গেট কোনোভাবেই পূরণ হওয়া সম্ভব নয়। কারণ আগামী অর্থবছরের শেষ ভাগে একটি সাধারণ নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। এই পরিস্থিতি বিদ্যমান ব্যবসা-বাণিজ্য পরিস্থিতি উল্লেখযোগ্য তেমন কোনো পরিবর্তন হওয়া সম্ভব নয়। আর  আগামী অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের বাড়ানোর জন্য যে ব্যাপক করজাল সম্প্রসারণ করা দরকার বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারের পক্ষে তাও করা সম্ভব হবে না। এসব কারণে আগামী অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ে টার্গেট পাঁচ লাখ কোটি টাকার নীচে রাখাই সমীচীন হবে।

চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের বাজেটের আকার  সাত লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা এর মধ্যে মোট রাজস্ব প্রাপ্তির লক্ষ্য ধরা রয়েছে পাঁচ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) জন্য আদায় লক্ষ্যমাত্র রয়েছে চার লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। বছরের মাঝ পথে এসে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যে কমানো হয়েছে ১৬ হাজার কোটি টাকা। নতুন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করায় সরকারের রাজস্ব আয়ের পরিকল্পনা করা হয়েছে ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। সর্বশেষ পরিসংখ্যান মতে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ১ লাখ ৫৬ হাজার ৪১৯ কোটি টাকা, যা লক্ষ্যমাত্রা ২ লাখ ১৪ হাজার ১৪৩ কোটি টাকার চেয়ে প্রায় ২৭ শতাংশ কম। পাশাপাশি গত অর্থবছরের আলোচ্য সময়ের চেয়েও প্রায় এক হাজার কোটি টাকার কম। ছয় মাসে রাজস্ব ঘাটতি হয়েছে ৫৭ হাজার ৭২৪ কোটি টাকা।

এদিকে, আগামী অর্থবছরে জন্য বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি(এডিপি) আকার নির্ধারণ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে দুই লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। বর্তমান অর্থবছরে যা রয়েছে দুই লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। পরবর্তী সংশোধন করে তা কমিয়ে দুই লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রধান উপদেষ্টার সম্মতি পাওয়া গেলেই খসড়া অনুযায়ী বাজেট প্রণয়নের চূড়ান্ত কাজ শুরু করা হবে। আর খসড়া বিষয়ে তার কোনো নির্দেশনা থাকলে সেভাবেই চূড়ান্ত করা হবে।

ঢাকা/হাসনাত/ইভা 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র খসড়

এছাড়াও পড়ুন:

এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বিশেষ সুবিধা নিয়ে নির্দেশনা মাউশির, কে কত টাকা পাবেন

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বিশেষ সুবিধা নিয়ে নতুন নির্দেশনা দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। এতে কোন গ্রেডের শিক্ষকেরা বিশেষ সুবিধা পাবেন বা বিশেষ সুবিধা বাবদ কত শতাংশ হারে টাকা পাবেন, তা জানানো হয়েছে।

আরও পড়ুনসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের ৩৪০০০ শূন্য পদ পূরণে উদ্যোগ২৯ জুলাই ২০২৫

গতকাল বুধবার মাউশির অফিস আদেশে বলা হয়েছে, এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বেসরকারি মাদ্রাসা ও বেসরকারি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত জাতীয় বেতন স্কেলের তুলনীয় গ্রেড-৯ থেকে তদূর্ধ্ব (ওপরের) গ্রেডে অন্তর্ভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা ১ জুলাই ২০২৫ থেকে প্রতিবছর ১ জুলাই প্রাপ্য মূল বেতনের ১০ শতাংশ হারে ‘বিশেষ সুবিধা’ প্রাপ্য হবেন। এ ছাড়া গ্রেড-১০ থেকে তদনিম্ন (নিচের) গ্রেডে অন্তর্ভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা ১ জুলাই ২০২৫ থেকে প্রতিবছর ১ জুলাই প্রাপ্য মূল বেতনের ১৫ শতাংশ হারে, তবে ১ হাজার ৫০০ টাকার কম নয়, ‘বিশেষ সুবিধা’ প্রাপ্য হবেন। এই গ্রেডের শিক্ষকেরা ‘বিশেষ সুবিধা’র ক্ষেত্রে কেউই ১ হাজার ৫০০ টাকার কম পাবেন না।

আরও পড়ুনআমেরিকার ফুলব্রাইট বৃত্তি: আবেদনের সময় বৃদ্ধি, প্রয়োজন টোয়েফলে ৮০ কিংবা আইইএলটিএসে ৭৫ ঘণ্টা আগে

দেশে এখন ২২ হাজার ১৭৪টি এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক-কর্মচারীর সংখ্যা ৩ লাখ ৫৯ হাজার ৬০৮ জনের মতো।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে দ্বাদশের ইটিসি-বিটিসি-বিষয়-গ্রুপ-ছবি পরিবর্তন, শুরু ১ আগস্ট থেকে
  • ব্র্যাকে জেলা পর্যায়ে ম্যানেজার নিয়োগ, স্নাতকে আবেদন
  • আজ টিভিতে যা দেখবেন (১ আগস্ট ২০২৫)
  • নীতি সুদহার অপরিবর্তিত, বেসরকারি খাতের জন্য সুখবর নেই
  • সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি বাণিজ্য-বিনিয়োগের প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করবে: ঢাকা চেম্বার
  • জুলাইয়ের ৩০ দিনে রেমিট্যান্স ২৩৬ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে
  • নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা, নীতি সুদহার অপরিবর্তিত
  • এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বিশেষ সুবিধা নিয়ে নির্দেশনা মাউশির, কে কত টাকা পাবেন
  • সবজির দামে স্বস্তি, মজুরি বৃদ্ধির হার এখনো কম
  • ক্যাপিটেক গ্রামীণ ব্যাংক গ্রোথ ফান্ডের লভ্যাংশ ঘোষণা