ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান, ইজিবাইকের লাইসেন্স, চলাচল-সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন ও আধুনিকায়নের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুর ১২টার দিকে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে রিকশা, ব্যাটারি রিকশা-ভ্যান ও ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদ নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখা এ মানববন্ধনের আয়োজন করে।

মানববন্ধন শেষে একটি প্রতিনিধি দল বিআরটিএ চেয়ারম্যান বরাবর জেলার সহকারী পরিচালকের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। মানববন্ধনে বক্তব্য দেন সংগ্রাম পরিষদের জেলা শাখার উপদেষ্টা সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি আবু নাঈম খান বিপ্লব, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি সেলিম মাহমুদ, জেলার সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম শরীফ, রি-রোলিং স্টিল মিলস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি জামাল হোসেন, সংগ্রাম পরিষদ নেতা হাসনাত কবীর, কামাল হোসেন, তাজুল ইসলাম, শফিক, মাসুদ প্রমুখ।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, রিকশা চালানো অমানুষিক পরিশ্রমের কাজ। প্রচণ্ড দাবদাহ, প্রবল বৃষ্টি কিংবা তীব্র শীতেও নিজের জীবিকা ও যাত্রীর সুবিধার কথা ভেবে দিনে এবং রাতে রিকশাচালকরা রাস্তায় রিকশা চালিয়ে থাকেন। চালকদের পরিশ্রম লাঘব করা, যাত্রীদের স্বাচ্ছন্দ্য ও খরচ কমানোর কথা বিবেচনা করে সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে রিকশায় ব্যাটারি স্থাপন করা শুরু হয়। প্রথমদিকে নির্মাণজনিত কিছুটা দুর্বলতা থাকলেও ইতোমধ্যে তার অনেকাংশই দূর করে আধুনিকায়ন করা সম্ভব হয়েছে। ফলে দ্রুত এই বাহন যেমন জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে, তেমনি ছড়িয়ে পড়েছে সারাদেশে।

এইসব বাহন ব্যবহার সহজ, সস্তা এবং শহরের ছোট রাস্তায় চলতে পারে বলে স্বল্প আয়ের মানুষের দৈনন্দিন কাজে অপরিহার্য এক বাহন হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু প্রায়ই দেখা যায়, ব্যাটারিচালিত যানবাহনের মালিক ও চালকরা অমানবিক নির্যাতনের শিকার হন। ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচলে বাধা সৃষ্টি করা হয়, অস্বাভাবিক জরিমানা করা হয়, অনেক সময় ভেঙে ফেলা হয়। দরিদ্র রিকশাচালক, অল্প পুঁজির রিকশা মালিকদের কথা ভাবা হয় না।

তারা আরও বলেন, সারাদেশে প্রায় ৫০ লাখ চালক ও তাদের পরিবার এইসব ব্যাটারিচালিত থ্রি হুইলার ও সমজাতীয় যানবাহনের ওপর প্রত্যক্ষভাবে নির্ভরশীল। এইসব যানবাহন তৈরি, মেরামত, খুচরা যন্ত্রাংশ নির্মাণ, বিক্রি, চার্জিংসহ নানা ধরনের কাজে অসংখ্য মানুষের জীবন ও জীবিকা নির্ভরশীল। নারায়ণগঞ্জসহ দেশের সব জেলা ও বিভাগে নগর পরিবহন নেই, ফলে কোটি কোটি মানুষ ব্যাটারিচালিত যানবাহন ব্যবহার করে থাকে। এই খাত যেমন বিপুল কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে, তেমনি দেশের অর্থনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এইসব বাহন বিদ্যুতে চলে বলে পরিবেশ দূষণ কম হয়।

বিদ্যুৎ ব্যবহারের কারণে এদের বিরুদ্ধে বিদ্যুৎ চুরি এবং অতিরিক্ত বিদ্যুৎ ব্যবহারের অভিযোগ করা হয়। অথচ এইসব বাহন বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী, চালকরা বিদ্যুৎ চুরি করে না বরং বর্ধিত দামে (প্রায় ২৫ টাকা ইউনিট) বিদ্যুৎ কিনে থাকে। তাই কর্মসংস্থান, জীবিকা, যাতায়াত এবং দেশের অর্থনীতির বিকাশের কথা বিবেচনা করে তারা ৫০ লাখ ব্যাটারিচালিত বাহনকে নিবন্ধন ও চালকদের লাইসেন্স দেওয়ার দাবি জানান। এর মাধ্যমে সরকারের কয়েক হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয় হবে বলে তারা জানান।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ন র য়ণগঞ জ জ ল ব যবহ র

এছাড়াও পড়ুন:

চাষাঢ়ায় আওয়ামী লীগ অফিসে বোমা হামলার রায় ১ আগষ্ট 

নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়ায় আওয়ামী লীগ অফিসে বর্বরোচিত বোমা হামলার রায় আগামী ১ আগষ্ট। দীর্ঘ ২৪ বছর পরে অবশেষে আলোচিত এই মামলাটির বিচার কাজ শেষ হতে যাচ্ছে।

২০০১ সালের ১৬ জুন চাষাঢ়া আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ভয়াবহ বোমা হামলার ঘটনায় ২০ জন নেতাকর্মী নিহত হয়। সেদিন নিহত হয়েছিল শহর ছাত্রলীগের সভাপতি সাইদুল হাসান বাপ্পী, সরকারী তোলারাম কলেজ ছাত্র-ছাত্রী সংসদের সাবেক জিএস আকতার হোসেন ও তার ভাই সঙ্গীত শিল্পী মোশাররফ হোসেন মশু, সঙ্গীত শিল্পী নজরুল ইসলাম বাচ্চু, ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের তৎকালীন যুগ্ম সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন ভাসানী, নারায়ণগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এ বি এম নজরুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা সাইদুর রহমান সবুজ মোল্লা, মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী পলি বেগম, ছাত্রলীগ কর্মী স্বপন দাসসহ ২০ জন।

নৃশংস এ বোমা হামলার ঘটনায় দু’টি মামলা দায়ের করা হয়। এক যুগ পরে ২০১৩ সালে ৬জনকে অভিযুক্ত ও ৩১জনকে অব্যাহতি প্রদান করে চার্জশীটটি দাখিল করে তদন্তকারী সংস্থা সিআইডি।

অভিযুক্ত ৬জন হলেন সেচ্ছাসেবক দলের সাবেক নেতা শাহাদাতউল্লাহ জুয়েল, হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি আব্দুল হান্নান (ইতোমধ্যে অপর এক মামলায় মৃত্যুদন্ড কার্যকর), জঙ্গী নেতা ওবায়দুল্লাহ রহমান, ভারতের দিল্লী কারাগারে আটক সহোদর আনিসুল মোরসালিন, মুহিবুল মুত্তাকিন ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন এর ১২নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর শওকত হাশেম শকু।

দু’টি মামলায় ১৩৮ জনকে সাক্ষী করা হলেও গত ১২ বছরে সাক্ষ্যগ্রহণের কাজও চলেছে অনেক ঢিমেতালে। গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় থাকলেও চাঞ্চল্যকর এই মামলার বিচার করা নিয়ে সদিচ্ছার অভাব ছিল। সাক্ষ্যগ্রহণ অত্যন্ত ধীরগতিতে হওয়ায় নিহত ও আহতদের স্বজনরাও ছিলেন চরম হতাশ।

মামলাটির বিচার কার্যক্রম প্রসঙ্গে আদালতের ভারপ্রাপ্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক নয়ন জানান, বিগত সরকারের আমলে মামলাটির বিচার কাজে দীর্ঘসূত্রিতা ছিল।

আলোচিত এই মামলায় ১৯ জন সাক্ষ্য প্রদান করেছেন। আমরা রাষ্ট্রপক্ষ মামলাটি দ্রুত নিস্পত্তির চেষ্টা করেছি। আশা করছি আগামী ১ আগস্ট মামলাটির রায় ঘোষণা করবেন আদালত। 
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জাতীয় যুবশক্তির নারায়ণগঞ্জ জেলা সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত
  • ফতুল্লায় জুস ফ্যাক্টরিতে যৌথবাহিনীর অভিযান, লাখ টাকা জরিমানা
  • জাতীয় যুবশক্তি'র নারায়ণগঞ্জ জেলা সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত
  • চাষাঢ়ায় আওয়ামী লীগ অফিসে বোমা হামলার রায় ১ আগষ্ট 
  • মামলা থেকে বৈষম্যবিরোধী নেতাকে বাদ দেওয়ার অভিযোগ, ওসির অপসারণ চেয়ে ঝাড়ুমিছিল
  • বোচাগঞ্জ থানার ওসির অপসারণ দাবিতে মানববন্ধন 
  • গৃহশ্রমিকদের সাপ্তাহিক ও মাতৃত্বকালীন ছুটি শ্রম আইনে রাখতে হবে
  • মাগুরছড়া ট্র্যাজেডির ২৮তম বার্ষিকী পালিত
  • রূপগঞ্জে মামুন হত্যা : মাহবুবের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের অভিযোগে মানববন্ধন
  • সাইক্লিস্ট হত্যার বিচার দাবিতে রাজধানীতে মানববন্ধন