সৌদি আরবের বিমানভাড়া এত বাড়ল কেন, প্রশ্ন রাশেদ খাঁনের
Published: 6th, February 2025 GMT
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে প্রবাসীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন বলে মন্তব্য করেছেন গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন। তবে সরকার তাঁদের যথার্থ মূল্যায়ন করতে পারেনি উল্লেখ করে তিনি প্রশ্ন করেছেন, ‘সৌদি আরবের বিমানভাড়া এত বাড়ল কেন?’
উড়োজাহাজের টিকিটের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বাংলাদেশ প্রবাসী অধিকার পরিষদ আয়োজিত এক মানববন্ধনে এসব কথা বলেন রাশেদ খাঁন। বৃহস্পতিবার বেলা ৩টায় রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে রাশেদ খাঁন বলেন, প্রবাসীরা গণ-অভ্যুত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। তাঁরা রেমিট্যান্স পাঠানো বন্ধ করায় হাসিনার গদি কেঁপে ওঠে। মধ্যপ্রাচ্যে ৫৭ জন প্রবাসী গ্রেপ্তারও হন; কিন্তু সরকার তাঁদের ঠিকভাবে মূল্যায়ন করেনি। সৌদি আরবের বিমানভাড়া এত বাড়ল কেন?
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে গণ অধিকার পরিষদের এই নেতা বলেন, ‘সিন্ডিকেট ধরতে না পারলে দায়িত্ব ছেড়ে দেন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গণহত্যার বিচার করতে পারছে না। আওয়ামী লীগ ও শেখ পরিবারকে ধরতে পারছে না। তারা এখনো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। দ্রব্যমূল্য হুহু করে বাড়ছে।
গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এখনো সচিবালয়, পুলিশ, প্রশাসন, র্যাব ও বিজিবিতে আওয়ামী লীগ রয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার এখনো আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম ও নিবন্ধন স্থগিত করেনি। তারা জনগণের আবেগ নিয়ে খেলছে। এভাবে চলতে থাকলে তারা ব্যর্থ হবে। আর সরকার ব্যর্থ হলে আওয়ামী লীগ আবার ফিরে আসবে।
মানববন্ধনে গণ অধিকার পরিষদের মুখপাত্র ও উচ্চতর পরিষদের সদস্য ফারুক হাসান দাবি করেন, উড়োজাহাজের টিকিটের দাম কমানোর জন্য ভ্রমণ কর, আবগারি শুল্ক, ল্যান্ডিং ও পার্কিং চার্জসহ সব অপ্রয়োজনীয় চার্জ প্রত্যাহার করতে হবে।
মানববন্ধনে আরও যেসব দাবি জানানো হয়, তার মধ্যে রয়েছে সাত দিনের মধ্যে উড়োজাহাজের টিকিটের মূল্য যৌক্তিক পর্যায়ে আনতে হবে ও দাম কমাতে হবে; বাংলাদেশ বিমানের পাশাপাশি অন্যান্য দেশীয় ও আন্তর্জাতিক এয়ারলাইনসের ফ্লাইটের সংখ্যা বাড়াতে হবে; টিকিটের দাম স্থিতিশীল রাখতে একটি রেগুলেটরি বোর্ড গঠন করতে হবে।
বাংলাদেশ প্রবাসী অধিকার পরিষদের পক্ষ থেকে বলা হয়, বাংলাদেশ থেকে মধ্যপ্রাচ্য, এশিয়া ও ইউরোপগামী ফ্লাইটের টিকিটের দাম চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে, যা প্রবাসী কর্মীদের জন্য ভয়াবহ সংকট সৃষ্টি করেছে। অতিরিক্ত ভাড়ার কারণে বহু কর্মী বিদেশে যেতে পারছেন না, যা তাদের জীবিকা এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন দলটির উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবু হানিফ, আব্দুর জাহের, বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদের মনজুর মোর্শেদ, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আবদুর রহমান এবং গণ অধিকার পরিষদ ও প্রবাসী অধিকার পরিষদের নেতারা।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
শিবচরে তরুণকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা, বিচারের দাবিতে মানববন্ধন
মাদারীপুরের শিবচরে জামিনে থাকা আসামি রাকিব মাদবরকে (২৫) প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। এতে ২২ জনকে এজাহারভুক্ত ও অজ্ঞাত আরও ৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে নিহত ব্যক্তির চাচি পারুল আক্তার বাদী হয়ে শিবচর থানায় মামলাটি করেন।
এর আগে গত রোববার রাত আটটার দিকে শিবচর পৌর বাজারের প্রধান সড়কে একটি ব্যাংকের সামনে রাকিব মাদবরকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। রাকিব শিবচর উপজেলার চরশ্যামাইল এলাকার নাসির মাদবরের ছেলে। তিনি সরকারি বরহামগঞ্জ কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন।
দুই দিন পার হয়ে গেলেও এই ঘটনায় কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এর প্রতিবাদে আজ দুপুরে শিবচর পৌর বাজারের সদর রোডে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজন। এ সময় বক্তারা বলেন, প্রকাশ্যে শত শত মানুষের সামনে হত্যাকাণ্ড কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। একটা সভ্য স্বাধীন দেশে এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড হতে পারে না। হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার না করা হলে ভবিষ্যতে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেবেন তাঁরা।
মামলার বাদী নিহত ব্যক্তির চাচি পারুল আক্তার বলেন, ‘রাকিবরে এতগুলো মানুষের সামনে কুপাইয়া মাইরা ফালাইলো। কেউ বাঁচাতে এগিয়ে আসলো না। যারা খুন করছে, তারা রাকিবের পূর্বশত্রু। আবুল কালাম সরদারের নির্দেশে তার লোকজন এই খুন করেছে। পুলিশ এ ঘটনায় কোনো আসামি এখন অবধি গ্রেপ্তার করে নাই। আসামিগো গ্রেপ্তার চাই, ফাঁসি চাই।’
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শিবচর উপজেলার শিরুয়াইল ইউনিয়নের চরশ্যামাইল গ্রামের আবুল কালাম সরদারের লোকজনের সঙ্গে নিহত রাকিব মাদবরের লোকজনের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গত ৬ মে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে প্রতিপক্ষের হামলায় আবুল কালাম সরদারের ছেলে ইবনে সামাদ নিহত হন। ইবনে সামাদ হত্যা মামলার আসামি রাকিব সম্প্রতি জামিন নিয়ে জেল থেকে বের হয়ে এলাকায় আসেন। রোববার রাত আটটার দিকে শিবচর পৌর বাজারের একটি সড়কে দাঁড়িয়ে ছিলেন রাকিব। এ সময় ৪ থেকে ৫ জনের একটি দল ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁর ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাকিবের মৃত্যু হয়।
শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, প্রকাশ্যে হত্যার ঘটনায় ২২ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির স্বজন ও স্থানীয় লোকজন মানববন্ধন করে এ ঘটনার প্রতিবাদ ও বিচার দাবি করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
আরও পড়ুনশিবচরে হত্যা মামলায় জামিনে থাকা আসামিকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫