যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনী ইলন মাস্কের নেতৃত্বাধীন ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি (ডজ) যাতে যুক্তরাষ্ট্রের পেমেন্ট সিস্টেমে প্রবেশ করতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে মামলা করেছে বেশ কয়েকটি অঙ্গরাজ্য। ডেমোক্র্যাটদের নেতৃত্বাধীন মার্কিন অঙ্গরাজ্যগুলোর এক জোট শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) এ মামলা করেছে। এই পেমেন্ট সিস্টেম দিয়ে লাখ লাখ কোটি ডলারের লেনদেন প্রক্রিয়াকরণ হয়।

নিউইয়র্কের অ্যাটর্নি জেনারেল লেটিশিয়া জেমসের নেতৃত্বাধীন ১৯টি অঙ্গরাজ্যের এই জোটের দাবি, মাস্কের নেতৃত্বাধীন এই ডজের মার্কিন ট্রেজারি বিভাগের সিস্টেমে প্রবেশ করার আইনগত অধিকার নেই। এ ব্যবস্থায় কোটি কোটি মার্কিন নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্য সংরক্ষিত আছে। খবর রয়টার্সের।

১৯টি অ্যাটর্নি জেনারেলরা বলেছেন, ডজ এই সিস্টেমে প্রবেশের অনুমতি পেলে বড় ধরনের সাইবার নিরাপত্তাঝুঁকি সৃষ্টি হতে পারে। অঙ্গরাজ্যগুলোর জন্য বরাদ্দ বিপুল পরিমাণ অর্থায়ন এবং তাদের বাসিন্দাদের জন্য হুমকিস্বরূপ বলে উল্লেখ করেছেন অ্যাটনরি জেনারেলরা। হোয়াইট হাউস ও ট্রেজারি বিভাগ এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

ম্যানহাটানের ফেডারেল আদালতে করা মামলায় বলা হয়েছে, মাস্কের নেতৃত্বাধীন এই বিভাগ ফেডারেল তহবিল বিতরণ প্রক্রিয়া ব্যাহত করতে পারে। ফলে স্বাস্থ্যকেন্দ্র, প্রি-স্কুল, জলবায়ু উদ্যোগ ও অন্যান্য কর্মসূচি ক্ষতির মুখে পড়তে পারে। সবচেয়ে বড় অভিযোগ, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই তথ্য ব্যবহার করে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করতে পারেন।

সরকারি ব্যয় হ্রাস ও আমলাতন্ত্রের রাশ টেনে ধরতে ডোনাল্ড ট্রাম্প ইলন মাস্ককে ডজের প্রধান হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। তবে মাস্কের এই কার্যক্রম কী হবে, তা নিয়ে ইতিমধ্যে ডেমোক্র্যাটসহ ভিন্ন অধিকারভিত্তিক সংগঠনগুলোর মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। তারা মনে করছে, মাস্ক ক্ষমতার সীমা লঙ্ঘন করছেন এবং গুরুত্বপূর্ণ সরকারি সংস্থাগুলো ভেঙে ফেলার চেষ্টার পাশাপাশি বিপুলসংখ্যক ফেডারেল কর্মী ছাঁটাই করতে চাইছেন।

মামলায় ট্রাম্প ও ট্রেজারি বিভাগকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। জেমসের সঙ্গে এই মামলায় ক্যালিফোর্নিয়া, ইলিনয়, ম্যাসাচুসেটস, ওয়াশিংটন ও নিউ জার্সির অ্যাটর্নি জেনারেলরা যোগ দিয়েছেন।

ইউনিয়নগুলোর করা আরেকটি মামলার অভিযোগ, মাস্কের দল গোপনীয়তা–সংক্রান্ত আইন লঙ্ঘন করছে। বৃহস্পতিবার এক ফেডারেল বিচারক ট্রেজারি বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছেন, শুধু দুজন ‘বিশেষ সরকারি কর্মচারী’ এই সিস্টেমে প্রবেশ করতে পারবে এবং তাদের প্রবেশাধিকার কেবল ‘রিড-অনলি’, অর্থাৎ তাদের শুধু পড়ার অনুমতি থাকবে।

এ ছাড়া ডজ যাতে শ্রম বিভাগ ও শিক্ষা বিভাগের তথ্যভান্ডারে প্রবেশ করতে না পারে, সে জন্য আরও কয়েকটি মামলা করা হয়েছে। যদিও বিচারক এই দাবি খারিজ করে দিয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের আকার কমিয়ে সরকারি ব্যয় হ্রাসের পরিকল্পনা করছেন ট্রাম্প। এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের কয়েক লাখ কর্মচারীকে প্রণোদনার বিনিময়ে স্বেচ্ছায় পদত্যাগের প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি।

তবে গত বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিকল্পনা সাময়িকভাবে স্থগিত করেছেন দেশটির এক বিচারক।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

সরকারের ভেতরে একটা অংশ নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারা করছে: এনসিপি

সরকারের ভেতরের একটি পক্ষ ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশের বাইরে গিয়ে নিজেরাই ঐকমত্য কমিশন হওয়ার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন। তিনি বলেন, এই চেষ্টার কারণে নির্বাচন ঝুঁকিতে পড়বে।

আজ সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আখতার হোসেন এ কথা বলেন।

আখতার হোসেন বলেন, তাঁদের কাছে স্পষ্টতই প্রতীয়মান যে সরকারের ভেতরের কোনো একটা অংশ সংস্কারকে ভন্ডুল করে নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারা করছে।

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ–আলোচনার ভিত্তিতেই কমিশন সুপারিশ উপস্থাপন করেছে উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির সদস্যসচিব বলেন, সেই সুপারিশের ভিত্তিতেই সরকার আদেশ জারি করবে, সেটাই হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু যখন সরকারের তরফ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে আরও এক সপ্তাহ রাজনৈতিক দলগুলোকে আলাপ–আলোচনার কথা বলা হয়, তখন মনে হয় যে সরকার আসলে এই সংস্কারের বিষয়গুলো নিয়ে সাপ-লুডো খেলছে। তিনি বলেন, ‘আমরা ৯৬-তে পৌঁছে গিয়েছিলাম, সেটাকে আবার তিনে নিয়ে আসা হয়েছে সাপ কেটে। এ অবস্থায় বাংলাদেশের বর্তমান যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি, তাতে সংকট আরও ঘনীভূত হচ্ছে।’

অতি দ্রুত সরকারকে দায়িত্বশীল আচরণ করার আহ্বান জানিয়ে এনসিপির সদস্যসচিব বলেন, সরকারকে নিজেকেই দায়িত্ব নিয়ে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করতে হবে। সামনের সংসদকে গাঠনিক ক্ষমতা প্রদান করার মধ্য দিয়ে সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। গণভোটের মাধ্যমে অর্জিত জনগণের অভিপ্রায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে যেন বাস্তবায়িত হয়, সেই সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ