অনলাইনে ছবি বা ভিডিও সংরক্ষণের সুযোগ থাকায় অনেকেই নিয়মিত গুগল ফটোজ ব্যবহার করেন। কেউ আবার গুগল ফটোজের ম্যাজিক এডিটর ব্যবহার করে বিভিন্ন ছবি সম্পাদনা করে সেগুলো অনলাইনে সংরক্ষণের পাশাপাশি অন্যদের পাঠিয়ে থাকেন। এর ফলে ছবির সত্যতা নিয়ে বিভ্রান্ত হন অনেকে। এ সমস্যা সমাধানে গুগল ফটোজের ম্যাজিক এডিটর ব্যবহার করে সম্পাদনা করা ছবিগুলোতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ‘সিন্থআইডি’ নামের ডিজিটাল ওয়াটারমার্ক যুক্তের ঘোষণা দিয়েছে গুগল। এর ফলে সহজেই সম্পাদনা করা ছবি শনাক্ত করা যাবে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

গুগলের তথ্যমতে, সিন্থআইডি হলো গুগলের ডিপমাইন্ড গবেষক দলের তৈরি একটি উন্নত ওয়াটারমার্কিং প্রযুক্তি। এটি ছবির গায়ে দৃশ্যমান কোনো চিহ্ন যোগ না করে ডিজিটাল মেটাডাটা হিসেবে সংযুক্ত থাকে। ছবি, ভিডিও, অডিও ও লেখা—সব ধরনের কনটেন্টেই এই প্রযুক্তি প্রয়োগ করা সম্ভব। গুগল ফটোজে থাকা ছবিতে চলতি সপ্তাহ থেকেই সিন্থআইডি যুক্ত করা হবে।

আরও পড়ুনগুগল ফটোজের ছবি নামাবেন যেভাবে৩০ মে ২০২৩

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে সম্পাদনা করা ছবি চেনাতে এরই মধ্যে অ্যাডোবিসহ অন্যান্য প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন ধরনের জলছাপ বা সতর্কবার্তা প্রদর্শনের উদ্যোগ নিয়েছে। অ্যাডোবি তাদের ক্রিয়েটিভ ক্লাউড অ্যাপের মাধ্যমে তৈরি বা সম্পাদনা করা ছবিতে ‘কনটেন্ট ক্রেডেনশিয়ালস’ নামের বিশেষ জলছাপ যুক্ত করে থাকে। এর ফলে কনটেন্ট তৈরির সময় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি ছবি ব্যবহার করলে সহজেই চেনা যায়।

আরও পড়ুনগুগল ফটোজ থেকে স্থায়ীভাবে ছবি বা ভিডিও মুছবেন যেভাবে২৯ আগস্ট ২০২৩

প্রসঙ্গত, গুগলের ম্যাজিক এডিটর সুবিধা ব্যবহার করে ব্যবহারকারীরা সহজেই ছবির অংশ পরিবর্তন করতে পারেন। শুধু লিখিত নির্দেশনা দিয়েই ছবি থেকে কোনো বস্তু সরিয়ে ফেলা, নতুন কিছু যোগ করা কিংবা সম্পূর্ণ চেহারা বদলে ফেলা সম্ভব।

সূত্র: দ্য ভার্জ

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

যে কারণে ইরানের তেল ও গ্যাস স্থাপনায় হামলা

ইরানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তেল ও গ্যাস স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। মধ্যপ্রাচ্যের এ দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দেশের মধ্যে কয়েক দশক ধরে বৈরিতা চলছে। তবে এবারই প্রথম ইসরায়েল ইরানে হামলা চালানোর পর দুই পক্ষ সরাসরি সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে। দুই পক্ষে পাল্টাপাল্টি হামলা তীব্র হতে থাকায় বিশ্বজুড়ে জ্বালানি তেলের বাজারে অস্থিরতা তৈরির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

গত শনিবার গভীর রাতে ইরানের পেট্রোলিয়াম মন্ত্রণালয় জানায়, ইসরায়েল একটি গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি ডিপোতে হামলা চালিয়েছে। একই সঙ্গে রাজধানী তেহরানে একটি তেল শোধনাগারেও আগুন ধরে যায়। সেখানে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণ করেছেন।

বিশ্বের অন্যতম বড় গ্যাসক্ষেত্র ‘সাউথ পার্স’-এ ইসরায়েলের হামলায় আগুন লাগার পর ইরান আংশিকভাবে এ ক্ষেত্রে উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে। ইরান কাতারের সঙ্গে ভাগাভাগি করে এই গ্যাসক্ষেত্র থেকে গ্যাস উত্তোলন করে থাকে।

ইসরায়েল নজিরবিহীনভাবে ইরানের জ্বালানি স্থাপনাগুলোতে হামলা চালানোয় মধ্যপ্রাচ্য থেকে তেল সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে বিশ্ববাজারে জ্বালানির দাম আরও বাড়তে পারে। দুই দেশই একে অন্যের ভূখণ্ডে আরও বড় ধরনের হামলার হুমকি দিচ্ছে।

ইরান বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রাকৃতিক গ্যাস ও তৃতীয় বৃহত্তম অপরিশোধিত তেল মজুতের অধিকারী– এই তথ্য যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি তথ্য প্রশাসনের (ইআইএ) দেওয়া। ফলে দেশটির জ্বালানি অবকাঠামো দীর্ঘদিন ধরে ইসরায়েলের লক্ষ্যবস্তু ছিল। তবে এতদিন ইসরায়েল ইরানের জ্বালানি স্থাপনাগুলোতে হামলা এড়িয়ে চলছিল, বিশেষ করে তার মিত্র যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশের চাপ ছিল। কিন্তু এবার তা বদলে গেছে।

গত শনিবার রাতে তেহরানের উত্তর-পশ্চিমে শাররান জ্বালানি ডিপো ও শহরের দক্ষিণে শার-রে অঞ্চলে অবস্থিত দেশের অন্যতম বৃহৎ তেল শোধনাগারে বড় ধরনের আগুন লাগে।  এ ছাড়া ইরানের দক্ষিণ বুশেহর প্রদেশের উপকূলীয় এলাকায় অবস্থিত বিশ্বের সবচেয়ে বড় গ্যাসক্ষেত্র সাউথ পার্স লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। 

হামলায় সাউথ পার্সের ‘ফেইজ ১৪’ প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্রে আগুন লাগে। ফলে এখানে দৈনিক ১ দশমিক ২ কোটি ঘনমিটার গ্যাস উৎপাদনকারী একটি অফশোর প্ল্যাটফর্ম বন্ধ হয়ে গেছে।

ইসরায়েলের হামলার প্রথম দিনে তেল ও গ্যাস স্থাপনা বাদ পড়লেও বাজারে তেলের দাম প্রায় ৯ শতাংশ বেড়ে যায়। সোমবার  বিশ্ববাজারে তেলের দামে আরও বড় উল্লম্ফন হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

মধ্যপ্রাচ্য ইনস্টিটিউটের গবেষক অ্যালান এয়ার বলেন, ইসরায়েল চায়, ইরানের ওপর হামলায় যুক্তরাষ্ট্রও জড়িয়ে পড়ুক। তাদের লক্ষ্য, ইরানের এই সরকারের পতন ঘটানো। ইরানের সামরিক প্রতিক্রিয়া ছাড়া উপায় নেই। কারণ, দেশের অভ্যন্তরে সম্মান রক্ষার বিষয় আছে। কিন্তু ইসরায়েলে বড় ধরনের ক্ষতি করার মতো ক্ষমতা ইরানের নেই। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইরানের বন্ধুর সংখ্যা কম। আর থাকলেও ইসরায়েল পরিষ্কারভাবে দেখিয়েছে, তারা আন্তর্জাতিক মতামতকে পাত্তা দেয় না– বলেন তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ