গুগল ফটোজে সম্পাদনা করা ছবি চেনাতে নতুন যে সুবিধা চালু হচ্ছে
Published: 8th, February 2025 GMT
অনলাইনে ছবি বা ভিডিও সংরক্ষণের সুযোগ থাকায় অনেকেই নিয়মিত গুগল ফটোজ ব্যবহার করেন। কেউ আবার গুগল ফটোজের ম্যাজিক এডিটর ব্যবহার করে বিভিন্ন ছবি সম্পাদনা করে সেগুলো অনলাইনে সংরক্ষণের পাশাপাশি অন্যদের পাঠিয়ে থাকেন। এর ফলে ছবির সত্যতা নিয়ে বিভ্রান্ত হন অনেকে। এ সমস্যা সমাধানে গুগল ফটোজের ম্যাজিক এডিটর ব্যবহার করে সম্পাদনা করা ছবিগুলোতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ‘সিন্থআইডি’ নামের ডিজিটাল ওয়াটারমার্ক যুক্তের ঘোষণা দিয়েছে গুগল। এর ফলে সহজেই সম্পাদনা করা ছবি শনাক্ত করা যাবে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
গুগলের তথ্যমতে, সিন্থআইডি হলো গুগলের ডিপমাইন্ড গবেষক দলের তৈরি একটি উন্নত ওয়াটারমার্কিং প্রযুক্তি। এটি ছবির গায়ে দৃশ্যমান কোনো চিহ্ন যোগ না করে ডিজিটাল মেটাডাটা হিসেবে সংযুক্ত থাকে। ছবি, ভিডিও, অডিও ও লেখা—সব ধরনের কনটেন্টেই এই প্রযুক্তি প্রয়োগ করা সম্ভব। গুগল ফটোজে থাকা ছবিতে চলতি সপ্তাহ থেকেই সিন্থআইডি যুক্ত করা হবে।
আরও পড়ুনগুগল ফটোজের ছবি নামাবেন যেভাবে৩০ মে ২০২৩কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে সম্পাদনা করা ছবি চেনাতে এরই মধ্যে অ্যাডোবিসহ অন্যান্য প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন ধরনের জলছাপ বা সতর্কবার্তা প্রদর্শনের উদ্যোগ নিয়েছে। অ্যাডোবি তাদের ক্রিয়েটিভ ক্লাউড অ্যাপের মাধ্যমে তৈরি বা সম্পাদনা করা ছবিতে ‘কনটেন্ট ক্রেডেনশিয়ালস’ নামের বিশেষ জলছাপ যুক্ত করে থাকে। এর ফলে কনটেন্ট তৈরির সময় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি ছবি ব্যবহার করলে সহজেই চেনা যায়।
আরও পড়ুনগুগল ফটোজ থেকে স্থায়ীভাবে ছবি বা ভিডিও মুছবেন যেভাবে২৯ আগস্ট ২০২৩প্রসঙ্গত, গুগলের ম্যাজিক এডিটর সুবিধা ব্যবহার করে ব্যবহারকারীরা সহজেই ছবির অংশ পরিবর্তন করতে পারেন। শুধু লিখিত নির্দেশনা দিয়েই ছবি থেকে কোনো বস্তু সরিয়ে ফেলা, নতুন কিছু যোগ করা কিংবা সম্পূর্ণ চেহারা বদলে ফেলা সম্ভব।
সূত্র: দ্য ভার্জ
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম, এখানে সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই: জেড আই খান পান্না
মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।
আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বারের হলরুমে ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার সংকট ও আইনি প্রতিকার পাওয়ার পথ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেড আই খান পান্না। সেমিনারটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিস (এইচআরসিবিএম), বাংলাদেশ চ্যাপ্টার।
বক্তব্যে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘এখানে সংখ্যালঘুর কথা বলা হচ্ছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখন আমি সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু। আজ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা দেখি, জুতা দিয়ে বাড়ি দিতে দেখি, কিন্তু কিছু করতে পারি না। তাই আমি সবচেয়ে বড় অসহায়।’
এসব কথা বলতে বলতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না কেঁদে ফেলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, জীবনে কখনো জেনে-বুঝে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন, তাঁদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
জেড আই খান পান্না আরও বলেন, ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, কারও সঙ্গে এর তুলনা চলে না। এটা সাম্প্রদায়িকতার দেশ না। সংবিধানে যেন কেউ হাত না দেয়। সরকারের অনেকেই বিদেশি হয়েও স্বদেশি ভাব দেখাচ্ছেন।
সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। সমাজে ন্যায়বিচার বা সুবিচার পাওয়ার কথা থাকলেও তা মিলছে না। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিচার হয় না। কেউ কেউ ধরা পড়লেও পরে বেরিয়ে যায়।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমন কুমার রায় বলেন, সব সরকারের আমলেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত। বর্তমান নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘুদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা হলেও সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া আসে না, এমনকি দুঃখও প্রকাশ করে না।
গত বছরের ৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ শুরু হলে তা দমন করতেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সুমন কুমার দাবি করেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সনাতনী সম্প্রদায়ের বাক্স্বাধীনতা বন্ধ করতে, নেতৃত্ব দমন করতে এসব করা হচ্ছে।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে কে পাল। সঞ্চালনায় ছিলেন এইচআরসিবিএমের বাংলাদেশ চ্যাপটারের আহ্বায়ক লাকি বাছাড়। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরশেদ ও মো. গোলাম মোস্তফা।