মূলধন বাড়াতে ৮০০ কোটি টাকার বন্ড ছাড়বে সিটি ব্যাংক
Published: 10th, February 2025 GMT
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি সিটি ব্যাংক পিএলসি ৮০০ কোটি টাকার বন্ড ছাড়বে। রোববার ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে দেওয়া ঘোষণা অনুসারে, বন্ডটি হবে সাব-অর্ডিনেটেড বন্ড। ব্যাসেল-৩–এর সঙ্গে সংগতি রেখে মূলধন ভিত্তি শক্তিশালী ও ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধি চলমান রাখতে ওই অর্থ ব্যবহার করা হবে।
আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক ও পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনসহ (বিএসইসি) সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর অনুমতি সাপেক্ষে বন্ড ইস্যুর এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।
সাব–অর্ডিনেটেড বন্ড সাধারণত কোনো প্রতিষ্ঠান (যেমন ব্যাংক বা করপোরেশন) ইস্যু করে থাকে। এই বন্ডের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো, এগুলো সাধারণ বন্ড বা অন্যান্য ঋণের চেয়ে কম অগ্রাধিকার পায়। অর্থাৎ ইস্যুকারী প্রতিষ্ঠানটি যদি দেউলিয়া হয় বা তার সম্পদ বিক্রি করতে হয়, তাহলে সাব–অর্ডিনেটেড বন্ডধারীদের দাবি অন্য ঋণদাতাদের (যেমন সিকিউরড ক্রেডিটর বা সাধারণ বন্ডধারী) দাবি পরিশোধের পরই পূরণ করা হয়।
কম অগ্রাধিকারের কারণে সাব–অর্ডিনেটেড বন্ডে সাধারণত উচ্চ হারে সুদ দেওয়া হয়, বিনিয়োগকারীদের জন্য যা আকর্ষণীয়। সে কারণে কিছু ঝুঁকিও বহন করতে হয়, বিশেষ করে যদি প্রতিষ্ঠানটি আর্থিক সংকটে পড়ে।
আর্থিক অবস্থা২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৯ মাসে সিটি ব্যাংকের সমন্বিত পরিচালন মুনাফা বেড়েছে। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় পরিচালনা মুনাফা বেড়েছে ৭৭ শতাংশ।
২০২৩ সালের প্রথম ৯ মাসে সিটি ব্যাংক মুনাফা করেছিল ৯৩২ কোটি টাকা; ২০২৪ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৬৫৩ কোটি টাকা। সতর্কতার সঙ্গে ঋণের বিপরীতে বেশি প্রভিশন সংরক্ষণের কারণে কর-পরবর্তী মুনাফা বেড়েছে ১৯ শতাংশ। ২০২৩ সালে প্রথম ৯ মাসে মুনাফা ছিল ৩৭৯ কোটি টাকা, ২০২৪ সালে যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৫১ কোটি টাকা।
ব্যাংকটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সুদ আয়ের উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি, সরকারি বিল-বন্ডে বিনিয়োগ থেকে ভালো অঙ্কের আয় ইত্যাদি কারণেও পরিচালনা মুনাফা বেড়েছে। ৯ মাসে ব্যাংকের আয় ৪০ শতাংশ বাড়লেও ব্যয় বেড়েছে মাত্র ৮ দশমিক ৮ শতাংশ। ফলে আয়-ব্যয়ের অনুপাত আগের বছরের ৫৪ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমে ৪২ শতাংশে নেমে এসেছে।
গত এক বছরে সিটি ব্যাংকের শেয়ারের সর্বোচ্চ দাম ছিল ২৬ টাকা ৭০ পয়সা এবং সর্বনিম্ন দাম ছিল ১৭ টাকা ৩০ পয়সা। এ ছাড়া কোম্পানিটি ২০২৩ সালে ১৫ শতাংশ নগদ ও ১০ শতাংশ বোনাস; ২০২২ সালে ১০ শতাংশ নগদ ও ২ শতাংশ বোনাস; ২০২১ সালে ১২ দশমিক ৫০ শতাংশ নগদ ও ১২ দশমিক ৫০ শতাংশ বোনাস; ২০২০ সালে ১৭ দশমিক ৫০ শতাংশ নগদ ও ৫ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষকের পদাবনতি, দুই শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরিবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে দুই শিক্ষকের পদাবনতি দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের আলী রেজওয়ানকে সহযোগী অধ্যাপক থেকে সহকারী অধ্যাপক এবং ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের মোহাম্মদ জসিম উদ্দিনকে সহকারী অধ্যাপক থেকে প্রভাষক পদে পদাবনতি দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের এমবিএ ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তাকভির আল মাহমুদ ও সাইদ উদ্দিন আহমেদকে মাদক সেবনের অভিযোগে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। একই সঙ্গে তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবেশ এবং আবাসিক হলে অবস্থানের ওপরও এক বছরের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
গত সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৪তম সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হায়দার আলী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (চলতি দায়িত্ব) মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন গতকাল মঙ্গলবার রাতে প্রথম আলোকে বলেন, গত সোমবার বেলা ১১টায় সিন্ডিকেট সভা শুরু হয়ে সন্ধ্যার পর শেষ হয়। সভায় অর্ধশতাধিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেসব লিখিত আকারে শিগগিরই প্রকাশ করা হবে।
সিন্ডিকেট সভার একাধিক সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালে সান্ধ্যকালীন কোর্সের এক শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ এবং বিভাগের শিক্ষকদের নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের কারণে ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় আলী রেজওয়ানকে।
অন্যদিকে, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ ওঠে। পরবর্তী সময় তদন্তের স্বার্থে ১ অক্টোবর তাঁকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়। এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই তাঁদের বিরুদ্ধে পদাবনতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মাঠে মাদক সেবনের সময় দুই শিক্ষার্থীসহ এক বহিরাগতকে আটক করে প্রক্টরিয়াল টিম। এর পরিপ্রেক্ষিতে দুই শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার এবং এক বছরের জন্য ক্যাম্পাসে প্রবেশ ও হলে অবস্থানের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হায়দার আলী বলেন, ‘সিন্ডিকেট সভায় সবার মতামতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শুধু এই সিদ্ধান্ত নয়, আরও বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সবার সম্মতিক্রমেই। আমি আসলে একা কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারি না, কিছু চাপিয়েও দিতে পারি না। একটা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সব সিন্ডিকেট সদস্যদের মত থাকে এখানে।’