খুলনার নৌপরিবহন মালিক গ্রুপে প্রশাসক নিয়োগ
Published: 11th, February 2025 GMT
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপে দ্বিতীয়বার দখলমুক্ত হলো খুলনা বিভাগীয় অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন মালিক গ্রুপ। মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) খুলনার অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মো. হুসেইন শওকতকে সংগঠনটির প্রশাসক নিয়োগ দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তাকে ১২০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করে নির্বাচিত কমিটির কাছে দায়িত্ব হস্তান্তরের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গত ২৯ ডিসেম্বর সাধারণ ব্যবসায়ীদের বের করে দিয়ে সংগঠনটির দখল করেন বিএনপি সমর্থিত কয়েকজন ব্যবসায়ী। তারা ১১ সদস্যের এডহক কমিটি গঠন করেন, যার নেতৃত্বে ছিলেন আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগীরা। কমিটিতে আওয়ামী লীগ নেতাদের পুনর্বাসনের মাধ্যমে বিপুল অংকের টাকার লেনদেন হয় বলে অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি নিয়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যে প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। যার প্রেক্ষিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সংগঠনটিতে প্রশাসক নিয়োগ করল।
ব্যবসায়ীরা জানান, গত ১৫ বছর বাণিজ্যিক সংগঠন অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন মালিক গ্রুপ ছিল শেখ পরিবারের নিয়ন্ত্রণে। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাধারণ সদস্যরা শেখ সোহেলের নেতৃত্বাধীন কমিটির সবাইকে পদত্যাগে বাধ্য করান। পরবর্তীতে সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে গঠন করা হয় পাঁচ সদস্যের এডহক কমিটি। প্রবীণ দল নিরপেক্ষ ব্যবসায়ীরাই ছিলেন এডহক কমিটির সদস্য। তারা নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু করেন। কিন্তু আদালতের নির্দেশে নির্বাচন স্থগিত হয়ে যায়।
আরো পড়ুন:
‘মোংলা বন্দরকে আঞ্চলিক বাণিজ্যের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হবে’
নরওয়ের সাথে সরাসরি নৌযোগাযোগ স্থাপনের আহ্বান
গত ২৯ ডিসেম্বর কিছু ছাত্ররা এসে সাধারণ সদস্যদের গঠিত কমিটি ভেঙে দেন। পরে শেখ জহির, কাজী রাহাতসহ বিএনপি সমর্থিত ব্যবসায়ীরা কার্যালয়টির দখল করে ১১ সদস্যের কমিটি করে দেন। এডহক কমিটির আহ্বায়ক করা হয় শেখ হাসিনার চাচাত ভাই শেখ সোহেলের নেতৃত্বধীন কমিটির ১ নম্বর পরিচালক এস এম আকবর হোসেনকে। ১ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয় আওয়ামী লীগের অন্যতম সুবিধাভোগী ও শেখ হেলালের বন্ধু পরিচয় দেওয়া নজরুল ইসলামের ভাই এসএম রফিকুল ইসলামকে। ৫ নম্বর সদস্য কাজী গোলাম ফারুক এর আগে শেখ সোহেলের নেতৃত্বাধীন পরিষদের যুগ্ম মহাসচিব এবং ৬ নম্বর সদস্য সঞ্জীব দাস ওই কমিটির কোষাধ্যক্ষ ছিলেন। কমিটির সদস্য সচিব এসএম আজহার আলী ছিলেন সংগঠনের বেতনভুক্ত সচিব। ওই সময় সাবেক মহাসচিব অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলামের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ছিলেন তিনি।
অভিযোগ রয়েছে, আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী এসব ব্যবসায়ীর কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে তাদের কমিটিতে পুনর্বাসন করা হয়। এই টাকার একটি অংশ একটি রাজনৈতিক দলের শীর্ষ এক নেতাও পেয়েছেন। সাধারণ ব্যবসায়ীরা এই কমিটির বিরুদ্ধে অবস্থান নিলে দখলে জড়িতরা জোর করে কার্যক্রম চালাতে থাকেন। কেউ যাতে কার্যালয়ে ঢুকতে না পারেন এজন্য উঠতি মাস্তানদের দিয়ে পাহারা বসানো হয়। ব্যবসায়ীরা মালিক সমিতিতে গেলে তাদের লাঞ্চিত করার ঘটনাও ঘটে। কার্যালয়ের ভেতরে মদ ও মাদক সেবনসহ নানা অসামাজিক কার্যকলাপ হতে থাকে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন ব্যবসায়ী অভিযোগ করেন, গত দুই মাসে নৌপরিবহন ব্যবসায়ীরা যে ধরনের নির্যাতন সহ্য করেছেন, আওয়ামী লীগের গত ১৫ বছরে তা হয়নি। মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে অনেক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে চাঁদা আদায় করা হয়েছে। প্রশাসক নিয়োগের মাধ্যমে এর পরিত্রাণ হবে বলে আশা করছেন তারা।
খুলনার অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মো.
ঢাকা/নুরুজ্জামান/বকুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন পথ ব যবস য় র র সদস য কম ট র স গঠন আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
ছাত্রদলের দেওয়া বিবৃতি গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য হুমকি: ডুজা
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ছাত্রদলের কর্মসূচি নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে সংগঠনটির দেওয়া বিবৃতির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (ডুজা)।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) এক যৌথ বিবৃতিতে ডুজার সভাপতি মহিউদ্দিন মুজাহিদ মাহি ও সাধারণ সম্পাদক মাহাদী হাসান ছাত্রদলের এমন বিবৃতির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
বিভিন্ন মহল থেকে চাপ প্রয়োগ করে বিভিন্ন সময়ে সংবাদ সরিয়ে নেওয়া, বিবৃতিতে সংবাদকর্মীদের নিয়ে আপত্তিকর শব্দচয়নের মতো আচরণকে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য হুমকিস্বরূপ বলে দাবি করেছে ডুজা।
আরো পড়ুন:
ঢাবিতে পাণ্ডুলিপিবিষয়ক কর্মশালা শুরু
ঢাবি উপাচার্যের সঙ্গে আইডিইএ পরিচালকের সাক্ষাৎ
সম্প্রতি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ছাত্রদলের কর্মসূচি নিয়ে ‘আওয়ামী এমপিকে পুনর্বাসন/ভাগ বাটোয়ারা দ্বন্দ্বে জাবিতে ভ্যাকসিন কর্মসূচি স্থগিত’ শিরোনামে জাগোনিউজ২৪.কম-এ সংবাদ প্রকাশিত হয়। এ সংবাদকে ঘিরে একটি বিবৃতি দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। যেখানে স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য হুমকিস্বরূপ কিছু শব্দচয়ন করে সংগঠনটি।
বিবৃতিতে ডুজা নেতৃবৃন্দ বলেন, সম্প্রতি সাংবাদিকতার নীতি-নৈতিকতা মেনে নিউজ করার পরেও দু’একটি গণমাধ্যমের উপর ছাত্রদলের প্রভাব খাটিয়ে সংবাদ সরিয়ে ফেলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। যা স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য হুমকি। গত ৫ আগস্টের পর নতুন বাংলাদেশে গণমাধ্যমের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ কোনোভাবেই কাম্য নয়।
বিবৃতিতে আরও বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে আমাদের আকাঙ্ক্ষা ছিল সংবাদ মাধ্যমে উঠে আসা অভিযোগের প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্টরা নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করবেন। কেউ নিজেকে ক্ষতিগ্রস্ত মনে করলে নিয়ম অনুযায়ী প্রতিকার চাইবেন। কিন্তু ছাত্রদলের এ ধরনের আচরণ আমাদের সে আকাঙ্ক্ষাকে আশাহত করেছে।
ডুজা নেতৃবৃন্দ বলেন, প্রতিবেদন প্রকাশের পর জাগোনিউজ২৪.কম-এর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি সৈকত ইসলামকে ‘সময়ের আলো’র স্টাফ রিপোর্টার সাব্বির আহমেদ নামে একজন ফোন দিয়ে চাপ প্রয়োগেরও নিন্দা জানাই।
নেতৃবৃন্দ সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যম কর্তৃক সাব্বির আহমেদের অপেশাদার ও অনৈতিক আচরণের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেন।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী