সোনারগাঁয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষ, ৫ নারী আহত
Published: 12th, February 2025 GMT
সোনারগাঁয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে ৫ জন নারী আহত হয়েছেন। বুধবার সকালে বারদী ইউনিয়নের চেঙ্গাকান্দি গ্রামে জমি সংক্রান্ত বিরোধে এ ঘটনা ঘটে।
আহতদের সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এসময় বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়েছে। এ ঘটনা উভয় পক্ষ সোনারগাঁ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
জানা যায়, উপজেলার বারদী ইউনিয়নের চেঙ্গাকান্দি গ্রামের আব্দুল বারেকের সাথে পার্শ্ববর্তী ইয়ানুছ মিয়ার দীর্ঘদিন ধরে ৮ শতাংশ জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। এ বিরোধের জের ধরে তাদের মধ্যে আদালতে মামলা মোকদ্দমা চলছে।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকালে আব্দুল বারেকের লোকজন ওই জমিতে টিনের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করতে যায়। এক পর্যায়ে ইয়ানুছের নেতৃত্বে আব্দুল হালিম, আলী আজগর, রাসেল, আসিফসহ ২০-২৫জনের একটি দল দেশীয় অস্ত্র দা, টেঁটা, বল্লম, লোহার রড, চাইনিজ কুড়াল নিয়ে হামলা করে।
এক পর্যায়ে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। আব্দুল বারেকের বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাট করে ইয়ানুছের লোকজন। সংঘর্ষে বারেক পক্ষের হোসনে আরা, রুনা আক্তার ও হাবিজা বেগম ও ইয়ানুছ পক্ষের সূর্য্যবান বিবি, পারভীন বেগম আহত হয়। আহতদের সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
এ ঘটনায় আব্দুল বারেক পক্ষের তার ছেলে আমির হোসেন ও ইয়ানুছ পক্ষের ইয়ানুছ মিয়া বাদী হয়ে সোনারগাঁ থানায় পৃথক দুটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
সোনারগাঁ থানায় দায়ের করা অভিযোগের বাদি মো.
ইয়ানুছ মিয়ার দাবি, আমাদের জমি তারা দীর্ঘদিন ধরে দখলে রেখেছেন। আমাদের এ জমির পক্ষে দলিল পত্র রয়েছে। তারা জোরপূর্বক দখলে রাখতে চাইছে। জমিতে টিনের বেড়া দিতে আসলে আমরা বাধা দিয়েছি। এ ঘটনায় তাদের দুই নারী আহত হয়েছে।
সোনারগাঁ থানার ওসি মোহাম্মদ আব্দুল বারী বলেন, হামলা ভাংচুর ও সংঘর্ষের ঘটনায় উভয় পক্ষ অভিযোগ দায়ের করেছেন। তদন্ত করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স ঘর ষ ন র য়ণগঞ জ দ য় র কর স ঘর ষ এ ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক।
এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”
বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।”
চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”
ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।”
হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে।
গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।
কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”
ঢাকা/রাঙামাটি/এস