অর্থনীতিবিদ ও জনতা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আবুল বারকাতকে দুদকের মামলায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জুয়ের রানার আদালত এ আদেশ দেন।
এদিন দুপুর ২টা ২২মিনিটে আবুল বারকাতকে সিএমএম আদালতের হাজতখানায় হাজির করা হয়। ২টা ৪৯ মিনিটের দিকে তাকে আদালতের এজলাসে তোলা হয়। বিচারক ৩টা ৪১ মিনিটে এজলাসে আসার পর দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শাহজাহান মিরাজ আসামির ৩ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। এ সময় অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর কাইয়ুম হোসেন নয়নসহ রাষ্ট্রপক্ষের কয়েকজন আইনজীবী রিমান্ডের জোর দাবি জানান। অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী আব্দুল আউয়াল জামিন চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত রিমান্ডের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কোর্টে (ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কোর্ট) হবে জানিয়ে আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাবেক সভাপতি আবুল বারকাতকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ।
গত ২০ ফেব্রুয়ারি আবুল বারকাতসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে এননটেক্স গ্রুপের নামে ২৯৭ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করে দুদক। সংস্থাটি জানিয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান ও আবুল বারকাত পরস্পর যোগসাজশে জালিয়াতির মাধ্যমে এননটেক্স গ্রুপের ২২টি প্রতিষ্ঠানকে এই টাকা ঋণ দিয়েছিলেন। আতিউর রহমান, তার সহযোগী অন্য ব্যক্তিরা বিভিন্ন অনৈতিক কৌশলে এই অর্থ আত্মসাৎ করেছেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।
এদিকে আবুল বারকাতকে কারাগারে আটক রাখার আবেদনে দুদকের তদন্ত কর্মকর্তা আদালতকে জানান, আসামি বারকাতের বিরুদ্ধে পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণা, জালিয়াতি, মিথ্যা রেকর্ডপত্র তৈরি করে খাঁটি হিসেবে ব্যবহার করে জনতা ব্যাংক থেকে মর্টগেজ নেওয়া জমিতে বাস্তবে কোনো ভবন বা কারখানা না থাকা সত্ত্বেও ঋণগ্রহীতা মালিক হওয়ার পূর্বেই জমিতে স্থাপনা দেখিয়ে মূল্যায়ন করে ২৯৭ কোটি ৩৮ লাখ ৮৭ হাজার ২৯৬ টাকা আত্মসাৎ করেন। এ অভিযোগে দুদক থেকে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলাটি বর্তমানে তদন্তাধীন। আসামি জামিন পেলে আত্মগোপন করতে পারেন এবং সাক্ষীদের প্রভাবিত করতে পারেন। তাই তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত আসামিকে জেলহাজতে আটক রাখার আবেদন করছি।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
বাগেরহাটে ৪ আসন বহালের দাবিতে হাইকোর্টে রিট
বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন বহাল রাখতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং একটি আসন কমিয়ে তিনটি আসন করার নির্বাচন কমিশনের গেজেট কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্টদের আগামী ১০ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
মানিকগঞ্জে কৃষিজমির মাটি কাটার বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের
ডাকসু নির্বাচন স্থগিত চেয়ে করা ছাত্রলীগ নেতার রিট বাতিল
বাগেরহাট প্রেস ক্লাব ও অন্যান্যদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার শেখ মুহাম্মদ জাকির হোসেন রিট পিটিশন দাখিল করেন। এছাড়া চিতলমারী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বাগেরহাট ১ আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী মুজিবর রহমান শামীমের পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ আক্তার রসুল একই বিষয়ে পৃথক রিট পিটিশন করেন।
সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও বাগেরহাট জেলা বিএনপির নেতা ব্যারিস্টার শেখ মুহাম্মদ জাকির হোসেন বলেন, “আমরা রিট পিটিশন করেছি। আদালত আমাদের কথা শুনেছেন এবং ১০ দিনের রুল জারি করেছেন। আশা করি, আদালতে ন্যায়বিচার পাব এবং বাগেরহাটের চারটি আসন বহাল থাকবে।”
গত ৩০ জুলাই নির্বাচন কমিশন বাগেরহাটের চারটি আসনের মধ্যে একটি আসন কমিয়ে তিনটি করার প্রস্তাব দেয়। এরপর থেকে বাগেরহাটের বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠন আন্দোলন শুরু করে। চারটি আসন বহালের দাবিতে নির্বাচন কমিশনের শুনানিতেও অংশ নেয় তারা।
তবে ৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন শুধু সীমানা পরিবর্তন করে তিনটি আসন রেখে চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করে।
চূড়ান্ত গেজেট অনুযায়ী বাগেরহাট-১ (সদর-চিতলমারী-মোল্লাহাট), বাগেরহাট-২ (ফকিরহাট-রামপাল-মোংলা) ও বাগেরহাট-৩ (কচুয়া-মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) নির্ধারণ করা হয়। অথচ দীর্ঘদিন ধরে বাগেরহাট-১ (চিতলমারী-মোল্লাহাট-ফকিরহাট), বাগেরহাট-২ (সদর-কচুয়া), বাগেরহাট-৩ (রামপাল-মোংলা) এবং বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।
ঢাকা/শহিদুল/বকুল